13/09/2025
🩺 কিডনি, এর কাজ, রোগের কারণ ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
✅ কিডনির কাজ
কিডনি হলো মানুষের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ (প্রতিটি মানুষের দুটি কিডনি থাকে)। এরা রক্ত পরিশোধন করে এবং শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখে। প্রধান কাজগুলো হলো—
1. রক্ত পরিশোধন করা – রক্তের বর্জ্য পদার্থ (Urea, Creatinine, Toxins) প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়।
2. পানি ও লবণের ভারসাম্য রাখা – শরীরের তরল (fluid) ও electrolytes (Na, K, Ca ইত্যাদি) ঠিক রাখে।
3. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা – কিডনি Renin নামক হরমোন নিঃসরণ করে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
4. রক্ত তৈরি সাহায্য করা – Erythropoietin হরমোন তৈরি করে, যা Bone marrow-কে RBC (লাল রক্ত কণিকা) উৎপাদনে সাহায্য করে।
5. ভিটামিন D সক্রিয় করা – হাড়কে মজবুত রাখতে কিডনি ভিটামিন D কে সক্রিয় করে।
⚠️ কিডনি নষ্ট হওয়ার কারণ
কিডনি একবার নষ্ট হয়ে গেলে পুরোপুরি আগের মতো হয় না। তাই আগে থেকে সতর্ক থাকা জরুরি। প্রধান কারণগুলো হলো—
1. ডায়াবেটিস – দীর্ঘদিন নিয়ন্ত্রণে না থাকলে Kidney damage (Diabetic nephropathy) হয়।
2. উচ্চ রক্তচাপ – দীর্ঘমেয়াদি High BP কিডনির ক্ষতি করে।
3. বারবার কিডনি ইনফেকশন (UTI, Pyelonephritis)।
4. কিডনিতে পাথর (Renal Stone) – প্রস্রাবের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে কিডনি নষ্ট করে।
5. অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া (NSAIDs ইত্যাদি)।
6. জন্মগত সমস্যা – কারো জন্ম থেকেই কিডনিতে সমস্যা থাকতে পারে।
7. প্রোটিন বা ইউরিক অ্যাসিড জমা (Nephrotic syndrome, Gout ইত্যাদি)।
8. জল কম খাওয়া ও অনিয়মিত জীবনযাপন।
🧾 কিডনি নষ্ট হওয়ার উপসর্গ
প্রস্রাব কমে যাওয়া বা একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়া
প্রস্রাবে ফেনা, রক্ত বা জ্বালা হওয়া
হাত-পা ও চোখে ফোলা আসা
উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া
শরীরে দুর্বলতা, বমি, মাথা ঘোরা
শ্বাসকষ্ট (পানি জমে ফুসফুসে গেলে)
🌿 হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
হোমিওপ্যাথিতে কিডনির সমস্যার ধরণ দেখে ওষুধ নির্বাচন করা হয়। কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ হলো—
১. Berberis vulgaris
কিডনিতে ব্যথা, প্রস্রাবের সময় জ্বালা, প্রস্রাবে পাথর হলে কার্যকর।
২. Cantharis
প্রস্রাবের সময় প্রচণ্ড জ্বালা, রক্তসহ প্রস্রাব হলে ভালো কাজ দেয়।
৩. Apis mellifica
শরীর ফুলে যাওয়া, প্রস্রাব খুব কম হওয়া, গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিসে উপকারী।
৪. Terebinthina
প্রস্রাবে রক্ত, কিডনির প্রদাহে ব্যবহৃত।
৫. Lycopodium
প্রস্রাব কমে যাওয়া, কিডনিতে পাথর, গ্যাসের সমস্যা একসাথে থাকলে।
৬. Arsenicum album
কিডনি ফেইলিওরের পর দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট ও পানি জমা কমাতে।
৭. Sulphur
দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগীদের জন্য, টক্সিন বের করতে
সহায়ক।
🌿 হোমিও চিকিৎসার সুবিধা
কিডনি রোগের কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা করে (ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, পাথর, ইনফেকশন ইত্যাদি)।
সাইড এফেক্ট নেই – দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে নিরাপদ।
রোগীর শরীরের সামগ্রিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে।
🔔 সতর্কতা
কিডনি সমস্যায় নিজে থেকে ওষুধ খাওয়া বিপজ্জনক।
রোগ অনুযায়ী সঠিক ওষুধ, শক্তি (Potency) ও ডোজ নির্ধারণ করতে একজন অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন।
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি।
🥦 কিডনি রোগে খাদ্যাভ্যাস
✅ যেসব খাবার খেতে হবে –
1. শাকসবজি ও ফল – পালং শাক, লাউ, শসা, করলা, পেঁপে, আপেল, নাশপাতি, আঙুর।
2. পর্যাপ্ত পানি – প্রতিদিন ২–৩ লিটার (ডাক্তার যদি কম বলতে না করেন)।
3. হালকা খাবার – ভাত, ডাল (কম লবণ দিয়ে), সেদ্ধ সবজি।
4. ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড যুক্ত খাবার – যেমন সামুদ্রিক মাছ (ইলিশ, রুই), বাদাম।
5. কম লবণ ও চর্বি যুক্ত খাবার – কারণ লবণ ও তেল কিডনির উপর চাপ বাড়ায়।
❌ যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে –
1. অতিরিক্ত লবণ (আচার, ঝাল-মসলা, ফাস্টফুড)।
2. অতিরিক্ত প্রোটিন (গরুর মাংস, অতিরিক্ত ডিম, প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট)।
3. অতিরিক্ত পটাশিয়াম ও ফসফরাসযুক্ত খাবার (কলা, কমলা, আলু, কলিজা, ডাল)।
4. Soft drinks, ফাস্টফুড, ভাজাপোড়া।
5. অ্যালকোহল ও ধূমপান – কিডনির ক্ষতি দ্রুত বাড়ায়।
🧘 জীবনযাত্রার নিয়ম
1. রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ – নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে।
2. নিয়মিত ব্যায়াম – প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা।
3. প্রচুর বিশ্রাম – মানসিক চাপ এড়িয়ে চলা।
4. অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ এড়িয়ে চলা।
5. ওজন নিয়ন্ত্রণ করা – স্থূলতা কিডনির ঝুঁকি বাড়ায়।
6. প্রস্রাবে জ্বালা বা ফোলা হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া।
🧪 কিডনি রোগ নির্ণয়ের জন্য জরুরি পরীক্ষা
১️⃣ রক্ত পরীক্ষা (Blood Test)
Serum Creatinine → কিডনি কতটা কাজ করছে তা বোঝায়।
Blood Urea / BUN (Blood Urea Nitrogen) → রক্তে ইউরিয়া বেশি হলে কিডনি দুর্বল বুঝায়।
eGFR (Estimated Glomerular Filtration Rate) → কিডনির কার্যক্ষমতা কত % আছে তা মাপা হয়।
Electrolytes (Na, K, Ca, Phosphorus) → শরীরে লবণ-পানির ভারসাম্য পরীক্ষা।
Uric Acid → কিডনিতে পাথর বা গাউটের ঝুঁকি নির্ণয় করে।
২️⃣ প্রস্রাব পরীক্ষা (Urine Test)
Urine R/E (Routine & Microscopy) → প্রস্রাবে প্রোটিন, রক্ত, পুঁজ বা ইনফেকশন আছে কি না বোঝে।
Urine Albumin (Microalbuminuria) → ডায়াবেটিস বা হাই BP রোগীর কিডনি ক্ষতি আগেভাগে ধরা পড়ে।
24 Hours Urine Protein Test → কিডনি থেকে প্রোটিন লিক হচ্ছে কি না তা নির্ণয় করা হয়।
Urine Culture & Sensitivity (C/S) → বারবার ইনফেকশনের কারণ জানা যায়।
৩️⃣ ইমেজিং টেস্ট (Imaging Test)
Ultrasonography (USG of KUB) → কিডনির আকার, পাথর, ফোলা, ব্লকেজ আছে কি না বোঝা যায়।
CT Scan / MRI (Kidney) → জটিল কেসে কিডনির বিস্তারিত চিত্র পাওয়া যায়।
IVU (Intravenous Urography) → প্রস্রাবের রাস্তায় ব্লকেজ বা অস্বাভাবিকতা বোঝা যায়।
৪️⃣ বিশেষ পরীক্ষা (Special Test)
Renal Biopsy → কিডনির টিস্যু নিয়ে দেখা হয় আসল রোগ কি।
DTPA / Renogram → কিডনির কাজ আলাদাভাবে পরীক্ষা করা হয়।
⚠️ কারা নিয়মিত এই টেস্ট করবেন?
ডায়াবেটিস রোগী
উচ্চ রক্তচাপ রোগী
যাদের পরিবারে কিডনি রোগ আছে
প্রস্রাবে বারবার জ্বালা, ব্যথা বা রক্ত হয়
হাত-পা বা চোখ ফুলে যায় এমন রোগী
🌿 সেবা হোমিও হল 🌿
কিডনি রোগের উন্নত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
🩺 ডা. বি. এম. মাহিম সিকদার
ডিপ্লোমা ইন হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন এন্ড সার্জারি (D.H.M.S)
📍 আমেনা সুপার মার্কেট (২য় তলা), বাংলাবাজার, ভোলা
✅ কিডনি রোগে আমাদের বিশেষ হোমিও চিকিৎসা
কিডনি ইনফেকশন (UTI, Nephritis)
কিডনিতে পাথর (Renal Stone)
প্রস্রাবে রক্ত, জ্বালা ও ব্যথা
হাত-পা ফোলা ও প্রস্রাব কমে যাওয়া
ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপজনিত কিডনি সমস্যা
ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (CKD)
🌿 আমাদের চিকিৎসার বৈশিষ্ট্য
✔ ১০০% নিরাপদ ও কার্যকর হোমিও ঔষধ
✔ সাইড এফেক্টমুক্ত দীর্ঘমেয়াদি সমাধান
✔ অভিজ্ঞ ও নিবন্ধিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধান
✔ রোগ অনুযায়ী ব্যক্তিগত যত্ন
📞 যোগাযোগ:
01716-308030 / 01917-568981
🕘 সময়:
প্রতিদিন সকাল ৯টা–১টা
বিকাল ৩টা–রাত ৯টা