Ruqyah & Hijama Healing Center,Rangpur

  • Home
  • Ruqyah & Hijama Healing Center,Rangpur

Ruqyah & Hijama Healing Center,Rangpur আপনার বিশ্বস্ত রুকইয়া ও হিজামা সেন্টার এখন রংপুরে!

07/11/2025

শুক্রবারের গুরুত্বপূর্ণ ৪টি আমলঃ

🔘 সূরা আল-কাহফ পাঠ করা

🔘 অধিক পরিমাণে দরুদ পড়া
اَللّٰهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَلَى نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ
[“আল্লা-হুম্মা সাল্লি ওয়াসাল্লিম ‘আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ”]

🔘 বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়া
[“আস্তাগফিরুল্লাহ”]

🔘 আসর ও মাগরিবের মধ্যবর্তী সময়ে দু'আ করা

06/11/2025

❝নিশ্চয় আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় মানুষের বদনজর লাগে। (বদনজর এতটাই শক্তিশালী যে,) একজন লোক সুউচ্চ পর্বতে (অর্থাৎ উচু স্তরে) উঠে যায়, অতঃপর (বদনজর লাগার কারণে) সেখান থেকে সে নিচে পড়ে যায়।❞

হাদিসটির অর্থ হলো, কোনো ব্যক্তি বদনজরে আক্রান্ত হলে তা তার মধ্যে এতটাই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে যে, সে কোনো উচু স্থানে (বা সুউচ্চ পদমর্যাদায়) উঠে গেলেও বদনজরের প্রভাবে সেখান থেকে নিচে গড়িয়ে পড়ে।

[মুসনাদু আহমাদ-২৭৪৭১]

অন্ধকার একটা রাত। যে রাতের অন্ধকার দেখলেই মন খারাপ হয়ে যায়। মনে হয় খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে। তেমনি এক রাতে রাস্তা দিয়ে...
05/11/2025

অন্ধকার একটা রাত। যে রাতের অন্ধকার দেখলেই মন খারাপ হয়ে যায়। মনে হয় খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে। তেমনি এক রাতে রাস্তা দিয়ে একজন লোক হেঁটে যাচ্ছে।

লোকটা দুর্ধর্ষ এক ডাকাত। সে এতটাই ভীতিকর যে সবার মুখে মুখে তার নিষ্ঠুরতার কথা ছড়িয়ে পড়েছিলো। তার পাশ দিয়ে যাওয়াকে সবাই সাক্ষাৎ বিপদকে ডেকে আনা ভাবতো। তার আক্রমণ থেকে নিস্তার মিলতো না ধর্মপ্রাণ হজ্জযাত্রীদেরও।

তবে লোকটার আরো একটা পরিচয় ছিলো। একটা মেয়েকে প্রচণ্ড ভালোবাসতো সে, হৃদয় দিয়ে চাইতো। প্রায় রাতেই সে যেতো মেয়েটার সাথে মিলিত হতে। আমাদের আজকের গল্প তেমনি অন্ধকার এক রাত নিয়ে। যে রাতে লোকটা বের হয়েছিলো মেয়েটার সাথে মিলিত হতে। মেয়ের বাড়ির দেয়াল দিয়ে উঠতে যাওয়ার সময় সে শুনতে পেলো কেউ একজন তিলওয়াত করছে:

“যারা বিশ্বাসী, তাদের জন্য কি আল্লাহর স্মরণে ও যে সত্য অবতীর্ণ হয়েছে তার কারণে হৃদয় বিগলিত হবার সময় আসেনি? তারা তাদের মতো যেন না হয়, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেওয়া হয়েছিল। তাদের উপর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হয়েছে, অতঃপর তাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই পাপাচারী।” [সূরা হাদীদ ৫৭:১৬]

এই আয়াতটি তার হৃদয়ে বজ্রাঘাত করলো প্রবলভাবে। তার হৃদয়কে নাড়া দিলো। নাড়িয়ে দিলো তার জীবনের তরী। বদলে দিলো বেঁচে থাকার মানেটা। কেন সে এই পৃথিবীতে এসেছে?

সে এই আয়াতটি নিয়ে ভাবতে লাগলো। তার এই বাড়িতে আসার প্রধান উদ্দেশ্যই ভুলে গেলো! তার জিহ্বাতে কেবল একটিমাত্র বাক্যই উচ্চারিত হচ্ছিলো ক্রমাগতভাবে “বালা ইয়া রাব্বি আল আন”—হে আমার রব! হ্যাঁ, সেই সময় সত্যিই এসে গেছে।

হ্যাঁ! সত্যিই এসে গিয়েছিলো সে সময়। চরিত্রহীন সেই দুর্ধর্ষ ডাকাত নিজেকে স্রষ্টার কাছে সঁপে দিলেন। পরিণত হলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন মানুষে। তাঁর নাম ফুদাইল ইবন ইয়াদ (রহিমাহুল্লাহ)। যার বিভিন্ন ঘটনা ও শিক্ষা আজো লাখো মুসলিমের চলার পথের প্রেরণা। ধূসর অতীতের কিছু মানুষ মাঝে মাঝে সোনালী ভবিষ্যতের সৃষ্টি করে আল্লাহর ইচ্ছায়। ফুদাইল ইবনে ইয়াদ (রহিমাহুল্লাহ) ছিলেন তেমনই একজন।

তিনি সে বাড়ি থেকে ফিরে এলেন এবং একটা মুসাফির দলের মাঝে আশ্রয় নিলেন। দলের সবাই তখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় ব্যস্ত ছিলো। তিনি শুনতে পেলেন দুইজন লোক কথা বলছে:
– “চলুন আজ রাতেই রওনা দিয়ে দিই।”
– “না, সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করি। আমার ধারণা ফুদাইল কোথাও না কোথাও ঘাপটি মেরে আছে আমাদের ডাকাতি করার জন্য।”

আল ফুদাইল সব শুনে ভাবলেন, “আমি প্রতি রাতেই খারাপ কাজ করি আর কিছু মুসলিম এখানে রয়ে যায়। তারা আমাকে ভয় পায়। ঘৃণা করে। মনে হয় আল্লাহ আমাকে এখানে এনেছেন যাতে আমি নিজেকে এদের দেখে শোধরাতে পারি। হে আল্লাহ! সত্যিই আমি তোমার কাছে তওবা করছি।”

পরের গল্পটুকু রূপকথার মতো। ইসলাম কীভাবে একজন মানুষকে রাতারাতি বদলে দিতে পারে সেটার গল্প। তিনি মক্কায় ফিরে এলেন এবং তাঁর লেখনী দ্বারা শত শত মানুষের জীবন পরিবর্তন করে দিলেন। ফুদাইল ইবন ইয়াদ (রহিমাহুল্লাহ) এরপর থেকে যাদের তিনি ক্ষতি করেছিলেন তাদের বাড়ি-বাড়ি যেতেন এবং তাদের ক্ষতিপূরণ করে দিতেন। যখন তার কাছে দেওয়ার কিছু থাকতো না, তখন তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।

তাঁর ভৃত্য ইবরাহিম ইবনে আল আস বলেন, “আমি ফুদাইল ইবন ইয়াদ ছাড়া আর কাউকে দেখিনি যার হৃদয়ে আল্লাহ তা’আলাই ছিলেন শ্রেষ্ঠ। যখন তাঁর সামনে আল্লাহ তা’আলার কথা উল্লেখ করা হতো কিংবা যখনই তিনি কুরআন শুনতেন, প্রচণ্ড দুঃখ ও ভয় তাঁকে পেয়ে বসতো। তাঁর চোখ পানিতে ভরে যেতো আর তিনি এতটাই কাঁদতেন যে, যারা তাঁর নিকটে বসে থাকতেন তাঁরাও তাঁকে দেখে কষ্ট পেতেন।”
একবার ইমাম আব্দুল্লাহ ইবন মুবারক (রহিমাহুল্লাহ) তাঁকে একটা কবিতা চিঠি লিখে পাঠালেন যাতে লিখা ছিলো—

“হে দুই হারামের অধিবাসী,
তুমি যদি আমাদের দেখতে তাহলে বুঝতে তুমি কেবল পরিহাসের ইবাদত করছ।
কেঁদে কেঁদে (ইবাদত করে) যে তার গাল ভিজিয়ে ফেলে, তার জানা উচিৎ
আমাদের ঘাড় রক্ত দিয়ে ভিজে যাচ্ছে।”

চিঠি পড়ে ফুদাইল ইবনে ইয়াদ (রহিমাহুল্লাহ) কী করলেন? তিনি কি আল্লাহর ইবাদতকে পরিহাস করার জন্য আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক (রহিমাহুল্লাহ)-কে উপহাস করেছিলেন? আমাদের সময়ে হলে হয়তো তা-ই হতো।

কিন্তু গল্পটা তো আল্লাহর স্মরণে হৃদয় বিগলিত হয়েছে এমন এক মানুষের। তাই চিঠি পড়ে তাঁর হৃদয় এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে গেলো। চোখ পানিতে ভরে গেলো। তিনি প্রচুর কাঁদলেন এবং বললেন, “আবু আব্দুর রহমান (আব্দুল্লাহ ইবন মুবারক) আমাকে একটি আন্তরিক উপদেশ দিয়েছেন।” অথচ একই কবিতা হাজার বার পড়লেও আমাদের হৃদয়ে কোনো আঁচড় পড়ে না।

তাঁর করা কিছু অসাধারণ উক্তি:

“যদি কেউ একাকীত্বে কষ্ট পায় আর লোকজন পাশে থাকলে শান্তি পায়, তবে সে রিয়া থেকে নিরাপদ নয়।”
“যদি কেউ আল্লাহকে ভয় করে, তবে কেউ তার ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি কেউ আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে, তবে তাকে কেউই সাহায্য করতে পারবে না।”

“যদি কেউ তোমাকে জিজ্ঞেস করে, ‘তুমি কি আল্লাহকে ভালবাসো?’ তবে চুপ থেকো। কারণ যদি তুমি না বলো, তাহলে তুমি একজন অবিশ্বাসী। কিন্ত তুমি যদি হ্যাঁ বলো, তাহলে তো তোমার কাজের সাথে তোমার কথা মিলে না।”

“যতক্ষণ পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক চলে, মানুষের আসল চরিত্র গোপন থাকে। কিন্ত যখন কোনো বিপদ আপতিত হয়, তখন তাদের প্রকৃত চরিত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। কারণ তখন মুমিনরা তাদের বিশ্বাসের দিকে ফিরে যায় আর মুনাফিকরা তাদের ভণ্ডামির নিকট ফিরে যায়।”

আবু আল রাজি বলেন, “আমি ফুদাইল ইবন ইয়াদের কাছে ত্রিশ বছর ছিলাম। যেদিন তাঁর ছেলে আলী মারা গিয়েছিলো, সেদিন ছাড়া আমি তাঁকে কখনোই হাসতে দেখিনি। আমি (অবাক হয়ে) তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘যদি আল্লাহ এতে সন্তুষ্ট থাকেন, তবে আমি কীভাবে এতে অসন্তুষ্ট থাকি?’”

সত্যিই যাদের হৃদয়ে আল্লাহ তা’আলাই শ্রেষ্ঠ, তারা কীভাবে তাঁর ফয়সালায় অসন্তুষ্ট হতে পারে? তাদের জীবন-মরণ তো কেবল আল্লাহর জন্যই। তাদের সকল দুঃখ-কষ্ট তো কেবল তারা আল্লাহর নিকটেই জানায়। কারণ, তাদের হৃদয় বহু পূর্বেই আল্লাহর স্মরণে বিগলিত হয়েছে।

ফুদাইল ইবনে ইয়াদ (রহিমাহুল্লাহ)-এর হৃদয় বিগলিত হয়েছিলো অন্তরটা পুরোপুরি মরে যাবার আগেই।

আমাদের হৃদয় বিগলিত হবার সময় কি আসেনি?

✍️ 'শিহাব আহমেদ তুহিন' ভাই

‘হাজিরাতের চাবি’ নাকি ‘শিরকের প্রবেশদ্বার’? রুকইয়ার বইয়ের নামে কুফর ও শিরকের প্রচারণার চুলচেরা শরয়ী বিশ্লেষণ!ভূমিকা:উম্...
04/11/2025

‘হাজিরাতের চাবি’ নাকি ‘শিরকের প্রবেশদ্বার’? রুকইয়ার বইয়ের নামে কুফর ও শিরকের প্রচারণার চুলচেরা শরয়ী বিশ্লেষণ!

ভূমিকা:
উম্মাহর দরদমাখা লেবাসে মুসলিমদের ঈমান হরণের ষড়যন্ত্র নতুন কিছু নয়। কিন্তু যখন এই ষড়যন্ত্র ‘মুফতী’, ‘রাকী’ এবং ‘কুরআন-হাদীসের আলোকে’র মতো পবিত্র চাদর মুড়ি দিয়ে হাজির হয়, তখন তা সাধারণ বিষের চেয়েও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। সম্প্রতি আমাদের হাতে আসা ‘হাজিরাতের চাবি’ নামক একটি বই ঠিক সেই পর্যায়েরই এক বিষাক্ত ফিতনা, (এই লেখক কে আমরা চিনি না এবং তার সাথে আমাদের কোন ব্যক্তিগত শত্রুতা বা বিদ্বেষ নেই আমরা শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে মানুষকে সতর্ক করার জন্য এই লেখাটি প্রকাশ করছি) যা প্রতিটি পৃষ্ঠায় তাওহীদের মূলে কুঠারাঘাত করেছে এবং শিরক ও কুফরের এমন সব পদ্ধতি শিক্ষা দিয়েছে, যা একজন সাধারণ মুসলিমকে চিরস্থায়ী জাহান্নামের পথে ঠেলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

আজকের এই পোস্টে আমরা কোনো প্রকার নমনীয়তা বা ছাড় না দিয়ে, শল্যচিকিৎসকের ছুরির মতো করে এই বইয়ের প্রতিটি ভণ্ডামিকে কেটে কেটে বিশ্লেষণ করব, যেন সত্য দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায়।

প্রথম খণ্ডন: মোড়কের প্রতারণা ও লেখকের ধৃষ্টতাপূর্ণ পরিচয়!

বইয়ের দাবি:
বইটির মোড়কে লেখা হয়েছে, "কুরআন-হাদীসের আলোকে রুকইয়াহ ও ঝাড়-ফুঁক শিক্ষার্থীদের জন্য এক দ্বিতীয় (?) বই" এবং লেখকের পরিচয় দেওয়া হয়েছে ‘বিশিষ্ট রাকী ও মোদাব্বির মুফ*তী নাই*মুল ইস*লাম ফরিদ*পুরী’।

বিশ্লেষণ ও রদ:
প্রতারণার শুরুটা হয়েছে এখান থেকেই।

মিথ্যা মোড়ক: বইটির ভেতরে যা আছে, তা কুরআন-হাদীসের আলো নয়, বরং জাদুকর, গণক এবং শয়তানের উপাসকদের নিকৃষ্টতম অন্ধকার। এবং এই বইয়ের ভিতরে যে ভণ্ডামির চাষ করা হয়েছে তার স্বপক্ষে কুরআন ও হাদিসের একটি দলিল তো দূরে থাক বরং তার ছিটেফোঁটাও নেই। বরং বইয়ের মোড়কে কুরআন ও হাদিসের যে দাবি করা হয়েছে তা সুস্পষ্টভাবে একটি নির্লজ্জ মিথ্যাচার এবং সাধারণ মুসলিমদের সাথে একটি বড় ধোঁকা। এবং হকে বাতিলের সাথে মিশ্রণ করা হয়েছে।

আল্লাহ তা'আলা জেনে-বুঝে সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রণকারীদের সম্পর্কে বলেন:

وَلَا تَلْبِسُوا الْحَقَّ بِالْبَاطِلِ وَتَكْتُمُوا الْحَقَّ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ

"তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে-বুঝে সত্যকে গোপন করো না।" (সূরা আল-বাকারাহ: ৪২)

‘মোদাব্বির’ শব্দের আড়ালে ষড়যন্ত্র: ‘রাকী’ শব্দের পবিত্রতার আড়ালে ‘মোদাব্বির’ (তদবিরকারী) শব্দটিই হলো লেখকের শিরকী কারবারের আসল প্রবেশপথ। রুকইয়াহ যেখানে সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর কালাম এবং দু'আর উপর নির্ভরশীল, সেখানে ‘তদবির’ শব্দটি বিভিন্ন গোপন কলাকৌশল, হাজিরাত, জিন চালান বা গায়েবের খবর জানার মতো শিরকী কর্মকাণ্ডের দিকে ইঙ্গিত করে, যা এই বইয়ের পাতায় পাতায় প্রমাণ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় খণ্ডন: "হাজিরাত" ও "মুয়াক্কিল"—সরাসরি জিন ও শয়তানের উপাসনা (শিরকে আকবর)

বইয়ের দাবি (পৃষ্ঠা ৩১ থেকে হুবহু):
"উপরের দুআটি ইশার নামাযের পর ওযু করে পাক-পবিত্র কাপড় পরিধান করে আতর লাগিয়ে, আগরবাতি জ্বালিয়ে একটানা ১১ দিন ৪১ বার করে পাঠ করবেন...১১ দিন পরে আপনার হাজিরাত খুলে যাবে।"

শরীয়তের অকাট্য অবস্থান:
এটি তাওহীদের মূলনীতি ‘ইবাদতে আল্লাহকে একক জানা’-এর উপর সরাসরি আক্রমণ এবং সুস্পষ্ট শিরকে আকবর।

ভ্রান্তি ও প্রতারণার চুলচেরা বিশ্লেষণ:

১. আল্লাহ ছাড়া অন্যকে ডাকা (শিরকী আহ্বান):
এই আমলের মূল উদ্দেশ্য হলো ‘হাজিরাত খোলা’ বা ‘মুয়াক্কিল হাজির করা’। ৩২ নং পৃষ্ঠার দোয়াটি দেখুন, يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ দিয়ে শুরু করে শেষে নির্লজ্জের মতো বলা হয়েছে: ْيَا قَوْمَ حَاضِرَاتٍ، حَاضِرُشُو (হে হাজিরাতের দল, (হাজিরু শু/শো! এটা কোন আরবি শব্দ নয়) হাজির হও)। এটি সরাসরি জিনদের একটি দলকে হাজির হওয়ার জন্য আহ্বান। ইসলামে আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো সত্তাকে—সে নবী হোক, ফেরেশতা হোক বা জিন হোক—সাহায্যের জন্য ডাকা, তাদের কাছে কিছু চাওয়া বা তাদেরকে আহ্বান করা হলো শিরকে আকবর (বড় শিরক), যা একজন ব্যক্তিকে ইসলাম থেকে সম্পূর্ণরূপে বের করে দেয়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা এই ধরনের কর্মকাণ্ডের ভয়াবহতা সম্পর্কে বলেন:

وَأَنَّهُ كَانَ رِجَالٌ مِّنَ الْإِنسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِّنَ الْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا

"আর মানুষের মধ্য থেকে কিছু লোক জিনের মধ্য থেকে কিছু লোকের আশ্রয় প্রার্থনা করত, ফলে তারা (জিনেরা) তাদের ঔদ্ধত্য ও স্পর্ধা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল।" (সূরা আল-জ্বিন: ৬)

এই আয়াতটি দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণ করে যে, জিনদের সাহায্য চাওয়া বা তাদের আশ্রয় প্রার্থনা করা শুধু শিরকই নয়, বরং এটি মানুষের বিপদ ও দুর্দশাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

২. জাদুকরদের পদ্ধতির নির্লজ্জ অনুসরণ:

আগরবাতি জ্বালানো: ইবাদতের নামে আগরবাতি বা বিশেষ সুগন্ধি জ্বালানো ইসলামী শরীয়তে প্রমাণিত কোনো আমল নয়। বরং এটি হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য মুশরিকদের উপাসনার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। জাদুকর ও শয়তানের উপাসকরা জিনদেরকে সন্তুষ্ট করার জন্য এবং তাদের পছন্দের পরিবেশ তৈরি করার জন্য এই সকল বস্তু ব্যবহার করে। জিনদের একটি অংশ বিশেষ সুগন্ধি ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ পছন্দ করে এবং এই সকল বস্তু উৎসর্গ করার মাধ্যমে জাদুকররা তাদের নৈকট্য লাভ করে। সুতরাং, এটি আল্লাহর ইবাদত নয়, শয়তানের পূজা।

নির্দিষ্ট সংখ্যা ও দিন: "১১ দিন" বা "৪১ বার"—এই ধরনের সংখ্যা নির্ধারণ করা, যার পেছনে কুরআন বা সহীহ সুন্নাহর কোনো দলিল নেই, তা সুস্পষ্ট বিদআত। এই সংখ্যাগুলো সাধারণত জাদুকররা তাদের মন্ত্র সিদ্ধ করার জন্য ব্যবহার করে, যা তাদের এবং শয়তানের মধ্যকার একটি চুক্তি।

তৃতীয় খণ্ডন: গায়েবের জ্ঞান দাবির নির্লজ্জ কুফরি

বইয়ের দাবি (পৃষ্ঠা ৩১ থেকে হুবহু):
"হাসিল হওয়ার পর উক্ত দুআটি ৪১ বার পাঠ করে চোখ বন্ধ করে মুরাকাবা করলে জায়েয সব প্রশ্নের উত্তর আপনার অন্তরে দিয়ে দেওয়া হবে এবং যে কোন সমস্যার বিষয় আপনি জানতে পারবেন।" এই পদ্ধতিটি বইয়ে রোগীর সমস্যা বা রোগ নির্ণয় করার জন্য উল্লেখ করা হয়েছে।

শরীয়তের অকাট্য অবস্থান:
গায়েবের চাবি একমাত্র আল্লাহর হাতে। জিন বা শয়তানের মাধ্যমে অজানা খবর বা রোগ নির্ণয়ের এই পদ্ধতি দাবি করা সুস্পষ্ট কুফরি।

ভ্রান্তি ও প্রতারণার চুলচেরা বিশ্লেষণ:

কুরআনের অকাট্য দলিল: আল্লাহ তা'আলা দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেছেন যে, গায়েবের জ্ঞান তাঁর জন্য একচ্ছত্র।

قُل لَّا يََعْلَمُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ الْغَيْبَ إِلَّا اللَّهُ

"বলুন, আসমান ও জমিনে আল্লাহ ছাড়া আর কেউই গায়েব জানে না।" (সূরা আন-নামল: ৬৫)

এই আয়াত কোনো প্রকার ব্যাখ্যা বা تأويل (তা'বীল)-এর অবকাশ রাখে না। এরপরও যে ব্যক্তি দাবি করে যে, সে জিন বা মুয়াক্কিলের মাধ্যমে অজানা খবর বা রোগ নির্ণয় করতে পারে, সে সরাসরি এই আয়াতের বিরুদ্ধাচরণকারী এবং আল্লাহর সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপকারী।

হাদীসের কঠোর হুঁশিয়ারি: রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এই ধরনের কর্মকাণ্ডকে সরাসরি কুফর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

«مَنْ أَتَى عَرَّافًا أَوْ كَاهِنًا، فَصَدَّقَهُ بِمَا يَقُولُ، فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ»

"যে ব্যক্তি কোনো গণক বা কাহিনের কাছে আসল এবং সে যা বলে তা বিশ্বাস করল, সে মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর উপর যা নাযিল হয়েছে (কুরআন) তার সাথে কুফরি করল।" (মুসনাদে আহমাদ, সহীহ)

এই বইয়ের লেখক কি নিজেকে গণক বা কাহিনের চেয়ে ভিন্ন কিছু মনে করেন? তিনি তো অক্ষরে অক্ষরে তাদেরই কুফরি পথ অনুসরণ করার শিক্ষা দিচ্ছেন।

চতুর্থ খণ্ডন: "বি-হাক্কি" (بِحَقِّ) ব্যবহারের মাধ্যমে শিরক ও বিদআতের সূক্ষ্ম অনুপ্রবেশ

বইয়ের দাবি (পৃষ্ঠা ৩২ থেকে হুবহু):
দোয়ার মধ্যে بِحَقِّ سُلَيْمَانَ بْنِ دَاوُدَ, بِحَقِّ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ, بِحَقِّ كٓهيعٓصٓ ইত্যাদি ওসিলা ব্যবহার করে জিনদের দলকে হাজির হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

শরীয়তের অকাট্য অবস্থান: "بِحَقِّ"
(বি-হাক্কি) বা "এর হকের/অধিকারের ওসিলায়"—এই শব্দগুচ্ছের ব্যবহারই এই দোয়ার ভণ্ডামি এবং শিরকী হওয়ার অন্যতম বড় প্রমাণ। এটি তাওহীদের মূলনীতির উপর একটি সূক্ষ্ম কিন্তু মারাত্মক আঘাত।

ভ্রান্তি ও প্রতারণার চুলচেরা বিশ্লেষণ:

১. ওসিলা গ্রহণের ক্ষেত্রে মারাত্মক বিচ্যুতি (বিদআতী ওসিলা):

ইসলামে ওসিলা বা মাধ্যম গ্রহণ জায়েজ, কিন্তু তা শরীয়ত নির্ধারিত পন্থায় হতে হবে। জায়েজ ওসিলাগুলো হলো: আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ওসিলা, নিজের নেক আমল এবং কোনো জীবিত নেককার ব্যক্তির দু'আর ওসিলা। কিন্তু এই দোয়াতে যে ওসিলাগুলো নেওয়া হয়েছে, সেগুলো বিদআতী এবং কিছু ক্ষেত্রে শিরকী:

`بِحَقِّ سُلَيْمَانَ بْنِ دَاوُدَ`
(সুলাইমান ইবনে দাউদ-এর হকের ওসিলায়):

এই বাক্যের মধ্যে ভুলটা কোথায়?
এখানে একজন মৃত নবীর সত্তা বা তার "হক"-এর ওসিলা ধরা হচ্ছে। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা'আতের বিশুদ্ধ আকীদা অনুযায়ী, কোনো মৃত ব্যক্তির সত্তা, মর্যাদা বা "হক"-এর ওসিলা দিয়ে দু'আ করা বিদআত এবং শিরকের দিকে উন্মুক্তকারী একটি দরজা। কারণ, এতে করে মানুষের মনে এই ধারণা জন্মায় যে, আল্লাহ যেন ঐ ব্যক্তির ওসিলা ছাড়া দু'আ কবুল করেন না, যা আল্লাহর ক্ষমতাকে খাটো করার শামিল।

`بِحَقِّ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ`
(এই আয়াতের হকের ওসিলায়):

এই বাক্যের মধ্যে ভুলটা কোথায়?
এটি কুরআনের একটি আয়াত। কুরআনের আয়াতের ওসিলা ধরা জায়েজ, কিন্তু এখানে সমস্যা হলো প্রেক্ষাপট। এই দোয়াটি করা হচ্ছে জিন হাজির করার জন্য। অর্থাৎ, আল্লাহর ইবাদতের অঙ্গীকারমূলক একটি পবিত্র আয়াতকে ব্যবহার করা হচ্ছে শিরকী কর্মকাণ্ডের (জিনকে ডাকার) মাধ্যম হিসেবে। এটি আল্লাহর কালামের চরম অবমাননা। উদাহরণস্বরূপ: একজন চোর যেমন চুরি করতে যাওয়ার আগে বিসমিল্লাহ পড়তে পারে না, ঠিক তেমনি জিনকে ডাকার জন্য এই আয়াতের ওসিলা নেওয়াটাও একটি জঘন্য প্রতারণা।

`بِحَقِّ كٓهيعٓصٓ`
(এই অক্ষরগুলোর হকের ওসিলায়):

এই বাক্যের মধ্যে ভুলটা কোথায়?
এটি সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অংশ। `حروف مقطعات` বা এই বিচ্ছিন্ন অক্ষরগুলোর অর্থ বা তাৎপর্য আল্লাহ ছাড়া আর কেউই জানে না। জাদুকর এবং শয়তান পূজারীরাই এই অক্ষরগুলোকে বিভিন্ন সংখ্যাতাত্ত্বিক হিসাব-নিকাশ (Numerology/Abjad) করে জিনদের নাম বা সাংকেতিক কোড হিসেবে ব্যবহার করে। তারা সাধারণ মানুষকে বোঝায় যে, তারা কুরআনের অক্ষর ব্যবহার করছে, কিন্তু গোপনে তারা এর মাধ্যমে জিনদেরকে আহ্বান করে এবং তাদের সাথে করা চুক্তি অনুযায়ী তাদের "হক" আদায় করে। এখানে `بِحَقِّ` শব্দটি ব্যবহার করার অর্থ হলো, "হে আল্লাহ, ক্বাফ-হা-ইয়া-'আইন-সাদ-এর (অর্থাৎ, এর সাথে সংশ্লিষ্ট জিন বা শয়তানের) অধিকারের কসম দিয়ে বলছি, আমার কাজটা করে দাও।"—নাউযুবিল্লাহ।

২. আল্লাহর উপর সৃষ্টির অধিকার সাব্যস্ত করা:
بِحَقِّ
শব্দটি ব্যবহারের মাধ্যমে এই শিরকী ধারণা দেওয়া হচ্ছে যে, আল্লাহ তা'আলার উপর যেন তার কোনো সৃষ্টির (যেমন: সুলাইমান আঃ বা কোনো অক্ষরের) কোনো "হক" বা "অধিকার" আছে, যা আদায় করতে তিনি বাধ্য। —নাউযুবিল্লাহ। কোনো সৃষ্টিরই আল্লাহর উপর কোনো বাধ্যতামূলক অধিকার নেই।

পঞ্চম খণ্ডন: বিশুদ্ধ রুকইয়ার মূলনীতির সাথে সরাসরি বিশ্বাসঘাতকতা

এই বইয়ের পদ্ধতিগুলোকে রুকইয়ার সাথে মেলানোর কোনো সুযোগ নেই। ইমামগণ বিশুদ্ধ রুকইয়াহ শারইয়াহর জন্য তিনটি foundational (মৌলিক) শর্ত দিয়েছেন, যা এই বইয়ের প্রতিটি পদ্ধতি লঙ্ঘন করে:

১. শর্ত-১: রুকইয়াহ হতে হবে আল্লাহর কালাম, তাঁর নাম বা গুণাবলী দিয়ে:
লঙ্ঘন ও বিশ্লেষণ: বিশুদ্ধ রুকইয়ার ভিত্তি হলো আল্লাহর কালাম। কিন্তু এই বইতে আল্লাহর কালামের বিকৃত প্রয়োগ করা হয়েছে এবং يَا قَوْمَ حَاضِرَاتٍ বলে সরাসরি জিনদেরকে ডাকা হয়েছে। এটি প্রথম এবং প্রধান শর্তকেই লঙ্ঘন করে।

২. শর্ত-২: রুকইয়াহর ভাষা স্পষ্ট ও আরবিতে হতে হবে, অথবা এর অর্থ বোধগম্য হতে হবে:
লঙ্ঘন ও বিশ্লেষণ: এই শর্তটি দেওয়া হয়েছে যেন রুকইয়ার মধ্যে কোনো শিরকী বা কুফরি মন্ত্র লুকিয়ে থাকতে না পারে। কিন্তু এই বইয়ের দোয়াতে দুর্বোধ্য শব্দ (حَاضِرُشْ) এবং সাংকেতিক অক্ষরের (كٓهيعٓصٓ) ব্যবহার রয়েছে, যা স্পষ্ট নয়।

৩. শর্ত-৩: এই বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আরোগ্য দানকারী আল্লাহই, রুকইয়াহ নিজে নয়:
লঙ্ঘন ও বিশ্লেষণ: বিশুদ্ধ রুকইয়াহ আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল ও ভরসা বৃদ্ধি করে। কিন্তু এই বইয়ের পদ্ধতিগুলো সম্পূর্ণ বিপরীত। এখানে আল্লাহর উপর নয়, বরং জিন (মুয়াক্কিল) এবং নির্দিষ্ট আমলের (যেমন ১১ দিন, ৪১ বার) উপর নির্ভরশীল করে তোলা হচ্ছে, যা তাওহীদ পরিপন্থী।

আমাদের আহ্বান ও তাওবাহর দাওয়াত:

‘হাজিরাতের চাবি’র লেখক মুফ*তী নাই*মুল ইস*লাম ফরিদ*পুরী সাহেব,

আপনার নামের সাথে যুক্ত ‘মুফতী’ খেতাবটি আপনাকে কি এটা শেখায়নি যে, জাদু ও জিন-চালানের মতো বিষয়গুলো শরীয়তে সুস্পষ্টভাবে হারাম এবং কুফরের অন্তর্ভুক্ত? আপনি কোন দলিলের ভিত্তিতে উম্মাহর সর্বসম্মতভাবে পরিত্যক্ত একটি হারাম কাজকে ‘কুরআন-হাদীসের আলোকে’র মোড়কে জায়েজ করার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছেন?

আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-এর আদেশের বিরুদ্ধাচরণকারীদের জন্য আল্লাহর হুঁশিয়ারি স্মরণ করুন:

فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَن تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ

"অতএব যারা তাঁর (রাসূলের) আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা এ বিষয়ে সতর্ক হোক যে, তাদের উপর ফিতনা আপতিত হবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি এসে পৌঁছাবে।" (সূরা আন-নূর: ৬৩)

এখনো সময় আছে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার কাছে আপনার এই শিরক ও কুফরি শিক্ষা দেওয়ার জন্য খাঁটি দিলে তাওবাহ করুন। অবিলম্বে এই ঈমান-বিধ্বংসী বই বাজার থেকে তুলে নিন এবং জনসমক্ষে আপনার ভুলের জন্য সুস্পষ্টভাবে ক্ষমা চেয়ে উম্মাহকে সঠিক পথের দিশা দিন। নতুবা, দুনিয়া ও আখিরাতে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে আল্লাহর কঠিন পাকড়াও। জেনে রাখুন, হকপন্থীরা আপনার এই বাতিলের বিরুদ্ধে চুপ করে বসে থাকবে না।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই সকল লেবাসধারী ফিতনা থেকে রক্ষা করুন এবং সিরাতে মুস্তাকিমের উপর অটল রাখুন। আমিন।

"প্রিয় পাঠক, যদি আপনার হাতে এই ধরনের কোনো বই আসে বা আপনি এমন কোনো ব্যক্তির সন্ধান পান, তবে তাদের থেকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকুন। তাদের কথায় প্রভাবিত না হয়ে আপনার এলাকার বিশ্বস্ত আলেম বা হকপন্থী রাকীদের সাথে পরামর্শ করুন। মনে রাখবেন, ঈমান আপনার সবচেয়ে বড় সম্পদ।"

03/11/2025

“যে এটা অনুভব করে যে তার কথা-কাজ, অবস্থা ও রিযকের সংকীর্ণতা রয়েছে, বা যে তার আত্মিক অবস্থার পরিবর্তন চায়, তার জন্য আবশ্যক হচ্ছে সে তাওহীদ ও ইস্তিগফারকে আঁকড়ে ধরবে। কেননা এ দুয়ের মাঝেই রয়েছে শিফা বা আরোগ্য।”

✍️শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবন তাইমিয়াহ [রাহিমাহুল্লাহ]
📚 মাজমুঊল ফাতাওয়া: ১১/৬৯৮

আলহামদুলিল্লাহ! আজকের রুকইয়াহ সফর দিনাজপুর
02/11/2025

আলহামদুলিল্লাহ! আজকের রুকইয়াহ সফর দিনাজপুর

একজন মুমিন বান্দা দশটি কারণে শয়তান থেকে নিরাপত্তা পেতে পারে:১- আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় চাওয়া বা আউযুবিল্লাহি মিনাশ...
01/11/2025

একজন মুমিন বান্দা দশটি কারণে শয়তান থেকে
নিরাপত্তা পেতে পারে:

১- আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় চাওয়া বা আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজীম পড়া।
২- সূরা ফালাক ও নাস পড়া।
৩- আয়াতুল কুরসী পাঠ করা।
৪- সূরা আল বাকারাহ পাঠ করা।
৫- সূরা আল বাকারার শেষ দুটি আয়াত পাঠ করা।
৬- সূরা গাফির (মুমিন) এর শুরু থেকে পাঠ করা।
৭- “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর।” ১০০ বার পাঠ করা।
৮- অধিক হারে আল্লাহর যিকির।
৯- বাড়তি দৃষ্টি, বাড়তি কথা, বাড়তি খাওয়া ও বাড়তি মেলামেশা থেকে বেঁচে থাকা।
১০- ওজু ও সালাত।

✍️ ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম (রাহিমাহুল্লাহ)
📚 বাদায়েউল ফাওয়ায়েদ [২/২৬৭]

30/10/2025

যেই উম্মতের নবিকেই জাদু করা হয়েছিল, সেই উম্মত জাদু নিয়ে মোটেও সচেতন নয়! দা জ্জা লি ফিতনার সবচে বড় Weapon হল জাদু। হি* ন্দু ত্ব বা দি আঘাত ঠেকাতে এ ব্যাপারেও সচেতনতা লাগবে।

✍️ মুফতি 'আলি হাসান উসামা'

28/10/2025

দুনিয়ার সমস্ত গ্লানির বিনিময়েও যদি দুনিয়াতের
এই ৯ টি আয়াতের হাকিকত (বাস্তবতা) ও উপলব্ধির হাক্কুল ইয়াক্বিন চলে আসে, সে বান্দার দো-জাহানে আর কোন কিছুরই প্রয়োজন নেই! আলহামদুলিল্লাহ!

فَاِذَا جَآءَتِ الصَّآخَّةُ ۫

অবশেষে যখন কর্ণ বিদীর্ণকারী সে আওয়াজ
(কিয়ামাত) এসেই পড়বে!

يَوْمَ يَفِرُّ الْمَرْءُ مِنْ اَخِيْهِ ۙ

সেদিন মানুষ তার আপন ভাই থেকেও পালিয়ে যাবে!

وَاُمِّهٖ وَاَبِيْهِ

এবং (পালিয়ে যাবে)
নিজ পিতা থেকে
নিজ মা থেকেও!

وَصَاحِبَتِهٖ وَبَنِيْهِ ؕ

নিজ স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি থেকেও!

لِكُلِّ امْرِئٍ مِّنْهُمْ يَوْمَئِذٍ شَاْنٌ يُّغْنِيْهِ ؕ

(কেননা) সে দিন সকলকে তার নিজ নিজ দুশ্চিন্তাই ব্যস্ত করে রাখবে।

وُجُوْهٌ يَّوْمَئِذٍ مُّسْفِرَةٌ

সে দিন অনেক মুখমণ্ডল হবে উজ্জ্বল।

ضَاحِكَةٌ مُّسْتَبْشِرَةٌ ۚ

সহাস্য, প্রফুল্ল।

وَوُجُوْهٌ يَّوْمَئِذٍ عَلَيْهَا غَبَرَةٌ ۙ

এবং সে দিন অনেক মুখমণ্ডল হবে ধুলোমলিন!

تَرْهَقُهَا قَتَرَةٌ

কালিমাচ্ছন্ন!

اُولٰٓئِكَ هُمُ الْكَفَرَةُ الْفَجَرَةُ

মূলত এরাই তারা,
যারা ছিল কাফের,পাপিষ্ঠ!

[ সুরাহ আ'বাসা: ৩৩-৪২ ]

অলসতা একটি মারাত্মক ব্যাধি। যা দুনিয়া-আখিরাত উভয় জগতের কল্যাণ ও সাফল্য লাভ থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ। যার মাঝে অলসতা চেপে ব...
27/10/2025

অলসতা একটি মারাত্মক ব্যাধি। যা দুনিয়া-আখিরাত উভয় জগতের কল্যাণ ও সাফল্য লাভ থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ। যার মাঝে অলসতা চেপে বসে, তার জীবনে কোনো উন্নত লক্ষ্য থাকে না। ফলে সে হাত-পা গুটিয়ে ঘরকুনো হয়ে পড়ে থাকাকেই পছন্দ করে। প্রকৃত সাফল্য ও কল্যাণের ব্যাপারে সে মোটেও জ্ঞান রাখে না! ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকা, দ্বীনের জন্য নিজের জান-মাল কুরবানি করা, কল্যাণকর কাজে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ কিংবা উত্তম কোনো প্রচেষ্টায় অলস-অকর্মণ্য ব্যক্তিকে পাওয়া যায় না। তাকে পাওয়া যায় উদরপূর্তি আর গুনাহের কাজে মজে থাকার মাঝে!

অলসতার কারণে অলস ব্যক্তি কেবল নিজেই এককভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয় না; বরং অলসতার ক্ষতিকর প্রভাব গোটা সমাজ ও জাতির মাঝে ছেয়ে যায়। যে জাতির যুবকরা কর্মতৎপর ও উদ্যমী না হয়ে অলস জীবন কাটায়, জাতি হিসেবে তারা দুর্বল ও শক্তিহীন হয়ে পড়ে। নিজেদের কর্তব্য ভুলে অলস-উদাসীন থাকার কারণেই তারা পদে পদে লাঞ্ছনা ও অপদস্থতার শিকার হয়। হ্যাঁ, অলসতা যখন যুবসমাজের মাঝে ব্যাপক হয়ে মহামারির আকার ধারণ করে, তখন শুধু তারাই নয়; বরং পুরো জাতি ধ্বংসের অতল গহ্বরে পৌঁছে যায়।...

📚 অলসতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ
✍️ ড. খালিদ আবু শাদি

26/10/2025

রুকইয়াহ চলাকালীন সময়ে শরীরে লুকিয়ে থাকা যাদুর খাদেম শয়তান জিনের রিয়েকশন...

‘মা'আরিফুল কুরআন’-এ উল্লেখিত জিন বশীকরণের ফতোয়ার খণ্ডন: জিন তাসখীর বা বশ করার হকিকত ও শরয়ী হুকুম।ভূমিকা:জ্ঞান ও প্রজ্ঞা...
25/10/2025

‘মা'আরিফুল কুরআন’-এ উল্লেখিত জিন বশীকরণের ফতোয়ার খণ্ডন: জিন তাসখীর বা বশ করার হকিকত ও শরয়ী হুকুম।

ভূমিকা:
জ্ঞান ও প্রজ্ঞার সমুদ্রসম ব্যক্তিত্বদের লেখনীতেও কখনও কখনও এমন বক্তব্য পাওয়া যায়, যা কুরআন, সুন্নাহ এবং সালাফুস সালিহীনের মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে। কোনো ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা মানে এই নয় যে, তাঁর প্রতিটি কথা বিনা প্রশ্নে মেনে নিতে হবে। বরং, সত্যের মাপকাঠি হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-এর বাণী।

শায়খুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মদ শফী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর তাফসীর "মা'আরিফুল কুরআন"-এ জিন বশীকরণ (তাসখীর) বিষয়ে যে "শর্তসাপেক্ষে বৈধতার" একটি মত তুলে ধরা হয়েছে, তা সর্বোচ্চ সম্মান বজায় রেখেই আমরা কুরআন, সুন্নাহ এবং শরীয়তের অকাট্ট মূলনীতির আলোকে প্রত্যাখ্যান করছি।

শায়খের মূল উর্দু বক্তব্য ও তার অনুবাদ:
প্রথমে আমরা শায়খ (রাহিমাহুল্লাহ)-এর মূল বক্তব্যটি হুবহু তুলে ধরছি:

”خلاصہ یہ ہے کہ جنات کی تسخیر اگر کسی کے لئے بغیر قصد و عمل کے محض من جانب اللہ ہو جائے جیسا کہ سلیمان علیہ السلام اور بعض صحابہ کرام کے متعلق ثابت ہے تو وہ معجزہ یا کرامت میں داخل ہے... اور اگر یہ عمل تسخیر اسماء الہٰیہ یا آیاتِ قرآنیہ کے ذریعہ ہو اور اس میں نجاست وغیرہ کے استعمال جیسی کوئی معصیت بھی نہ ہو تو وہ اس شرط کے ساتھ جائز ہے کہ مقصود اس سے جنات کی ایذاء سے خود بچنا یا دوسرے مسلمانوں کو بچانا ہو یعنی دفعِ مضرت مقصود ہو...“

(মা‘আরিফুল কুরআন, খণ্ড ৭, পৃষ্ঠা ২৬৭, মাকতাবা মা‘আরিফুল কুরআন, করাচি)

অনুবাদ:
("সারসংক্ষেপ হলো—যদি #কারো জন্য জিনদের বশীকরণ আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বিনা চেষ্টা ও বিনা আমলের মাধ্যমে হয়ে যায়, যেমনটি হযরত সুলাইমান (আ.) এবং কিছু সাহাবা (রাযি.)-এর ক্ষেত্রে প্রমাণিত, তবে এটি মোজেযা বা করামতের অন্তর্ভুক্ত...

আর যদি বশীকরণের এই কাজটি আল্লাহর নামসমূহ বা কুরআনের আয়াত দ্বারা করা হয় এবং এতে নাপাকি বা অন্য কোনো হারাম কাজ না থাকে, তাহলে সেটি এই শর্তসাপেক্ষে বৈধ যে, উদ্দেশ্য হবে নিজেকে জিনদের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করা অথবা অন্য মুসলমানদের ক্ষতি থেকে বাঁচানো...")

আসুন ‘তাসখীরুল জিন’ (জিন বশীকরণ) বিষয়ে শায়খের বক্তব্যের একটু বিশ্লেষণ করি:

মুফতী শফী (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর বক্তব্যে জিন বশীকরণের দুটি রূপের কথা বলেছেন: একটি হলো "বিনা চেষ্টায় আল্লাহর পক্ষ থেকে" এবং অন্যটি হলো "আমলের মাধ্যমে"। আমরা উভয়টির অসারতাই প্রমাণ করব ইনশাআল্লাহ।

প্রথমত: "বিনা চেষ্টায় বশীকরণ" – মু'জিযা, কারামত এবং সাহাবীদের নামে ভিত্তিহীন দাবি!

শায়খের দাবি: "যদি #কারো জন্য জিনদের বশীকরণ আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বিনা চেষ্টা ও বিনা আমলের মাধ্যমে হয়ে যায়... যেমনটি হযরত সুলাইমান (আ.) এবং কিছু সাহাবা (রাযি.)-এর ক্ষেত্রে প্রমাণিত, তবে এটি মোজেযা বা করামতের অন্তর্ভুক্ত।"

দুঃখজনক বিষয় হলো শায়খের এই বক্তব্যের ভিত্তিই দুর্বল এবং দুটি মারাত্মক ত্রুটির উপর প্রতিষ্ঠিত।

ত্রুটি-১: সুলাইমান (আঃ)-এর মু'জিযাকে সাধারণীকরণ করা:

জিনদের উপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিল শুধুমাত্র আল্লাহর নবী সুলাইমান (আলাইহিস সালাম)-এর জন্য একটি (খাস) বিশেষ মু'জিযা, যা তিনি আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে দু'আ করে চেয়ে নিয়েছিলেন। আল্লাহ বলেন, সুলাইমান (আঃ) দু'আ করেছিলেন:

قَالَ رَبِّ اغْفِرْ لِي وَهَبْ لِي مُلْكًا لَّا يَنبَغِي لِأَحَدٍ مِّن بَعْدِي

"তিনি (সুলাইমান) বললেন, ‘হে আমার রব, আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে এমন এক রাজত্ব দান করুন, যা আমার পরে আর কারো জন্য প্রযোজ্য হবে না’।"
(সূরা সোয়াদ: ৩৫)

কুরআনের এই আয়াতটি একটি চূড়ান্ত ফয়সালা। لَّا يَنبَغِي لِأَحَدٍ مِّن بَعْدِي (আমার পরে আর কারো জন্য প্রযোজ্য হবে না)—এই অংশটি দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণ করে যে, সুলাইমান (আঃ)-এর পরে জিনদের উপর এই ধরনের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতার দরজা কিয়ামত পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কুরআনের এই অকাট্ট ঘোষণার পর, কীভাবে উম্মতে মুহাম্মাদীর কোনো ব্যক্তির জন্য জিন বশীকরণ "করামত" হিসেবে বিবেচিত হতে পারে? এটি সরাসরি কুরআনের আয়াতের বিরুদ্ধাচরণ।

সুতরাং, যে ব্যক্তি এর পরেও জিন বশ করার দাবি করে, সে সরাসরি কুরআনের এই আয়াতের বিরুদ্ধাচরণ করার পাশাপাশি নিজেকে নবী সুলাইমান (আঃ)-এর সমকক্ষ দাবি করার মতো স্পর্ধা দেখায়।

ত্রুটি-২: সাহাবীদের উপর ভিত্তিহীন দাবি:

"কিছু সাহাবা (রাযি.)-এর ক্ষেত্রে প্রমাণিত" (بعض صحابہ کرام کے متعلق ثابت ہے)— অর্থাৎ শায়েখ বলেছেন কিছু সাহাবীদের জন্য জিনদের বশীভূত করে দেওয়া হয়েছে এবং এটা প্রমাণিত।

অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হল শায়েখের এই দাবিটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং এর কোনো সহীহ সনদ নেই। একজন সাহাবীর নামও কি উল্লেখ করা সম্ভব, যার জন্য জিনদের বশীভূত করে দেওয়া হয়েছিল? আর তিনি তথা সেই সাহাবী সেই জিনদেরকে দিয়ে রোগ নির্ণয় করা, জাদু কোথায় আছে খুঁজে বের করা এবং চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা সহ ব্যক্তিগত কাজে তাদেরকে খাটিয়েছেন এমন কোন প্রমাণ আছে?

বরং আমরা সহীহ হাদীসে এর বিপরীত চিত্র দেখি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সালাতে এক ইফরিত শয়তান বাধা তৈরি করলে তিনি তাকে ধরে ফেলেন, কিন্তু এরপর নবী সুলাইমান (আঃ)-এর দু'আর কথা স্মরণ হলে তিনি সেই শয়তানকে ছেড়ে দেন।

এই ঘটনাও প্রমাণ করে যে, এটা শুধুমাত্র সুলাইমান আলাইহিস সালামের জন্য খাস উনার পরে জিনদের উপর এই একচ্ছত্র কর্তৃত্বের ক্ষমতা আর কাউকে দেওয়া হবে না এবং সেই দরজা কিয়ামত পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

দ্বিতীয়ত: "আমলের মাধ্যমে বশীকরণ"—একটি বন্ধ দরজাকে খোলার নিষ্ফল ও বিপজ্জনক প্রচেষ্টা

শায়খের দাবি: "আর যদি বশীকরণের এই কাজটি আল্লাহর নামসমূহ বা কুরআনের আয়াত দ্বারা করা হয়... তাহলে সেটি এই শর্তসাপেক্ষে বৈধ যে, উদ্দেশ্য হবে ক্ষতি প্রতিরোধ করা..."

সুবহানাহু! এই বক্তব্যটি শরীয়তের মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক এবং ভয়ঙ্কর ফিতনার দরজা উন্মুক্তকারী।

প্রথম বিষয় হল- যেহেতু সূরা সোয়াদের ৩৫ নং আয়াত অনুযায়ী ‘তাসখীরুল জিন’-এর দরজা নবী সুলাইমান (আঃ)-এর পর চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তাই "আমলের মাধ্যমে" এই ক্ষমতা অর্জন করার প্রশ্নই আসে না। যে কাজটি আল্লাহ নিজেই অসম্ভব করে দিয়েছেন, সেই অসম্ভব কাজকে "কুরআনের আয়াত দ্বারা" করার ফতোয়া দেওয়াটা আল্লাহর আয়াতের বিরুদ্ধেই একটি নতুন ফতোয়া দেওয়ার শামিল। এটি অনেকটা এমন যে, কেউ বলছে, "কুরআনের আয়াত দিয়ে আমল করলে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করা শর্তসাপেক্ষে জায়েজ।" যা অসম্ভব, তার জন্য শর্তারোপ করাটাই অবান্তর।

দ্বিতীয় বিষয় হল- যদি কুরআনের আয়াত দিয়ে জিন বশ করা সম্ভবই হতো, তবে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও সাহাবায়ে কেরাম আমাদের চেয়ে এ বিষয়ে বেশি অবগত ছিলেন। তাঁরা জিনদের অনিষ্ট থেকে বাঁচতে রুকইয়াহ (কুরআন পড়ে ফুঁ দেওয়া) শিখিয়েছেন, কিন্তু কখনোই তাসখীর (জিনকে বশ করার আমল) শেখাননি। তাঁদের এই পরিত্যাগই প্রমাণ করে যে, এই পথ উম্মতের জন্য অনুমোদিত নয়।

তৃতীয় বিষয় হলো- উম্মাহর মহান ইমামগণ আমলের মাধ্যমে জিন বশীকরণের এই দাবিকে সরাসরি বাতিল এবং জাদুকরদের কাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন। হানাফি ফিকহের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফকীহ আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী (রাহিমাহুল্লাহ) ইমাম খাত্তাবী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন:

وَمَا نُهِيَ عَنْهُ وَهُوَ رُقْيَةُ العَزَّامِينَ وَمَنْ يَدَّعِي تَسْخِيرَ الجِنِّ.

'যে ধরনের রুকইয়াহ থেকে নিষেধ করা হয়েছে, তা হলো ‘আযযামীন’দের (মন্ত্র পাঠকারী) রুকইয়াহ এবং যারা জিন বশ করার দাবি করে তাদের রুকইয়াহ।'
(উমদাতুল ক্বারী, খণ্ড ২১, পৃষ্ঠা ৩৯৪)

উপরের বিস্তারিত ও দলিলভিত্তিক আলোচনার পর আমরা কয়েকটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি, যা এই ফিতনার মূল উৎপাটন করবে:

১. ‘তাসখীরুল জিন’ একটি অসম্ভব ও নিষিদ্ধ বিষয়:
কুরআনের সুস্পষ্ট আয়াত (সূরা সোয়াদ: ৩৫) দ্বারা প্রমাণিত যে, জিনদের বশ করার ক্ষমতা শুধুমাত্র নবী সুলাইমান (আলাইহিস সালাম)-এর জন্য একটি বিশেষ মু'জিযা ছিল এবং এই দরজা তাঁর পরে চিরতরে বন্ধ। সুতরাং, এই উম্মতের কোনো ব্যক্তির জন্য ‘তাসখীরুল জিন’ অর্জন করা একটি অসম্ভব বিষয়। যা অসম্ভব, তার জন্য "বৈধতার শর্ত" আরোপ করাটাই অবান্তর।

২. মুফতী শফী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর বক্তব্য কেন অগ্রহণযোগ্য:
তাঁর বক্তব্যটি কয়েকটি মৌলিক কারণে শরীয়তের মূলধারার সাথে সাংঘর্ষিক এবং দলিল হিসেবে ব্যবহারের অযোগ্য:

ক) এটি কুরআনের (সূরা সোয়াদ: ৩৫) সুস্পষ্ট ঘোষণার সরাসরি বিরোধী।

খ) এটি সাহাবায়ে কেরামের নামে এমন একটি দাবি পেশ করে, যার কোনো সহীহ সনদ বা ভিত্তি নেই।

গ) এটি উম্মাহর ইমামদের (যেমন ইমাম খাত্তাবী ও আইনী) বক্তব্যের পরিপন্থী, যারা জিন বশীকরণের দাবিদারদেরকে জাদুকরদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

৩. বর্তমান যুগের ‘তাসখীর’-এর দাবিদারদের আসল রূপ:
যেহেতু তাসখীরুল জিন অসম্ভব, তাই আজকের যুগে হাজিরাতের' চাবি নামক শয়তানের চাবি বইয়ের লেখকের মতো যারা জিন বশ করার দাবি করে, তারা হয় মিথ্যাবাদী অথবা তারা বাস্তবে ‘ইসতি'আনাতুল জিন’ (জিনদের সাহায্য চাওয়া) অথবা "ইস্তিমতাউল জিন" নামক শিরকী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত, যা তারা ‘তাসখীর’-এর মোড়কে কারামত বা নিজের আমলের ফলে প্রাপ্ত জিন বশ করার রুহানি শক্তি নামে চালিয়ে দেয়।

৪. সবার প্রতি আমাদের চূড়ান্ত বার্তা:

মুফতী শফী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর এই বিচ্ছিন্ন (قول ش*ذ) ও দুর্বল মতটিকে যারা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সমাজে জিনদের মধ্যকার শয়তানের সাথে মিলেমিশে কুফর, শিরক, হারাম ও শয়তানি আমল এবং তদবিরের কারবারের দোকান খুলে বসেছে, তাদের এসব শয়তানি কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই শরীয়ত সম্মত নয়। কেননা এটি দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণিত যে, মুফতী শফী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর উক্ত বক্তব্য বা ফতোয়াটি তাদের শয়তানী কাজকে কোনোভাবেই জায়েজ করে না। কারণ, তাঁর ফতোয়ার ভিত্তিটাইও কুরআনের সুস্পষ্ট আয়াত এবং উম্মাহর ইমামদের ব্যাখ্যার পরিপন্থী।

উম্মতে মুহাম্মাদীর জন্য চিকিৎসার ক্ষেত্রে এধরণের শয়তানি পথ চিরতরে বন্ধ। আমাদের একমাত্র আশ্রয়, একমাত্র সাহায্যকারী হলেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা এবং আমাদের জন্য একমাত্র অনুমোদিত পদ্ধতি হলো রুকইয়াহ শারইয়াহ, যা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও সাহাবায়ে কেরাম আমাদের শিখিয়ে গেছেন। এর বাইরে যা কিছু, তা বিভ্রান্তি ও পথভ্রষ্টতা।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে হককে হক হিসেবে চেনার এবং বাতিলের সকল রূপকে প্রত্যাখ্যান করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

© Masnoon Institute

Address


Telephone

+8801750435735

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Ruqyah & Hijama Healing Center,Rangpur posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Practice

Send a message to Ruqyah & Hijama Healing Center,Rangpur:

  • Want your practice to be the top-listed Clinic?

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram