04/09/2025
বর্তমানে বাংলাদেশে স্ক্যাবিস মহামারি আকার ধারণ করেছে।। অনেক সময়, তীব্র চুলকানির পেছনে সাধারণ চর্মরোগ নয়, বরং "স্ক্যাবিস" বা "পাঁচড়া" নামক একটি ছোঁয়াচে রোগ দায়ী থাকতে পারে। এটি অবহেলা করার মতো কোনো বিষয় নয়, কারণ এটি দ্রুত পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
🎯 স্ক্যাবিস কী?
স্ক্যাবিস হলো Sarcoptes scabiei নামক এক ধরনের অতি ক্ষুদ্র মাইট (Mite) বা জীবাণু দ্বারা ত্বকের সংক্রমণ। এই মাইটগুলো ত্বকের উপরিভাগের নিচে গর্ত করে ডিম পাড়ে, যার ফলে শরীরে তীব্র চুলকানি ও অ্যালার্জিক র্যাশ দেখা দেয়।
🎯 শিশুদের ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো কী কী?
📛 তীব্র চুলকানি:
বিশেষ করে রাতে বা গরম পানিতে গোসলের পর চুলকানি মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়।
📛 ক্ষুদ্র লালচে দানা বা ফোসকা:
আঙুলের ফাঁকে, কব্জিতে, কনুইয়ে, বগলে, নাভির চারপাশে, যৌনাঙ্গের কাছে এবং নিতম্বে ছোট ছোট লালচে দানা দেখা যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে মাথা, মুখ, ঘাড়, হাতের তালু এবং পায়ের তলাতেও এই র্যাশ হতে পারে।
📛 বিরক্তি ও ঘুমের সমস্যা:
একটানা চুলকানির কারণে শিশু খিটখিটে হয়ে যেতে পারে এবং রাতে ঘুমাতে সমস্যা হতে পারে।
📛 ক্ষত:
চুলকানোর কারণে ত্বকে আঁচড়ের দাগ বা ঘা হয়ে সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হতে পারে।
🎯 কীভাবে ছড়ায়?
স্ক্যাবিস অত্যন্ত ছোঁয়াচে। এটি সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে শারীরিক সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। এছাড়া, আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত বিছানা, তোয়ালে বা কাপড় থেকেও এটি ছড়াতে পারে। স্কুলে বা ডে-কেয়ার সেন্টারে শিশুরা একে অপরের সংস্পর্শে বেশি আসায় তাদের মধ্যে এটি দ্রুত ছড়াতে পারে।
✅ করণীয় কী?
স্ক্যাবিসের লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে অবশ্যই একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। ডাক্তার সাধারণত বিশেষ ধরনের লোশন বা ক্রিম ব্যবহারের পরামর্শ দেন, যা মাইটগুলোকে মেরে ফেলে।
🎯 সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ:
✔ শুধু আক্রান্ত শিশুকে নয়, পরিবারের সকল সদস্যের একসাথে চিকিৎসা করাতে হবে, এমনকি যদি তাদের কোনো লক্ষণ নাও থাকে।
✔ আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সব কাপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালে ইত্যাদি গরম পানিতে সেদ্ধ করে ধুতে হবে এবং কড়া রোদে শুকাতে হবে।
✔ যেসব জিনিস ধোয়া সম্ভব নয় (যেমন: লেপ, কম্বল, খেলনা), সেগুলোকে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে ৭২ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় মুখ বন্ধ করে রেখে দিন। এতে মাইটগুলো খাবার ছাড়া মারা যাবে।
সঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে স্ক্যাবিস পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়। তাই লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত পদক্ষেপ নিন এবং আপনার বাচ্চাকে সুস্থ রাখুন।
#বাচ্চা #স্ক্যাবিস