30/05/2025
শক্তি নির্বাচন (পটেন্সি সিলেকশন)
(জর্জ ভিথুলকাসের "দ্য সায়েন্স অফ হোমিওপ্যাথি" বইটিতে বিভিন্ন শক্তির ওষুধ তৈরির বিষয়ে বিস্তারিত পড়তে পারেন)।
পটেন্সির প্রকারভেদ:
ক) ডেসিমাল/দশমিক পটেন্সি
ডাইলুশনশন ডি / D বা X (রোমান নম্বর ১০) দিয়ে নির্দেশিত হয়। যেমন: D6, D12, D24, 1X, 2X,200X ইত্যাদি।
খ) সেন্টিসিমাল/শততমিক পটেন্সি
ডাইলুশনশন সি/C দিয়ে নির্দেশিত হয়।
যেমন: C30, C200 ইত্যাদি।
সর্বাধিক ব্যবহৃত সি পটেন্সির হলো: 30, 200, 1000 (1M), 10 000 (10M), 50 000 (50M) এবং 100 000 (CM)।
গ) 50-মিলিসিমাল/ ৫০ সহস্রতমিক পটেন্সি
ডাইলুশন LM/এলএম দিয়ে নির্দেশিত হয়। যেমন: 6 LM, 12 LM, 30LM ইত্যাদি।
এলএম পটেন্সিকে 0/1,0/2,0/3…. বা Q1,Q2,Q3,.... এভাবেও লেখা হয়।
Q= কুইন পটেন্সি
নোট:
ক) শততমিক ওষুধে ৩০ শক্তি পর্যন্ত তৈরিতে হ্যানিম্যান এর তরলীকরণ এবং ঝাঁকান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, তখন CH দিয়ে লেখা হয়। যেমন: 12 CH, 30 CH ইত্যাদি।
CH= সেন্টিসিমাল হ্যানিম্যানিয়ান]।
খ) 30 শক্তি থেকে উচ্চ শক্তির ওষুধ তৈরিতে কর্সাকভ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় (যান্ত্রিকভাবে)।
তখন CK বা K দিয়ে লেখা হয়, যেমন: 30CK, 200CK অথবা 30K, 200K ইত্যাদি।
গ) ১২ সি বা ২৪ ডি (২৪ এক্স) এর নিচেট পটেন্সিতে মুল ভেষজের কিছু উপাদান বর্তমান থাকে। কিন্তু উচ্চতর শক্তির ওষুধে মূল উপাদানের কোনও অণুও বর্তমান থাকে না- কেবল ওষুধজ শক্তি উপস্থিত থাকে।
ঘ) সবচেয়ে ব্যবহৃত শক্তি: ৩০,২০০,১এম, ১০এম, ৫০এম এবং কিছু ক্ষেত্রে সিএম।
উপরে উল্লেখিত উচ্চ শক্তি ছাড়াও, প্রতিদিন একবার করে ১০, ২০ বা ৩০ দিনের জন্য ৬সিএইচ বা ১২সিএইচ শক্তি ব্যবহার করা হয়।
এছাড়া বায়োকেমিক ৬এক্স বা ১২এক্স শক্তি বেশি ব্যবহৃত হয়।
★শক্তি: সাধারণ নিয়ম:
সাধারণ নিয়ম হল: যখন কোনও ওষুধ সঠিক হয়, তখন এটি সর্বদাই কাজ করবে, শক্তি যাই হোক না কেন। তবে ওষুধটি কত গভীর এবং কতক্ষণ কাজ করবে তা ওষুধের শক্তির উপর নির্ভর করে।
একটি হোমিওপ্যাথিক ওষুধকে একটি এলার্জেনের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে।
যেমন: কোন এলার্জিক রোগী কেবল বিড়াল যে কক্ষে আছে ঐ কক্ষে প্রবেশ করার সাথে সাথেই হাঁচি শুরু হয়ে যেতে পারে, যদিও বিড়ালটি এখনো পাঁচ ফুট দূরে আছে। সুতরাং, এটি এলার্জেনের পরিমানের উপর নির্ভর করে না(পরিমানগত নয়/ নট কোয়ানটিটেটিভ ), বরং এলার্জেনের প্রতি সংবেদনশীলতাই দায়ী (গুনগত/কোয়ালিটেটিভ)। হোমিওপ্যাথিতেও, সঠিক ওষুধের গুণমানটি সঠিক প্রতিক্রিয়া শুরু করবে, শক্তিটির পরিমাণ নয়।
শক্তি যত বেশি হবে, ওষুধের ক্রিয়া তত গভীর এবং দীর্ঘস্থায়ী হবে।
নিম্ন শক্তি শারীরিক স্তরে কাজ করে কিন্তু আবেগীয় এবং মানসিক স্তরে তেমন কাজ করতে পারে না।
একটি উচ্চ শক্তি অনায়াসেই মানসিক এবং আবেগীয় স্তরে কাজ করে।
সুতরাং ওষুধের শক্তি নির্বাচন রোগের গভীরতার উপর নির্ভর করে হওয়া উচিত। উপরন্তু, জীবের শক্তি এবং রোগীর সংবেদনশীলতাও অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে।
একটি সাধারণ নির্দেশিকা:
শারীরিক সমস্যা: 200 শক্তি
আবেগীয় সমস্যা: ১এম শক্তি
মানসিক সমস্যা: ১০এম শক্তি।
★সমস্ত পটেন্সির জন্য উপদেশ:
যদি একটি নির্দিষ্ট শক্তির ওষুধ ভালভাবে কাজ করে, তবে শক্তি বাড়ানোর আগে সর্বদা একই শক্তি পুনরাবৃত্তি করুন।
আপনি যদি একই শক্তির ওষুধ দুইবার দিয়ে থাকেন, তাহলে আপনি এক ডিগ্রী শক্তি বৃদ্ধি করতে পারেন (যেমন: ৩০ থেকে ১এম এ পরিবর্তন করবেন না, কিন্তু ৩০ এর পর ২০০ দিন)।
যদি একটি ওষুধ ভালো কাজ করে এবং কোনভাবে ক্রিয়া নষ্ট হয়(এন্টিডোট), তাহলে আগের মত একই শক্তি পুনরাবৃত্তি করুন।
যদি কোনও প্রতিষেধকের প্রভাব না থাকে এবং দ্রুত রিল্যাপস হয়, একই শক্তি পুনরাবৃত্তি করুন এবং বিপজ্জনক বা দুরারোগ্য রোগের সন্দেহ করুন।
যদি দীর্ঘ সময়ের পরে পুনরায় রোগ ফিরে আসে,তাহলে আপনি একটি উচ্চতর শক্তি ব্যবহার করতে পারেন, বা একই শক্তি পুনরাবৃত্তি করতে পারেন।
যদি আপনি নিশ্চিত না হন যে একটি প্রতিষেধক ছিল, তাহলে একই শক্তি পুনরাবৃত্তি করুন।
২য় এবং ৩য় ওষুধের জন্য পরামর্শ:
* যদি প্রথম ওষুধটি পুরোপুরি যথাযথভাবে কাজ করে এবং এরপর আপনি একটি পরিপূরক ওষুধের পরিষ্কার চিত্র পান কিন্তু সমস্যাটি আরও পেরিফেরাল(আঙ্গিক), তাহলে একটি কম শক্তির পরিপূরক ওষুধ দিন।
যেমন: ক্যালক ১০০০ এর পরে রোগী সার্বিকভাবে ভালো আছে, কিন্তু পরে রাসটক্সের আঙ্গিক লক্ষণ প্রকাশ পায়, এক্ষেত্রে রাস টক্স ৩০ বা ২০০ দিন।
* যদি প্রথম প্রয়োগকৃত ওষুধটি কাজ না করে এবং পরে একটি খুব স্পষ্ট বিকল্প ওষুধ চিত্র দেখতে পান, তাহলে উচ্চতর শক্তি দিন।
যেমন: সালফার ১০০০কাজ করেনি, কিন্তু পরে স্পষ্ট পালসেটিলার চিত্র প্রকাশ পেয়েছে, পালসেটিলা ১০ এম দিন।
* যদি ইতিমধ্যে কোন ফলাফল ছাড়াই (ওষুধ কাজ করেনি) ২ বা ৩টি ওষুধ দিয়ে থাকেন, তবে কম শক্তির ওষুধ দেওয়া উচিত (প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জীবকে উদ্দীপিত করবেন না)।
* যদি একটি ওষুধ ভালো কাজ করে, কিন্তু তা শুধুমাত্র উপরিভাগে(সুপারফিশিয়াল- কেসের গভীরে তেমন কাজ করেনি), এবং এরপর একটি নতুন ওষুধচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে, তাহলে একটি কম বা একই শক্তির ওষুধ দিন।
ভাসাভাসা কাজ করা ওষুধটি পরবর্তী ওষুধের পথ খুলে দিলো।
* ৩ বছর ভালো ফলাফল সহ সুপারফিশিয়াল চিকিৎসার পরে, হঠাৎ একটি সুস্পস্ট গভীর ক্রিয়াশীল ওষুধচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে, এটি উচ্চ শক্তিতে দিতে পারেন।
★আপনি যে শক্তি দিবেন তা নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর উপর নির্ভর করে:
রোগের ধরণ এবং রোগের গভীরতা (মানসিক, আবেগীয় বা শারীরিক)
জীবের শক্তি এবং এর শক্তির অবস্থা (বৃদ্ধ, দুর্বল ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে, গুরুতর হার্টের রোগে নিম্ন শক্তি দিয়ে শুরু করা উচিত)
রোগটি কি শান্ত অবস্থায় আছে, নাকি একটি ফ্লেয়ার-আপ (উপসর্গের বৃদ্ধিজনিত অবস্থা) অবস্থায় আছে? ফ্লেয়ার আপের ক্ষেত্রে একটি উচ্চ শক্তি দিন।
রোগী কি অন্য কোন ওষুধ সেবন করেন? (প্রতিষেধক?)
রোগী দীর্ঘদিন ধরে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় আছেন নাকি?
★কিছু ওষুধের পটেন্সি সম্পর্কে সতর্ক থাকুন:
ত্বকের সমস্যায় ল্যাকেসিস নিম্ন শক্তিতে দিন।
হার্টের সমস্যা বা নিম্ন রক্তচাপের ক্ষেত্রে নোসড নিম্ন শক্তিতে দিন (সর্বোচ্চ ৩০ বা ২০০)।
গুরুতর মানসিক পরিস্থিতিতে ভারী ওষুধ (Heavy remedy) বরং কম শক্তিতে দিন যেমন: অরাম মেট, এসিড ফস, এসিড মিউর, জেলস, প্লাম্বাম মেট, হেলিবোরাস
গুরুতর একিউট পরিস্থিতিতে, কিছু ওষুধ উচ্চ শক্তিতে দেওয়া উচিত।
যেমন: ইগ্নেশিয়া, আর্নিকা, বেলাডোনা,একোনাইট, ব্রায়োনিয়া।
দুর্বল ব্যক্তি বা একটি ক্লাত জীবের ক্ষেত্রে: কম শক্তি পছন্দ করুন, যেমন: এসিড মিউর।
যদি একজন রোগী গুরুতরভাবে, অচির রোগে অসুস্থ হয় এবং একটি পরিষ্কার ওষুধ চিত্র দেখা যায়, যদি অর্গানিজম শক্তিশালী হয় তবে একটি উচ্চ শক্তির ওষুধ দিন (যেমন: একজন রোগী ইতিপূর্বে যার সফলভাবে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করা হয়েছে)। যদি জীব দুর্বল হয়, নিম্ন শক্তি দিন।
★আপনি কখন ১২সিএইচ শক্তি ব্যবহার করবেন?
৫০% এর রিল্যাপসের ক্ষেত্রে এবং যখন আপনি সম্ভবত অপেক্ষা করতে পারবেন না, তখন ২০ বা ৩০ দিনের জন্য প্রতিদিন ১২ সিএইচ শক্তি দিতে পারেন।
যে সমস্ত রোগীরা শক্তিশালী এলোপ্যাথিক ওষুধ খান বা যারা এলোপ্যাথিক ওষুধ বন্ধ করতে চান না, ফলে রিল্যাপস হয়।
বৃদ্ধ ও দুর্বল রোগীদের ক্ষেত্রে।
গুরুতর সমস্যা সহ দুর্বল রোগীদের ক্ষেত্রে যারা চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে অচির রোগে আক্রান্ত হন - দৈনিক ৩ বার করে ১২ শক্তি ২ বা ৩ দিনের জন্য দিতে পারেন। এর মধ্যে ওষুধচিত্র বদলায় কিনা লক্ষ্য রাখুন।
যদি একটি ওষুধ ২০০, ১এম বা ১০এম শক্তিতে ভালো কাজ করে এবং হঠাৎ করে আর কাজ করছে না এমন হয়- তাহলে ১ মাসের জন্য প্রতিদিন ১বার করে ১২ শক্তি দিতে পারেন এবং অন্য ওষুধ চিত্র প্রকাশিত হয় কিনা তা লক্ষ্য করুন পারেন। এক্ষেত্রে প্রতি সপ্তাহে একবার করে ৩০ শক্তিও দিতে পারেন। কখনও কখনও, ১২ শক্তির একটি ডোজ দিয়ে বিশাল উন্নতি দেখতে পাবেন, এই ক্ষেত্রে রোগীকে অবশ্যই ওষুধ গ্রহণ করা বন্ধ করতে হবে। অথবা যদি ১২ শক্তির ডোজে সমস্যা বৃদ্ধি পায়, তাহলেও ওষুধ প্রয়োগ থামাতে হবে।
যদি কোন রোগী অন্য হোমিওপ্যাথের থেকে আসেন, যিনি অনেকগুলো ওষুধ ইতিমধ্যে সেবন করেছেন এবং এরমধ্যে একটি ওষুধ ভালো কাজ করেছে। কিন্তু ঐ ওষুধের শক্তি বলতে পারছেন না বা মনে নেই, তাহলে আপনি নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন:
পূর্বোক্ত চিকিৎসক থেকে ওষুধের পটেন্সি জেনে নিন।
অথবা, সংশ্লিষ্ট ওষুধের একটি ১০এম ডোজ দিন।
যদি কোন উন্নতি না হয় তবে এক মাসের জন্য প্রতিদিন ১২ শক্তি দিন।
যদি তাতেও কোন উন্নতি না হয়, তাহলে অন্য ওষুধ সন্ধান করুন।
যদি কোনও ওষুধ উচ্চ শক্তিতে পুরোপুরি ভালো কাজ করে এবং রোগী আবার আগের মতো একই একই সমস্যায় ভূগে- তাহলে এক মাসের জন্য প্রতিদিন ১২ শক্তি দিন।
নিম্নলিখিত ওষুধগুলো কখনোই ১২ শকৃতিতে বারবার দেবেন না:
নোসোড: টিউবার, মেডো, কার্সি, সিফিলিনাম ইত্যাদি।
বিষ: ল্যাকেসিস, ক্রোটেলাস এইচ, ক্রোটেলাস সি, এপিস, বেলাডোনা, আর্স এলব ইত্যাদি।
কোনিয়াম, হায়োস
ক্যামোমিলা, এসিড নাইট।
★ আপনি কখন ৩০সিএইচ শকৃতি ব্যবহার করবেন?
- বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে, আপনি ৪ সপ্তাহের জন্য প্রতি সপ্তাহে একবার করে ৩০ শক্তি দিয়ে শুরু করতে পারেন। যদি একটি ডোজ সেবনের পরে উন্নতি হয়, তাহলে অবশ্যই পুনপ্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। পরবর্তীতে পুনরায় আক্রমন ঘটলে, 200 শক্তিতে পরিবর্তিত হতে পারেন।
- জীবন-হুমকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে, এমনকি যদি ওষুধচিত্র স্পষ্টও হয়, (যেমন: হার্টের সমস্যা)।
- স্পস্ট ওষুধ চিত্রহীন গুরুতর পরিস্থিতিতে।
- সালফার, মেডো, ল্যাকেসিস মেডিসিন শুরু করার জন্য ৩০ শক্তি একটি উত্তম শক্তি, বিশেষ করে চর্মরোগে যখন সালফার প্রয়োগ করতে হয়। যদি প্রদত্ত ওষুধটি ভুল হয় কম শক্তির হয় তবে কম বৃদ্ধিজনিত সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
- পূর্ববর্তী ওষুধে যদি গুরুতর বৃদ্ধির ঘটনা ঘটে থাকে, তবে পরের বার ৩০ শক্তি দিতে হবে।
- যাদের শরীরে সহজে মেডিসিন প্রুভিং শুরু
হয়ে যায়।
- যারা হোমিওপ্যাথি সম্পর্কে সবকিছু জানেন এবং ওষুধ সেবন পরবর্তী উপসর্গের বৃদ্ধির ভয় পান।
- যদি ওষুধটি নিখুঁতভাবে কাজ করে এবং রোগীর হঠাৎ অন্য একটি ওষুধের স্পষ্ট লক্ষণচিত্রসহ একটি অচির রোগ দেখা দেয় (যেমন: সার্সাপ্যারিলার লক্ষণ সহ একিউট সিস্টাইটিস)।
- যদি ওষুধ চিত্র পরিষ্কার না হয় এবং আপনি নিশ্চিত না হন।
- বিরক্তিকর, খামখেয়ালি এবং অতি-সমালোচনাকারী রোগী যারা হোমিওপ্যাথির ওষুধ চান কিন্তু যারা প্রকৃতপক্ষে হোমিওপ্যাথির পক্ষে নন এবং যারা ন্যূনতম সমস্যা বা এগ্রাভেশনের জন্য এলোপ্যাথ বা হাসপাতালে যাবেন।
- দুর্বল ব্যক্তিদের অচির রোগে বা গুরুতর সমস্যায়, যা একদিনে নিরাময় করা সম্ভব না। আপনি 30 শক্তির কয়েকটি বড়ি পানিতে দ্রবীভূত করে রোগীকে এক বা দুই দিনের জন্য প্রতিদিন এক চামচ করে ৩ বার সেবন করতে দিতে পারেন (ফ্রাকশনাল ডোজ)।
[নোট: ৩০ শক্তি পর্যন্ত, সিএইচ শক্তি ব্যবহার করা উচিত।৷ এগুলি হাতে তৈরি করা সহজ। ২০০ থেকে উচ্চতর শক্তি, K (Korsakov) শক্তি ব্যবহার করুন যা মেশিন দ্বারা উৎপাদিত হয়। ]
★আপনি কখন ২০০ শক্তি ব্যবহার করবেন?
- প্রথম সাক্ষাৎকারের পরে প্রেসক্রিপশন শুরু করার সবচেয়ে কমন শক্তির ওষুধ ২০০ শক্তি। যদি হোমিওপ্যাথিক ওষুধ চিত্র এতটা পরিষ্কার না হয়, অবশ্যই উচ্চতর শক্তি দেয়া উচিত নয়।
প্রারম্ভিক হোমিওপ্যাথদেরও উচ্চ ক্ষমতার ওষুধ দেওয়া উচিত নয়।
- ভারী ওষুধের ক্ষেত্রেও, ২০০ এর বেশি প্রেসক্রাইব না করা ভালো, যেমন: এসিড মিউর, এসিড ফস, হেলিবোরাস, প্লাম্বাম মেট, জিঙ্কাম মেট, এলুমিনা, স্ট্যানাম মেট ইত্যাদি।
- আপনি যদি ২০০ দিয়ে শুরু করেন, তবে ভবিষ্যতে আপনার কাছে রিজার্ভ হিসাবে কিছু উচ্চ ক্ষমতার ওষুধ অবশিষ্ট আছে।
- যদি ফলাফল ছাড়াই বেশ কয়েকটি ওষুধ ইতিমধ্যে দিয়ে থাকেন তবে পরবর্তী ওষুধ দেয়ার ক্ষেত্রেও ২০০ শক্তিতে লেগে থাকুন এবং উচ্চতর শক্তি দিবেন না।
- যদি ১এম প্রয়োগে দুবার ভালো প্রতিক্রিয়া হয় এবং তৃতীয়বার কোনও প্রতিক্রিয়া না হয়, তবে আপনি ১০এম (এক ডিগ্রি বেশি) দিতে পারেন, যদি ১০এম কোনও কাজ না করে, তবে উক্ত ওষুধটি ছেড়ে দেওয়ার আগে ২০০ শক্তি প্রয়োগ করে দেখতে হবে (যখন কোন একটি ওষুধ ভালো করে, তখন তাকে দ্রুত পরিবর্তন করবেন না)।
- অচির রোগের ক্ষেত্রে, আপনাকে ২০০ দিয়ে শুরু করতে হবে।
শিশুদের ক্ষেত্রে অচির রোগে যদি খুব স্পষ্ট চিত্র পান তাহলে প্রয়োজনে ১এম দিতে পারেন।
অচির রোগে শুধুমাত্র আর্নিকা বা একোনাইট উচ্চতর শক্তিতে প্রয়োগ করতে হবে।
★ আপনি ১এম কখন ব্যবহার করবেন?
- খুব সুস্পষ্ট ওষুধ চিত্রসহ শক্তিশালী জীবনীশক্তি সম্পন্ন রোগীদের প্রথম প্রেসক্রিপশনে।
- শিশুদের প্রথম প্রেসক্রিপশনে যখন ওষুধ চিত্র খুব স্পষ্ট হয়।
- আবেগীয় বা মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রে (যেমন: স্ট্যাফিসেগ্রিয়া বা ইগ্নেশিয়া)।
- রোগী দীর্ঘদিন ধরে এলোপ্যাথিক ওষুধ ব্যবহার করলে।
- একিউট পরিস্থিতিতে আর্নিকা বা একোনাইট।
- যখন নিম্ন শক্তি আর কোন কাজ করছে না।
- শিশুদের বেলাডোনা বা ব্রায়োনিয়া ওষুধ চিত্র প্রকাশিত হলে।
★আপনি কখন ১০ এম ব্যবহার করবেন?
- ইমোশনাল সমস্যার ক্ষেত্রে যখন একটি পরিষ্কার ওষুধ চিত্র থাকে।
- মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রে।
- যখন নিম্ন শক্তি আর কোন কাজ করছে না।
- গুরুতর অচির রোগে নিম্ন ক্ষমতা ব্যবহার করার পরে (যেমন: নিউমোনিয়া, পাইলোনেফ্রাইটিস)।
- সাইকোলজিক্যাল সমস্যা বা মৃগী রোগে আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে যাদের একটি শক্তিশালী ওষুধ প্রয়োজন, যেমন: বেলাডোনা, ভিরেট্রাম এলব, স্ট্র্যামোনিয়াম, হায়োসিয়ামাস।
★আপনি কখন ৫০এম ব্যবহার করবেন?
- যখন ইতিমধ্যে নিম্ন ক্ষমতা ব্যবহার করা হয়ছে (নোসোড ছাড়া)।
- মানসিক সমস্যায়।
- মনস্তাত্ত্বিক বা মানসিক সমস্যাযুক্ত শিশুদের ক্ষেত্রে।
- সাবডুরাল হেমাটোমায় আর্নিকা ৫০ এম দিন।
- যদি সালফার প্রয়োগের পরে খুব শক্তিশালী প্রুভিং লক্ষণ প্রকাশ পায়, আপনি ৫০এম দিয়ে প্রতিষেধক করতে পারেন।
- খুব ভালো প্রতিক্রিয়ার পরেই যদি একটি পরিপূরক ওষুধের একটি নিখুঁত চিত্র পান এবং রোগী মানসিকভাবে ভুগছেন, তাহলে আপনাকে অবিলম্বে ৫০এম দিতে হবে।
যেমন: রোগী আর্স এলবাম এ খুব ভালো ছিলেন এবং যিনি এখন ফসফরাসের ভয় এবং স্পষ্ট লক্ষণচিত্র সহ খুব অসুস্থ।
[ নোট: নোসোড ৫০ এম বা সিএম শক্তি দেওয়া উচিত নয়। যদি তারা কাজ করে, তাদের কাজ করতে দাও, নোসড সাধারণত একটি মায়াজমেটিক লেয়ার সরিয়ে দিবে এবং এইভাবে পরবর্তী ওষুধের পথ পরিষ্কার করবে ]
★আপনি কখন সিএম শক্তি ব্যবহার করবেন?
- যতটা সম্ভব সিএম-এর ব্যবহার সীমিত করার পরামর্শ ।
- তবে আপনি এটি ব্যবহার করতে পারেন, যখন নিম্ন শক্তির ভালো করেছিলো এবং যদি তারা এখন আর কাজ না করে।
- প্রবল মানসিক সমস্যার কেসে সিএম দিতে পারেন।
★উচ্চ শক্তি ওষুধের পুনরাবৃত্তি:
- নোসোড (টিউবারকুলিনাম, মেডোরিনাম, কার্সিনোসিনাম, সিফিলিনাম) এবং ল্যাকেসিস উচ্চ শক্তিতে দ্রুত পুনরাবৃত্তি করা অনুচিত। অন্ততপক্ষে ৩-৪ মাস অপেক্ষা করতে হবে এবং প্রয়োজনে এই মধ্যবর্তী সময়ে অন্য ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন।
- উচ্চ শক্তির ভুল ওষুধ সহজেই লক্ষণ চাপা দিতে পারে, শক্তি যত উচ্চতর হবে, অবদমনের সময়কাল তত দীর্ঘ হবে।
- ভুল ওষুধ উচ্চ শক্তিতে বারবার পুনরাবৃত্তি করলে কেসে বিশৃঙ্খলা বা বিভ্রান্তি দেখা দিবে, ঐ কেসে আর সঠিক ওষুধ খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে না। ফলে অনারোগ্য কেসে পরিনত হবে।
সুতরাং, ওষুধ চিত্র সুস্পষ্ট না হলে উচ্চতর শক্তি প্রয়োগ করা উচিত নয়।
(জর্জ ভিথুলকাস, ভেসেলিস গিগাস, ডেভিড লিটল অবলম্বনে)