13/07/2025
জিন-শয়তান কেবল মানসিক নয়, শারীরিক ক্ষতিও করতে পারে। তারা মানুষের জীবনে নানা রকম বিপদ আপদ, শারীরিক রোগ ও সমস্যার কারণ হতে পারে।
জিন শয়তানদের নিজস্ব প্রানী আছে। অর্থাৎ জিনদের মধ্যেও প্রানী আছে। আবার জিনেরা কিছু প্রানী (মানুষের জগতের) কে ব্যবহার করতে পারে, হিপ্নোটাইজ বা পরিচালিত করতে পারে নিজের মত করেই৷
এর মধ্যে একটি হলো ইঁদুর। কারণ ইঁদুর যেমন মানুষের সাথে থাকে, আবার শয়তানের সাথেও থাকে। মূলত ইঁদুর বাড়িতে থাকে। আর বাড়িতে মানুষ ও জ্বিন উভয়ই বাস করে।
সে ইঁদুর দিয়ে আপনার ঘর বাড়িতে আগুন লাগাতে পারে, ফায়ারিং সৃষ্টি করতে পারে আবার জীবাণুবাহিত রোগও সৃষ্টি করতে পারে।
যদি রেফারেন্স চান তো আছে।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “রাতে ঘুমানোর পূর্বে তোমরা বাতিগুলো নিভিয়ে দিও। কারণ শয়তান এগুলোর (ইঁদুরের) মাধ্যমে বাতির দিকে ধাবিত করে, ফলে সে তোমাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়।” (সহীহুল জামি, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ১৮৪-১৮৫)
আধুনিক বাস্তবতায় আমি আমার নিজের ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যারিয়ারে কাজ করতে যেয়ে অনেক সাইটেই, ইঁদুরের কারণে শর্ট সার্কিট হয়ে আগুন লাগার বহু উদাহরণ পেয়েছি। অনেক সময় ইঁদুর দুটি বিদ্যুৎ ফেইজে সংযোগ ঘটিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটায়।
জিনেরা কেবল অগ্নিকাণ্ড নয়, বরং সংক্রামক রোগ ছড়ানোর ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে প্লেগ রোগ – যেটিকে ইসলামে শয়তানের আঘাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, “এই জাতি ধ্বংস হবে অপবাদ ও জিনদের মধ্যে হতে যারা মানুষের শত্রু। তাদের খোঁচা প্লেগ রোগের মাধ্যমে। এসব রোগের কারণে যার মৃত্যু হবে, তারা শহীদ।” (আহমাদ, আত-তাবারানি – ইসনাদ সহীহ)
আরো বর্ণনায় এসেছে, “প্লেগ হলো জিনদের মধ্যে থেকে তোমাদের শত্রুদের পক্ষ থেকে খোঁচা। আর তোমাদের জন্য তা শাহাদাত।” (আল-মুস্তাদারাক আল-হাকিম)
এই হাদীসগুলো প্রমাণ করে যে, জিন শত্রুরূপে মানুষের দেহে রোগ সৃষ্টি করতে পারে, যা কখনো প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।
এমনকি, নবী আইয়ুব (আঃ) এর অসুস্থতাতেও জিন শয়তানের ভূমিকা ছিল বলে ধারণা করা হয়। কুরআনে উনার জিন-শয়তান দ্বারা কষ্ট পাওয়ার বিষয়টি স্পষ্টভাবে এসেছে।
আল্লাহ বলেন, “আর স্মরণ করো আমার বান্দা আইয়ুবকে, যখন সে তার রবকে ডেকে বলেছিল, ‘শয়তান তো আমাকে কষ্ট ও আযাবের ছোঁয়া দিয়েছে।’” (সূরা সোয়াদ ৩৮:৪১)
অনেক আলেমদেরই মতে, এটি ছিল শয়তান কর্তৃক প্রদত্ত এক ধরনের শারীরিক ও মানসিক পরীক্ষামূলক কষ্ট।
নারীদের দীর্ঘ সময় ধরে ব্লিডিং এর সমস্যাতেও জিন শয়তানের প্রভাব থাকে সরাসরি সহীহ হাদিস দিয়েই প্রমাণিত।
কিছু নারীদের মধ্যে দীর্ঘ সময় ব্লিডিং চলতে থাকে, যাকে ইসলামী পরিভাষায় ইসতিহাযা বলা হয়। এ ধরনের সমস্যাও সময় জিন শয়তানের প্রভাবে হয়ে থাকে।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, “এটি শয়তানের লাথির কারণে হয়েছে।”
(আবু দাউদ, আন-নাসাঈ, আত-তিরমিযি, ইবনু মাজাহ)
হাদীস, কুরআন ও বাস্তব অভিজ্ঞতা একত্রে প্রমাণ করে:
• জিন-শয়তান মানুষের মানসিক ও শারীরিক ক্ষতির জন্য কাজ করে
•তারা ইঁদুরসহ বিভিন্ন প্রাণী বা উপাদান ব্যবহার করে বিপদ সৃষ্টি করতে পারে
•প্লেগ, দীর্ঘস্থায়ী রোগ এমনকি আগুন লাগার মতো ঘটনার পেছনেও তাদের হস্তক্ষেপ থাকতে পারে
এসব ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে হলে নিয়মিত সুরা ফালাক, সুরা নাস এবং হাদীস দ্বারা প্রমাণিত বিভিন্ন যিকির ও দুআর মাধ্যমে আল্লাহর কাছে হেফাজত চাওয়া।
©___সংগৃহীত