22/12/2023
♦♦Polycystic Ovarian Syndrome (PCOS) ♦♦
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম/পিসিওএস
----------------------------------------------------------------------
বেশ কয়েক বছর ধরে PCOS রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। এটা নিয়ে আক্রান্ত দের মধ্যে রীতিমতো একটা আতংক কাজ করে। তাই এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা উচিত প্রতিটি নারীর।
♦PCOS কি?
----------------------
এটি একটি হরমোনজনিত ব্যধি। রিপ্রোডাক্টিভ এইজ বা প্রজনন সময়কালে প্রতি ১০০ জন নারীর মধ্যে ১৫-২০ জন এই রোগে আক্রান্ত হন। সহজ ভাষায় বলতে গেলে হরমোনের অসামঞ্জস্যতার জন্য শারীরিক পরিবর্তন এবং সেই সাথে আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে ডিম্বাশয়ে প্রাপ্ত অনেকগুলো সিস্ট মিলে যে সামগ্রিক সমস্যার সৃষ্টি করে তাই পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম/ডিজিজ।
♦PCOS কেন হয়?
-----------------------------
এর নির্দিষ্ট কোনো কারন নেই কিন্তু কত গুলো রিস্ক ফ্যাক্টর আছে যেগুলো একজন নারীর মধ্যে বিদ্যমান থাকলে সে PCOS এ আক্রান্ত হতে পারে।
১) জেনেটিক বা বংশগত কারন। কোন নারীর মা, খালা, বোন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকলে তারও হবার সম্ভাবনা আছে।
২)অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন যেমন অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, শারিরীক পরিশ্রমের অভাব,অতিরিক্ত ওজন, স্ট্রেসফুল জীবন ইত্যাদি।
♦ PCOS হলে ডিম্বাশয়ে এবং নারী শরীরে হরমোনের আধিক্যে কি কি ঘটে?
--------------------------------------------------------------------
__সাধারণ একজন সুস্থ নারীর দুইটা ডিম্বাশয়ের মধ্যে যেকোনো একটা থেকে প্রতিমাসে একটা ডিম বের হয়। এই ডিমের সাথে শুক্রাণুর মিললে গর্ভধারণ হয়। নারীর শরীরে পুরুষ হরমোন "এন্ড্রোজেন" অল্প পরিমাণে থাকে।কিন্তু এই পুরুষ হরমোন বেড়ে গেলে ডিম্বাশয়ের ভেতর ডিম্বাণু/ডিমের চারপাশে তরল জমে সিস্ট তৈরি করে এবং ডিম্বাণুকে বেড়ে উঠে ডিম্বাশয় থেকে বের হতে দেয়না(ওভুলেশন হয়না)। এই রকম সিস্ট যখন অনেকগুলো হয়ে যায় তখন তাকে পলিসিস্ট বলে। ডিম না বের হতে পারলে(ওভুলেশন না হলে) নিয়মিত মাসিক হতে পারেনা। আর তাই গর্ভধারণে ব্যর্থতা আসে।
__এই "এন্ড্রোজেন"নামক পুরুষ হরমোন বেড়ে গিয়ে নারীর শরীরে আরো কিছু উপসর্গ তৈরি করে। শরীরের বিভিন্ন স্থান যেমন ঠোঁটের উপরের অংশে, থুতনীতে, বুকে, পিঠে, হাটু থেকে গোড়ালি পর্যন্ত অবাঞ্চিত লোম গজায়। সেই সাথে মুখে প্রচুর ব্রণ উঠে।
♦PCOS এর প্রধান উপসর্গ /লক্ষণসমূহ
----------------------------------------------------------
১)অনিয়মিত মাসিক। ২-৩ মাস পর পর মাসিক হওয়া কিংবা মেডিসিন না খেলে মাসিক হয়না।
২)শরীরের বিভিন্ন স্থানে অবাঞ্চিত লোম গজানো।
৩)ব্রণ উঠা, চুল পরে যাওয়া।
৪)আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে ডিম্বাশয় এর সাইজ বেড়ে যাওয়া, ডিম্বাশয়ের ভিতরে চারপাশে ছোট ছোট সিস্ট ছড়িয়ে থাকা।
♦PCOS এ দীর্ঘ দিন ভুগলে কি কি সমস্যা হয়?
------------------------------------------------------------------
১)ইনসুলিন রেসিস্টেন্স ডেভেলপ করে, ডায়াবেটিস হয়।
২)গর্ভধারণে ব্যর্থতা/বন্ধ্যাত্ব
৩)হার্টের অসুখ।
৪)মেজাজ পরিবর্তন।
৫)গর্ভপাত।
৬)উচ্চ রক্তচাপ।
৭)জরায়ু ক্যান্সার।
♦PCOS প্রতিরোধে করনীয়
----------------------------------------
লাইফ স্টাইল পরিবর্তন ঃ
--শারীরিক পরিশ্রম বাড়ানো
--ব্যায়াম করা
--ওজন কমানো
--খাদ্যাভাস পরিবর্তন করা ঃ শর্করা, চর্বি জাতীয় খাবার কম খাওয়া। শাক সবজি, মাছ বেশি করে খাওয়া।
♦PCOS এর চিকিৎসা কি?
----------------------------------------
চিকিৎসা বয়স এবং লক্ষণ অনুযায়ী আলাদা হয়।
♦এই রোগ পুরোপুরি নির্মূল হয়না। ডায়াবেটিস, হাই প্রেশার রোগের মতোই নিয়ম কানুন মেনে এবং সঠিক চিকিৎসা নিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় । তাই আতংকিত হবার কিছু নাই।দুশ্চিন্তায় রোগের প্রকোপ আরো বাড়ে।