23/04/2024
Protect the liver and feed the gut microbiomes. ❤️❤️
অনুগ্রহ করে রিয়াল বা আসল খাদ্য গ্রহণ করুন। সেই সব খাদ্য, যার লেবেল নেই কোন। যেমনটি মাছ, ডিম, মাংস, আপেল, কমলালেবু, বিভিন্ন বাদাম ইত্যাদি ইত্যাদি।
এইসব খাদ্যে সল্যুবল ও ইনসল্যুবল দু ধরনেরই ফাইবার রয়েছে।
খাদ্য আপনার শরীরের জন্যে আর ফাইবার আপনার ইন্টেসটিনে থাকা প্রায় তিন মিলিয়ন মাইক্রোবিয়োমের জন্যে। এই মাইক্রোবিয়োম ( এদের সম্মিলিত ওজন প্রায় দু থেকে তিন কিলো) আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্যে নিতান্তই প্রয়োজন।
এদের খাদ্য ফাইবার না পেলে, এরা চলে এসে আমাদের শরীরের অন্ত্র বা ইনটেসটিনের মিউসিন লেয়ার টি কে ব্যবহার করতে বাধ্য হবে। তাতে এই প্রকৃতিদত্ত মিউসিন লেয়ার টি ক্ষয়প্রাপ্ত হবে এবং এমনটা অনেক দিন চললে লিকি গাট ( Leaky gut)এর সমস্যা হবে, যারই প্রতিফলন আলসারেটিভ কোলাইটিস, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম ইত্যাদি। যার যা খাদ্য তাকে তা তো দিতেই হবে, নয় কি?
এরপর আসি লিভার ও ফ্রুক্টোজ অথবা লিভার ও অ্যালকোহল এর কথায়। এই দুটির পরিমাণ বেশি হলেই লিভারে ক্ষতি কিন্তু প্রায় তুল্যমূল্য। লিভার সারাদিনে প্রায় ২৫ থেকে ৩৭.৫ গ্রাম ফ্রুক্টোজ কে ম্যানেজ করে নিতে পারে, কিন্তু এর বেশি হলে সে অক্ষম। তখন এই ফ্রুক্টোজ বা অ্যালকোহল কিন্তু চর্বির পরত হয়ে জমা পড়বে লিভারে। শুধু তাইই নয়, ফ্রুক্টোজ হলো মাইটোকন্ড্রিয়াল টক্সিন এবং মাইটোকন্ড্রিয়া বা আমাদের শরীরের কোষগুলির ব্যাটারি অর্থাৎ এনার্জি উৎপাদনের যন্ত্র।
আশ্চর্য নয় যে আদতে অ্যালকোহল ও কার্বোহাইড্রেট বা মোলাসেস বা গুড় অথবা গম, কে গাঁজিয়ে তৈরী করা। এর প্রথম মেটাবলিক পরিবর্তন টি আগেই করা, শুধু ফ্রুক্টোজ এর বেলায় ফার্স্ট স্টেপ ( First step)টি আমাদের লিভার কেই করতে হয় শুধু।
এবারেই আসবে সেই লাখ টাকার প্রশ্ন। মাইটোকন্ড্রিয়াল টক্সিসিটি হলে কি হবে বা কি কি হবে আমাদের শরীরে।
এর ফলেই হবে ওবেসিটি বা স্থূলতা, টাইপ টু ডায়বেটিস, ফ্যাটি লিভার, হাইপারটেনশন,ডিসলিপিডিমিয়া, হার্টের অসুখ বা সেরিব্রো ভাসকুলার জটিলতা, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম, এবং শেষ পর্যন্ত আলঝাইমার্স ডিমেনশিয়া ( সাধারণত ৭৫ বছর বয়সের পরে) বা টাইপ থ্রি ডায়বেটিস।
এদের কার্যকারণ কিন্তু প্রায় একই।
স্থূলতা শুধু ওজন দেখলে সব সময়ে বোঝা সম্ভব নয়। বরং কোমরের মাপ দেখুন ( যাকে বেল্টের মাপ ও বলতে পারেন)। পুরুষের ক্ষেত্রে ৪০ ইঞ্চি ছাড়ালেই এবং নারীদের বেলায় ৩৬ ইঞ্চি ছাড়ালেই বুঝতে হবে মেদাধিক্য বা ওবেসিটি হয়েছে। খুবই সহজ পরীক্ষা।
অনেকেই এমনও আছেন যাদের বলা হচ্ছে থিন সিক (Thin sick) মানুষ। এঁদের ফ্যাট জমা হয় লিভারে এবং প্যাংক্রিয়াসে এবং বাহির হতে বোঝা যায় না, কারণ দেখা যায় না।
একটি প্রচলিত ধারণা আছে যে হাইপারটেনশন বা হাই ব্লাড প্রেসার হয় অধিক লবণ বা সল্ট গ্রহণের কারনে, সেটিও ঠিক নয় বলছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এবং চিকিৎসকেরা। সেটির কারণ ও দীর্ঘদিন ধরে অনেক ফ্রুক্টোজ গ্রহণ এবং তজ্জনিত মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিসফাংশন বা মাইটোকন্ড্রিয়াল টক্সিসিটি। নাইট্রিক অক্সাইড বা NO র ঘাটতি হতে থাকলেই হাইপারটেনশন দেখা দেয়। এজন্যই হয়ত খুব কম বয়সে এই রোগ বিরল তবে আজকাল দেখা যাচ্ছে কিশোর বা কিশোরী বয়স হতেই।
অতএব এই সব অসুখের ই মূল কারণ হলো মাইটোকন্ড্রিয়াল ড্যামেজ বা ডিসফাংশন। এই অসুখ গুলি সেই কারণেই হয়তো বা Druggable নয়, Foodable.
ওষুধ দিয়ে হাইপারটেনশন কে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এবং প্রয়োজন ও বটে, যেমনটি প্রয়োজন ওষুধ দিয়ে রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা স্বাভাবিক রাখা।
তবে কিনা মূল জায়গায় চিকিৎসা না করলে অসুখ গুলি এবং ওষুধ গুলি চলতেই থাকবে প্রায় সারা জীবনভোর।
বলা হচ্ছে, These are not diseases, these are signs of mitochondrial or sub cellular toxicity.
এইগুলি আট প্রকার ( আমি টক্সিসিটি র কথা লিখছি)
1.Glycation
2.Oxidative stress
3.Insulin resistance
4.Methylation
5. Autophagy
6.Membrane instability
7.Inflammation.
8. Methyl group translation and transcription of gene sequencing.
এত সব জেনে বা বুঝে কি লাভ, যদি না আমরা প্রতিকার করতে পারি।
সেটিই লিখছি।
রিয়াল বা লেভেল না দেওয়া খাবার খাওয়া অভ্যাস করুন খুব ছোট বেলা থেকেই। প্রসেসড ফুড বা বাহিরের খাদ্য বা জাংক ফুড বা কোন বাহিরের ফ্রায়েড ফুড এড়িয়ে চলুন। প্রসেসড মিট ও এড়িয়ে চলুন।
ফ্রুট বা ফল যদিও বা একটি কমলালেবু বা একটি আপেল বা একটি পাকা পেয়ারা প্রতিদিন চলতে পারে, কিন্তু তার বেশি আর একদম নয়।
কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ কম করুন। সুন্দর লম্বা বাসমতি চালের থেকে মিলেট বা বজরা,জোয়ার, রাগি, ভুট্টা ইত্যাদি গ্রহণ করা উত্তম কারণ এগুলির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এবং গ্লাইসেমিক লোড ও তুলনায় ভালো। তবে মনে রাখুন এগুলোও কিন্তু কার্ব। কার্ব বা কার্বোহাইড্রেট যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো। আটা চলতে পারে কিন্তু ময়দা পরিত্যাগ করলেই ভালো।
টাটকা মাছ বা মাংস, সব ধরণের ন্যাচারাল স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও স্বাগত।
আগে বলা হতো যে প্রতিদিন রেড মিট বা ছাগল, গরু বা শুয়োরের মাংস, পুরো ডিম নিয়মিত খাওয়া ভালো নয়, বিশেষত: রেড মিট রোজ খেলে ক্যান্সার এর কারণ হতে পারে, এখন বিপরীতে বলা হচ্ছে যে রেড মিট প্রসেসড বা ঝলসানো বা পোড়া হলে তবেই ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়ে নচেত নয়। অতএব কাবাব বা ভাজা মাংস পরিহার করুন। মাছ ও প্রতিদিন খাওয়া উচিত। জল পান করুন প্রচুর, সারাদিন।
আর এই সব উপসর্গ ( আমি ইচ্ছে করেই অসুখ না লিখে উপসর্গ লিখেছি) থাকলেই যথাযথ ভাবে আপডেটেড বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
আর ভোজ্য তেল সম্পর্কে আমি আগে বিস্তারে লিখেছি, লিখেছি কোলেস্টেরল সম্পর্কেও।
❤️❤️ একটি ঘটনা যা যোগ না করলেই নয়, সেটি হলো, অতি উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকা স্বত্বেও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে একজন নাগরিকের গড় আয়ু কিন্তু কমতির দিকে, কারণ অবশ্যই বালক অবস্থা থেকেই হাই ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপের ব্যবহার এবং প্রচুর ফ্রুক্টোজ যুক্ত কোল্ড ড্রিংক এবং হাই ফ্রুক্টোজ যুক্ত এবং ট্রান্স ফ্যাট যুক্ত আইস ক্রিমের ব্যবহার এবং উপরে উল্লেখিত ঘটনাগুলি ই দায়ী বলে সেই দেশের নামী পেড্রিয়াটিক এন্ডোক্রিনোলজিস্টরা হলফ করে বলছেন । বাস্তব হলো যে এখনো আমেরিকায় বাচ্চাদের না কোল্ড ড্রিংকস না আইসক্রিম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ❤️❤️
সব্বাই নতুন বছরে খুব ভালো থাকুন।
নমস্কার। 🙏🙏
সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়।