05/08/2024
▌🚨 টিয়ার গ্যাস থেকে কীভাবে বাঁচবেন? 🚨 ▌
টিয়ার গ্যাসের কোনো অ্যান্টিডোট নেই সত্যি, তারপরেও সুরক্ষার অনেক উপায় আছে। আজকে সেই করণীয়গুলো বলবো, আর যেসব ভুল পরামর্শ এড়িয়ে চলা দরকার সেটাও বলে দিব। হয়তো হাতের কাছে সবসময় সবকিছু পাবেন না, যা পাবেন তা দিয়েই নিজেদের সেইফ রাখার চেষ্টা করবেন।
🩺ফার্স্ট এইড
1️⃣ গ্যাসের সংস্পর্শে আসার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই চোখ, মুখ, গলা, শ্বাসনালী ও ত্বকে খুব জ্বালাপোড়া শুরু হবে। সাথে চোখ-নাক থেকে পানি পড়া, চোখে ঘোলা দেখা, ঢোক গিলতে কষ্ট হওয়া, লালা পড়া, শ্বাসকষ্ট, কাশি, ও ত্বক পোড়া শুরু হতে পারে। এজন্য–
🟥প্রথমেই দ্রুত ঐ স্থান থেকে সরে গিয়ে বিশুদ্ধ, খোলা বাতাসে চলে যাবেন। এটা খুবই কার্যকর। বিশেষ করে গ্যাস জমে ধোঁয়াটে হয়ে থাকা জায়গা থেকে যতটা সম্ভব দূরে সরে যাবেন।
🟥মাথা উঁচু করে রাখবেন। যদি খুব কাছ থেকে কিংবা বেশি পরিমাণে টিয়ার গ্যাসের সংস্পর্শে আসেন, তাহলে চোখ যথাসম্ভব বন্ধ রাখবেন।
🟥পরনের সব কাপড়চোপড় ও ব্যাগ খুলে সরিয়ে রাখবেন। অন্তত অন্তর্বাস ছাড়া বাকি সব কাপড় খুলে ফেলবেন। এক্ষেত্রে একটা ব্যাপার অবশ্যই মাথায় রাখবেন—
🚫কাপড় খোলার সময় কখনোই মাথার ওপর দিয়ে তুলবেন না।🚫
দরকার হলে কাপড় গলার কাছ থেকে ছিঁড়ে বা কেটে খুলে ফেলবেন শার্ট খোলার মতো করে। বিষাক্ত কাপড় কিভাবে হ্যান্ডেল করবেন সেটা পর্ব ৩/৪ এ বলেছি।
🟥প্রচুর পানি দিয়ে চোখ ধুবেন। অন্তত ১০–১৫ মিনিট ধরে অথবা কেমিক্যাল পুরোপুরি চলে না যাওয়া পর্যন্ত এভাবে ধুতে হবে।
🟥কন্ট্যাক্ট লেন্স পরলে সেটা চোখ ধোয়ার আগে খুলে ফেলবেন। সম্ভব হলে কন্ট্যাক্ট লেন্স না পরে চশমা পরবেন। এটা কেমিক্যালের সংস্পর্শ কিছুটা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
🟥দ্রুত পুরো শরীর প্রচুর পরিমাণে সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এটা শরীরে থাকা কেমিক্যাল থেকে সুরক্ষা দিবে। পানির সংস্পর্শে প্রথম প্রথম কিছুক্ষণ জ্ব্বালাপোড়া বেশি হতে পারে সেটা মাথায় রাখবেন। ধোয়ার সময়ে বেশি ঘষাঘষি করা থেকে বিরত থাকবেন, নাহলে নাজুক ত্বক উঠে গিয়ে আরও ক্ষত হতে পারে।
🟥শরীরের কোথাও ক্ষত হলে সেই অংশে সাবান-পানির পরিবর্তে ব্যাগের স্যালাইন (যেমন: 💊Solo বা 💊Normalin) ব্যবহার করবেন।
চশমা পরলে সেটা ভালো করে সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে তারপর ব্যবহার করতে পারবেন।
🟥নতুন কাপড় বা চাদর দিয়ে আক্রান্তের শরীর ঢেকে দিবেন।
আক্রান্ত ব্যক্তিকে যত দ্রুত সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে পুরোপুরি পরিষ্কার করে ফেলা যায়, তত ক্ষয়ক্ষতি কমানো যায়। সাধারণত সব পরিষ্কার করার ১৫–৩০ মিনিটের মধ্যে টিয়ার গ্যাসের প্রভাব কেটে যায়।
2️⃣ শ্বাসকষ্ট হলে অক্সিজেন ব্যবহার করবেন যদি পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি অ্যাজমার চিকিৎসায় যেসব ওষুধ ব্যবহার করি, যেমন: 💊সালটোলিন ইনহেলার ও 💊উইন্ডেল নেবুলাইজার—এগুলো ব্যবহার করতে পারেন। ডাক্তারি ভাষায় এগুলোকে আমরা Bronchodilator বলি, এগুলো শ্বাস নেওয়া সহজ করতে পারে। এ ছাড়া 💊বুডিকর্ট নেবুলাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
ফার্মেসিতে সাধারণত ২০-৩০ টাকার বিনিময়ে এক ডোজ নেবুলাইজার নেওয়া যায়, 'গ্যাস' বললে হয়তো তারা সহজে চিনতে পারবেন। তখন এসব ওষুধের নাম দেখাতে পারেন। এই ব্র্যান্ড নামগুলো বেশি পরিচিত, তবে অন্য যেকোনো ভালো ব্র্যান্ডের ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন।
3️⃣ পুড়ে যাওয়া জায়গার চিকিৎসা করবেন এভাবে: https://shohay.health/first-aid/burns-and-scalds
4️⃣ বদ্ধ জায়গায় টিয়ার গ্যাস ছোড়া হলে ঝুঁকি অনেক বেশি––অন্ধ হওয়া থেকে শুরু করে শ্বাস বন্ধ হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব এমন জায়গা থেকে দূরে খোলা স্থানে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, টিয়ার গ্যাসের সংস্পর্শ থেকে সাথে সাথে সরে আসলে এসব গুরুতর সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
এসবের পরও জ্বালাপোড়া না কমলে কিংবা অসুস্থ লাগতে থাকলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। বিশেষ করে চোখ আক্রান্ত হলে ডাক্তারি পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
তবে আশার কথা হলো, বেশিরভাগ আক্রান্ত মানুষেরই ডাক্তারি চিকিৎসা লাগে না।
❤️🔥যাত্রা শুভ হোক❤️🔥
পর্ব ১/৪