11/02/2021
বর্তমান সমাজে বায়োকেমিক ওষুধ এর প্রয়োজনীয়তা :
অনেকেই মনে করেন যে হোমিওপ্যাথি ওষুধ আর বায়োকেমিক ওষুধ প্রায় একই শুধু উনিশ আর বিশ কিন্তু বন্ধুরা ব্যাপারটা মোটেই তা নয় । বায়োকেমিক ওষুধ সম্পূর্ণ আলাদা, এর তৈরী পদ্ধতি আলাদা, প্রয়োগ পদ্ধতি আলাদা এবং সর্বোপরি একে ব্যাখ্যা করার জন্য যে বিজ্ঞান সেটাও আলাদা । অনেক সময় অনেককে বলতে শোনা যায় যে বইপাড়ায় বায়োকেমিক এর নির্ভরযোগ্য বই অমিল, উপযুক্ত বায়োকেমিক ডাক্তার অমিল কথাটা অনেক অংশে সত্য । কারন বিজ্ঞান ভিত্তিক বায়োকেমিক বই নতুন করে লেখা হচ্ছে না । প্রথম যে কটি বই বেরিয়েছিল তাই নতুন করে বারবার print হচ্ছে । আর বায়োকেমিক কলেজ গুলোতে যেহেতু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হোমিওপ্যাথি ডাক্তার রা অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত তাই বায়োকেমিক এর প্রপার জ্ঞানলাভ হয়ে উঠছে না । তাই নির্ভরযোগ্য ডাক্তার তৈরী হচ্ছে না, বায়োকেমিক এর ছাত্রছাত্রীদের অন্য প্যাথির উপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছে ।এই কথা বলার কারণ হোমিওপ্যাথির অধ্যক্ষদের ছোট করা নয় । বায়োকেমিক পড়তে গেলে হিউমান ফিজিওলজি, হেরেডিটি সাইন্স, কেমিস্ট্রি আর সার্জারি এর উপর জ্ঞান থাকতে হবে, পড়ার সিলেবাসও সেরকম ভাবে তৈরী হতে হবে, অধ্যক্ষদেরও ছাত্রছাত্রীদের সেরকমভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আসলে এই কথাগুলো বলার কারণ হোমিওপ্যাথি র সাথে এই প্যাথি র বিরাট পার্থক্য।
হোমিওপ্যাথি তে যেমন সুস্থ শরীরের ওপর ওষুধের ব্যাবহারে যে যে রোগের symtom ফুটে ওঠে ওই ওষুধটি সেই সেই রোগ সারাতে সক্ষম । কিন্তু বায়োকেমিক মোটেই তা নয়, বিভিন্ন কারণ বশত শরীরে লবণের অনুপাতের তারতম্য ঘটে তখনি মানুষ অসুস্থ হয় এবং তখনি ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয় । সেই সময়ে ওষুধ আকারে এই লবন রোগীর শরীরে দিতে পারলে সে সুস্হ হয়ে ওঠে এই হলো বায়োকেমিক এর এপ্লিকেশন ।
আমাদের দেশে বিভিন্ন শ্রেণীর লোক আছে, যাদের জীবন যাত্রা আলাদা আলাদা, তাঁদের জীবিকা আলাদা, খাদ্য আলাদা, বাসস্থান আলাদা। এই সবকিছুর উপর ভিত্তি করে শরীরে লবণের আনুপাতিক ভাগ হার নির্ণিত থাকে । সেই কারণে তাদের স্থান, কাল, পাত্র ভেদে কি ধরণের টিসুসল্ট এর অভাব হতে পারে টার একটা ব্যাখ্যা এই প্যাথিতে পাওয়া যায় । ভারতে প্রতিটি রাজ্যে আলাদা মানসিকতার, আলাদা জীবনযাত্রার লোক বাস করে সেক্ষেত্রেও রোগের প্রকোপও ভিন্ন মাত্রার হয়ে যায়। একরাজ্যে যে রোগের প্রকোপ বেশি মাত্রায় দেখা যায় অন্য রাজ্যে সেই রোগের অতটা প্রকোপ দেখা যায় না, সে রাজ্যে আবার অন্য রোগ বেশিমাত্রায় হয় যা আগের রাজ্যে হয়তো দেখায় যায়নি ।
বংশগত তালিকার ভিত্তিতে রোগের বিভিন্নতা ভীষণ ভাবে দেখা যায়। হোমিওপ্যাথি তে এর ব্যাখ্যা করা হয় মায়াজম নামক একটি বিষয়কে ভিত্তি করে । যেখানে সোরা, সিফিলিস, সাইকোসিস মূলত এই তিনটি রোগকে প্রাধান্য দেওয়া হয় এবং বর্তমানের প্রতিটি অসুখই এই তিনটি রোগের প্রমান স্বরূপ ধরা হয় । বংশগত ভাবে রুগীর জাজমেন্ট করা হয় থাকে, টার জন্য কেসহিস্ট্রির প্রয়োজন হয় আর এখানে একটি গোলমাল পাকায় যেটা কখনো বড়ো আঁকার ধারণ করে । অনেক রুগী তাদের কেসহিস্ট্রি ঠিক মতো বলতে পারে না, কিছু কোথায় আন্দাজেও বলে দেয়, এর ফলে চিকিৎসক ওষুধ নির্বাচনে ভুল করে ফেলে এবং কিছুক্ষেত্রে সেই ফল মারাত্মক হয় দাঁড়ায়। কিন্তু বায়োকেমিক এর হেরিডেটারির ব্যাখ্যাটা অনেকটাই আলাদা । রুগীকে দেখে, তার অসুবিধার কথা শুনে সেই ফ্যামিলির বংশগত অসুখের কথা বোঝা যায় আলাদা করে কেসহিস্ট্রি এর দরকার পড়ে না। কারণ প্রতিটি ফ্যামিলিতেই বংশগত ভাবে কিছু প্রয়োজনীয় শারীরিক লবণের অভাব থাকবে, মানুষ বিভিন্ন ভাবে তার পূর্বপুরুষের পরিচয় বহন করবে, রোগের ক্ষেত্রেও তাই । কোনো পরিবারে বাতের প্রকোপ দেখা যায় তো কোনো পরিবারে শ্বাসকষ্ট, কোনো পরিবারে ক্যান্সার এর প্রকোপ দেখা যায় তো কোনো পরিবারে স্ত্রীরোগের প্রকোপ বেশি, এ সবই শরীরের আনুপাতিক লবণের ঘাটতির জন্য হয়ে থাকে । যার বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা বায়োকেমিক দিয়ে থাকে ।
বন্ধুরা এখন আপনাদের কাছে অনেকটা পরিষ্কার যে বায়োকেমিক ওষুধ আমাদের কেন প্রয়োজন । তবে আরেকটা বিষয় আপনাদের জানা প্রয়োজন যে, এই ওষুধ এলোপ্যাথি বা হোমিওপ্যাথি দুপ্রকারের ওষুধ এর সাথে এইসাথে প্রয়োগ করা যেতে পারে । যেমন, কারুর থাইরয়েড প্রবলেম এর জন্য ওষুধ খান বা অনেকদিন হাইপ্রেসার এর ওষুধ খাচ্ছেন সেই ওষুধ তো আর বন্ধ করা সম্ভব নয়, কারণ শরীর durg addict আছে, এবার ধরুন তার রোদে বার হলেই মাথায় ধরে বা রাতে খেয়ে ওঠার পর পেটে গ্যাস অম্বলে অস্বস্তি হয়
অনেক এন্টাসিড খেয়েও কিছু হচ্ছে না বা seasonal skin diesease আছে বছরের একটা পার্টিকুলার সময়ে সেটা আসে খুব অসুবিধার সৃষ্টি করে সেই সব জায়গায় এই বায়োকেমিক ওষুধ চলতে পারে শুধু চলে না বেশ ভালোই কাজ করে অথচ ভদ্রলোক হাইপ্রেসার এর জন্য অনেকদিন ধরে এলোপ্যাথি ওষুধ নিচ্ছেন ।
অনেকের মতে এই ওষুধ এর কোনো side effect নেই, কিন্তু মনে রাখবেন যার effect আছে তার side effect ও আছে । তাই ডাক্তারের মত নিয়ে ওষুধ খাবেন ।