03/02/2023
কোমর ব্যথার কারণ...
**লাম্বার স্পনডাইলোসিস-
কোমরে পাঁচটি হাড় আছে। এই হাড়গুলো যদি বয়সের কারণে বা বংশগত কারণে ক্ষয় হয়ে যায়, তখন তাকে লাম্বার স্পনডাইলোসিস বলে।
**পিএল আইডি-
কোমর ব্যথার অন্যতম কারণ পিএল আইডি। ৩০ থেকে ৪০ বছর যাদের বয়স তাদের এ সমস্যাটি হতে পারে। মানুষের হাড়ের মধ্যে ফাঁকা জায়গা থাকে। এই ফাঁকা জায়গাটি পূরণ থাকে তালের শাঁসের মতো ডিস্ক বা চাকতি দিয়ে। এই চাকতি যদি কোন কারণে বের হয়ে যায়, তখন স্নায়ুর ওপরে চাপ পরে। যার ফলে কোমরে ব্যথা তৈরি হয়।
** নন স্পেসিফিক লো ব্যাক পেইন-
মূলত অনির্দিষ্ট কারণে হাড়, মাংসপেশি, স্নায়ু তিনটি উপাদানের সামঞ্জস্য নষ্ট হলে এই ব্যথা হয়। এই সমস্যাটি তরুণ বয়সে বেশি হয়ে থাকে।
****অন্যান্য কারণ-
এছাড়া বিভিন্ন কারণে কোমরে ব্যথা হয়। মেরুদন্ডের টিউমার ও ইনফেকশন হলে কোমরে ব্যথা হয়। মাংসপেশি শক্ত হয়ে গেলে বা মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়লে কোমরে ব্যথা হয়। শরীরের ওজন বেড়ে গেলে কোমরে ব্যথা হয়। একটানা হাঁটলে বা দাঁড়িয়ে থাকলে কিংবা কোলে কিছু বহন করলে কোমরে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কোমর ব্যথার লক্ষণঃ
কোমর ব্যথার লক্ষণ, যা কোমরের পেছন দিয়ে ঊরুর পেছন দিয়ে, কাফ মাসেলের পেছন দিয়ে পায়ের বুড়ো আঙ্গুল বা ছোট আঙ্গুলে চলে আসে। এছাড়াও কিছু সাধারণ উপসর্গ আছে, যেমনঃ আপনার দীর্ঘ সময়ের জন্য বসে বা দাঁড়িয়ে থাকলে ব্যথা আরও খারাপ হওয়া। অনেক সময় ব্যথা পা এবং হাঁটুতে ছড়িয়ে পড়ে। উঠতে ও বসতে পিঠে সারাক্ষণ ব্যথা হওয়া।
*****অল্প বয়সেই কোমর ব্যথা কেন হয়?
১. যারা অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে একই ভঙ্গিতে কাজ করেন। এতে দেখা যায়, কোমরে ব্যথা বেড়ে যায়।
২. বসার চেয়ার টেবিল ঠিকমতো না হলে বা ঠিকমতো না বসলে বা সামনে-পেছনে ঝুঁকে বসলে কোমরে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
৩. দীর্ঘক্ষণ ড্রাইভিং করলে বা বেশি সামনে ঝুঁকে গাড়ি চালালে কোমর ব্যথা হতে পারে। ড্রাইভিংয়ের সময় পেছনে কিছু সাপোর্ট নেওয়া উচিত।
৪. যারা শুয়ে বা কাত হয়ে বই পড়েন বা অন্য কাজ করেন, তাদের মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অল্প বয়সেই কোমর ব্যথা অনুভূত হয়।
৫. অনেকেই আছেন যারা কোনো ভারী জিনিস সঠিক নিয়মে তোলেন না। ফলে মেরুদণ্ডে অস্বাভাবিক চাপ পড়ে এবং তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্যথা হয়।
............ উপসর্গ...............
*প্রথমে কোমরে অল্প ব্যথা থাকলেও ধীরে ধীরে ব্যথা বাড়তে থাকে।
*অনেক সময় হয়তো রোগী হাঁটতেই পারে না।
*ব্যথা কখনও কখনও কোমর থেকে পায়ে ছড়িয়ে পড়ে।
*পায়ে ঝিনঝিন ধরে থাকে।
*অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকলে এ ব্যথা কিছুটা কমে আসে।
*কোমরে সামান্য নড়াচড়া হলেই এ ব্যথা বেড়ে যায়।
*সকালে ঘুম থেকে উঠে পা ফেলতে সমস্যা হতে পারে।
*হাঁটতে গেলে পা খিঁচে আসে বা আটকে যেতে পারে।
*ব্যথা দুই পায়ে বা যেকোনো এক পায়ে নামতে পারে।
*কোমরের মাংসপেশি কামড়ানো ও শক্ত ভাব হয়ে যাওয়া।
*পা অবশ ও ভারী হয়ে যায়, পায়ের শক্তি কমে যায়।
*প্রাত্যহিক কাজে, যেমন- নামাজ পড়া, তোলা পানিতে গোসল করা, হাঁটাহাঁটি করা ইত্যাদিতে কোমরে ব্যথা হয়।
****ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার মাধ্যমে কোমর ব্যথা সম্পূর্ণ ভাল হয়।