Dr. Sukumar Sur Roy

Dr. Sukumar Sur Roy I'm a general physician, practicing at ibne sina Prime Diagnostic Centre, ullapara, Sirajganj.

I want to disseminate medical general knowledge to common people thereby update their health consciousness...

জন্ম সনদ।আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে, সভ্যতার সূচনা হয়েছিল  চার হাজার বছরেরও আগে বর্তমান ইরাকের দক্ষিনাঞ্চলে। সেই অঞ্চলের ন...
18/10/2025

জন্ম সনদ।

আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে, সভ্যতার সূচনা হয়েছিল চার হাজার বছরেরও আগে বর্তমান ইরাকের দক্ষিনাঞ্চলে। সেই অঞ্চলের নাম মেসোপোটেমিয়া। যে সভ্যতার সূচনা হয়েছিল সেটি ছিল সুমেরীয় সভ্যতা। যে জাতি এই সভ্যতা গড়ে তুলেছিল তাদের নাম ছিল সুমের জাতি।

তারা উন্নত কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল , কৃষির জন্য সেঁচ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল , নদীতে বাঁধ দেওয়া হয়েছিল, স্থাপনা নির্মান, উঁচু চত্তরে জিগুরাতের মত মন্দির নির্মান করেছিল তারা।
তারাই প্রথম চাকা আবিস্কার করেছিলো। তারাই প্রথম লিপির আবিষ্কার করেছিল, কাঁদা মাটির তালে নলখাগড়ার কলম দিয়ে ক্যুনিফর্ম লিপিতে সাহিত্য, ইতিহাস, মহাকাব্য রচনা করেছিল। তারাই প্রথম প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তুলেছিল, সমাজব্যবস্থা, পুরোহিত, রাজা, সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল।

ধারণা করা হয় যে, এই সভ্যতার লোকেরাও অন্য কোন সভ্যতা থেকে এখানে এসেছিল এবং সেই সভ্যতার নাম ছিল 'দিলমুন'। দিলমুন সম্ভবত এরাবিয়ান গাল্ফের কোন এক জায়গায় অবস্থিত ছিল। কোন এক মহাপ্লাবনে তাদের সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।কিছু বেঁচে যাওয়া লোক হয়তোবা এই দক্ষিণ মেসোপোটেমিয়ায় এসে পৌঁছেছিল এবং সুমেরীয় সভ্যতা গড়ে তুলেছিল।
নিচের ছবিতে একটি মানুষের পায়ের ছাপ দেখা যায়। এটি আসলে একটি নবজাতকের পায়ের ছাপ। কাঁদা মাটির তালে নবজাতক শিশুর পায়ের ছাপ নেওয়া হয়েছিল। এবং শিশুটির নাম, ছেলে না মেয়ে, পিতা মাতার নাম ইত্যাদি ক্যুনিফর্ম লিপিতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল।
এইটিই সম্ভবত পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম পুর্নাঙ্গ লিখিত জন্ম সনদ। এই অত্যাশ্চর্য জিনিসটি যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে। অনুরুপ আরেকটি জন্মসনদ বাহরাইনের মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করা আছে।

কথা সেটা নয়, কথা হচ্ছে চার হাজার বছর আগে সভ্যতার সূচনালগ্নে যেখানে এমন অত্যাশ্চর্য পদ্ধতিতে জন্মসনদ লেখা হত, সেখানে এখনও আমাদের দেশে আমাদের নিজেদের এবং আমাদের শিশুদের জন্ম তারিখটি ঠিক কবে তা আমরা সঠিকভাবে জানিনা। আমাদের বাবা মা'রাও জানেন না। অগত্যা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের ঘাড়ে দায়িত্ব পড়তো আন্দাজে একটি জন্ম তারিখ লিপিবদ্ধ করার।
তাহলে কারা বেশি সভ্য ছিল? একবিংশ শতাব্দীর আমরা নাকি চার হাজার বছর আগের সুমেরীয়রা?

ডাঃ সুকুমার সুর রায়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী মোমেনা পারভীন আজ আমার চেম্বারে এসেছিলেন। রোগের ইতিহাস ন...
17/10/2025

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী মোমেনা পারভীন আজ আমার চেম্বারে এসেছিলেন। রোগের ইতিহাস নেয়ার এক পর্যায়ে তিনি বললেন যে সপ্তাহ খানেক আগে তার জন্ডিস হয়েছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম তখন কী করেছিলেন? তিনি বললেন কবিরাজের কাছে গিয়েছিলাম। আমি আবারও জিজ্ঞেস করলাম কবিরাজের লেখাপড়া কতদূর? তিনি উত্তরে বললেন কবিরাজতো কোনদিন ইস্কুলেই যায় নাই।
আমি বললাম উত্তরবঙ্গের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের একজন ছাত্রী হয়ে আপনি কোন হিসেবে একজন মূর্খ মানুষের কাছে চিকিৎসা বিষয়ক পরামর্শের জন্য গেলেন? তিনি বললেন - "এ আল্লা, সবাইতো যায়! "

ডাঃ সুকুমার সুর রায়।

এই প্রাণীটির নাম দেওয়া হয়েছে বুরোনিয়াস মানফ্রেডশমিডি ( Buronius Manfredschmidi) । এদের আকার ছিল ছোট। মাত্র কেজি দশেক ওজন...
14/10/2025

এই প্রাণীটির নাম দেওয়া হয়েছে বুরোনিয়াস মানফ্রেডশমিডি ( Buronius Manfredschmidi) ।
এদের আকার ছিল ছোট। মাত্র কেজি দশেক ওজন ছিল। হামা দেওয়া মানুষের বাচ্চার সাথে তুলনা করা যায়। আশ্চর্যজনক কথা হল এরা প্রায় এক কোটি দশ লক্ষ বছর আগে জার্মানির বাভারিয়া অঞ্চলের জঙ্গলে বসবাস করতো। গাছের মগডালে থাকতো এবং নরম ফল আর কচি পাতা খেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো।
এরা নাকি বংশ পরিচয়ে 'গ্রেট এপ' দেরই পূর্বসূরী ছিল যেমন গরিলা, শিম্পাঞ্জি, বনবস ইত্যাদি। কিন্তু এরাই ছিল এযাবৎকালের সবচাইতে ছোট আকৃতির গ্রেট এপ।
জার্মানির টুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যালেওন্টোলোজির অধ্যাপক ম্যাডেলেইন বোমে এবং তার গবেষকদল এতো সব তথ্য হাজির করেছেন।

ডাঃ সুকুমার সুর রায়।

(কেউ যদি আরও বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে Buroniua Manfredschmidi লিখে সার্চ দিলেই পাওয়া যাবে।)

আমাদের চিকিৎসকদের সেমিনার। ভেনুঃ মেজবান রেস্তোরাঁ। ছবি ক্রেডিট ঃ ডাঃ সামিউল ইসলাম রনি।
08/10/2025

আমাদের চিকিৎসকদের সেমিনার।
ভেনুঃ মেজবান রেস্তোরাঁ।
ছবি ক্রেডিট ঃ ডাঃ সামিউল ইসলাম রনি।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল প্রাইজ। গত কাল ছয় অক্টোবর চিকিৎসা বিজ্ঞানে ২০২৫ সালের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।  দুইজন আমের...
07/10/2025

চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল প্রাইজ।

গত কাল ছয় অক্টোবর চিকিৎসা বিজ্ঞানে ২০২৫ সালের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। দুইজন আমেরিকান বিজ্ঞানী মেরি ব্রাঙ্কো ও ফ্রেড রামসডেল এবং একজন জাপানি বিজ্ঞানী শিমন সাকাগুচি মোট তিনজন এই বিরল সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।

তাঁদের গবেষণার বিষয়টি হল পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স ( peripheral immune tolerance) ।

'পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স' বিষয়টি সাধারণের জন্য বোধগম্য করা একটু জটিল।
আমরা জানি আমাদের শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ( Imune system) আছে।
আমাদের দেহের অভ্যন্তরে সেনাবাহিনী মোতায়েন আছে। আক্ষরিক অর্থেই আমাদের শরীরের ভিতরে যখন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, বা অন্য কোন ফরেনবডি বহিঃশত্রুর মত অনুপ্রবেশ করে, তখন আমাদের শরীরের ভিতরে থাকা সৈন্যরা এই সমস্ত বহিঃশত্রুকে আক্রমণ করে এবং মেরে ফেলে।
ধরুন আমাদের এই সৈন্যগুলির নাম দেওয়া হয়েছে ' টি সেল' ( T cell) ।
এই 'টি সেল' গুলি কখনও কখনও ভুল করে আমাদের শরীরের নিজস্ব টিস্যুকে আক্রমণ করে বসে।
এর ফলে কিছু রোগের উৎপত্তি হয়। এই রোগ গুলিকে একযোগে অটো ইমিউন ডিজিজ বলে। যেমন - রিউম্যাটয়েড আরথ্রাইটিস নামের এক জাতীয় বাত, টাইপ১ ডায়াবেটিস, ইত্যাদি।

যে সৈন্যরা আমাদের দেহকে রক্ষা করার দায়ীত্বে নিয়োজিত আছে, তারা যদি নিজেরাই আমাদের শরীরের ক্ষতি করতে থাকে তাহলে তো বিপদ।

এই সমস্যার একটা সমাধান পাওয়া গেছে।
সৈন্যদের মধ্যে কিছু বিশেষ সৈন্যের ( মিলিটারি পুলিশের মত ) সন্ধান পাওয়া গেছে।
এরা বহি:শত্রু দেখা মাত্র যে সমস্ত সৈন্যরা এলোপাতাড়ি গোলাগুলি শুরু করতে চায়, তাদের উপড়ে কড়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে। ফলে বহিঃশত্রু ও আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার মধ্যে যে যুদ্ধ তা এলোপাতাড়ি হবে না বরঞ্চ নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
এই মিলিটারি পুলিশের নাম দেওয়া হয়েছে 'রেগুলেটরি টি সেল,'।

এই 'রেগুলেটরি টি সেল' দের দ্বারা আমাদের দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অনিয়ন্ত্রিত অবস্থা থেকে নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় নিয়ে আসা সম্ভব।
ফলে অনেক অটো ইমিউন রোগ, ক্যান্সার এবং অঙ্গ প্রতিস্থাপন রিজেকশনের প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও নতুন চিকিৎসা পদ্ধতির উদ্ভাবন সম্ভবপর হবে।
এই আবিষ্কার চিকিৎসা বিজ্ঞানে নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী।
আর এই অবদানের পেছনে রয়েছে উপরিউক্ত তিন বিজ্ঞানীর সারা জীবনের নিরলস গবেষণা।

ডাঃ সুকুমার সুর রায়।

তিনজন বিখ্যাত মানুষের ছবি পাশাপাশি। এনাদের পরিচয় কী?  কিসের জন্য বিখ্যাত?বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র/ ছাত্রীদের জন্য প্রযোজ্য।
05/10/2025

তিনজন বিখ্যাত মানুষের ছবি পাশাপাশি।
এনাদের পরিচয় কী? কিসের জন্য বিখ্যাত?
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র/ ছাত্রীদের জন্য প্রযোজ্য।

আজ ২৯ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব হার্ট দিবস। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে কিছু কথা। -----------------------------------★বাংলাদেশে প্রতি ...
29/09/2025

আজ ২৯ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব হার্ট দিবস।
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে কিছু কথা।
-----------------------------------

★বাংলাদেশে প্রতি বছর দুই লক্ষ তিরাশি হাজার মানুষ বিভিন্ন ধরনের হার্টের রোগের কারণে মারা যায়।

★বাংলাদেশ হৃদরোগ চিকিৎসায় স্বয়ংসম্পুর্ন বলা হলেও মোটেও তা সঠিক নয়।

★যে সমস্ত হার্টের রোগির অপারেশন প্রয়োজন হয় তার ৯৫% হয় ঢাকাতে।

★দেশে হার্টের রোগির অপারেশনের জন্য মোট ৩৪ টি সেন্টার রয়েছে। এই ৩৪ টি সেন্টারের ২৬টিরই অবস্থান ঢাকাতে।
বাকি আটটি সেন্টার চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহীর মত বিভাগীয় শহরে আছে কিন্তু সেখানে খুবই সীমিত আকারের সেবা পাওয়া যায়।

★বাংলাদেশের কোন জেলা শহরেই তাৎক্ষণিকভাবে যথাযথ হার্টের চিকিৎসার সুব্যবস্থা নেই,অপারেশনের ব্যবস্থাতো সুদূর পরাহত।

এইজন্য জরুরি হার্টের রোগীদের জন্য পরামর্শ ঃ
------------------------------------------------

★ গ্রামে, উপজেলায় এবং জেলায় কালবিলম্ব না করে দ্রুত ঢাকায় পৌঁছানোর চেষ্টা করতে হবে।

হার্ট অ্যাটাক ঃ
----------------

অনেক ধরনের হার্টের সমস্যার মধ্যে ' হার্ট অ্যাটাক ' সবচাইতে বিপজ্জনক ও জরুরী।

হার্টের রক্তনালি ব্লক হয়ে হার্টের নিজস্ব রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে যে সমস্যার সৃষ্টি হয় তাকে হার্ট অ্যাটাক বলে।
একে একিউট মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কসনও বলা হয়।

ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হলে সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু হতে পারে।

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষ্মণ সমূহ ঃ
-------------------------------

★বুকের মাঝখানে তীব্র ব্যাথা হবে।

★ ব্যাথায় বুক পিঠ খিল লেগে আসার মত মনে হবে।

★ ব্যাথা কখনো কখনো বাম দিকার ঘাড়, চোয়াল, বাম হাতের দিকে এমনকি পিঠের দিকেও রেডিয়েট করতে পারে। কখনো কখনো পেটের উপরিভাগের ব্যাথা মনে হতে পারে।

★ সাধারণ মানুষ এমনকি চিকিৎসকেরাও অনেক সময় তথাকথিত গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথা মনে করে ভুল করে।
★ বুক চেপে আসার সাথে সাথে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

★ গা ঘেমে যেতে পারে।

★ বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে।

★ রোগীর অস্থিরতা লাগবে। শুয়ে থাকলে উঠে বসতে চাইবে যেন উঠে বসলে তার ব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট উপসম হবে।

হার্ট অ্যাটাক হলে করণীয় ঃ
-----------------------------

★দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে পৌছাতে হবে।

★ চিকিৎসক যদি মনে করে এটি হার্ট অ্যাটাক তাহলে তিনি রক্ত পাতলা করার ওষুধ যেমন এস্পিরিন ও ক্লোপিডগ্রেল বোলাস ডোজে দিবেন। নাইট্রোগ্লিসারিন স্প্রে জিহবার নিচে স্প্রে করা যেতে পারে। অক্সিজেন দেয়া যেতে পারে এবং অক্সিজেন ওয়ালা এম্বুল্যান্সে ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি পরামর্শ ঃ
------------------------------------

গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথাকে ভুলে হার্ট অ্যাটাকের ব্যাথা মনে করে সিদ্ধান্ত দেওয়া মারাত্মক অপরাধ নয়, কিন্তু হার্ট অ্যাটাককে গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথা মনে করে কালক্ষেপণ করা মারাত্মক অপরাধ।

সকল সাধারণ মানুষের প্রতি পরামর্শ ঃ
----------------------------------------

হার্ট অ্যাটাকের যে সমস্ত লক্ষ্মণ আলোচনা করা হয়েছে, সেগুলি যদি মিলে যায় তাহলে দ্রুত এম্বুল্যান্স যোগে হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের মত ঢাকার কিছু হার্ট সেন্টারে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কোন মতেই তথাকথিত গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথা মনে করে কালক্ষেপণ করা যাবে না।

হার্ট অ্যাটাকের কারণ ঃ
------------------------
★ চল্লিশোর্ধ্ব বয়স।

★ উচ্চ রক্তচাপ।

★ ডায়াবেটিস।

★ কিডনির সমস্যা।

★ রক্তে কোলেস্টেরলের আধিক্য/ ডিসলিপিডিমিয়া

★ শরীরের ওজন বেশি ( ওবেসিটি) ।

★ ধুমপান/ জর্দা/ আলাপাতা / মদ্যপান।

★বংশে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোকের ইতিহাস

★শারীরিক পরিশ্রম না করা/ হাঁটাচলা না করা।

★:অস্বাস্থ্যকর খাদ্য / ফাস্ট ফুড / জাঙ্ক ফুড ।

★ চর্বিযুক্ত খাবার / সম্পৃক্ত চর্বি / ঘি / তেল
ভাত/ রুটি বেশি খাওয়া, ফল ও শাকসবজি কম খাওয়া।

★ নিয়মিত ও পরিমিত ঘুম না হওয়া।

★ টেনশন ও ডিপ্রেশনে ভোগা।

হার্ট অ্যাটাকের প্রতিকার ঃ
--------------------------

★ স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন।
★ শরীরের ওজন ঠিক রাখা।
★ নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা
★ নিয়মিত হাঁটা।
★ স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ( অতিরিক্ত লবন, চর্বি, মিষ্টি ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড বাদ। প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া) ।
★ নিয়মিত ও পরিমিত ঘুম
★ টেনশনমুক্ত ও হাসিখুশির জীবন যাপন।
★ নিয়মিত চেক আপ ও চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ
হাইপ্রেশার, কিডনি রোগ,ডায়াবেটিস, ডিসলিপিডিমিয়া, অন্য কোন রোগ আছে কিনা তা নির্ণয় করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ।
★ মদ্যপান, ধুমপান, জর্দা, আলাপাতা পরিহার।
★ আপনার একজন ফ্যামিলি ফিজিসিয়ান থাকা দরকার । কারণ ব্যাংকককে দেখান বা সিংগাপুরে চেক আপ করেন যাই করেন না কেন আপনার বিপদের সময় সবচেয়ে বড় জীবন রক্ষাকারী সিদ্ধান্তটি দিবেন আপনার ফ্যামিলি ফিজিসিয়ান।
বিভিন্ন স্পেশালিষ্ট ডাক্তারের চিকিৎসা পত্রের সমন্বয়ও করবেন আপনার ফ্যামিলি ফিজিসিয়ান।

আনন্দে থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন।

ডাঃ সুকুমার সুর রায়।

এই এক বাংলাদেশের গর্বিত ছেলে। চাটগাঁইয়া এই ছেলেটির নাম বাবব আলী। শুধু বাবর আলী নয়, আমাদের ডাক্তার সমাজের গর্ব ডাক্তার বা...
27/09/2025

এই এক বাংলাদেশের গর্বিত ছেলে। চাটগাঁইয়া এই ছেলেটির নাম বাবব আলী। শুধু বাবর আলী নয়, আমাদের ডাক্তার সমাজের গর্ব ডাক্তার বাবর আলী।
সবচাইতে যেটা গর্বের বিষয় সেটি হল বাবর আলী একজন পর্বত আরোহী। যে সে পর্বত আরোহী নন। হিমালয় পর্বতমালার আট হাজার মিটারের বেশি উচ্চতার শৃঙ্গগুলি পর্যায়ক্রমে জয় করার মিশনে নেমেছেন। তিনি প্রথমেই এক ধাক্কাতেই সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট জয় করেছেন, তার দুই দিন পরেই ৪ নং ক্যাম্প থেকেই সোজা লোৎসে পর্বত শৃঙ্গ জয় করেছেন।
এবছরের বসন্ত মৌসুমে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গম আট হাজার মিটারের শৃঙ্গ অন্নপূর্ণায় আরোহন করেছিলেন। আর এই শরত মৌসুমে আরও একটি আট হাজারি শৃঙ্গ মানাসলু জয় করে ফেলেছেন।
হ্যাঁ, এটি একটি খেলা। তবে পৃথিবীর সবচাইতে বিপজ্জনক খেলা যেখানে জীবন এবং মৃত্যু কচুর পাতায় একবিন্দু জলের মতো টলমল করে।
তবে এই বিপজ্জনক খেলাতে কেন?
কারণ এটাই চ্যালেঞ্জ। নন্দলালের মতো জীবন যাপন করা মানুষের সাজে না। এডভেঞ্চার ও দুঃসাহসিক অভিযানই অন্য জীব থেকে মানুষকে আলাদা করেছে এবং মানুষ দুনিয়ার উপরে কর্তৃত্ব করা শিখেছে।

ইন্টারভিউ।   পর্ব - পাঁচ।জুনিয়র ফিল্ড রিসার্চ অফিসার আশরাফ সাহেবের সাথে আলাপে আলাপে  অনেক কথা জানা হয়ে গেলো।  আমেরিকার ন...
27/09/2025

ইন্টারভিউ।

পর্ব - পাঁচ।

জুনিয়র ফিল্ড রিসার্চ অফিসার আশরাফ সাহেবের সাথে আলাপে আলাপে অনেক কথা জানা হয়ে গেলো।
আমেরিকার নেতৃত্বে 'ন্যাটো', 'সেন্টোর', মত পাকিস্তান ছিলো ' সিয়াটো' ( সাউথ ইস্ট এশিয়ান ট্রিটি অর্গানাইজেশন) এর সদস্য।
এটি ছিলো ন্যাটোর মতই একটি সামরিক জোট।
ষাটের দশকে পূর্ব পাকিস্তানে বিশেষ করে দক্ষিনাঞ্চলে কলেরা ভয়াবহ আকার ধারন করে। আমেরিকান নৌবাহিনীর একটি মেডিকেল টিম প্রথমে চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসে।
১৯৬১ সালে ঢাকার মহাখালীতে সিআরএল ( কলেরা রিসার্চ ল্যাবরেটরি) প্রতিষ্ঠিত হয়।
পরবর্তীতে যেটা "কলেরা হাসপাতাল" নামে পরিচিতি পায়।
চাঁদপুরের মতলব এলাকায় তারা পৃথিবীর অন্যতম বড় একটি "হেলথ এন্ড ডেমোগ্রাফিক সারভেইল্যান্স সিস্টেম" ( HDSS) গড়ে তোলে।
এইখানে জনস্বাস্থ্যের বিভিন্ন রকম গবেষণার সুযোগ তৈরি হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে এই প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম এক রকম বন্ধ হয়ে যায়।
পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে "কলেরা রিসার্চ ল্যাবরেটরির" কার্যক্রম ও নাম ধাম পরিবর্তন করে, একে একটি ট্রাস্টি বোর্ডের দ্বারা পরিচালিত করার সিদ্ধান্ত হয়।
পরিবর্তিত নাম হয় - আইসিডিডিআরবি(icddrb,- international center for diarrheal disease research, Bangladesh ) ।
আন্তর্জাতিকীকরন করা হলেও এখনো মূল দ্বায়িত্ব আমেরিকান বিজ্ঞানীরাই পালন করে থাকেন।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ডোনেশনে বিভিন্ন প্রজেক্টের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

বর্তমানে যে -"ওরাল কলেরা ভ্যাকসিন ট্রায়াল প্রজেক্ট" শুরু হয়েছে সেটি এগারো মিলিয়ন ডলারের প্রজেক্ট।
প্রধান কর্তাব্যক্তি আমেরিকান ভদ্রলোক - ডক্টর জন ডি ক্লিমেন্স।

ফ্রান্সের মেরিয়েক্স কোম্পানি কলেরার একটি ' মুখে খাবার ভ্যাকসিন ' উদ্ভাবন করেছে।
সেই ভ্যাকসিনের ফিল্ড ট্রায়াল বা হিউম্যান ট্রায়াল শুরু হয়েছে এই মতলব এলাকায়।
এই এলাকার শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত ২ লক্ষ লোকের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
সেই তালিকা ধরে ধরে আমাদের মেডিকেল টিমগুলি ভ্যাকসিন খাওয়ানো শুরু করেছে।
দুই লক্ষ লোককে তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে।
এ, বি ও সি গ্রুপ। আবার ভ্যাকসিনও তিন প্রকারের। দুই প্রকারের ভ্যাকসিন হলো আসল ভ্যাকসিন। তৃতীয় প্রকারের ভ্যাকসিন আসল ভ্যাকসিন নয়, জাস্ট প্লাসিবো।
পর পর তিন ডোজ ভ্যাকসিন খাওয়ানোর পরে পরবর্তী ৫ বছর যাবত ফলোআপ করা হবে।
তাতে দেখা হবে কোন গ্রুপের লোকেদের মধ্যে কলেরা বেশি হয়, কোন গ্রুপের মধ্যে কলেরা কম হয় এবং কোন গ্রুপের মধ্যে আদৌ কলেরা হয় না। এইসব ডাটা বিশ্লেষণ করলেই এই 'কলেরা ভ্যাকসিনের' কার্যকারিতা আছে কি নাই তা প্রমাণিত হবে।

স্পিডবোট ফিরে আসায়, আমি এবং আশরাফ সাহেব ফিল্ডে রওয়ানা হয়ে গেলাম।
পর পর দুইটি মেডিকেল টিম পরিদর্শন করা হয়ে গেল।
প্রতিটি টিমে একজন টিম লিডার, দুইজন টিকাদান কর্মী এবং দুইজন পোর্টার রয়েছে।

প্রথম দিন, কর্মীদের ভ্যাকসিন খাওয়ানো, কী ধরনের সমস্যার তারা মুখোমুখি হয়, কী তার সমাধান,লোকেদের কোন মেডিকেল সমস্যা হচ্ছে কিনা, মেডিকেল সমস্যা হলে তার কী সমাধান করবো, এসব ধারনা নিতে নিতেই দিনের বেশিরভাগ সময় পার হয়ে গেলো।
একটু ক্লান্ত লাগলেও এক বিরাট গবেষণা কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পেরেছি এই ভেবে এক ধরনের তৃপ্তিদায়ক অনুভূতির উদয় হলো মনে।
অতঃপর দিনের শেষে মন্ডল সাহেব ও আমি মতলব ফিরে এলাম।
রাতে এক ঘন্টা মিটিং শেষে ক্যানটিনে খাবার খেয়ে আমরা ছয় জন বার্জের কেবিনে ফিরে যাচ্ছিলাম।
বার্জের দোতলায় উঠতেই দেখা গেলো ডক্টর ক্লিমেন্স এবং ডক্টর বিল বসে বসে কিছু একটা পান করছেন আর গল্প করছেন। আমাদেরকে বসতে বললেন।
যদিও মিটিংয়ে সব কিছুই আলোচনা হয়েছে তার পরেও আমাদের প্রথম দিন কেমন লেগেছে জিজ্ঞেস করলেন। আমরা সবাই একবাক্যে বললাম ভালো লেগেছে।
হঠাৎই ডক্টর ক্লিমেন্স আমার দিকে একটি 'বিয়ারের ক্যান' এগিয়ে দিয়ে বললেন- " ডু ইউ লাইক টু হ্যাভ!?"
আমি বললাম - "নো, থ্যাংক্স।"
তারপর ধন্যবাদ দিয়ে আমরা কেবিনে ঢুকে গেলাম।
ঝিনাইদহের ডাঃ লতিফ আমার পিঠে ঠোকা দিয়ে বললো-" হায়! হায়! না করে দিলে কেন!? একটু টেস্ট করে দেখতাম।"

ডাঃ ফিরোজ বললো -" না, না, ঠিক আছে, তারা ভদ্রতা করে অফার করেছে। আমরা অভ্যস্ত না, আমরা ভদ্রতা করে প্রত্যাখ্যান করেছি। লতিফের যদি খুব ইচ্ছা হয়, পাশের কেবিনেই কার্টুন ভর্তি বিয়ারের ক্যান দেখেছি, ওখান থেকে দুই/ এক ক্যান নিয়ে
পরে সুবিধামত সময়ে টেস্ট করা যাবে। "
(----- চলবে----)

সুকুমার সুর রায়।

ইন্টারভিউ।    পর্ব - চারমিটিং সিটিং খাওয়া দাওয়া শেষে জীবনে প্রথমবারের মতো একটি পরিত্যক্ত জাহাজের অপরিসর কেবিনে রাত্রি যা...
26/09/2025

ইন্টারভিউ।

পর্ব - চার

মিটিং সিটিং খাওয়া দাওয়া শেষে জীবনে প্রথমবারের মতো একটি পরিত্যক্ত জাহাজের অপরিসর কেবিনে রাত্রি যাপন করতে হলো।
সারা রাত ছট ফট করতে করতে ভোরবেলা বাইরে বেরিয়ে এলাম। ব্যালকনি থেকে এক অপূর্ব দৃশ্য দেখা গেলো। খালের জল জোয়ারে ফুলে ফেঁপে উঠেছে! ঘাটে বেঁধে রাখা স্পিডবোটগুলি সামান্য ঢেউয়ের তোড়ে কলার মোচার মত দোল খাচ্ছে! এক, দুই, তিন, ..২৬ টি স্পিডবোট!

তাড়াতাড়ি স্নান সেরে জামাকাপড় পরে রেডি হচ্ছি। বাইরে থেকে কেউ নক করে বললো ব্রেকফাস্ট দেওয়া হয়েছে।

সকাল ৭টায় ব্রেকফাস্ট সেরে আস্তে আস্তে নিচে নেমে ঘাটের কাছে চলে গেলাম। একথা বুঝে গেছি যে,এদের সকাল সাড়ে সাতটা মানে সাড়ে সাতটাই।
ঠিক ৭ টা ২৫ মিনিটে ঘাটে ২০/২৫ জন মানুষের আবির্ভাব হলো। আমার এল,এ, মন্ডল সাহেব গুড মর্নিং জানিয়ে আমাকে ইশারায় একটি স্পিড বোটে উঠতে বললেন। আমি ওঠার পর উনিও উঠে বসলেন।
ঠিক সাড়ে সাতটায় ড্রাইভার ইঞ্জিন স্টার্ট দিলো। আমাদের মতো অন্যান্য স্পিডবোটগুলিও ইঞ্জিনের গুঞ্জন তুলে ঘাট ছেড়ে চলে যেতে লাগলো।
মন্ডল সাহেবের পাশে একটু জড়সড়ভাবেই বসেছিলাম। টুকটাক বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করছিলাম। একপর্যায়ে মন্ডল সাহেব আমাকে ' স্যার' বলে সম্বোধন করলেন!
তখনই বুঝতে পারলাম মন্ডল সাহেব নয়, আমিই বস'!
আমি জড়সড়ব ভাব কাটিয়ে, পিঠটান করে, 'বস'য়ের মত সোজা হয়ে বসলাম!
কারন দুইজনের মধ্যে ওনার পদবি হলো ' সিনিয়র ফিল্ড রিসার্চ অফিসার' এবং বয়সেও অনেক সিনিয়র। অপরপক্ষে আমি নিতান্তই একজন তরুন মেডিকেল অফিসার। তাই অফিসিয়ালি কে সিনিয়র কে জুনিয়র এই বিষয়ে ধোঁয়াশা থেকেই গেছিলো।

' দূর্গাপুরে পৌছাতে কত সময় লাগবে? '
উত্তরে তিনি বললেন - "৪৫ মিনিট লাগবে। "
ইঞ্জিনের গোঁ গোঁ শব্দ, সেই সাথে উত্তাল জল ও বাতাসের ঘুর্ণির মিলিত শব্দে কথাবার্তা ভালো ভাবে শোনা যাচ্ছিলো না।

কথা বন্ধ করে নদীর পাড়ের দৃশ্য উপভোগ করতে লাগলাম।
স্পিডবোট গুলি খাল থেকে বেরিয়েই একেকটি একেকদিকে ছুটতে লাগলো।
মাঝে মাঝে দেশি নৌকা দেখা যেতে লাগলো। পাশ দিয়ে একটি যাত্রিবাহী লঞ্চ ক্রস করে যেতে লাগলো। লঞ্চের যাত্রীরা হাত নেড়ে নেড়ে টা টা দিতে লাগলো, আমরাও তার জবাব দিতে থাকলাম।

কোথাও কোথাও নদীর এপার থেকে ওপার পর্যন্ত বরাবর জেলেদের জাল পাতা রয়েছে । জেলেরা অনেক দূর থেকেই হাত দিয়ে ইশারা করে ড্রাইভারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দেখিয়ে দিচ্ছিলো কোন্ দিক দিয়ে যেতে হবে!
একটু ভুল হলেই সর্বনাশ হয়ে যাবে! জালের সাথে বোটের ফ্যান বেঁধে গেলে একেবারে ছিটকে পড়তে হবে!
মন্ডল সাহেব অভয় দিলেন, ভয় নাই ওরা এই পথে চলতে ফিরতে এক্সপার্ট হয়ে গেছে।
এত সকাল সকাল বালকের দল নদীর ঘাটে ঝাঁপাঝাপি শুরু করেছে। গ্রাম্য মহিলারা স্নান শেষে কলসি কাঁখালে নিয়ে বাড়ির দিকে ফিরে যাচ্ছে! ছোট্ট বাচ্চাটি কিছুতেই ফিরে যাবে না! মায়ের ভেজা কাপড় ধরে টানাটানি করছে! ত্যক্ত বিরক্ত মা কলসি নামিয়ে রেখে আচ্ছা করে পিঠে বসিয়ে দিল কয়েক ঘা!
ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কাঁদতে কাঁদতে দৌড় দিলো বাচ্চাটি।
মেয়েরা জলের ধারে টুল পেতে ফটাত ফটাত শব্দ করে পিটিয়ে কাপড় ধুচ্ছে।
একপাল গরুকে নদীতে নামানোর জন্য একজন রাখাল বাঁশের কঞ্চি দিয়ে সমানে শপাং শপাং করে পিটিয়ে যাচ্ছে গরুগুলিকে।

সম্বিৎ ফিরে পেলাম মন্ডল সাহেবের ডাকে।
" স্যার আমরা দূর্গাপুর ঘাটে এসে গেছি। "
একটা ছোট্ট মত বাজার। বাজারের এক কোনায় একটা টিনশেড বিল্ডিং। সেই বিল্ডিংটিই হলো আইসিডিডিআরবি'র সাবসেন্টার। তার ওপাশে ইউনিয়ন পরিষদের অফিস।
আসলে মতলব উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের প্রতিটিতেই আইসিডিডিআরবি'র একটি করে সাব অফিস আছে। এই দূর্গাপুর ইউনিয়নটি মতলবের উত্তরাঞ্চলে।
সাব অফিসে বেশ কয়েকজন স্টাফ আছে।
এখানকার ইনচার্জ যিনি তিনি হলেন জেএফআরও ( জুনিয়র ফিল্ড রিসার্চ অফিসার) । তিন জন সুপারভাইজার আছেন। একজন কোডিং এসিস্ট্যান্ট এবং দুইজন পিয়ন কাম কুক আছেন।

জুনিয়র ফিল্ড রিসার্চ অফিসার আশরাফ সাহেবের সাথে কথা বলে ভালো লাগলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগ থেকে সদ্য মাস্টার্স করা আশরাফ সাহেব আমার সমবয়সী।
আশরাফ সাহেবের সাথে কথা বলে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করলাম।
প্রতিদিনের প্রোগ্রাম হলো, এই সাব অফিসের আওতায় ৬টি এলাকায় ৬টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
অফিসার ও সুপারভাইজারগন মিলে মেডিকেল টিম গুলির কাজ কর্ম পরিদর্শন করতে হয়।
একেকজন সুপারভাইজারকে একেক টিমের সাথে থাকার জন্য বোটে করে নামিয়ে দিয়ে আসতে হয়।
সবাইকে পাঠিয়ে দিয়ে আমি আর আশরাফ সাহেব রয়ে গেলাম পরে যাওয়ার জন্য।
চা খাওয়ার পর আশরাফ সাহেব অবলীলাক্রমে আমাকে সিগারেট অফার করে বসলেন! - ''ফাইভ ফিফটি ফাইভ' ব্রান্ডের সিগারেট।
বিনয়ের সাথে তা ফিরিয়ে দিলাম । এইভাবে প্রথমদিনেই জুনিয়র ফিল্ড রিসার্চ অফিসার আশরাফ সাহেবের সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে গেলাম।
----- ( চলবে) ----

ডাঃ সুকুমার সুর রায়।

" মৃত্তিকার ঘ্রান "পর্ব _ ২৬ -- গগন বাবুর মরণ যাত্রা।অবশেষে গগন বাবুর মরণ যাত্রা শুরু হল।গগন বাবুর মনে হল তিনি পাখির পাল...
25/09/2025

" মৃত্তিকার ঘ্রান "
পর্ব _ ২৬ -- গগন বাবুর মরণ যাত্রা।

অবশেষে গগন বাবুর মরণ যাত্রা শুরু হল।
গগন বাবুর মনে হল তিনি পাখির পালকের মত হালকা হয়ে গিয়েছেন।
আস্তে আস্তে হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে তিনি উর্দ্ধগগনের দিকে গমন করছেন ।
নিজেকে এত হালকা, এত ভারমুক্ত জীবনে কখনো মনে হয়নি! তবে কি মাধ্যাকর্ষনের টান হারিয়ে গিয়েছে? নাকি তিনি পার্থিব জগতের মায়া কাটিয়ে চিরকালের জন্য পরকালে চলে যাচ্ছেন?

পরকালের সম্ভাবনাই বেশি। হয়তোবা তার মৃত্যুই ঘটেছে!
বিগত দুই মাসেরও বেশি সময় যাবত তিনি নিজ গৃহের, নিজ বিছানায়, কলাগাছের ন্যায় পড়ে ছিলেন।
তিনি একদম নড়াচড়া করতে পারতেন না। একটি কথাও বলতে পারতেন না। মুখ দিয়ে বের হওয়া গোঁ গোঁ শব্দ গৃহের পরিবেশ আরো ভয়ঙ্কর ভারী করে তুলতো। আপন জন কানের কাছে মুখ নিয়ে ডাকাডাকি করলে তাদের মুখমন্ডল গুলি অস্পষ্ট ছায়ার মত ক্ষনকালের জন্য ভেসে উঠে পরক্ষনেই আবার হাওয়ায় মিলিয়ে যেত। তবে কে কি বলছে তা তিনি অস্পষ্ট হলেও বুঝতে পারছিলেন।

দুই মাস পূর্বে স্ট্রোক হয়ে তার সমস্ত শরীর একদম অবশ হয়ে গিয়েছে।
তিনি নাকি পাঁচ পাঁচটি দিন সম্পুর্ন অচেতন অবস্থায় ছিলেন। তাকে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের আইসিইউ তে ভর্তি রাখা হয়েছিলো।
চৌদ্দ দিনের দিন তাকে নিজ গৃহে ফেরত আনা হয়েছে।

সেই থেকে তিনি নিজের বিছানায় অর্ধমৃত অবস্থায় পড়ে ছিলেন।
স্ত্রী, পুত্র, পরিবারের উদ্বিঘ্ন কথাবার্তা কানে ভেসে আসছিল। নিকটাত্মীয়, বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীগন শেষ দেখা দেখতে এসে আড়ালে আবডালে বলতে লাগল - 'বেঁচে ওঠার কোন আশাই আর অবশিষ্ট নেই।'

আস্তে আস্তে সকলের আসা যাওয়া কমে যেতে লাগলো।

ইতিমধ্যে গগন বাবুর ঘরে নিজ স্ত্রী পুত্রের আনাগোনাও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হল ।
তা না হওয়ার কোন কারন ছিল না।
সমস্ত ঘরে উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছিল।
কোমরের নীচে বেড শোর হয়ে বড় গর্তের মত পঁচন ধরে গিয়েছিল।
প্রস্রাবের রাস্তায় ক্যাথেটার পরানো থাকলেও ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব চুঁইয়ে চুঁইয়ে বিছানা ভিজে গিয়ে এমোনিয়ার গন্ধ ছড়াচ্ছিল।
প্রথম দিকে আত্মীয় স্বজনের নিয়ে আসা ফলমুল ব্লেন্ডারে ঘুঁটে অনবরত নাকের নল দিয়ে পাকস্থলীতে চালান করা হচ্ছিল। এতে গগনবাবু বিপুল পরিমাণে কটু গন্ধযুক্ত মল ত্যাগ করে বিছানা ভাসাতে লাগলেন। এর পর খাওয়ানোর মাত্রা কমিয়ে দেওয়া হল ।
কখনও বা হড় হড় করে বমি করে চোখ উল্টে ফেলে মৃত্যুর উপক্রম হতে লাগল।

দুর্গন্ধ দুর করার নিমিত্তে ঘন ঘন এয়ার ফ্রেসনার স্প্রে করা শুরু হল। কখনও কখনও ধূপ ধূনা, আগরবাতি জ্বালানো হতে লাগল ।
তাতে সকল রকমের কটু গন্ধ মিলে মিশে ককটেল হয়ে এক অদ্ভুত রকমের দুর্গন্ধ গগনবাবুর ঘরের কোণা ছাড়িয়ে আশে পাশের ঘরে ছড়িয়ে পড়তে লাগল ।
গগন বাবুর স্ত্রী অত্যন্ত ত্যক্তবিরক্ত হয়ে কাজের মহিলার উপরে গর্জে গর্জে উঠতে লাগলেন।
ছেলে মেয়েরা ভাতের থালা হাতে নিয়ে ছাদে গমন করতে লাগল।
সেবা যত্নের জন্য একজন সার্বক্ষণিক লোক নিয়োগ করা হয়েছিল।
তিনি সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে কারনে অকারনে ঘরের ব্যালকনিতে গিয়ে হাওয়া খেতে লাগলেন।

এমনি করে চলতে চলতে আজ সকালে মনে হল যেন সব কিছু অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে! স্ত্রী পুত্র কন্যাগন কেমন করে যেন ব্যাকুল হয়ে ঘিরে ধরে আছে। অথচ তাদের কোন কথাবার্তাই আর কর্নকূহরে প্রবিষ্ট হচ্ছিল না।

হঠাৎ গগন বাবু উপলব্ধি করলেন যে, তিনি একদম হালকা হয়ে গিয়েছেন।
পাখির পালকের মত ভাসতে ভাসতে তিনি শুন্যের দিকে ধাবিত হচ্ছেন!

যেমন করে জুম করে গুগল ম্যাপ দেখা হয়, তেমনি হঠাৎ করে গগনবাবুর দৃষ্টি তার নিজ গৃহের দিকে নিবদ্ধ হলো।

তিনি স্পষ্ট দেখতে পেলেন তার স্ত্রী তার নিশ্চল দেহখানি জড়িয়ে ধরে উথালি পাথালি করে কাঁদছেন। তার বড়পুত্র চিৎকার চেঁচামিচি করে কাঁদতে লাগলো । ছোট পুত্র চুপচাপ ফোন তুলে আত্মীয় স্বজনকে মৃত্যু সংবাদ দিতে থাকলো। তার গাল বেয়ে জল গড়িয়ে পড়তে লাগলো। কন্যাটি খুন খুন করে অশ্র বিসর্জন করতে লাগলো ।

পাড়া প্রতিবেশীদের কেউ কেউ এগিয়ে এলো। কেউ কেউ দূরে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখতে লাগলো ।

কিছু পরে গগন বাবু স্পষ্ট শুনতে পেলেন , মাইকিং হচ্ছে! - - " একটি শোক সংবাদ! একটি শোক সংবাদ!! জীবনপাড়া মহল্লা নিবাসী সকলের সুপরিচিত গগন কুমার গঙ্গোপাধ্যায় ওরফে গগনবাবু অদ্য সকাল সাত ঘটিকায় ইহকালের মায়া ত্যাগ করে পরলোক গমন করেছেন । - দিব্যান লোকান স্বগচ্ছতু:। তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া দুপুর দুই ঘটিকায় মড়াপাড়া মহাশশ্মানে অনুষ্ঠিত হবে। "

গগনবাবু এইবার নিশ্চিত বুঝতে পারলেন যে, তিনি আসলেই মৃত্যুবরণ করেছেন !

কিন্তু তিনি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না যে, পরকাল বলতে তিনি ঠিক কোথায় আছেন!?

কোন আলো নেই , কোন ছায়া নেই, কোন অন্ধকার নেই, কোন জোনাকি নেই, কোন শব্দ নেই, কোন গন্ধ নেই, কোন অনুভূতি নেই, কোন আশা নেই, কোন নিরাশা নেই, কোন আনন্দ নেই , কোন বেদনা নেই,
কোন অস্তিত্ব নেই , কোন অনস্তিত্বও নেই!

চারিদিকে শুধুই ধোঁয়াশা! অবিচ্ছিন্ন জড়তা!

গগন বাবুর মানস চক্ষুতে কেবলই তার মফস্বল শহরের বাড়িখানি ভেসে উঠতে লাগলো। বাড়ির পাশের পুকুরে হাঁসেদের প্যাঁক প্যাঁক শব্দ! পুকুর পাড়ের আম বাগানে পাখিদের কিঁচির মিচির! কাঁঠাল গাছের পাতার ফাঁকে ঝরে পড়া নরম চাঁদের আলো! ঝিঁঝিঁর একটানা কানফাটানো আর্তনাদ! সকাল বেলার উঠোনে ঝরে পড়া সাদা শিউলি ফুল!

গগনবাবু এখন সকল কিছুর উর্দ্ধে।

গগনবাবু স্পষ্টত দেখতে পেলেন , শুনতে পেলেন , তার ফেলে আসা পরিবারের মানুষদের হৃদয়ের কথা!
অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তাদের মন হতে গগনবাবুর নাম নিশানা চিরকালের মত মুছে গিয়ে নিজ নিজ স্বার্থের আত্মকলহ শুরু হয়ে গিয়েছে!

গগন বাবু এদের জন্য সারাটি জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছেন। বড় পুত্রের বিয়ে দিয়ে নাতি নাতনির মুখ দর্শন করতে চেয়েছিলেন । মেয়েটিকে দেখে শুনে পাত্রস্থ করতে চেয়েছিলেন । অত্যধিক চুপচাপ ছোট পুত্রটির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন ।
এইসকল বৈষয়িক ব্যাপারে এত বেশি আত্মমগ্ন হয়ে পড়েছিলেন যে, নিজের ব্যাক্তিগত সাধ আহ্লাদের কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছিলেন।

গগন বাবু জীবনে একটি বার কৈলাশ পর্বতে যাত্রা করবার বাসনা হৃদয়ে ধারন করেছিলেন!
পৃথিবীর ছাদ - পামীর মালভূমিতে একটি বার পায়ে হেঁটে ভ্রমন করার দুর্নিবার ইচ্ছা মনে মনে পোষন করেছিলেন! মালদ্বীপের নীল সমুদ্রে জীবনে একটিবার স্কুবা ডাইভিং দিয়ে রঙিন মাছেদের ভেসে বেড়ানো দেখবার স্বপ্ন সাধ মনে জেগে উঠেছিলো!

ছাপোষা গগন বাবুর পক্ষে কখনোই এই সব স্বপ্ন সাধের কথা মুখ ফুটে উচ্চারণ করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে নাই!

আহা! একটিবার, আরো একটিবার, যদি যেকোন উপায়ে মাটির পৃথিবীতে ফিরে যাওয়া সম্ভবপর হতো!!
( চলবে)

---------- সুকুমার সুর রায়।

Address

Thana Mor, Ullapara
Sirajganj
6760

Opening Hours

Monday 09:00 - 14:00
17:00 - 20:00
Tuesday 09:00 - 14:00
17:00 - 20:00
Wednesday 09:00 - 14:00
17:00 - 20:00
Thursday 09:00 - 14:00
Friday 09:00 - 14:00
Sunday 09:00 - 14:00

Telephone

+8801711301759

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Dr. Sukumar Sur Roy posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram

Category