06/10/2025
হাঁটু ব্যথা ও ফিজিওথেরাপিঃ
অধিক পরিশ্রমের কারণে শরীরে ব্যাথা হতে পারে। পরিশ্রম করা ছাড়াও বিভন্ন রকমের ব্যাথা হতে পারে। এর মধ্যে হাঁটু ব্যথা কম বেশী আমাদের সবারই হয়ে থাকে। একটু বিশ্রাম নিলে বা দুই একটা ব্যথার ওষুধ খেলে অনেক সময় এমনিতেই সেরে যায়। কিন্তু আর্থ্রাইটিস বা বাতজনিত হাঁটু ব্যথা সহজে সারতে চায় না।
আর্থ্রাইটিস জনিত হাঁটু ব্যথা তিন ধরনের হয়ে থাকে :
# অস্টিওআর্থ্রাইটিস (Osteo-Arthritis):
অস্টিওআর্থ্রাইটিস জনিত হাঁটু ব্যথাই সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এটা সাধারণত মধ্যবয়ষ্ক লোকজনের হয়ে থাকে। এটা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে আর জয়েন্টের কার্টিলেজকে ভাঙ্গতে থাকে। জয়েন্ট শক্ত হয়ে গেলে তখন হাটাচলা বন্ধ হয়ে যায়।
# রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস (Rheumatoid Arthritis):
এটা যে কোনো বয়সে হতে পারে। এই আথ্রাইটিস হলে হাঁটু ব্যথার সঙ্গে অন্যান্য জয়েন্টও ব্যথা হতে পারে। অনেক সময় জয়েন্টগুলো শক্ত হয়ে যায়।
# ট্রমাটিক আর্থ্রাইটিস (Traumatic Arthritis) : সাধারণত হাঁটুতে যেকোনো ধরনের আঘাত যেমন লিগামেন্ট ইনজুরি, মিনিসকাস (Miniscus) ইনজুরি, ফ্র্যাকচার, বা ডিজলোকেশন (Dislocation) হওয়ার এক বছরের মধ্যে এই ধরনের আর্থ্রাইটিস হতে পারে।
নিচের লক্ষণসমূহ দেখে সহজেই বুঝতে পারবেন- আথ্রাইটিস আছে কি না :
# হাঁটু ব্যথা
# হাঁটুতে চাপ দিলে বা ধরলেই ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
# হাঁটু ফুলে যেতে পারে।
# হাঁটুর জয়েন্ট শক্ত হয়ে যেতে পারে।
# হাঁটু নড়াচড়ার সময় শব্দ হতে পারে।
# প্রাথমিক অবস্থায় সাধারণত অনেকক্ষণ বসে থাকার পর নড়াচড়া করার সময় ব্যথা হতে পারে কিংবা সিড়ি দিয়ে উঠাবসার সময় ব্যথা বেশী হতে পারে।
আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসা :
প্রথমে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে কোন ধরনের আর্থ্রাইটিস সেটা নির্ণয় করতে হবে। তারপর ভালোভাবে সঠিক চিকিৎসা নিলেই হবে। আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে ব্যথার ঔষধে ব্যথা সাময়িকভাবে প্রশমিত হলেও আর্থ্রাইটিস আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। সঠিক ম্যানুয়াল ফিজিওথেরাপি এ ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে আর্থ্রাইটিস বিশেষজ্ঞ দেখিয়ে ঔষধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি নিলে উপকার পাবেন।
অস্টিওআর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে একজন ফিজিওথেরাপিস্টকে দেখিয়ে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি নিতে পারেন। এক্ষেত্রে ইলেকট্রো-ফিজিওথেরাপি (TENS, UST, SWD, IFT) তেমন গুরুত্ব রাখে না।
ব্যথা বেশী থাকলে ম্যানুয়্যাল থেরাপী (যেমন: Knee joint mobilization, Strenthening exercise, Joint gapping, Cycling ) বেশী ভাল কাজ করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন। নিয়মিত সঠিকভাবে ব্যায়াম করবেন। প্রয়োজনে ফিজিওথেরাপিস্ট দেখিয়ে ব্যায়াম ঠিক করে নিবেন।
আঘাত এড়িয়ে চলুন। খেলাধুলার সময় প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সাপোর্ট ব্যবহার করবেন।
সঠিকভাবে বসুন, হাঁটুন, কাজ করুন। মেয়েদের ক্ষেত্রে হাই হিল ব্যবহার কমিয়ে দিন।
ভিটামিন-ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাব থাকলে পূরণ করুন। কোনো সমস্যা হলে দ্রুত ফিজিওথেরাপিস্ট বা ফিজিশিয়ানের শরণাপন্ন হন।
শরীরের সঠিক যত্ন নিয়ে সুস্থ থাকুন।
ধন্যবাদ
আছমা ফিজিওথেরাপি সেন্টার বগুড়া
কানজগাড়ি,শেরপুর রোড়, বগুড়া
মোবাইল ০১৭৮৮ ৯২৮৭৭৭
০১৭৯৯ ১৮৭৯০৯..