
15/04/2025
ইনজুরি বা আঘাত পেলে সাধারণত আমরা পেইনকিলার জাতীয় ঔষধসমূহ খেয়ে থাকি। আঘাতের কারণে কেটে বা ফেটে গেলে অনেক ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিকেরও প্রয়োজন পড়ে।
এতে দ্রুত ব্যথা কমলেও আঘাতপ্রাপ্ত কোষসমূহ উক্ত ঔষধসমূহ দ্বারা রিকভার খুব কম ক্ষেত্রেই হয়। ফলে পেইনকিলারের এ্যকশন শেষ হওয়ার পরপরই আবার ব্যথা শুরু হয়। এক্ষেত্রে আঘাতের তীব্রতা অনুযায়ী একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ব্যথানাশক খেয়ে গেলে মানবদেহ নিজে নিজেই কোষগুলোকে রিকভার করে নেয়। ফলে আমরা সুস্থ হয়ে উঠি।
সবক্ষেত্রে মানবদেহ নিজে নিজেই কোষগুলোকে পরিপূর্ণ রিকভার করতে পারে না। ফলে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় আঘাতের ব্যথাগুলো বছরের পর বছর থেকে যায়, যেগুলো অনেককে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কষ্ট দিয়ে থাকে।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা এক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম। হোমিও ঔষধসমূহ আঘাতের ব্যথা দ্রুত (ক্ষেত্রবিশেষে ১ থেকে ৫ মিনিটের মধ্যে) কমানোর পাশাপাশি কোষগুলোকে একইসাথে রিকভার করতে থাকে। ফলে উক্ত আঘাতসমূহের জন্য দেহে দীর্ঘমেয়াদি কোনো সমস্যা অবশিষ্ট থাকে না।
শুধুমাত্র নতুন আঘাতের ক্ষেত্রেই নয়, বরং যুগ যুগের পুরনো আঘাতের ব্যাথার ক্ষেত্রেও হোমিওপ্যাথিক ঔষধসমূহ সমানভাবে কার্যকরী।
হোমিওপ্যাথিতে ব্যথার ঔষধসমূহ-
১. আর্নিকা মন্টানা:- আর্নিকাকে আঘাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ঔষধ বলা হয়। আঘাতের পাশাপাশি ছড়ে বা ছিলে গেলে অথবা ফেটে গেলেও আর্নিকা ভাল সুফল দেয়।
২. রাস টক্সিকোডেন্ড্রন:- আঘাতের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ এটি। আঘাত পাওয়ার পাশাপাশি শরীরের যেকোনো অঙ্গ মচকে গেলে রাস টক্স বিশেষভাবে প্রয়োজন হয়।
৩. ব্রায়োনিয়া এলবাম:- বিশেষ করে আঘাত কিছুটা পুরনো হয়ে গেলে এবং নড়াচড়ায় ব্যথা অনুভব হলে ব্রায়োনিয়ার প্রয়োজন হয়।
৪. হাইপেরিকাম পারফোরেটাম:- হাত বা পায়ের আঙ্গুলের মাথায় আঘাত পেলে অবশ্যই হাইপেরিকাম দিতে হবে।
৫. হেলিবোরাস নাইজার:- মাথায় আঘাত পাওয়া এবং এর পরবর্তী বিপর্যয়ে হেলিবোরাস বিশেষভাবে কার্যকরী।
রুটা গ্রাভিওলেন্স:- হাড়ে আঘাত লাগা এবং এর পরবর্তী বিপর্যয়ে রুটা প্রয়োজন।
৬. সিম্ফাইটাম:- চোখের অক্ষিগোলকের আঘাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ঔষধ। এছাড়া সিম্ফাইটাম দ্রুত থেকে দ্রুততম সময়ে ভেঙে যাওয়া হাড় জোড়া লাগাতে পারে।
৭. নেট্রাম সালফ:- মাথায় আঘাতের পরবর্তীতে যেকোনো শারীরিক অথবা মানষিক বিপর্যয়ে নেট্রাম সালফ আরোগ্য প্রদান করে।
৮. ক্যালেন্ডুলা অফিসিনালিস:- ক্যালেন্ডুলা যেকোনো ধরনের ক্ষতে এন্টিসেপটিক লোশন হিসাবে কাজ করে।
এছাড়াও পরিস্থিতি ও লক্ষণভেদে অন্যন্য ঔষধও আসতে পারে।
সতর্কতা:-
১. আঘাতপ্রাপ্ত স্থান কেটে বা ফেটে গেলে এন্টিসেপটিক দিয়ে পরিষ্কার করে দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে সেলাইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
২. প্রয়োজনভেদে সঠিক শক্তি এবং মাত্রায় ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে।
৩. অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতিত হোমিও ঔষধ প্রয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়।
৪. মারাত্মকভাবে আহত ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতালে রেফার করতে হবে।