20/10/2025
অনিয়মিত রক্তদাতাদের নিয়ে কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি।
ব্লাড Request পাওয়ার পর একজন ডোনার খুজতে আমরা আমাদের দিক থেকে সব সময় সর্বোচ্চ চেষ্টা চলমান রাখি। মাঝে মাঝে সফলতা পাই আবার মাঝে মাঝে ব্যর্থ হই। অনেক ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠার পর আমরা সফলতা অর্জন করতে পারি।
ব্যর্থতাগুলি যদি আপনাদের বলি...!
১.রক্তদানের সময় হওয়া সত্বেও রক্তদিতে আগ্রহী প্রকাশ না করা।
২.শরীর সুস্থ থাকা সত্ত্বেও অসুস্থতার ভান করা।
৩.আমাদেরকে ভুল নাম্বার প্রোভাইড করা।
৪.রক্ত গ্রহণকারীর লোকেশনে থাকা
সত্ত্বেও আমাদেরকে ভুল লোকেশন প্রোভাইড করা।
৫.রক্তদানের জন্য কল দিলে বিরক্ত বোধ করা।
৬. আমাদের কাছে সকল ইনফরমেশন থাকা সত্ত্বেও একটি ব্লাড ম্যানেজ করতে আমাদের অনেকজনকে ফোন করতে হয়। যার ভিতরে অনেকে রক্তদানে আগ্রহী প্রকাশ করেও ভয়ে আমাদের ফোন রিসিভ না করা।
৭.আমরা যারা রেগুলার রক্তদান করি তারাও মাঝেমধ্যে রক্তদানে অনীহা প্রকাশ করি।
৮.ইমারজেন্সিতে মাঝে মাঝে এরকমও হয়, রক্তদাতার হাতে পায়ে ধরা বাকি থাকে।
৯.নিজের রক্ত দেওয়ার সময় হলে অন্যকে চাপিয়ে দেওয়া।
১০.নিজে রক্ত দিতে আগ্রহ প্রকাশ না করা বা ভয় পাওয়া এবং অন্যদেরকে রক্ত দিতে উৎসাহিত না করা,ইত্যাদি।
আমাদের ব্যর্থতা গুলো না বলার মত। কিন্তু এই সাধারণ ব্যর্থতাগুলোই আমাদের বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার কারনে রক্ত সংগ্রহকারী স্বেচ্ছাসেবী ভাই বোনদের সুন্দর মনোবল নষ্ট হচ্ছে । তাদের কাজ করার আগ্রহকে বাধা গ্রস্থ করছে।তারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিরক্ত হয়ে কাজ না করার প্রস্তাবও দিচ্ছে। এর থেকে কষ্টদায়ক আর কিছুই হতে পারে না।
সত্যিকার অর্থে, স্বেচ্ছাসেবী হওয়াটা খুব সাধারন একটি বিষয় কিন্তু এর দায়িত্ব পালন করাটা অনেকটাই কষ্টসাধ্য। এই সমাজে অর্থবিহীন কাজ করে একমাত্র স্বেচ্ছাসেবী ভাই বোনরাই। তাদের এই ঋণ আমরা সাধারণ মানুষ কখনোই পরিশোধ করতে পারবোনা।
সৃষ্টিকর্তা সবাইকে হেদায়েত দেওয়ার তৌফিক দান করুক (আমিন )
আমরা জানি, বাংলাদেশে মাত্র ৩০-৩২ শতাংশ রক্ত আসে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে। বাকি ৬৮-৭০ শতাংশ রক্ত আসে আত্মীয়স্বজন ও ব্লাড ব্যাংক থেকে। আমাদের দেশের সিংহ ভাগ অসাধু ব্লাড ব্যাংক গুলো ১ ব্যাগ রক্তকে ১০ ব্যাগ করে বিক্রি করার জন্য ব্যস্ত থাকে। রক্ত সংকটের কারণে সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে ওদের দিকেই অগ্রসর হচ্ছে এবং নানান রোগে ভুগছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা এটিকে সুযোগ হিসাবে কাজে লাগাচ্ছে। (এটির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই)
২০২৫ এর সমীকরণ অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। এই বিশাল চাহিদা নিয়মিত রক্তদাতাদের ক্ষেত্রে পূরণ করা একেবারেই সম্ভব নয়। কারণ নিয়মিত রক্তদাতার চেয়ে অনিয়মিত রক্তদাতা সংখ্যা অনেক বেশি। এই সমস্যা গুলি নির্মূল হবে, যদি আমরা সবাই নিয়মিত রক্তদাতাদের পাশে দাঁড়াই ,তাদের অনুসরণ করি, নিজের সব টুকু দিয়ে তাদেরকে সহযোগিতা করি। তাদের মতো আমরাও নিজেদেরকে নিয়মিত রক্তদাতা হিসেবে ঘোষিত করি।
রক্তদান কোনো ধর্মভিত্তিক নয় —এটি মানবতার ধর্ম।
সব ধর্মই শেখায় — “মানুষের উপকার করো, জীবন বাঁচাও, মানুষের জন্য দোয়া করো।”
তাই রক্তদান এক সেতুবন্ধন — মানুষের জন্য মানুষ হওয়ার সবচেয়ে সুন্দর প্রকাশ।
সবশেষ বলা যায়, দানের সর্বোচ্চ স্তরে রয়েছে রক্তদান। যার কাছে পৃথিবীর সকল দানকৃত সম্পদ অতি সাধারণ।
আমরা নিয়মিত রক্তদাতা হই এবং অন্যকে রক্তদানে উৎসাহিত করি।
নিয়মিত রক্তদানে আগ্রহী হলে অবশ্যই নিচে কমেন্টে আপনার ঠিকানা ও রক্তের গ্রুপটি বলে যাবেন।
বিঃদ্রঃ এটি প্রচার করার মাধ্যমেই সংশোধনের প্রথম ধাপ শুরু করতে পারি।( ভুল ত্রুটি সংশোধন যোগ্য)