
26/06/2025
#বাচ্চাদের দুধ দাঁত ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে ফেলতে হয় কেন?
একটি অবহেলিত সত্য ও সমাধানের পথ
আপনারা কি কখনো ভেবে দেখেছেন, আজকাল প্রায় সব বাচ্চাকেই ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে দুধ দাঁত ফেলতে হয়? অথচ আমাদের শৈশবে (যাদের বয়স এখন ৪০+) এই ঘটনা ছিল খুবই বিরল! আমাদের সময়ে দুধ দাঁত নিজে নিজেই পড়ে যেত—কখনো ব্যথা হলে দড়ি বেঁধে টেনে ফেলা হতো, বা সামান্য আঘাতেই ঝরে পড়ত। কিন্তু এখন কেন এই পরিবর্তন? এর মূল কারণ আমাদের বদলে যাওয়া খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনের পদ্ধতি।
আগে কীভাবে দুধ ( ডেসিডুয়াস) দাঁত পড়ত?
আমরা ছোটবেলায় আখ, পেয়ারা, আমের আটি, গাজর, নারিকেল ইত্যাদি শক্ত খাবার দাঁত দিয়ে কামড়ে ছিড়ে খেতাম। এই শক্ত খাবার চিবানোর সময় দাঁতে প্রাকৃতিক চাপ পড়ত, যা দুধ দাঁতের শেকড় গলিয়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি ঝরতে সাহায্য করত। কিন্তু আজকের শিশুরা নরম, প্রক্রিয়াজাত খাবার খায়—জুস, চকলেট, পাস্তা, ফাস্ট ফুড—যা চিবানোর জন্য দাঁতের কোনো শক্তি লাগে না। ফলে দুধ দাঁতের শেকড় দুর্বল হয় না, এবং তা প্রাকৃতিকভাবে পড়তে চায় না।
#কেন ডেন্টিস্টের কাছে যেতে হয়?
১. দাঁতের শেকড় না গলা: নরম খাবারের অভাবেই দুধ ( অস্থায়ী) দাঁতের শেকড় দুর্বল হয় না, তাই তা আটকে থাকে।
২.স্থায়ী দাঁতের জায়গা দখল: দুধ (অস্থায়ী) দাঁত না পড়লে স্থায়ী দাঁত বাঁকা হয়ে ওঠে, ফলে আঁকাবাঁকা দাঁতের সমস্যা বাড়ে।
৩. ইনফেকশনের ঝুঁকি: দীর্ঘদিন আটকে থাকা দুধ দাঁত পচে গিয়ে ব্যথা ও মাড়ির সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
আমাদের সময় vs এখনকার শিশুদের দাঁতের পার্থক্য
আমাদের সময় (৪০+ বছর আগে)
শক্ত খাবার (আখ, পেয়ারা, গাজর) চিবোত,
আর এখন শিশুরা খাবার খায়-
নরম ও প্রক্রিয়াজাত খাবার (জুস, চকলেট)
পূর্বে দুধ দাঁত প্রাকৃতিকভাবে পড়ত, আর এখন ডেন্টিস্ট দিয়ে ফেলাতে হয়।
পূর্বে আঁকাবাঁকা দাঁতের সমস্যা কম ছিল, আর বর্তমানে ব্রেস বা অর্থোডন্টিক চিকিৎসার হার বেড়েছে, পূর্বে দাঁতের ক্ষয়রোগ কম ছিল, বর্তমানে ক্যারিজ ও দাঁতের সংক্রমণ তুলনামূলক অনেক বেশি হচ্ছে।
#সমাধান: কীভাবে বাচ্চাদের দুধ দাঁত প্রাকৃতিকভাবে পড়তে সাহায্য করবেন?
১.শক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন:
-আখ, গাজর, পেয়ারা, আপেল দাঁত দিয়ে কামড়াতে দিন।
- নারিকেল, বাদাম চিবানোর চর্চা করান।
- ফাস্ট ফুড ও জুসের বদলে তাজা ফল খাওয়ান।
২.দাঁতের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন:
- দিনে ২ বার ব্রাশ ও ফ্লস করান।
- চিনিযুক্ত স্ন্যাক্স (চিপস, ক্যান্ডি) কম দিন।
৩. ডেন্টাল চেকআপ নিয়মিত করুন:
- বছরে ২ বার ডেন্টিস্ট দেখান।
- দুধ ( অস্থায়ী) দাঁত না পড়লে ডেন্টিস্ট এর পরামর্শে এক্স-রে করে দেখবেন দাতের শেকড় কতটা ক্ষয় হয়েছে।
#সচেতনতা বাড়ানো জরুরি
আজকের শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাদের দাঁতের সুস্থতা শুধু সৌন্দর্যের বিষয় নয়, বরং পুষ্টি গ্রহণ ও স্বাস্থ্যের সাথে সরাসরি যুক্ত। যদি আপনার সন্তানের দুধ দাঁত প্রাকৃতিকভাবে না পড়ে, তবে বুঝবেন তার খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন দরকার।
> প্রাকৃতিক খাবার ফিরিয়ে আনুন, দুধ/অস্থায়ী দাঁতের প্রাকৃতিক পতন নিশ্চিত করুন!"
#দাঁতের_স্বাস্থ্য #শিশুর_খাদ্যাভ্যাস #প্রাকৃতিক_চিকিৎসা
উপরে ছবিতে ব্যবহৃত শিশুটির নাম আরিয়ানা, যার কোনো অস্থায়ী/ দুধ দাত কোনো ডেন্টাল সার্জনের কাছে গিয়ে ফেলতে হয়নি, এটা বর্তমান সময়ের কথা, সুতরাং বর্তমান সময়েও খাদ্যবাস পরিবর্তনের মাধ্যমে সবই সম্ভব, এক্ষেত্রে পিতা-মাতার ইচ্ছেটাই যথেষ্ট।
---
লেখক: Curzon Nazmul
যোগাযোগ: ইনবক্সে
ℹ️ এই তথ্যগুলো সাধারণ সচেতনতার জন্য, সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার জন্য ডেন্টিস্টের পরামর্শ নিন।
# লিখাটি যে কেউ কপি/শেয়ার করতে পারেন।