27/05/2025
অনেক বড় একটা কোম্পানী হঠাৎ করে ব্যবসায় লোকসান করে বসলো। এক দুপুরে সেই কোম্পানীর কর্মচারীরা বাইরের ক্যান্টিনে লাঞ্চ করে ফেরার সময় অফিসের প্রবেশমুখে একটি নোটিশ দেখতে পেল। নোটিশে লেখা ছিল, ‘আমাদের কোম্পানীর লোকসানের জন্য যে ব্যক্তিটি দায়ী, সে গতকাল মারা গেছে। সেমিনার রুমে একটি কফিনে তার লাশ রাখা হয়েছে। যে কেউ তা দেখতে চাইলে আমন্ত্রিত।’ একজন সহকর্মীর মত্যুর খবর শুনে প্রথমে লোকেরা দুঃখ পেল।
তবে এরপর তারা কৌতুহলী হয়ে উঠলো এই ভেবে যে ’আসলে কে সেই লোক যে আমাদের সাফল্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল? ।একে একে তারা যখন কফিনের কাছে গেল এবং ভেতরে তাকালো হঠাৎ তারা কেমন যেন বাকশূন্য হয়ে গেল, হতভম্ভ হয়ে গেল। যেন তাদের খুব আপন কারো লাশ সেখানে রাখা ছিল। কফিনের ভেতর আসলে রাখা ছিল একটা আয়না। যে ভেতরে তাকিয়েছিলো সে তার নিজের চেহারাই দেখতে পাচ্ছিলো। আয়নার একপাশে একটা কাগজে লেখা ছিল, তোমার সাফল্যের পথে বাধা দিতে সক্ষম শুধুমাত্র একজনই আছে গোটা পৃথিবীতে, আর সে হচ্ছো ‘তুমি’ নিজে।
তুমিই সেই একমাত্র ব্যক্তি যে তোমার জীবনে পরিবর্তন আনতে পারে, তোমাকে সুখী করতে পারে, তোমাকে সাহায্য করতে পারে, —তোমার জীবন তখন বদলে যায় না, যখন তোমার অফিসের বস বদলায়, যখন তোমার অভিভাবক বদলায়, তোমার বন্ধুরা বদলায়......
, তোমার জীবন তখনই বদলায় যখন তুমি নিজে বদলাও।
তোমার সক্ষমতা সম্পর্কে তোমার নিজের বিশ্বাসের সীমাটা যখন তুমি অতিক্রম করতে পারো, শুধু তখনই তোমার জীবন পরিপূর্ণ হয়ে উঠে
(২৫) এক গ্রামে দুই বন্ধু ছিল। একজনের বয়স ৬, অন্যজনের বয়স ৯ বছর। একদিন দুইবন্ধু একসাথে গোসল করতে গিয়ে ৯ বছরের বন্ধুটি পানিতে পড়ে গেলো। বন্ধুটি ডুবে যাচ্ছে দেখে, ৬ বছরের বন্ধুটি পাশে রাখা দড়িবাধা বালতিটিকে দ্রুত জলের মধ্যে ছুড়ে দিল। এরপরে ৯ বছরের বন্ধুটি ধরে ফেলল। ৬ বছরের বাচ্চাটা নিজের সর্বোচ্চ জোর লাগিয়ে তার বন্ধুটিকে পাড়ে টেনে তুলল।
বাড়িতে এসে যখন তারা ঘটনাটা সবাইকে বলল কেউ বিশ্বাস করল না। ৯ বছরের বন্ধুটির যে ওজন তা একা টেনে ওঠানোর ক্ষমতা ৬ বছরের বাচ্চাটার থাকার কথা না। তাই কেউই তাদের কথা বিশ্বাস করল না।
ঐ গ্রামে একজন জ্ঞানী বুজুর্গ লোক ছিল। সবাই লোকটাকে সম্মান করত। এই লোকটা কিন্তু বাচ্চা দুটোর কথা বিশ্বাস করে নিয়েছিল। এমন একজন জ্ঞানী মানুষ কথাটা বিশ্বাস করে নিল, তখন সবার মনে হল, নিশ্চই এর মাঝে কোন ব্যাপার আছে। গ্রামের লোক গুলো এবার সেই লোককে গিয়ে বলল, জনাব আপনি একটু বুঝিয়ে বলুন তো কি ঘটেছিল? জ্ঞানী লোকটা বললেন- আমি কি বলব? বাচ্চারা বলছে না? ওরা যা বলছে তাই ঘটেছিল। আর কি ঘটবে?
এবার কেউ কেউ সেই জ্ঞানী লোককেও অবিশ্বাস করে বসল। কেউ কেউ বলল, আপনি বুঝিয়ে বলুন কি করে ৬ বছরের এই বাচ্চা ৯ বছরের এই বাচ্চাকে জল থেকে টেনে তুলল? এটা কি সম্ভব নাকি?
জ্ঞানী লোকটি বললেন- সম্ভব। কারণ বাচ্চাটা যখন এই কাজটি করছিল, তখন তার আশপাশে কেউই ছিল না এটা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার মত যে, "তোমার দ্বারা এটা সম্ভব না"। ... মানুষের জীবনী শক্তির অধিকাংশই শেষ হয়ে যায় শুধু পাশের মানুষের নেগেটিভ কথা শুনতে শুনতে। লক্ষ্য করে দেখবেন, আপনি যখন কোন ভালো কাজ করতে যাচ্ছেন, তখন একগাদা মানুষ জড় হয়ে আপনাকে নিরুৎসাহিত করবে। একটি কাজের শুরুতে অন্তত শতবার আপনাকে শুনতে হবে যে, এটা তুমি পারবে না, তোমার দ্বারা হবে না, তোমার দ্বারা সম্ভব না, এটা খুব কঠিন, এটা খুব অসম্ভব, এভাবে হয় না ইত্যাদি ইত্যাদি। ফলে যে উদ্দিপনা নিয়ে আপনি কাজ শুরু করতে চেয়েছিলেন তার ২/৩ অংশই শেষ হয়ে যায়। মনে রাখা খুব জরুরী তা হল, কেউ যখন বলবে যে তুমি এটা পারবে না। তখন সে আসলে তার নিজের অপারগতাকেই উপস্থাপন করে। সে নিজে কখনো কাজটি করতে পারেনি বলেই সে বিশ্বাস করে আপনিও পারবেন না।
যদি সত্যিই ভালো কিছু করতে চান তবে এই ধরণের মানুষকে উপেক্ষা করার মত ক্ষমতা আপনার থাকতে হবে। এটা খুব জরুরী। যত তাড়াতাড়ি এই নেগেটিভ চিন্তার মানুষকে আপনি উপেক্ষা করতে পারবেন আপনার সাফল্য ততোটাই নিশ্চিত।