Overcome our mental illnesses

Overcome our mental illnesses relax is a best way our mental health

প্রসঙ্গ ভালোবাসা ❤মনোবিজ্ঞান (Psychology) অনুযায়ী ভালোবাসা মানুষের আবেগ, চিন্তা, আচরণ ও সম্পর্ক সব মিলিয়ে মিশিয়ে গভীর এক...
09/23/2025

প্রসঙ্গ ভালোবাসা ❤

মনোবিজ্ঞান (Psychology) অনুযায়ী ভালোবাসা মানুষের আবেগ, চিন্তা, আচরণ ও সম্পর্ক সব মিলিয়ে মিশিয়ে গভীর একটা বিষয়। মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ভালোবাসাকে শুধুমাত্র বিশেষ কোন অনুভূতি নয়, বরং একটি জটিল মানসিক ও জৈব-সামাজিক প্রক্রিয়া হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়।

🔴 চলুন দেখে নেওয়া যাক ভালোবাসার মনোবৈজ্ঞানিক দিকগুলি :
🔸 আবেগগত দিক (Emotional Aspect): ভালোবাসা মানুষের মধ্যে নিরাপত্তা, স্নেহ, যত্ন, এবং অন্তরঙ্গতার (Intimacy) অনুভূতি জাগায়। ভালোবাসাকে আমাদের মানসিক স্থিরতা ও সুখের উৎস হিসেবেও দেখা যেতে পারে।
🔸 জৈব-রাসায়নিক দিক (Biological Aspect): ভালোবাসার অনুভূতি জাগরণের পেছনে বড় কারন হল আমাদের মস্তিষ্কে ডোপামিন (Dopamine), অক্সিটোসিন (Oxytocin) ও সেরোটোনিন (Serotonin) নামক নিউরোট্রান্সমিটার হরমোনের নিঃসরণ। ডোপামিন আমাদের আনন্দ ও সুখানুভূতির (Pleasure) অনুভূতি দেয়, সেরোটোনিন আমাদের মেজাজ নিয়ন্ত্রণ (Mood regulation) করে, আর অক্সিটোসিন আমাদের অন্তরঙ্গতার (Intimacy) উষ্ণতা অনুভব করায় ও সম্পর্কের বন্ধনকে দৃঢ় করে।
🔸 চিন্তাভাবনার দিক (Cognitive Aspect): ভালোবাসা মানুষের চিন্তাধারাকে প্রভাবিত করে। আমাদের প্রিয় মানুষকে আমরা আদর্শগত (Idealized) রূপে দেখতে চাই, তার প্রতি আমাদের ইতিবাচক চিন্তা বাড়ে। অর্থাৎ ভালো কাজগুলোকে আমরা বড় করে (maximizing) দেখতে থাকি এবং তার ভুলত্রুটিগুলিকে আমরা কম গুরুত্ব (minimizing) দিই। এই কারনেই কখনো কখনো অজান্তেই আমরা আমাদের ভালোবাসার মানুষটির ত্রুটিপূর্ন আচরণকেও প্রশ্রয় দিয়ে (Enabling) ফেলি, যার ফলে পরবর্তী সময়ে বড় বিপদের সম্মুখীন হতে হয়।
🔸 আচরণগত দিক (Behavioral Aspect): ভালোবাসার প্রকাশ ঘটে যত্ন, আত্মত্যাগ, সমর্থন, স্পর্শ ও একসাথে ভালো সময় (Quality time) কাটানোর মাধ্যমে।
🔸 Sternberg-এর "Triangular Theory of Love":
ভালোবাসা তিনটি উপাদান নিয়ে গঠিত
🔹Intimacy (অন্তরঙ্গতা) – ঘনিষ্ঠতা ও মানসিক সংযোগ
🔹Passion (আবেগ/উত্তেজনা) – আকর্ষণ ও রোমান্টিক টান
🔹Commitment (প্রতিশ্রুতি) – দীর্ঘমেয়াদি বন্ধনের দায়বদ্ধতা

সংক্ষেপে বললে, ভালোবাসা নিছক আবেগ নয়; এটি জৈব-রাসায়নিক, মানসিক অনুভূতি, সামাজিক সম্পর্ক ও ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতির সমন্বয়ে গঠিত একটি শক্তিশালী মানবিক অভিজ্ঞতা। ভালোবাসা মানুষকে নিরাপত্তা, আনন্দ ও জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পেতে সহায়তা করে।

যে যে কারনে সত্যিকারের ভালোবাসা মানুষকে যেমন সমৃদ্ধ করে তুলতে পারে, ঠিক সেইসব কারনেই ভালোবাসার অভাব বা ভালোবাসা হারিয়ে যাওয়ার ফলে মানুষ হতাশ, অবসাদগ্রস্ত এমনকি জীবনের অর্থও হারিয়ে ফেলতে পারে। এইধরনের মানুষদের দুর্বল বা বেকার ভেবে দূরে সরিয়ে না দিয়ে তাদের সাহায্য করা দরকার।


আমরা সবাই ই কমবেশি স্বপ্ন দেখেছি বা দেখি। আচ্ছা কখনো কি ভেবেছেন, এই স্বপ্ন জিনিসটা আসলে কি?Psychology বা মনস্তত্ব অনুযায়...
09/20/2025

আমরা সবাই ই কমবেশি স্বপ্ন দেখেছি বা দেখি। আচ্ছা কখনো কি ভেবেছেন, এই স্বপ্ন জিনিসটা আসলে কি?

Psychology বা মনস্তত্ব অনুযায়ী স্বপ্ন হল অবচেতন (Pre-Conscious) ও সচেতন (Conscious) মনের মধ্যেকার এমন একটি মানসিক প্রক্রিয়া, যা ঘুমের সময়ে আমাদের চেতনার আভ্যন্তরীণ চিন্তা, আবেগ, স্মৃতি ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটায় এবং মস্তিষ্কের আবেগ নিয়ন্ত্রণ, স্মৃতি সংরক্ষণ ও সমস্যার সমাধান প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।

স্বপ্নের ব্যাখ্যা (Dream Analysis) করার মাধ্যমে স্বপ্নদ্রষ্টার মানসিক অবস্থা ও আবেগগত পরিস্থিতি বোঝা সম্ভব, যা Psychotherapy প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। এই স্বপ্নের ব্যাখ্যার অনেকগুলি পদ্ধতি আছে, যার বেশ কিছু অতি প্রাচীন সময় থেকে চলে আসছে। পরবর্তী সময়ে সেগুলো নিয়ে একে একে আলোচনা করার ইচ্ছে আছে। আপাতত আজকের এই পোষ্টে স্বপ্ন দেখার পেছনের কিছু বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা তুলে ধরলাম :

🔸স্মৃতি সংরক্ষণ (Memory consolidation): রাতে ঘুমের REM (Rapid Eye Movement) পর্যায়ে মস্তিষ্ক সারাদিনের অভিজ্ঞতাগুলিকে ঝাড়াইবাছাই করে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলিকে গুছিয়ে সংরক্ষণ করে, স্বপ্ন সেই প্রক্রিয়ারই একটি Visual প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
🔸 মানসিক আবেগ নিয়ন্ত্রণ (Emotional regulation): স্বপ্ন আবেগ প্রকাশ ও মানসিক চাপ কমানোর একটি নিরাপদ উপায় হিসেবে কাজ করে। যেমন কোন নিকট জনের মৃত্যুর পর বারবার স্বপ্নে তাঁকে ও তাঁর সঙ্গে কাটানো ভালো সময়ের স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে তাঁর বিয়োগযন্ত্রণা থেকে ধীরে ধীরে মুক্ত হতে পারা যায়।
🔸 হাসিল করতে না পারা আকাঙ্খা (Unmet Desires): স্বপ্নের মাধ্যমে আমাদের অবচেতন মন আমাদের অপ্রাপ্ত আকাঙ্খার কথা মনে করিয়ে দেয়। যেমন যে মেয়েটির খুব ইচ্ছে ছিল পাইলট বা এয়ারহোস্টেস হওয়ার, কিন্তু পরিস্থিতির চাপে ওসব না হয়ে বিয়ে করে সংসার সামলাতে হচ্ছে, সে বারবার নানাভাবে আকাশে ওড়ার বা শুধু আকাশের স্বপ্ন দেখতে পারে।
🔸 সমস্যা সমাধান ও সৃজনশীলতা (Problem-solving and creativity): স্বপ্নে বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক ধারণা মিলিয়ে নতুন চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়। যেমন কোন একটা সমস্যা নিয়ে গভীর ভাবে মগ্ন থাকার সময়ে হঠাৎ করে ঘুমের মধ্যে সেই সমস্যার নানারকম সম্ভাব্য সমাধান ভেসে উঠতে পারে।
🔸 অবচেতনের প্রকাশ (Freud-এর মত): স্বপ্ন অনেক সময় অবচেতন মনের চাপা ইচ্ছা বা দ্বন্দ্বকে প্রতীকীভাবে প্রকাশ করে। যেমন কারো ওপরে খুব রাগ থাকলে স্বপ্নে আমরা তাকে প্রচন্ড গালাগালি করছি বলে দেখতে পারি। অথবা একতরফা গোপন অনুরাগ থাকা কারো সাথে পরিপূর্ণ সোহাগের স্বপ্নও দেখা সম্ভব।

স্বপ্নের দুনিয়ার শুরু বা শেষ কোনটাই নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। আবার সব স্বপ্নই যে অর্থবহ হবেন, সেটারও কোন নিশ্চয়তা নেই। তবে হ্যাঁ, স্বপ্নের ব্যাপারে জানলে, স্বপ্ন বুঝতে পারলে একজন মনোবিদের কাজটা অনেকটাই সহজ এবং অধিক কার্যকর হয়ে উঠতে পারে এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আরো কিছু লেখার ইচ্ছে রইলো।

ফোবিয়া (Phobia) শব্দটির সাথে আমরা সকলেই কমবেশি পরিচিত। কিন্তু এটা আসলে কি জিনিস, আর এর সাথে জড়িয়ে থাকা বিজ্ঞানের বিষয়ে ...
09/18/2025

ফোবিয়া (Phobia) শব্দটির সাথে আমরা সকলেই কমবেশি পরিচিত। কিন্তু এটা আসলে কি জিনিস, আর এর সাথে জড়িয়ে থাকা বিজ্ঞানের বিষয়ে যদি জানতে চান, তাহলে পুরো পোষ্টটা একটু ধৈর্য্য সহকারে পড়ার অনুরোধ রাখলাম।

আমরা সকলেই Anxiety Disorder (উদ্বেগ বা দুশ্চিন্তার রোগ) এর নাম শুনেছি। এই রোগ আসলে এমন এক ধরনের মানসিক অবস্থাকে বোঝায় যেখানে রোগী অতিরিক্ত ভয়, অস্থিরতা বা উৎকণ্ঠায় ভুগতে থাকেন, যা তাঁর দৈনন্দিন জীবন ও কাজের উপর প্রভাব ফেলে। ফোবিয়া হল এই Anxiety Disorder এরই একটা বিশেষ ধরন (Type) যেখানে ফোবিক ব্যক্তি কোনো নির্দিষ্ট বস্তু, পরিস্থিতি, স্থান বা প্রাণীর প্রতি তীব্র, অযৌক্তিক ও অতিরিক্ত ভয় অনুভব করেন। আর এই ভয়ের মাত্রা বাস্তবে বিপদের মাত্রার তুলনায় অনেক বেশি হয়।

🔴 ফোবিয়ার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা:
🔸 এটি এক ধরনের Anxiety Disorder যেখানে মস্তিস্কের Amygdala ও Prefrontal Cortex এর কার্যকলাপে অসামঞ্জস্য দেখা যায়, ফলে ভয়ের প্রতিক্রিয়া অতি মাত্রায় সক্রিয় হয়।
🔸Neurochemical Imbalance: মস্তিষ্কে Serotonin, Dopamine ও GABA হরমোনের ঘাটতির কারনে Maladaptive fear response, অর্থাৎ যে বিষয়ে যতটা ভয় পাওয়া স্বাভাবিক, তার চেয়ে বেশি ভয়ের প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়, যা বাস্তব বিপদের তুলনায় অনেক অতিরিক্ত।
🔸Classical Conditioning বা কোন নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট প্রতিক্রিয়ার আচরন অভ্যাসের মাধ্যমে কোনো নির্দিষ্ট উদ্দীপকের (Stimulus) সাথে ভয় যুক্ত হয়ে যায়।
🔸Genetic predisposition: পরিবারে Depression বা Anxiety এর হিস্ট্রি থাকলে ফোবিয়া হওয়ার প্রবণতা বাড়ে।

🔴 ফোবিয়ার নানারকমের ধরন:
🔸Specific Phobia: কোন নির্দিষ্ট বস্তু বা পরিস্থিতিকে ঘিরে ভয়। এর মধ্যে পড়ে:
🔵 জন্তু জানোয়ারদের ভয় (Phobia of Animals):
▪ Arachnophobia: মাকড়শার ভয়
▪ Cynophobia: কুকুরের ভগ
▪ Ophidiophobia: সাপের ভয়
▪ Entomophobia: পোকামকড়ের ভয়
🔵 পরিবেশগত ভয় (Environmental Phobias):
▪ Acrophobia: উচ্চতা বা উঁচু জায়গার ভয়
▪ Astraphobia: ঝড় ও বজ্রপাতের ভয়
▪ Aquaphobia: জলের ভয়
🔵 পরিস্থিতিগত ভয় (Situational Phobias):
▪ Aerophobia: আকাশে ওড়ার ভয় (যেমন এরোপ্লেন)
▪ Claustrophobia: বদ্ধ জায়গার ভয় (যেমন লিফ্ট বা ছোট কামরায় আটকে পড়া)
▪ Amaxophobia: গাড়ি চালানোর ভয়
🔵 শরীরসংক্রান্ত ভয় (Bodily Phobias):
▪ Hemophobia: রক্তের ভয়
▪ Trypanophobia: ইঞ্জেকশান বা স্যালাইনের সূঁচের ভয়
▪ Dentophobia: দন্তচিকিৎসকের ভয়
▪ Emetophobia: বমি করার ভয়
🔸সামাজিক ভয় বা Social Phobia (একে Social Anxiety Disorder ও বলা হয়): অন্যদের সামনে বিব্রত হওয়া বা অপমানিত হওয়ার ভয়ে সামাজিক পরিস্থিতি এড়িয়ে চলা, জনসমক্ষে কোনরকম পারফরম্যান্স যেমন স্টেজে উঠে গান, আবৃত্তি বা বক্তৃতা দেওয়া অথবা কোন ইন্টারভিউতে বসার ক্ষেত্রে ভয় বা আতঙ্কিত হওয়া।
🔸Agoraphobia: খোলা জায়গা, ভিড়, বা পালানো কঠিন এমন জায়গার হারিয়ে যাওয়ার ভয়।

🔴 ফোবিয়ার মূল বৈশিষ্ট্য:
🔸Irrational Fear: বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজনের তুলনায় অযৌক্তিক বেশি মাত্রায় ভয়
🔸Avoidance Behaviour: ফোবিক ব্যক্তি তার ভয়ের বস্তু বা পরিস্থিতিকে অত্যন্ত সচেতন ও সক্রিয়ভাবে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে।
🔸Impairment: ভয় ও এড়িয়ে চলার প্রবনতার ফলে ফোবিক ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, সামাজিক কর্মকান্ড ও কর্মক্ষেত্রে বিকলতা দেখা যায়।
🔸Distress: ফোবিয়ার বিষয় নিয়ে লাগাতার ভয় পাওয়ার আশঙ্কার ফলে গুরুতর উদ্বেগ ও মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করতে হতে পারে।

🔴 ফোবিয়ার উপসর্গ:
🔸তীব্র ভয় বা আতঙ্ক
🔸হৃদস্পন্দন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া
🔸ঘাম দেওয়া
🔸শ্বাসকষ্ট বা বুকে চাপ বা ব্যথা অনুভব করা
🔸হাত পায়ের পেশী কাঁপতে থাকা
🔸শরীর অবশ হয়ে যাওয়ার অনুভূতি
🔸কথা জড়িয়ে যাওয়া
🔸কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভয়ের চোটে তীব্র অগ্রাসী আচরণ

🔴 ফোবিয়ার চিকিৎসা (Intervention):
🔸Cognitive Behavioral Therapy (CBT): এর মাধ্যমে রোগীকে তার ভয়ের চিন্তাভাবনাগুলোকে চিহ্নিত ও পরিবর্তন করা শেখানো হয়।
🔸Rational Emotive Behavior Therapy (REBT): যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে রোগীকে তার ভয়ের পেছনের থাকা অমূলক বা ভ্রান্ত ধারনাগুলিকে যুক্তি সহকারে চ্যালেঞ্জ করে সেগুলি থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করা যায়।
🔸Exposure Therapy (Systematic Desensitization): রোগীকে ধাপে ধাপে ভয়ের উদ্দীপকের (Stimulus) সাথে মুখোমুখি করাতে করাতে তার ভয়কে ধীরে ধীরে কমাতে কমাতে নির্মূল করা।
🔸Flooding: রোগীকে তার ভয়ের উদ্দীপকের (Stimulus) সাথে অত্যন্ত দ্রুত ও বিপুল পরিমানে মুখোমুখি হতে বাধ্য করিয়ে তার অমূলক ভয় কাটানো হয়।
🔸Relaxation Techniques: শ্বাসপ্রশ্বাসের নানান ব্যায়াম, mindfulness techniques ইত্যাদির প্রয়োগে উদ্বেগ দূর করা হয়।
🔸Medication: সাধারনতঃ ওষুধ লাগে না, তবে কিছু বিষেশক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত উপসর্গ কমানোর জন্যে SSRIs, Benzodiazepines ব্যবহৃত হয়।

ফোবিয়া কোন চারিত্রিক দুর্বলতা নয়। এটি একটি মানসিক রোগ, যা সময়মতো সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সম্পূর্ণ সারিয়ে তোলা সম্ভব। তাই ফোবিয়া নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সঠিক চিকিৎসার সাহায্য নিন, সুস্থ হয়ে জীবনকে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করুন।

09/09/2025
কখনো প্রচন্ড কর্মক্ষম আবার কখনো খুবই নিস্তেজ, কখনো খুব বেশি কথা বলে, কখনো একেবারেই চুপ মেরে যায়, কখনো প্রচন্ড Extrovart,...
08/31/2025

কখনো প্রচন্ড কর্মক্ষম আবার কখনো খুবই নিস্তেজ, কখনো খুব বেশি কথা বলে, কখনো একেবারেই চুপ মেরে যায়, কখনো প্রচন্ড Extrovart, আবার কখনো একেবারেই introvart... এমন লক্ষণ দেখছেন কি কারো মধ্যে? সচেতন হন, এগুলি যাবতীয় মানসিক সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর একটি রোগ Disorder হতে পারে। চলুন এই রোগ নিয়ে বিশদে আলোচনা করা যাক।

⭕ Bipolar Disorder মূলতঃ একটি Mood Disorder (মেজাজের রোগ)। এই রোগের উপসর্গগুলি Episode বা পর্যায় ভিত্তিক আলাদা হয়ে থাকে।

⭕ Bipolar Disorder এর কারণ (Causes):
🔘 Genetic factors: পরিবারে কারো Bipolar Disorder থাকলে এর ঝুঁকি অনেক বেশি হয়।
যেমন: যদি পিতা বা মাতার এই রোগ থাকলে সন্তানেরও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ১০–২৫%।
🔘 Neurochemical imbalance: মস্তিষ্কে Dopamine, Serotonin, Norepinephrine ইত্যাদি neurotransmitter এর ভারসাম্য নষ্ট হলে মুডের অস্বাভাবিক ওঠানামার হয়, যা Bipolar Disorder এর কারন।
🔘 Neuroanatomical changes: মস্তিস্কের Prefrontal cortex ও Amygdala অঞ্চলের কার্যকারিতা ব্যাহত হলে আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যা হয়।
🔘 Psychosocial stressors: দীর্ঘস্থায়ী স্ট্রেস, trauma, পারিবারিক কলহ, চাকরি বা সম্পর্কের সমস্যা ইত্যাদি কারনে।
🔘 Sleep disturbance: দীর্ঘ অনিদ্রা বা ঘুমের অনিয়ম ম্যানিয়া/ডিপ্রেশন ট্রিগার করতে পারে।
🔘 Substance abuse: Alcohol, cannabis, ও stimulant drugs (যেমন Co***ne, Ni****ne, Caffaine ইত্যাদি) এর সেবন এই রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

⭕ Bipolar Disorder এর নানাধরনের Episode-এর বৈশিষ্ট্য:
🔘1. Manic Episode: অন্তত ১ সপ্তাহ ধরে চলে, প্রায় প্রতিদিনই উপসর্গ দেখা যেতে পারে।
লক্ষণ: অতিরিক্ত এনার্জেটিক ও উচ্ছ্বাসিত থাকা, অতিরিক্ত কথা বলা, উগ্র সাজগোজ, চকচকে জামাকাপড় পরা, অস্বাভাবিক grandiosity বা আত্মঅহংকার ("আমি একাই গোটা দুনিয়া পাল্টে দিতে পারি"), ঘুমের প্রয়োজন অনেক কমে যাওয়া (২-৩ ঘণ্টা ঘুমিয়েও সতেজ অনুভব করা), হঠাৎ হঠাৎ risky decision (অতিরিক্ত খরচ, অযথা ভ্রমণ, ঝুঁকিপূর্ণ যৌন আচরণ, ইত্যাদি)।
উদাহরণ: হঠাৎ ব্যাংক থেকে একগাদা টাকা তুলে এক দিনে নানান অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে ফেলা, সারা রাত না ঘুমিয়েও ক্লান্ত নয় বলে বলা, নিজেকে সুপারম্যান ভাবা, ইত্যাদি।
🔘2. Hypomanic Episode: অন্তত ৪ দিন ধরে চলে, প্রতিদিন উপসর্গ দেখা যায়।
লক্ষণ: Manic এরই মতো কিন্তু অপেক্ষাকৃত কম মাত্রার। কাজ করার ক্ষমতা কিছুটা ভালো হলেও, judgment ও social relationship ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পারিবার/কর্মক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়।
উদাহরণ: একজন লেখক হঠাৎ ৩ দিন ধরে নিরবচ্ছিন্ন লিখে যাচ্ছেন, ঘুম কম লাগছে, প্রচণ্ড আইডিয়া আসছে— কিন্তু আশেপাশের মানুষ তার আচরণকে অস্বাভাবিক মনে করছেন।
🔘3. Major Depressive Episode: অন্তত ২ সপ্তাহ ধরে চলে।
লক্ষণ: মেজাজ বা Mood দীর্ঘদিন ধরে নিচের দিকে যেতে থাকে, দুঃখ, শূন্যতা বা একাকীত্বের অনুভূতি হয়। একই কাজে আর আগের মতো আনন্দ না পাওয়া (anhedonia)। খিদে কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া যে কোন একটা হতে পারে। অনিদ্রা বা অতিরিক্ত ঘুম যে কোন একটা হতে পারে। শারীরিক ও মানসিক এনার্জি ও concentration কমে যায়। অপরাধবোধ, হতাশা এমনকি আত্মহত্যার চিন্তাও আসতে পারে।
উদাহরণ: একজন ব্যক্তি কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন, সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকছেন, তাঁর মনে হচ্ছে যে তিনি আর আারো কোনো কাজেই আসবেন না, অতএব তাঁর আর বেঁচে থাকার কোন অর্থ নেই।
🔘4. Mixed Features: একই সময়ে mania/hypomania ও depression-এর লক্ষণ দেখা যায়।
যেমন: প্রচণ্ড দুঃখিত লাগছে, কিন্তু একইসাথে এনার্জিতে ভরপুর থেকে অস্বাভাবিক কাজও করে ফেলা।

⭕ Bipolar Disorder এর ধরন (Types):
🔘Bipolar I Disorder: অন্তত একটি পূর্ণ Manic episode থাকে। সাধারণত Depressive episode-ও থাকে, তবে diagnostic এর জন্য জরুরি নয়।
🔘Bipolar II Disorder: অন্তত একটি Hypomanic episode এবং একটি Major Depressive episode থাকে। পূর্ণ Manic episode হয় না।
🔘Cyclothymic Disorder: কমপক্ষে ২ বছর ধরে হালকা Hypomanic symptoms ও হালকা Depressive symptoms এর ঘন ঘন ওঠানামা চলতে থাকে। পূর্ণ ম্যানিয়া বা মেজর ডিপ্রেশন হয় না। দীর্ঘ সময় ধরে মাঝেমাঝে একটু চঞ্চল, আবার কিছুদিন দুঃখিত, এইভাবে চলতে থাকে।
🔘Rapid-cycling Bipolar Disorder: এক বছরে ৪ বা ততোধিক episode (mania, hypomania বা depression) দেখা যায়। Mood বারবার উল্টে যায়। কয়েক মাসের মধ্যে ২ বার depression, ২ বার hypomania, এইভাবে।

⭕ Bipolar Disorder এর সূচনার বয়স (Onset Age):
🔘 সাধারণত Bipolar Disorder প্রথম দেখা দেয় কিশোর বয়সের শেষ (late adolescence) দিকে, অথবা প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থার শুরুর (early adulthood) দিকে।
🔘 বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সের মধ্যে লক্ষণগুলো স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেতে শুরু করে।
🔘 শিশু বয়সেও এর প্রাথমিক রূপ দেখা দিতে পারে, যাকে বলা হয় Pediatric Onset Bipolar Disorder, তবে এটি তুলনামূলক ভাবে বিরল।
🔘 দেরিতে শুরু হওয়া (Late-onset Bipolar Disorder) সাধারণত ৪০ বা তার পরে দেখা যায়, তবে এই ধরণটিও কম সংখ্যায় ঘটে।

⭕ Bipolar Disorder এর বিকাশ প্রক্রিয়া (Process of Onset and Development):
🔘 Prodromal Phase (প্রাথমিক সতর্কতা সংকেতের পর্ব): এই পর্বের লক্ষণগুলি হল:
• ঘুমের সমস্যা (অনিদ্রা বা অতিরিক্ত ঘুম)।
• মেজাজে অকারণ ওঠানামা।
• অস্বাভাবিক রাগ, খিটখিটে ভাব, অস্থিরতা।
• Concentration (একাগ্রতা) ও পড়াশোনা/কাজে মনোযোগের ঘাটতি।
🔘 প্রথম এপিসোড (First Episode):
• রোগ সাধারণত প্রথমে Depressive Episode বা Manic/Hypomanic Episode-এর মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
• অনেক সময় প্রথমে শুধুই বিষণ্ণতা (Depression) দিয়ে শুরু হয় এবং পরে ম্যানিয়া (Mania) ধাপে ধাপে যুক্ত হয়।
🔘 Recurrent Phase (পুনরাবৃত্তির পর্ব): একবার শুরু হলে সাধারণত রোগটির episode এর পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকে।
• রোগী মেজাজের উঁচু (Manic/Hypomanic) ও নীচু (Depressive) পর্যায়ের মধ্যে দুলতে থাকে।
• দুই এপিসোডের মধ্যবর্তী সময়ে অনেক রোগী স্বাভাবিক থাকতে পারে (Euthymic state)।
🔘 Progression (ক্রমাগত বৃদ্ধি):
সময়মতো সঠিক চিকিৎসা শুরু না হলে এপিসোডগুলি সময়ের সাথে আরও ঘন ঘন ও তীব্রতর ভাবে দেখা দিতে থাকে। ফলে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি, যেমন—পড়াশোনা, কাজ, পরিবার, সম্পর্ক ও সামাজিক আচরণ সবকিছুই গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

⭕ Bipolar Disorder এর চিকিৎসা ও Intervention পদ্ধতি:
🔘 Pharmacological interventions (ওষুধভিত্তিক চিকিৎসা): স্বীকৃত মনোরোগ বিষেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী উপস্থিত Episodes অনুযায়ী যে যে ওষুধগুলি প্রয়োগ করা হয় সেগুলি হল
🔸 Mood stabilizers: Lithium, Valproate, Carbamazepine ইত্যাদি।
🔸 Antipsychotics: Quetiapine, Olanzapine, Risperidone ইত্যাদি।
🔸 Antidepressants: প্রয়োজনে ব্যবহার হয় তবে সাধারণত mood stabilizer এর সাথে মিলিয়ে দেওয়া হয়। Antidepressants অনেক ধরনের হয়, যেমন,
🔹SSRIs (Selective Serotonin Reuptake Inhibitors) : ডিপ্রেসনের সবচেয়ে প্রচলিত first-line treatment, these এরা serotonin level বাড়িয়ে মুডের উন্নতি করে। যেমন, fluoxetine (Prozac) ও sertraline (Zoloft).
🔹SNRIs (Serotonin-Norepinephrine Reuptake Inhibitors): এরা serotonin ও norepinephrine দুই-ই বৃদ্ধি করে। যেমন duloxetine (Cymbalta) and venlafaxine (Effexor XR).
🔹TCAs (Tricyclic Antidepressants): এটি একটি পুরোনো গোত্রের অবসাদের ওষুধ, আধুনিক গোত্রের ওষুধগুলির চেয়ে এদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার পরিমান বেশিই হয়। যেমন amitriptyline ও imipramine.
🔹Atypical Antidepressants: এগুলি নির্দিষ্টভাবে কোন ক্যাটেগরিতে পড়ে না, কিন্তু বিভিন্নভাবে Depression এ কাজ করে। যেমন Bupropion (Wellbutrin) ও mirtazapine (Remeron). Bupropion ধূমপান থেকে মুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে এবং seasonal affective disorder নামক একটি অবসাদের রোগেও কার্যকর হয়।
🔸 Benzodiazepines: এরা Centeal nervous system কে depress করে তীব্র anxiety, agitation বা insomnia নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন alprazolam (Xanax), diazepam (Va**um), ও lorazepam (Ativan)।

🔘 Psychological interventions: ওষুধের সাথে সাথেই আচরণ ও চিন্তাভাবদার উন্নতির জন্যে স্বীকৃত মনোবিদ বা psychotherapist দ্বারা যে মনোবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিগুলি প্রয়োগ করা হয় সেগুলি হল:
🔸 Cognitive Behavioral Therapy (CBT): চিন্তাভাবনার বিকৃতি ও আচরণ সংশোধন, এবং আবেগের নিয়ন্ত্রণ শেখাতে ব্যবহৃত হয়।
🔸 Interpersonal and Social Rhythm Therapy (IPSRT): দৈনন্দিন রুটিন ও ঘুমের ছন্দ স্বাভাবিক রাখার জন্যে কার্যকর।
🔸 Psychoeducation: রোগী ও পরিবারের সদস্যদের রোগের লক্ষণ ও সতর্কতার বিষয়গুলি সম্পর্কে সচেতন করা হয়।
🔸 Family-focused therapy: পরিবারকে চিকিৎসার অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, এতে রোগীর প্রয়োজনীয় Support system মজবুত হয়।

🔘 Lifestyle interventions:
🔸 নিয়মিত ঘুম ও খাদ্যাভ্যাস ঠিকঠাক রাখা।
🔸 Stress management: ধ্যান বা meditation, যোগব্যায়াম, relaxation techniques, breathing exercise, mindfulness practice ইত্যাদি।
🔸 Alcohol ও drug থেকে বিরত থাকা।
🔸 দৈনিক নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলা।

🔘 Other medical interventions:
🔸 Electroconvulsive Therapy (ECT): ওষুধ বা সাইকোথেরাপিতে কাজ না হলে বা গুরুতর depression/mania থাকলে এই পদ্ধতিটি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। এতে মস্তিষ্কের মধ্য দিয়ে একটি ছোট বৈদ্যুতিক প্রবাহ সঞ্চালিত করা হয় যা ইচ্ছাকৃতভাবে একটি সংক্ষিপ্ত, নিয়ন্ত্রিত খিঁচুনি (brief, controlled seizure) সৃষ্টি করে, যা মস্তিষ্কের রসায়ন (brain chemistry) পরিবর্তন করে এবং দ্রুত উপসর্গগুলির উন্নতি করতে পারে। গুরুতর বিষণ্ণতার (severe depression) জন্য এটি একটি নিরাপদ এবং কার্যকর চিকিৎসা, যা প্রধানতথ চিকিৎসা-প্রতিরোধী বিষণ্নতা (treatment-resistant depression), গুরুতর মনোরোগ (severe psychosis), অথবা আত্মহত্যার চিন্তাভাবনাযুক্ত (suicidal ideation) রোগীদের জন্য ব্যবহৃত হয়।
🔸 Hospitalization: তীব্র suicidal tendency বা severe manic state থাকলে নিরাপত্তার জন্য হাসপাকালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে।

পরিশেষে বলি, Bipolar Disorder এমন একটি রোগ, যা রোগীর শারীরিক, মানসিক, পারিবারিক ও সামাজিক সব ক্ষেত্রকেই প্রভাবিত হয় এবং এর চিকিৎসায় multidisciplinary approach দরকার হয়। যত শীঘ্র উপসর্গগুলিকে চিন্হিত ও রোগ নির্ধারন করে চিকিৎসা শুরু করা যাবে, ততই কম বিপদের সম্মুখীন হতে হবে।

সচেতন থাকুন, সুরক্ষিত থাকুন।


আপনার চেনা পরিচিতির মধ্যে এমন কাউকে দেখেছেন, যার কোন সামান্য শারীরিক বা মানসিক সমস্যা হলেই সে অত্যন্ত অস্থির বোধ করতে থা...
08/30/2025

আপনার চেনা পরিচিতির মধ্যে এমন কাউকে দেখেছেন, যার কোন সামান্য শারীরিক বা মানসিক সমস্যা হলেই সে অত্যন্ত অস্থির বোধ করতে থাকে, আর তারপর ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার তাকে ওষুধ হিসেবে সাধারন সুগার গ্লোবিউল জাতীয় কিছু দেন, সেটাকেই সত্যিকারের ওষুধ হিসেবে খেয়েই সে নিজেকে সম্পূর্ণ সুস্থ বোধ করে? এই যে ব্যাপারটা, একে বলা হয় (প্লাসেবো এফেক্ট)।

“Placebo Effect” হল এমন একটি মনস্তাত্ত্বিক ও শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়া যেখানে রোগী আসল ঔষধ না পেয়েও, খুবই সাধারন, বাস্তবে অকার্যকর বা নকল চিকিৎসা (যেমন চিনির গুলি, লবণ জলের ইঞ্জেকশন, বা ডামি ট্যাবলেট, ট্যাবলেটের আকারে কাটা চকের টুকরো) গ্রহণ করার পর রোগের উপসর্গে উন্নতি অনুভব করে।

এটা মূলতঃ বিশ্বাস, প্রত্যাশা ও মানসিক অবস্থার প্রভাবে শরীরের একধরনের পজিটিভ প্রতিক্রিয়া। মস্তিষ্ক “বিশ্বাস করে” যে চিকিৎসাটি কার্যকর, ফলে নিউরোকেমিক্যাল পরিবর্তন (যেমন ডোপামিন, এন্ডোরফিন নিঃসরণ) ঘটে, যা উপসর্গ হ্রাস করে।

//মনোবিজ্ঞান ও স্নায়ুবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোন থেকে Placebo Effect এর ব্যাখ্যা:

>> Cognitive belief system: রোগীর মনের প্রত্যাশা চিকিৎসার ফলাফলকে প্রভাবিত করে। রোগি যদি মনে করে যে এই চিকিৎসা হলেই আমি সুস্থ হয়ে যাবো, তাহলে সেটাই হয়। অবশ্য উল্টোটাও সত্যি।

>> Conditioning: অতীতে ওষুধ খাওয়ার পরে আরাম পাওয়ার বা ভালো লাগার অভিজ্ঞতাগুলো থেকে মস্তিষ্কের learning বা বোধ তৈরি হয়ে যায়, ফলে একই রকমের (একই না হলেও) চিকিৎসা পদ্ধতিতে একই প্রতিক্রিয়া ঘটে, এমনকি আসল ওষুধ না থাকলেও।

>> Neurobiology: #ডোপামিনের নিঃসরণ বৃদ্ধির ফলে ব্যথা কমে, আনন্দের অনুভূতি বৃদ্ধি পায়।
#এন্ডরফিন সক্রিয় হয়, যা প্রাকৃতিক বা natural ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে।
#মস্তিস্কের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স ও লিম্বিক সিস্টেম সক্রিয় হয়, যা আমাদের আবেগ ও প্রত্যাশা নিয়ন্ত্রণ করে, এবং সেই অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

//উদাহরণ:
#ব্যথা নিয়ন্ত্রণে – রোগীকে বলা হল এই ট্যাবলেটটি খুব শক্তিশালী ব্যথানাশক, যদিও আসলে সেটা চিনির গুলি বা খুব সাধারন একটি হজমের বড়ি; তবুও ব্যথা কমে গেল।
#ডিপ্রেশনে – নকল অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট খাওয়ার পরে অনেক রোগী নিজের মেজাজে উন্নতি অনুভব করে, শুধুমাত্র সে বিশ্বাস করে যে ওষুধ খেয়ে তার মুড ভালো হয়ে গেল, এই কারণে।
#পার্কিনসন রোগে – কিছু রোগীর ডামি চিকিৎসার পরেও ডোপামিনের কাজ সাময়িকভাবে বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে।
#অনিদ্রায় – রোগীকে বলা হল এই ওষুধ খুব ভালো ঘুম আনবে, যদিও সেটি আসলে সাধারণ ভিটামিন ট্যাবলেট। অনেকেরই তাতেই ভালো ঘুম হয়ে যায়।
#মনোরোগ চিকিৎসায় – সাইকোথেরাপির সাথে যদি এইধরনের নকল ওষুধ যোগ করা হয়, তাহলে রোগীর সুস্থতার প্রত্যাশা বেড়ে যায় এবং সমস্যার উপসর্গে দারুন উন্নতি ঘটে।

// তে গুরুত্ব:
#ডিপ্রেশনের সমস্যায় প্লাসেবো প্রায় ৩০–৪০% ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে। রোগীর বিশ্বাস ও থেরাপিস্টের বিশ্বাসযোগ্য আশ্বাসই আরোগ্যের এখানে মূল চাবিকাঠি। রোগীর সাথে থেরাপিষ্টের খুব কার্যকর "Therapeutic relation" তৈরি করার জন্যে সঠিক ভাবে "Rapport building" খুব গুরুত্বপূর্ণ।

#অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার: একই ভাবে দুশ্চিন্তার সমস্যার ভুগতে থাকা রোগীর চিন্তা ও আতঙ্ক কমে যায় যদি তাকে বিশ্বাস করানো যায় যে ওষুধটি কার্যকর হবে।

#পেইন ডিসঅর্ডার: ব্যথার অনুভূতি প্রায়শঃই মানসিক হয়; প্লাসেবো এফেক্ট এন্ডোরফিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে ব্যথা কমাতে কার্যকর হয়।

#সোমাটিক সিম্পটম ডিসঅর্ডার (SSD): এই মানসিক রোগে রোগীর মানসিক সমস্যার কারনে শারীরিক উপসর্গ দেখা যায়। যেমন পরীক্ষার কেমন লিখতে পারবে এই নিয়ে নিয়ে আতঙ্ক বা টেনশনে থাকা ছাত্র হঠাৎ করে তার লেখার হাতে ব্যথা বা মাংসপেশী শক্ত হয়ে গেছে বলে অনুভব করতে পারে। এই সমস্যায় প্লাসেবো এফেক্ট সবচেয়ে বেশি কার্যকর হয়।

বা Disorder এর মতো গুরুতর মানসিক সমস্যায় প্লাসেবো তুলনামূলকভাবে কম কার্যকর হয়, তবে কিছু উপসর্গ (যেমন উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা বা অনিদ্রা) কমাতে পারে।

//Clinical Significance (চিকিৎসাগত তাৎপর্য):
• চিকিৎসক-রোগী সম্পর্ক (Therapeutic relation) প্লাসেবোকে প্রভাবিত করে।
• প্লাসেবো ব্যবহারের মাধ্যমে বোঝা যায়যে আসল ওষুধ কতটা কার্যকর হতে পারে। এই কারনেই Clinical trials-এ “placebo-controlled” পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।

পরিশেষে এই Placebo Effect সংক্রান্ত একটি নৈতিক প্রশ্ন থেকে যায়, যে এভাবে নকল ওষুধ দিয়ে কি রোগীকে বিভ্রান্ত করা উচিত? এই দ্বন্দ্ব থেকেই এখন “open-label placebo” (যেখানে রোগী জানবে যে ওষুধটি নকল, তবুও তা কার্যকর হবে) নিয়ে গবেষণা চলছে।


বর্তমান সময়ের এক বৃহৎ কিন্তু নীরব ঘাতক  #ডিপ্রেশন বা  #অবসাদ এর পেছনের বিজ্ঞানসম্মত কারনগুলো নিয়ে একটু আলোচনা করার চেষ্ট...
08/26/2025

বর্তমান সময়ের এক বৃহৎ কিন্তু নীরব ঘাতক #ডিপ্রেশন বা #অবসাদ এর পেছনের বিজ্ঞানসম্মত কারনগুলো নিয়ে একটু আলোচনা করার চেষ্টা করছি। 🧠

//নিউরোট্রান্সমিটারের (কিছু বিশেষ হরমোন যারা বিভিন্ন তথ্য এক স্নায়ু থেকে আরেক স্নায়ু পর্যন্ত পরিবহন করে) ভারসাম্যহীনতা:

সেরোটোনিন, ডোপামিন, এন্ডরফিন ও নর-এপিনেফ্রিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারগুলির ঘাটতি বা আধিক্য মেজাজকে নেতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করে।
সেরোটোনিন আমাদের মুড বা মেজাজকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে। এছাড়াও এই নিউরোট্রান্সমিটারগুলি আমাদের ঘুম, উদ্দীপনা, খিদে ও সুখানুভূতি বা মস্তি উপভোগের মতো বিষয়গুলিকে কে নিয়ন্ত্রন করে।

//মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যপ্রণালী পরিবর্তন:

মস্তিস্কের অ্যামিগডালা (ভয় ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ), এবং প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স (সিদ্ধান্ত গ্রহণ) ডিপ্রেশনের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দীর্ঘমেয়াদি ডিপ্রেশনে মস্তিস্কের টেম্পোরাল লোবের মধ্যে অবস্থিত হিপোক্যাম্পাস (যা আমাদের প্রায় সব ধরনের শিক্ষা এবং স্মৃতিকে নিয়ন্ত্রন করে) সঙ্কুচিত হতে পারে, ফলে পড়াশোনা বা নতুন কিছু শেখার আগ্রহ বা সামর্থ্য দুটোই কমে যায়।

//হরমোন ও স্ট্রেস প্রতিক্রিয়া:

দীর্ঘমেয়াদি ডিপ্রেশন স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের পরিমান বাড়িয়ে দেয়, যা মস্তিষ্কের স্নায়বিক ব্যবস্থার ক্ষতি করতে পারে। কর্টিসল হরমোনের এই অস্বাভাবিকতা ঘুম, খিদে ও কর্মক্ষমতার এনার্জি লেভেলকে কমিয়ে দেয়।

//জিনগত কারণ:

পরিবারে কারও ডিপ্রেশনের ইতিহাস থাকলে সহজে অবসাদগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়াও একাধিক জিন পরিবেশগত কারণে সক্রিয় হয়ে ডিপ্রেশন বাড়াতে পারে।

//সামাজিক ও পরিবেশগত কারণ:

একাকীত্ব, পারিবারিক সমস্যা, চাকরি বা পড়াশোনার চাপ, আর্থিক অনিশ্চয়তার মতো বিষয়গুলি ডিপ্রেশনের ঝুঁকি বাড়ায়। কোন বড়সড় শারীরিক বা মানসিক আঘাত বা ট্রমার অভিজ্ঞতা বা দীর্ঘস্থায়ী অসুখও ডিপ্রসনের বড় কারন হতে পারে।

>> ডিপ্রেসনের চিকিৎসা বা intervention পদ্ধতি 🩺

//প্রাথমিক চিকিৎসা পদ্ধতি:

ডিপ্রেসনের প্রাথমিক পর্যায়ে কাউন্সেলিং অত্যন্ত কার্যকর হয়। উপসর্গ দীর্ঘস্থায়ী হলে বিশেষজ্ঞ Psychologist বা Psychiatrist এর কাছে চিকিৎসা করানো উচিত।

//সাইকোথেরাপি (কথোপকথন ভিত্তিক চিকিৎসা):

১. কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (CBT): নেতিবাচক বা নেগেটিভ চিন্তার পরিবর্তন করে ইতিবাচক বা পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করা সম্ভব।
২. র ্যাশনাল ইমোটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (REBT): মনের মধ্যে ধরে রাখা নানারকম অযৌক্তিক ধারনা ও ভুল বিশ্বাসকে যুক্তি দিয়ে ভেঙে ভেঙে সঠিক ধারনাগুলি গড়ে তোলার মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস বাড়ানো যায়।
৩. ইন্টারপারসোনাল থেরাপি: সম্পর্ক ও সামাজিক সাপোর্ট উন্নত করতে সাহায্য করে।
৪. নিউরো লিঙ্গুইস্টিক প্রোগ্রামিং (NLP): সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে অতি দ্রুত জীবনের প্রতি যথাযথভবে আশাবাদী ও জীবনের নির্দিষ্ট লক্ষ্যের প্রতি অগ্রসর হতে অনুপ্রাণিত করা যায়।
৫. ক্লিনিক্যাল হিপনোথেরাপি: বিজ্ঞানসম্মতভাবে সম্মোহিত করে সুনির্দিষ্ট সাজেশান বা তথ্য সম্বলিত বার্তার মাধ্যমে ডিপ্রেসন থেকে বের করে আনা সম্ভব।

//ওষুধ:

অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট যেমন SSRIs (Selective Serotonin Reuptake Inhibitors) সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়ায়। প্রয়োজনে ডাক্তাররা SNRIs, TCAs বা MAOIs ব্যবহার করে থাকেন। তবে মনে রাখা দরকার, একমাত্র রেজিষ্টার্ড সাইকিয়াট্রিষ্টের পরামর্শছাড়া কোনভাবেই এইসব ওষুধ খাওয়া চলবে না। তাতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

//জীবনযাত্রার পরিবর্তন:

১. নিয়মিত ব্যায়াম বা শারীরিক কসরৎ ডোপামিন ও এন্ডরফিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে মেজাজ ভালো রাখতে সহায়তা করে।
২. কমপক্ষে ৬-৭ ঘন্টার গভীর ঘুম মস্তিষ্ককে রিফ্রেশ করতে সাহায্য করে।
৩. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, যেমন ফল, শাকসবজি, ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার মস্তিষ্ককে সুরক্ষিক রাখে।

//সামাজিক সহায়তা (Social Support):

১. পরিবার, বন্ধুমন্ডলী বা সাপোর্ট গ্রুপে নিজের আবেগ বা অনুভূতির অভিজ্ঞতাগুলি Share করে ভাগ করে নিলে একাকীত্ব কমে।
২. বিভিন্ন সামাজিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।

//স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট:

মেডিটেশন, যোগব্যায়াম ও মাইন্ডফুলনেস টেকনিকের অভ্যাস কর্টিসলের নিঃসরণ কমিয়ে মানসিক শান্তি আনে। এছাড়াও কিছু হবি, যেমন গান বাজনা, নৃত্য, লেখালিখি করা, বাগান করা এমনকি বেড়াতে যাওয়ার মতো ব্যাপারগুলোও আমাদের মনকে ফুরফুরে রাখতে সাহায্য করে।

ডিপ্রেশন শুধুমাত্র মানসিক বা চারিত্রিক গঠনের দুর্বলতা নয়, বরং এটি মস্তিষ্ক, হরমোন, জিন ও সামাজিক ও পরিবেশগত বিষয়গুলির এক জটিল আন্তঃসম্পর্কের ফল। সঠিক চিকিৎসা, জীবনযাত্রার উন্নতি ও সঠিক সাপোর্ট সিষ্টেমের মাধ্যমে ডিপ্রেসনে থাকা ব্যক্তি সম্পূর্ণ সুস্থ হতে পারেন।

সচেতন থাকুন, ভালো থাকুন।

08/18/2025

Good morning all

05/03/2025

Address

Midnapore, Midnapore
Calgary, AB
721101

Telephone

+19547732787

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Overcome our mental illnesses posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Practice

Send a message to Overcome our mental illnesses:

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram