07/08/2025
চারশো বছর আগেই ‘ব্রেসেস’! দাঁত বাঁচাতে সোনার তার ব্যবহার করেছিলেন এক অভিজাত নারী
১৭শ শতকের এক ফরাসি অভিজাত নারী অ্যান দালেগ্র (Anne d'Alegre) মারা যান ১৬১৯ সালে। প্রায় ৪০০ বছর পর, তাঁর দেহাবশেষ বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা এক চমকপ্রদ তথ্য আবিষ্কার করেন—তিনি দাঁত ধরে রাখতে সোনার তার ব্যবহার করেছিলেন!
১৯৮৮ সালে ফ্রান্সের Château de Laval দুর্গে তাঁর মরদেহ আবিষ্কৃত হয়। একটি সীসার তৈরি কফিনে সংরক্ষিত থাকার কারণে তাঁর দেহাবশেষ উল্লেখযোগ্যভাবে ভালো অবস্থায় ছিল।
সম্প্রতি আধুনিক "কোন বিম স্ক্যান" (Cone Beam CT) প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দাঁতের ক্ষয় ঠেকাতে ও দাঁতগুলো জোড়া ধরে রাখতে তিনি কয়েকটি দাঁতের চারপাশে সোনার তার জড়িয়ে রেখেছিলেন। আশ্চর্যের বিষয়, একটি দাঁতের জায়গায় হাতির দাঁতের তৈরি কৃত্রিম দাঁতও বসানো ছিল!
তবে গবেষকরা জানিয়েছেন, এই চিকিৎসা সম্ভবত উল্টো ক্ষতিকর ছিল—কারণ তারগুলো নিয়মিত টাইট করতে হতো, যা আশপাশের দাঁতের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে সেগুলোকেও দুর্বল করে তুলতে পারত।
অ্যান দালেগ্র ছিলেন দুইবার বিধবা, সামাজিকভাবে বিতর্কিত, এবং ফরাসি ধর্মযুদ্ধ চলাকালীন একজন প্রোটেস্ট্যান্ট সমর্থক। সেই সময় নারীদের সৌন্দর্য ও সামাজিক অবস্থানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। গবেষকদের ধারণা, সৌন্দর্য ধরে রাখতে গিয়ে তিনি এই যন্ত্রণাদায়ক চিকিৎসা সহ্য করেছিলেন।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, তাঁর দাঁতের অবস্থা সেই সময়ের যুদ্ধ, দুঃখ-কষ্ট ও শারীরিক পরিশ্রমের একটি জীবন্ত সাক্ষ্য বহন করে। আজকের যুগে যেখানে বিশ্বের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ মানুষ পিরিয়ডন্টাল রোগে ভুগছেন, সেখানে ৪০০ বছর আগের এমন জটিল চিকিৎসা নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক বিস্ময়!