21/05/2023                                                                            
                                    
                                                                            
                                            মূলত গান এবং সিনেমায় নারীকে এক্কেবারে ল্যাটা খিচুড়ি বানিয়ে ভরা বাজারে ছেড়ে দেয়ার প্রচেষ্টাটা যুগে যুগেই ট্রেন্ডি ছিল।এবং আছে। 
গানে গানে নারীকে যৌ**বন রসে টইটম্বুর ডাকবে নাকি পটকা-বো*মা ডাকবে, তারে রাস্তায় একা পেয়ে পাশে হাঁটবে না জড়ায় ধরবে - মানে কি যে করতে চাইতেছে শত বছর ধরে!
You just cant solve the puzzle! 
সিনেমার নু**ডিটি এবং ভা**লগারিটির ক্ষেত্রেও সেইম জিনিস প্রযোজ্য।
আফসোসের কথা হল, আমরা দর্শক বা শ্রোতা হিসেবে এরকম অসংখ্য গান/সিনেমা কে 'শিল্প' হিসেবে মাথা পেতে নিয়ে কুর্নিশ করতে বাধ্য হয়েছি!
দোষ ধরা তো দূরে থাক!
এগুলোকে স্রেফ একটা 'unplanned প্রসব' আই মিন একটাই তো 'গান' বা একটাই তো 'সিনেমা' বলে এড়িয়ে গেছি, এখনো যাচ্ছি!
কিন্তু কালেক্টিভলি এগুলো কি ম্যাসেজ দিচ্ছে সমাজে,নারীদের সম্মানের জায়গাটাকে কতটা নাড়িয়ে দিচ্ছে সেটা নিয়ে ভয় পাচ্ছিনা।
📌গানগুলো শুনলে মনে হবে চারদিকে উৎসব লাগছে।
অথচ পুরা গানে সাবধানে আপনি কান না পাতলে ধরতেই পারবেন না গানগুলোতে একটা নারীকে  তাবত জাতের টিজিং এর ব্যাপারটাকে কতটা consensual হিসেবে, naive হিসেবে নরমালাইজ করা হয়।নারী এটা এঞ্জয় করে সেভাবেও দেখানো হয়।
সেটা শিল্প বলেই দিব্যি সমালোচনার ঊর্ধ্বে উঠে যায়।
আপনি আমি হেড ফোন কানে দিয়ে দুলে দুলে শতবার জিকিরের মত যা শুনি Chances are high এর ১% হলেও এটা আপনার এক্কেবারে inner psyche তে একটা ইম্প্রিন্ট ফেলে। 
আপনার না পড়লেও কারো না কারো পড়বে।
📌এদেশের এখনকার সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের অবস্থা নিয়ে লিখলে উপন্যাস হয়ে যাবে!
যতটুকু নারীর শরীর দেখালেই আমরা বুঝি কাহিনী কি, আপনার কলিজা পিত্তিসহ সবকিছু না ঠান্ডা হওয়া অবধি আপনাকে দেখাইতে ই থাকবে, দেখাতেই থাকবে! 
আপনাকে ওয়েব সিরিজে/ সিনেমায় নায়ক নায়িকার ডিরেক্ট সে**ক্স সিন দেখাইলেও এখন আপনি দেখতে বাধ্য।
কারন সেই একটাই! এইগুলা সবই জীবন থেকে নেয়া।
আপনি বেশি ত্যাড়ামি করেন, লাভ নাই! শুরুতেই আবার বলে দেয়া সব চরিত্র কাল্পনিক। মিল্যা গেলে ক্ষেইপেন না। 
যুক্তি কিন্তু অত্যন্ত শক্ত।
আপনি কিভাবে প্রতিবাদ করবেন বলেন?
কাহিনীর জন্যে দরকার চরিত্রকে দিয়ে যা ইচ্ছা বলাক কোন সমস্যা নেই।দেখবেন মার্কেটিং ও স্রেফ সেই objectified অংশকে ই বেচা হবে।
যাতে আপনি ও তা অন্তরে গেঁথে নেন এবং সুড়সুড়ির প্রমিস বুঝে জিনিসটা দেখেন।
আপনার এসব দেখতে দেখতে, শুনতে শুনতে একটা সময় আর মনেই হবে না- এটা নরমালাইজ দেখতে একটা সুস্থ মাথার আত্মসম্মান নিয়ে ভাবা মেয়ের কেমন লাগতে পারে!
📌খেয়াল করে দেখবেন পিওরলি নারী কেন্দ্রিক ভাল সিনেমা নাটক বানোনো হয় হাতেগোণা।নারীকে কম্পোজড দেখাইতে আমরা অভ্যস্ত না। 
কারন তা দিয়ে ব্যবসা জমে না।
আসলে শুনতে যতই খারাপ লাগুক, ভেতরে ভেতরে তথাকথিত অসংখ্য শিল্পবোদ্ধার কাছে নারী হল- মা*ল।মাল কে এরা মালের মত ই হ্যান্ডেল করে।
আফসোস হল, সুশীল রুচিশীল হিসেবে এদের কেই টিভিতে ইন্টারভিউ দিতে দেখবেন। আপনার আমার ফ্রাস্ট্রেটেড ভয়েস টা তাই আর শোনা যাবে না!
📌কার কয়টা বয়ফ্রেন্ড, কার সাথে কে শোয়, কার কয়টা সুগার ড্যাডি, কে ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি পড়ছে - সেলিব্রেটি ইন্টারভিউ এর নামে এইসব ফাতরামি দেখলে মনে হয় মরে যাই।
এটাকে নরমালাইজ হতে দেখাটা নারী হিসেবে খুবই অসম্মানের। ক্লাউনের মত লাগে যারা হেসে হেসে এগুলোর উত্তর দেয়!
📌অভিনেত্রীদের ওজন কমানোর সার্কাস নিয়ে কয়েকটা কথা না বললেই না।
যে কারো ওজন নিয়ন্ত্রণ করাটা তার জন্যে একটা হেলথি চয়েস ছাড়া আর কিছু না। 
কিন্তু বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির ভাষ্যমতে সেটা একজন নায়িকার আরো বোল্ড(পড়ুন পোশাকহীন) হবার উৎসাহ হতে পারে সেটা দেখা খুব কষ্টকর।
Male Attention টা না পেলে যে এরা ভেতরে ভেতরে ফাটা বেলুনের মত চুপষে যায় সেটা এরা ভাল করে জানে। আমরা ও সেটা খুব ভাল করে জানি।
এটা অবশ্যই কারো কারো চয়েস হতেই পারে।কিন্তু আফসোসের ব্যাপারটা হল, এই দাসত্বে থাকা নারীদেরকে মিডিয়ার খুবই empowered বা বোল্ড বলে উপস্থাপন করার প্রয়াসটা খুব হাস্যকর।খুবই।
কোনভাবে এটা আমাদের তরুণীদের জন্যে চোখের শান্তি হতে পারেনা 
📌পুরুষের লালসায় নারীকে রাখার চেষ্টা সমস্ত শিল্পে ছিল, হাজার বছর ধরেই সেটা চলছে। কারো অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
আমরা নারীরা কোন এক অদ্ভুত কারনে এই চক্রটা থেকে বের হতে পারিনি।হাত ই দিতে পারিনি submissive হওয়া ছাড়া। 
পুরুষ কিচ্ছু হারায়নি। যুগে যুগে আরো শক্তিশালী হয়েছে।আমাদের হাতে এরা তুলে দিয়েছে 'মুক্তি'র প্ল্যাকার্ড! অথবা 'ভিক্টিম কার্ড'। আমরা সেই বুলি ই গেয়েছি যা তারা আমাদের দিয়ে বলাতে চেয়েছে।
📌এদেশের নারীবাদীরা খালি নারীদেরকে 'টাকা কামাও' 'টাকা কামাও' 'নিজের পায়ে দাঁড়াও' বলে বলে নারী দিবসে স্টেজ না কাঁপিয়ে মিডিয়ার এই অব্জেক্টিফিকেশন নিয়েও যদি সারা বছর সোচ্চার থাকতো - আত্মাটায় শান্তি পেতাম। 
এরা বুঝেনা যে ২ লাখ আয় করেও সমাজে নারীর সম্মান বাড়বে না যদি নারীদের কে শিক্ষিত প্রজ্ঞাময় বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্ববান হিসেবে গ্রহণ করার মানসিকতাটা সমাজে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়।
আমরা সেদিকেই একটু একটু করে আগাচ্ছি।
📌 ভাবছেন এতো রিয়্যাকশনের কি আছে?
গান ই তো, সিনেমাই তো! 
সবাই যদি বুঝতো! আসলেই হিসাব টা কত জটিল!
📌১৫ বছরের একটা কিশোর ছেলে একজন নারীর দিকে কোন চোখে তাকাবে সেই সিদ্ধান্তের বিরাট অংশের সাথে নাটক সিনেমা সাহিত্য এবং গান ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে।
মূলত ২ টা জিনিস তার ডেভলপিং ব্রেইনের জন্যে ভয়ংকর - 
১)নারীকে বিভিন্ন শিল্প মাধ্যমে অধিকাংশ সময়েই সস্তা, ছ্যাবলা একটা অবলা হিসেবে দেখা 
২) নারীকে সে**ক্সুয়ালি অবজেক্টিফাইড পন্য হিসেবে দেখা।
একজন কিশোরীর জন্যে সেটা অসুস্থকর।
কিভাবে? সেটা লিখতে গেলে বই হয়ে যাবে!
📌যদিও বলা হয়, গান / সাহিত্য / সিনেমা / চিত্রশিল্প নাকি জীবন বা সমাজের ই বহি:প্রকাশ।
আপনি মিলাতে গেলে বুঝবেন, এই যুক্তিটা আসলে একটা ঢাল ছাড়া কিচ্ছু না!
যার কাছে হেরে গিয়ে আপনি কোন ধরনের শিল্পের ই 'শালীনতাবোধ' নিয়ে ভুল-শুদ্ধের প্রশ্ন তুলেই সুবিধা করতে পারবেন না।
কিন্তু যে দেশের অডিয়েন্সের জন্যে শিল্পটার প্রাথমিকভাবে জন্ম তার সামাজিক,পারিবারিক বা ধর্মীয় কতগুলো সেন্সিটিভিটি থাকতে পারে। 
শিল্পের নামে কোন এক্সটেন্টে সেই বাউন্ডারিটা ক্রস করা যায় - এটা কে ডিসাইড করবে? 
📌'শিল্পের প্রয়োজন এ দেখানো' জিনিসটা আসলে কি এবং কতটুকু সেটা ডিফাইন করা বা মাপার কোন যন্ত্র না থাকলেও, আমাদের একটা আন্দাজ করার ক্ষমতা আছে। তার মধ্যে থাকলে প্রশ্ন ওঠেনা।
কিন্তু যখন সেটা out of context, desperate এবং বিশ্রী রকম explicit তখন এগুলো বুঝতে কোন রকেট সায়েন্টিস্ট হবার দরকারই পড়েনা।এতোটা খালি চোখেই দেখা যায়।
শিল্পে ততটুকুন আসুক যতটুকু দরকার।
আমরা সাধুবাদ দেব।এখনকার শিল্পীরা অসম্ভব মেধাবী। তারা রুচিহীনতার ট্রেন্ড টা চাইলেই ঘুরিয়ে দিতে পারেন বলে আমার বিশ্বাস।
📌আমাদের প্রতিরোধ টা তাই পুরোপুরি থেমে থাকা উচিত না।
দর্শক হিসেবে আপনার আমার ভূমিকা কে ছোট ভাবার কোন কারন নাই। 
আপনি একা অবশ্যই নোংরামি থামাতে পারবেন না।