31/03/2025
দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তন খুব দ্রুত দরকার
আসলে সমাজে ছেলেকে এবং মেয়েকে একরকমভাবে দেখার যে পার্থক্য, সেটা আমাদের সংস্কৃতি, পরিবার এবং পারিবারিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে। এটা মূলত সমাজের পুরনো ধারণা ও রীতির ফল। আপনার লেখা থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, এই পার্থক্যটা মূলত মনস্তাত্ত্বিক এবং সামাজিকভাবে গড়ে উঠেছে, তবে সেটা যে সব সময় সঠিক বা যুক্তিযুক্ত, তা নয়।
মেয়ে এবং ছেলের সম্পর্কের ক্ষেত্রে পার্থক্য:
1. মেয়েকে ভালোবাসা ও সহায়তা: আপনার কথার মধ্যে, মেয়ে যদি তার পিতা-মাতার কাছে কোনো কিছু চায় বা সাহায্য চায়, তাদের মনে কোনো প্রত্যাশা থাকে না। বরং, তারা মনে করে যে মেয়েটির সুখেই তাদের সুখ। এটা এক ধরনের নিষ্কলঙ্ক ভালোবাসা, যেখানে কোনো প্রত্যাশা বা বিনিময়ের প্রশ্ন ওঠে না।
2. ছেলের প্রতি আশা: ছেলেকে নিয়ে সাধারণত পরিবারের প্রত্যাশা অনেক বেশি থাকে। বিশেষ করে বিয়ের পর, ছেলের প্রতি দায়িত্বের মানসিকতা এমনটা হয় যে, সে নিজের জীবনের সমস্যা নিজেই সামলাক, অন্যদের সহায়তা না নিয়ে। তবে, যদি কোনো বিপদে পড়ে, তখন ছেলের বাবা-মা তাকে সাহায্য করতে ইচ্ছুক হয়, কিন্তু যদি ছেলের জীবন ভালো থাকে, তখন তারা তাদের অংশ চেয়ে নেয়ার মনোভাব পোষণ করে।
3. বিয়ে এবং দায়িত্ব: মেয়ের বিয়ে, তার ভবিষ্যৎ সুখ, এবং সহায়তার ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটা খোলামেলা থাকে। যদিও ছেলের বিয়ে হলে, বাবা-মা মনে করেন, বিয়েটা ছেলের সমস্যা, তাকে নিজেরাই মোকাবিলা করতে হবে। এই চিন্তা-ভাবনা অনেক ক্ষেত্রেই ছেলের প্রতি দায়িত্ববোধের অভাব বা চাপ অনুভব করায়।
শেষে: সমাজের এই গড়ে ওঠা ধারণা আসলে সম্পর্কের মধ্যে "স্বার্থ" সৃষ্টি করতে পারে। আমরা কখনও মেয়ে বা ছেলেকে একভাবে দেখব না, বরং তাদের সুখ, তাদের সম্পর্ক, এবং তাদের দায়িত্ব নেওয়ার মানসিকতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সব সম্পর্কের ভিত্তি ভালোবাসা, সম্মান ও সমানাধিকারের ওপর হওয়া উচিত।
এটা ঠিক যে, মেয়ে বা ছেলের মধ্যে কোনো পার্থক্য না রেখে, বরং তাদের সমানভাবে ভালোবাসা এবং সমর্থন দেওয়া উচিত। আমাদের আসলে এই পুরনো ধারণাগুলো থেকে বেরিয়ে এসে, নতুন প্রজন্মের জন্য সমান মূল্যায়ন ও শ্রদ্ধার পরিবেশ তৈরি করা দরকার।