
08/01/2024
জ্ব্ব্বলে!
আমাদের অদ্ভুত এক রোগ আছে...এর নাম জ্বলাজ্বলি রোগ।
আপনি জীবন যুদ্ধে এগিয়ে গেছেন...কারো সাথে নাই...আগে নাই..পিছে নাই!
ভাবছেন...
কত মানুষ অন্যের হক মেরে এগিয়ে যায়...অন্যের ক্ষতি করে এগিয়ে যায়...তারাই হয়ত শুধু মানুষের রোষানলে পড়ে।
কিন্তু না...একেবারেই না।
আপনি কিছু না করেও অন্যের রোষানলে পড়তে পারেন... হয়ত ভাবছেন...আপনিতো কিছুই করেন নাই।তবুও কেন মানুষের রোষানলে পড়লেন!
উত্তর একটাই...জ্বলে।
আপনি এগিয়ে গেছেন...এটা দেখেই অনেকের জ্বলে।
শিল্পী মমতাজের একটা গানও আছে এমন...
'আমার কিছু হলে...তোমার কেন জ্বলে রে বন্ধু...তোমার কেন জ্বলে।'
শুধু কি বন্ধুর জ্বলে...
পাড়া প্রতিবেশি...ভাই-ব্রাদার...ছোট বড়...আশেপাশে যারাই আছে সবারই জ্বলে।
এই জ্বলাজ্বলিটা আমাদের জাতীয় রোগ...কিচ্ছু করার নাই।
জ্বলে যাওয়া মানুষগুলো না কিছু কইতে পারে..না সইতে পারে।
তাই ওৎপেতে থাকে...কখন একটু চিপায় পড়েন...বিপদে পড়েন!
ব্যাস!
এবার আপনার পোস্টমর্টেম শুরু...অতীতের পোস্টমর্টেম...বর্তমানের পোস্টমর্টেম....আপনাকে ব্যবচ্ছেদ করে তারা এক ধরণের পৈশাচিক আনন্দ পায়!
প্রশ্ন হলো...
এখন তাহলে কি করবেন?
এগিয়ে যাওয়া থামিয়ে দিবেন...
উহু...
এঞ্জয় করবেন...নিজের এগিয়ে যাওয়া এঞ্জয় করবেন...অনেকের নিজের প্রতি আস্থা নাই...স্যাটিসফেকশন নাই।
অনেক এগিয়ে গিয়েও বুঝেননা তিনি কতটা এগিয়েছেন...
সেক্ষেত্রে সহজ পথ হল এই জ্বলা উপসর্গ...আপনার আশেপাশের মানুষ যেদিন থেকে আপনাকে নিয়ে জ্বলতে থাকবে...সেদিন থেকেই আলহামদুলিল্লাহ পড়ুন...কারণ আপনি এগিয়ে গেছেন মাশাআল্লাহ।
অন্যের জ্বলাকে তাই এঞ্জয় করুন। আরো ভাল হয় আপনাকে নিয়ে যাদের জ্বলে...তাদের পাশে দাঁড়ান..হাতটা ধরুন..দেখবেন জ্বলা ভাবটা ভালোবাসায় রুপান্তরিত হয়েছে....এবং এই ভালোবাসা অনেক মজবুত হয়। সহজে ছিড়ে না।
ডায়াবেটিস রোগীরাও একই রকম জ্বলাজ্বলির শিকার হন....তবে সেটা অন্যের না...নিজের জ্বলা!
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে....কিংবা অনেক বছর ধরে ডায়াবেটিসে ভুগলে অনেক সময় পা জ্বলতে পারে।
এসব রোগীও জ্বলাজ্বলি এঞ্জয় করে...এঞ্জয়মেন্ট বাড়াতে পায়ে গরম পানি দেয়...ঠান্ডা পানি দেয়...বরফ দেয়!
যতই দেয় ততই মজা....এক সময় সহজে আর মজা পাওয়া যায় না...তখন আরো বেশি গরম সেক দেয়....এতোটাই গরম যে পা পুড়ে যায়...ফোসকা পড়ে...ঘা হয়...পচন ধরে...পুজ পড়ে...পা হারায়!
অন্যদিকে...
ঠান্ডা পানি বা বরফ দিলেও বিপদ...এতে রক্তনালি সংকুচিত হয়....পায়ে রক্ত সরবরাহ কমে যায়...অক্সিজেন স্বল্পতায় ভোগে!
আগে থেকে ব্লক থাকলে আরো বিপদ....পা হারানোর গল্প গুলো ঠিক এভাবেই শুরু হয়।
এসব জ্বলানি তাই গরম বা ঠান্ডা পানি দিয়ে এঞ্জয় না করাই ভাল।
নিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে ভয় নেই...অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে পায়ের অনুভূতি কমে...বোধ কমে..!
একবার কমে গেলে....আর ঠিক হয় না...কখনো না...ঔষধ দিলে আরাম হয়...কিন্তু রোগ সারে না কখনো!
তাই প্রতিরোধের একটাই পথ...ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন...কোন অজুহাত নয়....যেকোনমূল্যে নিয়ন্ত্রণে রাখুন!
নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে...ডায়াবেটিস কোন রোগই না!
অনেকের হাত পা জ্বলে...না ঘুমালে জ্বলে...টেনশনে জ্বলে!
জ্বলে মানসিক রোগেও...অনেকের আবার এম্নি এম্নি জ্বলে।
কারো কারো বুক জ্বলে...জ্বলা মাত্রই টুক করে গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খেয়ে নেয়...অথচ বুক জ্বলা মানেই গ্যাস্ট্রিক না...বেশিরভাগ মানুষ নিশ্চিত না হয়েই গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির ঔষধ খায়। সেকারণে বাংলাদেশে সবচেয়ে বিক্রিত ঔষধের তালিকায় গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ সবার উপরে।
অথচ জীবন যাত্রার পরিবর্তন আনলে বেশিরভাগ সময় ঔষধ লাগেনা। জ্বলা কমে যায়।
সব জ্বলার চিকিৎসা নাই...অন্যের সফলতায় আনন্দিত হতে পারলে মনের জ্বালা কমে...ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখলে পায়ের জ্বলানি কমে...দুশ্চিন্তা পরিহার করে ভালো ঘুম দিলে হাত পায়ের জ্ব্বালানি কমে।
তবুও যদি জ্বালা না কমে...তবে মাইলস এর শাফিন আহমেদের গানটা শুনতে পারেন...দেহ মনে একটা ভাব চলে আসবে..
'জ্বালা জ্বালা এই অন্তরে....'