10/08/2022
বাঁচতে ও বাঁচাতে হলে জানতে হবে: কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ও কর্মস্থল সুরক্ষায় সিএইচসিপি/প্যারামেডিক/নার্সদের করণীয়
কোভিড-১৯ ও করোনা ভাইরাস কি?
কোভিড-১৯ রোগটি মানুষের শ্বাসতন্ত্রের এক ধরণের সংক্রমণ যা করোনা ভাইরাস ( SARS-COV-2 ev Severve Acute Respiratory Syndrome Corona Virus 2) দ্বারা হয়। ২০১৯ সালে চীনে এই রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত এই রোগ এবং ভাইরাসটি ছিল পুরোপুরি অজানা। কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শতকরা প্রায় ৮১ ভাগের মৃদু সংক্রমণ হতে পারে, ১৪ ভাগের শারিরীক অবস্থা খারাপ হতে পারে (হাসপাতালে ভর্তি এবং অক্সিজেনের প্রয়োজন হতে পারে) এবং ৫ ভাগের শারীরিক অবস্থা অতিমাত্রায় খারাপ হতে পারে। [নিবীর পরিচর্যা কেন্দ্র (Intensive Care Unit-ICU) তে রাখার প্রয়োজন হতে পারে]। বয়স্ক ব্যক্তি এবং অন্যান্য রোগের উপস্থিতি (ডায়াবেটিস/উচ্চ রক্তচাপ/হৃদরোগ ইত্যাদি) এ রোগে আক্রান্তদের মৃত্যু ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ (Infection Prevention and Control - IPC) কোভিড-১৯ রোগ মোকাবেলার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ও সঠিক উপায়ে হাত-ধোয়াসহ সংক্রমণ প্রতিরোধের উপায় সমূহ মেনে চললে এই রোগের বিস্তার কমিয়ে আনা সম্ভব।
সাধারণভাবে কোভিড-১৯ এর লক্ষণসমূহ
ভাইরাসটি মানুষের শরীরে ঢোকার পর হতে সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে সাধারণত ২ থেকে ১৪ দিন সময় লাগে।
লক্ষণসমূহ হলো-
- বেশীরভাগ ক্ষেত্রে প্রথম লক্ষণ হচ্ছে জ¦র (১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর বেশী)
- শুকনো কাশি
- শ্বাসকষ্ট/নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে
- গলা ব্যথা হতে পারে
- অন্যান্য অসুস্থতা (ডায়াবেটিস/উচ্চ রক্তচাপ/শ্বাসকষ্ট/হৃদরোগ/কিডনি সমস্যা/ক্যান্সার ইত্যাদি) থাকলে অঙ্গ অকার্যকর (অর্গান ফেইলিওর) হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন অনুসারে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সংজ্ঞা সমূহ
সন্দেহজনক রোগী (Suspect case)
ক) শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগীর (জ্বর সাথে শ্বাসতন্ত্রের রোগের যেকোন একটি উপসর্গ, যেমন- কাশি, শ্বাস কষ্ট) এবং উপসর্গ শুরু হওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে কোভিড-১৯ উপদ্রুত বা সামাজিক সংক্রমণ আছে এমন এলাকায় ভ্রমণ বা বসবাসের ইতিহাস আছে।
অথবা
খ) শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগী এবং সুনিশ্চিত বা সম্ভাব্য কোভিড-১৯ রোগীর সাথে উপসর্গ শুরুর ১৪ দিনের মধ্যে সংস্পর্শে এসেছেন
অথবা
গ) সদ্য শুরু হওয়া মারাত্মক শ্বাসতন্ত্রের রোগী (জ্বর ও সাথে অন্তত একটি শ্বাসতন্ত্রের রোগের উপসর্গ, যেমন- কাশি, শ্বাসকষ্ট ও হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন আছে) এবং রোগীর উপসর্গ সমূহের ব্যাখ্যা কোন বিকল্প রোগ দিয়ে করা যায়না এমন ক্ষেত্রে।
সম্ভাব্য রোগী (Probable case)
ক) সন্দেহজনক রোগী যার কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল অমীমাংসিত।
অথবা
খ) সন্দেহজনক রোগী যাকে কোন কারণে পরীক্ষা করা যায়নি।
সুনিশ্চিত রোগী (Confirmed case)
কোন উপসর্গই থাকুক বা না থাকুক ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় কোভিড-১৯ প্রমাণিত।
সংস্পর্শে আসার সংজ্ঞা (Definition of contact)
সম্ভাব্য বা সুনিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগীর উপসর্গ শুরুর ২ দিন পূর্ব হতে ১৪ দিন পর্যন্ত কোন ব্যক্তির নিম্নরূপ সংস্পর্শ হলে।
ক) সম্ভাব্য বা সুনিশ্চিত রোগীর মুখোমুখি সংস্পর্শ (১ মিটারের মধ্যে ১৫ মিনিটের অধিক সময় ধরে থাকলে)।
খ) সম্ভাব্য বা সুনিশ্চিত রোগীর সাথে সরাসরি শারীরিক সংস্পর্শ।
গ) সম্ভাব্য বা সুনিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগীকে যথাযথ ব্যক্তিগত সুরক্ষা (Personal Protective Equipment- PPE) ব্যতীত সরাসরি সেবা প্রদান।
ঘ) ¯স্থানীয় ঝুঁকি নিরূপণ পূর্বক অন্যান্য অবস্থা।
করোনা ভাইরাস যেভাবে ছড়ায়
ক) শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে (হাঁচি/কাশি/কফ/সর্দি/থুতু) এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে একজন থেকে আরেক জনে ছড়ায়
খ) আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির সময় নাক বা মুখ থেকে নিঃসৃত হাঁচি-কাশির অদৃশ্য ক্ষুদ্র কণার (Respiratory droplet) মাধ্যমে এই রোগটি একজন থেকে অন্য জনের মাঝে ছড়ায়। এই ক্ষুদ্র কণাগুলো আক্রান্ত ব্যক্তির চারপাশের যে কোন বস্তুর উপর (১ মিটার বা ৩ ফুটের অধিক দুরত্ব পর্যন্ত) পড়ে (যেমন- টেবিল, চেয়ার, তৈজষপত্র ইত্যাদি) এবং অন্য কেউ হাত দিয়ে ঐ বস্তুসমূহ স্পর্শ করে খালি হাতে (হাতকে জীবাণুমুক্ত না করে) নাক, মুখ ও চোখে হাত দিলে ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটতে পারে। এজন্যই অসুস্থ ব্যক্তি থেকে ১ মিটার বা ৩ ফুটের বেশী দুরত্ব বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
কোভিড-১৯ সনাক্তকরণে ল্যাবরেটরি পরীক্ষা
যে কোন সন্দেহভাজন রোগীর (সংজ্ঞা উপরে দেখুন) ক্ষেত্রে মলিকুলার (আরটি-পিসিআর) পরীক্ষা করে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধের উপায়
ক) হাত ধোয়া
- সাবান ও পানি দিয়ে ৪০-৬০ সেকেন্ড সময় নিয়ে হাত ধুতে হবে। প্রয়োজনে এলকোহল যুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার (২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড) করা যেতে পারে। (হাত ধোয়ার সঠিক নিয়ম চিত্র-১ এ দেওয়া হলো)
- হাত ধোয়ার পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সময়-
১. রোগীকে স্পর্শ করার আগে
২. ক্ষত পরিচর্যা/ড্রেসিং এর পূর্বে
৩. রোগীর শরীর থেকে নিঃসৃত তরল (কফ, থুতু, বমি, রক্ত, পূঁজ ইত্যাদি) হাতে লাগলে
৪. রোগীর পরিচর্যার পর
৫. রোগীর পারিপাশির্^ক/ব্যবহৃত বস্তু (বিছানা, চেয়ার, টেবিল, দরজার হাতল ইত্যাদি) স্পর্শ করলে।
-সাবান-পানি ব্যবহারের পর টিস্যু/নির্দিষ্ট পরিষ্কার তোয়ালে/গামছা ব্যবহার করে হাত শুকিয়ে নিতে হবে। তোয়ালে বা গামছা ভিজে গেলে বদলে ফেলতে হবে।
খ) হাঁচি/কাশির শিষ্টাচার মেনে চলা-
যেখানে সেখানে হাঁচি/কাশি দেওয়া ও কফ-থুতু না ফেলা। হাঁচি-কাশি দেওয়ার আগে টিস্যু, রুমাল বা কনুইয়ের ভাঁজে মুখ ঢেকে হাঁচি-কাশি দেওয়া। হাঁচি-কাশি দেওয়ার পর সাবান দিয়ে উপরোক্ত নিয়মে হাত ধুয়ে শুকিয়ে নেওয়া; ব্যবহৃত টিস্যু/মাস্ক ঢাকনা যুক্ত ময়লা ফেলার পাত্রে ফেলা।
গ) মাস্ক ব্যবহার করা-
১, সেবাদান কালে
২, নিজে অসুস্থ হলে (সর্দি/কাশি/জর¦/গলাব্যথা/শ্বাসকষ্ট)
৩, অসুস্থ ব্যক্তির পরিচর্যার সময়/নিকটে অবস্থান করলে
৪, বিদেশ থেকে দেশে ফিরলে (বিগত ১৪ দিনে)
৫, বিদেশ ফেরত কোন ব্যক্তির সংর্স্পশে আসলে (বিগত ১৪ দিনে)
মাস্ক দিয়ে নাক মুখ ভালোভাবে ঢেকে শক্ত করে বাধঁতে হবে যেন মাস্ক ও মুখের মাঝে ফাঁকা স্থান কম থাকে। মাস্ক ব্যবহারের সময় হাত দিয়ে মাস্ক ধরা থেকে বিরত থাকতে হবে। মাস্ক খোলার পর পূর্বের বর্ণিত নিয়মে সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। ব্যবহৃত মাস্কটি ঢাকনাযুক্ত পাত্রে ফেলতে হবে বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সাবান দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ব্যবহার করতে হবে।
ঘ) করমর্দন ও কোলাকুলি করা থেকে বিরত থাকা।
ঙ) চোখ, নাক ও মুখ অপরিস্কার হাত দিয়ে স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকা।
চ) জরুরী প্রয়োজন ব্যতীত ভ্রমণ পরিহার করা।
ছ) সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা- একে অন্যের কাছ থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দুরত্ব বজায় রাখা।
জ) জনবহুল স্থান, সভা সমাবেশ এবং সামাজিক অনুষ্ঠান পরিহার করা।
ঝ) জরুরী প্রয়োজন ব্যতিরেকে ঘরের বাইরে না যাওয়া।
কোভিড-১৯ রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন ও সামাজিক দূরত্ব সর্ম্পকিত তথ্য
কোয়ারেন্টাইন (Quarantine) বা সঙ্গনিরোধ
এই পদ্ধতির মাধ্যমে কোন কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা সুস্থ ব্যক্তিকে অন্য সুস্থ ব্যক্তিদের কাছ থেকে আলাদা করে রাখা হয় এবং একই সাথে তার (সংস্পর্শে আসা সুস্থ ব্যক্তি) গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে রেখে ১৪ দিন পর্যন্ত তাকে ঐ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছে কি না তা দেখা হয়।
অর্থাৎ যে ব্যক্তি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন কিংবা আক্রান্ত এলাকা বা দেশ থেকে ফিরেছেন এমন ব্যক্তিকে অন্য সুস্থ ব্যক্তি হতে আলাদা রাখা এবং গতিবিধি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন কিংবা আক্রান্ত এলাকা বা দেশ থেকে ফেরার দিন থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত বাড়ি কিংবা প্রতিষ্ঠানে আলাদা করে রাখা।
আইসোলেশন (Isolation)
এই পদ্ধতির মাধ্যমে কোন কোভিড-১৯ রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ প্রকাশ পেয়েছে এমন অসুস্থ ব্যক্তিকে অন্য সুস্থ ব্যক্তিদের কাছ থেকে আলাদা করে রাখা হয়, যেন ঐ অসুস্থ ব্যক্তি হতে সুস্থ মানুষ আক্রান্ত না হতে পারে।
অর্থাৎ লক্ষণ ও উপসর্গ প্রকাশ পেয়েছে এমন অসুস্থ ব্যক্তিকে অন্য ব্যক্তি হতে আলাদা রাখার জন্য যা লক্ষণ ও উপসর্গ সুনিশ্চিত হবার পর থেকে পরিপূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালে রাখা।
সামাজিক দূরত্ব (Social Distancing)
কোভিড-১৯ রোগের ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব মানে জনবহুল ¯স্থান, সমাবেশ এবং সামাজিক অনুষ্ঠান পরিহার করে চলা এবং অন্য যেকোন মানুষের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে বা কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা। সকল সুস্থ ও অসুস্থ ব্যক্তির জন্য এটি সমভাবে প্রযোজ্য।
অর্থাৎ নির্দিষ্ট কোন এলাকার সকল ব্যক্তিকে সংক্রমনের বিস্তৃতি রোধ করার জন্য নির্দিষ্ট এলাকা বা দেশে নিশ্চিৎ রোগী সনাক্তকরণের পর থেকে বিস্তার কমে যাওয়া পর্যন্ত (নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা সাপেক্ষে) নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে অবস্থান করা।
কোভিড-১৯ প্রতিরোধে কর্মস্থল সুরক্ষায় সিএইচসিপি/প্যারামেডিক/নার্সদের করণীয়
ক) জীবানুণাশক দ্বারা নিয়মিত টেবিল, চেয়ার, টেলিফোন, কি-বোর্ড, দরজার হাতল ইত্যাদি পরিস্কার করা
খ) শ্বাসতন্ত্রের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও প্রচার করা।
গ) ব্যবহৃত টিস্যু ও মাস্ক ঢাকনা যুক্ত ময়লা রাখার পাত্রে ফেলা।
ঘ) নিজের সুরক্ষার জন্য নিয়মিত ও সঠিক উপায়ে বার বার হাত ধোয়া , মাস্ক ও গ্লাভস পরা ।
ঘ) প্রেসার দেখা ও ইনজেকশন দেয়ার সময় রোগীর মুখ অন্য দিকে ঘুরীয়ে নেয়া এবং বিছানা ও রোগী থেকে যতদূর সম্ভব দূরত্ব বজায় রাখা।
ঙ) নেবুলাইজার ও অক্সিজেন দেয়ার সময় মাস্ক/নাজাল ক্যানুলা মুখে/নাকে দেবার পর সুইচ অন করতে হবে।
চ) সাসপেকটেড বা কনফার্মড কেসের ক্ষেত্রে অবশ্যই পিপিই পরতে হবে।
করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় জীবাণুনাশক দ্রবণ তৈরির নিয়ম
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাইডলাইন অনুযায়ী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সহজ উপায়ে জীবাণুনাশক হিসেবে দ্রবণ তৈরীতে বাজারে প্রাপ্ত ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে হাসপাতাল বর্জ্য পরিষ্কার করার জন্য অধিক ঘনত্বের জীবাণুনাশক দ্রবণ এবং গৃহস্থালী সাধারণ পরিষ্কার (যেমন- আসবাবপত্র, মেঝে, গাড়ী ইত্যাদি) বা জীবাণুমুক্ত করার জন্য কম ঘনত্বের দ্রবণ ব্যবহার করতে হবে।
জীবাণুনাশক দ্রবণ তৈরীর প্রক্রিয়া নিম্নরূপ-
ক) অধিক ঘণত্বের দ্রবণ তৈরীর ক্ষেত্রে প্রতি ২ লিটার পানিতে ১ টেবিল চামচ ব্লিচিং পাউডার মিশাতে হবে। এ হিসেবে প্রয়োজনমত দ্রবণ তৈরী করে নিতে হবে।
খ) কম ঘণত্বের দ্রবণ তৈরীর ক্ষেত্রে প্রতি ২০ লিটার পানিতে ১ টেবিল চামচ ব্লিচিং পাউডার মিশাতে হবে। এ হিসেবে প্রয়োজনমত দ্রবণ তৈরী করে নিতে হবে।
জীবাণুনাশক দ্রবণ তৈরী ও ব্যবহারে সতর্কতা-
১. দ্রবণটি তৈরী করার পর সর্বোচ্চ ২৪ ঘন্টা ব্যবহার করতে পারবেন।
২. ব্লিচিং অতিমাত্রায় ক্ষয়কারক, এটি ত্বকে লাগলে জা¦লা-পোড়া হতে পারে।
৩. দ্রবণ তৈরী করার জন্য অবশ্যই রঙ্গিন প্লাস্টিক পাত্র এবং কাঠের নাড়ানি ব্যবহার করবেন।
৪. প্রস্তুতকৃত দ্রবণে কাপড় ভিজিয়ে মপিং (মোছা বা পরিষ্কার) করতে হবে।
৫. তৈরীকৃত দ্রবণ স্প্রে করতে হলে অবশ্যই আগে পিপিই (PPE) পড়তে হবে।
কোভিড-১৯ প্রতিরোধে প্যারামেডিক/ সিএইচসিপিদের করণীয়
কমিউনিটি ক্লিনিকে/সাব-সেন্টারে কমর্রত প্যারামেডিক /সিএইচসিপিগণ সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করুন।
পদক্ষেপ-১
ক) সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।
খ) গ্লাভস ও মাস্ক পরিধান করুন।
গ) সেবা প্রদানের পূর্বে এবং পরে হাত ধূয়ে নিন।
পদক্ষেপ-২
সেবা গ্রহীতাকে সেবা প্রদানের পূর্বে কোভিড-১৯ এর লক্ষণসমূহ আছে কিনা জিজ্ঞেস করুন। যথা-
ক) জ্বর
খ) শুকনা কাশি
গ) শ্বাসকষ্ট
ঘ) গলা ব্যথা
পদক্ষেপ- ২ এর প্রশ্নোত্তরে হ্যাঁ হলে কোভিড-১৯ এর কোন রোগীর সংস্পর্শে ছিল কিংবা গিয়েছিল কিনা জিজ্ঞেস করুন। উত্ত হ্যাঁ হলে পদক্ষেপ-৩ অনুসরণ করুন।
পদক্ষেপ-৩
ক) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ যোগাযোগ করুন।
খ) জাতীয় স্বাস্থ্য বাতায়ন নম্বর ১৬২৬৩ বা সরকারী তথ্য সেবা নম্বর ৩৩৩ বা আইইডিসিআর এর হটলাইন নম্বর বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ নিশ্চিত করুন।
পদক্ষেপ- ২ এর প্রশ্নোত্তরে হ্যাঁ হলে কোভিড-১৯ এর কোন রোগীর সংস্পর্শে ছিল কিংবা গিয়েছিল কিনা জিজ্ঞেস করুন। উত্ত না হলে পদক্ষেপ-৪ অনুসরণ করুন।
পদক্ষেপ-৪
ক) সমস্যা অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করুন।
খ) প্রয়োজনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ যোগাযোগ করুন।
পদক্ষেপ- ২ এর প্রশ্নোত্তরে না হলে কোভিড-১৯ এর কোন রোগীর সংস্পর্শে ছিল কিংবা গিয়েছিল কিনা জিজ্ঞেস করুন। উত্তর হ্যাঁ হলে পদক্ষেপ-৫ অনুসরণ করুন।
পদক্ষেপ-৫
ক) সমস্যা অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করুন।
খ) ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন করতে বলুন।
গ) উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে অবহিত করুন।
ঘ) হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালীন সময়ে উপরে উল্লেখিত কোন লক্ষণ দেখা দিলে জরুরী ভিত্তিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ যোগাযোগ করুন।
পদক্ষেপ- ২ এর প্রশ্নোত্তরে না হলে কোভিড-১৯ এর কোন রোগীর সংস্পর্শে ছিল কিংবা গিয়েছিল কিনা জিজ্ঞেস করুন। উত্তর না হলে পদক্ষেপ-৬ অনুসরণ করুন।
পদক্ষেপ-৬
ক) সমস্যা অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করুন।
সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান করুন।
আপনার কর্মএলাকায় কোন সন্দেহভাজন রোগী ও সংস্পর্শে আসা ব্যক্তির তথ্য পেলে তা তাৎক্ষনিকভাবে সংশ্লিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য
পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে অবহিত করুন।
জরুরী প্রয়োজনে যোগযোগের নম্বর সমূহ-
১. জাতীয় স্বাস্থ্য বাতায়ন নম্বর ১৬২৬৩
২. সরকারী তথ্য সেবা নম্বর ৩৩৩
৩. সমন্বিত কন্ট্রোল রুম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন নম্বর সমূহ-
০১৩১৩ ৭৯১ ১৩০, ০১৩১৩ ৭৯১ ১৩৮, ০১৩১৩ ৭৯১ ১৩৯, ০১৩১৩৭৯১১৪০
৪. আইইডিসিআর এর হটলাইন নম্বর সমূহ -
০১৪০১১৮৪৫৫৫১
০১৪০১১৮৪৫৫৪
০১৪০১১৮৪৫৫৫
০১৪০১১৮৪৫৫৬
০১৪০১১৮৪৫৬০
০১৪০১১৮৪৫৬৩
০১৪০১১৮৪৫৬৮
০১৪০১১৮৪৫৫৯
০১৫৫০০৬৪৯০১
০১৫৫০০৬৪৯০২
০১৫৫০০৬৪৯০৩
০১৫৫০০৬৪৯০৪
০১৫৫০০৬৪৯০৫
০১৯২৭৭১১৭৮৪
০১৯২৭৭১১৭৮৫
০১৯৪৪৩৩৩২২২
০১৯৩৭০০০০১১
০১৯৩৭১১০০১১
Collected