01/12/2023
কী কী বিভিন্ন ধরণের চর্মরোগ আছে?
১.ব্রণ।
২.একজিমা।
৩.আমবাত।
৪.ইম্পেটিগো।
৫.ক্যান্ডিডিয়াসিস।
৬.সোরিয়াসিস।
৭.গোলকৃমি।
৮.পাঁচড়া।
৯.বলিরেখা।
১০.রোসেসিয়া।
১১.লাইকেন স্ক্লেরোসিস।
১.ব্রণ
ব্রণ হল অন্যতম সবচেয়ে সাধারণ চর্মরোগ যা আপনার ত্বকে উপস্থিত তৈল গ্রন্থিগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আপনার ত্বকে কিছু ছোট ছোট গর্ত থাকে যা আপনার ত্বকের নিচে গ্রন্থি নামক খালের মাধ্যমে তৈলগ্রন্থির সঙ্গে যুক্ত থাকে। আপনার ত্বকের তৈল গ্রন্থি থেকে সিবাম নামক একটি পদার্থ ক্ষরিত হয়। এই সমস্ত গ্রন্থিগুলি অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে ব্রণ হয়। 80 শতাংশ মানুষের জীবনে কখনো না কখনো ব্রণ হয়েছে। যাইহোক, ব্রণ এড়ানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে এর চিকিৎসা করা।
২.একজিমা
একজিমা অথবা অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস হল একটি দীর্ঘস্থায়ী চর্মরোগ, যার বেশ অনেক রকম উপসর্গ আছে। একজিমা নির্ণয় করার জন্য কোনো একটি নির্দিষ্ট পরীক্ষা নেই। ডাক্তারবাবু এক্ষেত্রে এই রোগটি নির্ণয় করার জন্য আপ নার পারিবারিক ইতিহাসকে বিশ্লেষণ করে দেখতে পারেন। একজিমাতে যে যে উপসর্গগুলি দেখা যায় তা হল
শুষ্ক এবং চুলকানি যুক্ত ত্বক
মুখে ফুসকুড়ি কনুইয়ের মধ্যে হাঁটু, হাত ও পায়ের পিছনে।
৩.আমবাত
যদি আপনি কোনো ওষুধ বা খাদ্যের প্রতি অ্যালার্জিক হয়ে থাকেন, তবে অন্য লোকদের তুলনায় আপনায় বেশী আমবাত হবে এবং এই রোগে আপনার ত্বকে লাল লাল গোটা উঠবে এবং তাতে চুলকানিও হবে। আমবাতের অন্যান্য গৌণ কারণগুলির মধ্যে সংক্রমণ এবং উদ্বেগকেও ধরা হয়।
৪.ইম্পেটিগো
ইম্পেটিগো 2-6 বছর বয়সী বাচ্চাদের একটি সাধারণ ত্বকের সংক্রমণ। এটি সাধারণত একটি ব্যাকটেরিয়া মেয়ের কারনে হয় যা কোন কাটা ছড়া বা পোকায় কাটা অংশের মধ্য দিয়ে দেহে প্রবেশ করে। এতে মুখ হাত এবং পায়ের লাল রংয়ের বা ব্রণের মত গোটা দেখা যায় এই ব্রণর মত গোটা গুলি পৌঁছে দিয়ে ভর্তি থাকে, এগুলি ফেটে গেলে একটি পুরু স্তর সৃষ্টি হয়। যাইহোক, আপনি অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে ইম্পেটিগোর চিকিৎসা করতে পারবেন।
৫.ক্যান্ডিডিয়াসিস
ক্যান্ডিডিয়াসিস হল দেহের ক্যান্ডিডা অ্যালবিক্যান্স ছত্রাকের অতিরিক্ত বৃদ্ধি, যার কারণে বগল, কুঁচকি এবং কোনো ত্বকের ভাঁজ, যেমন হাঁটুতে অস্বস্তিকর দাগ। একে ঘরোয়া টোটকা, সঠিক স্বাস্থ্যবিধি এবং অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার এড়ানোর মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যায়।
৬.সোরিয়াসিস
সোরিয়াসিস হল একটি সাধারণ চর্ম রোগ যার কারণে লাল লাল ছোপ যুক্ত এবং রূপোলি আঁশের মত অংশ দ্বারা আচ্ছাদিত ত্বক হয়ে যায়। এই ছোপগুলি চুলকানিযুক্ত হতে পারে অথবা ঘা হতে পারে এবং এগুলি সাধারণত কনুই, হাঁটু এবং পিঠের নিচের দিকের অংশে হয়ে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সোরিয়াসিস কেবল একটি ছোটখাটো অস্বস্তি মাত্র। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এর জন্য অনেক মানুষের জীবনযাত্রার গুণমানের উপর প্রভাব পড়ে। সোরিয়াসিসের কোনো নিশ্চিত আরোগ্য নেই, তবে আপনার চিকিৎসক আপনার অবস্থার উন্নতির জন্য আপনাকে কিছু ক্রিম বা মলম লাগাতে বলতে পারেন, কোনো ওষুধ খেতে বলতে পারেন বা ইঞ্জেকশন নিতে বলতে পারেন।
৭.গোলকৃমি
গোলকৃমি হলো একটি ছোঁয়াচে ছত্রাকজনিত সংক্রমণ যা শরীরের যেকোনো অংশে দেখা যেতে পারে। এই রোগে হাত এবং পায়ে রুপোলী বা লাল রঙের খসখসে গোলাকার দেখতে পাওয়া যায়। গোলকৃমি বিশেষত শিশুদের বেশি হয়।
৮.পাঁচড়া
পাঁচড়া হল একটি সংক্রামক চর্ম রোগ, যার কারণে প্রচণ্ড চুলকানি হয়। এটি রাতে বেশী বাড়তে থাকে এবং ছোট ছোট লাল লাল ফুসকুড়ি উঠতে থাকে। এটা সাধারণত ছোট ছোট মাইটসের কারণে হয়, যা ত্বকে গর্ত সৃষ্টি করে।
৯.বলিরেখা
আপনার বয়সের উপর নির্ভর করে আপনার মুখ পাল্টাতে থাকে। এই পরিবর্তনের মধ্যে থাকতে পারে, বলিরেখা, বয়সজনিত দাগছোপ ও শুষ্কতা। সূর্যের আলো আপনার ত্বকের বয়সবৃদ্ধির অন্যতম মূল কারণ। ধূমপান করাও আপনার বলিরেখার জন্য প্রধানত দায়ী যদিও শুষ্ক ত্বককে আদ্র করার জন্য বর্তমানে অসংখ্য চিকিৎসার বিকল্প রয়েছে এবং আপনার বয়সজনিত দাগছোপকেও এখন কমানো যেতে পারে।
১০.রোসেসিয়া
রোসেসিয়া একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ যা ত্বককে পুরু করে তোলে। এর ফলে ত্বক লালচে হয়ে যায় এবং মুখে ব্রণ বেরোতে থাকে। এর কারণে চোখেরও ব্যাপক সমস্যা দেখা যায়।
১১.লাইকেন স্ক্লেরোসিস
লাইকেন স্ক্লেরেসিসের কারণে যৌনাঙ্গ এবং পায়ু এলাকায় সাদা দাগ ছোপ দেখতে পাওয়া যায় লাইকেন স্ক্লেরোসিসের সাধারণ উপসর্গগুলি হল চুলকানি, যন্ত্রণা এবং রক্তপাত।
যদি আপনি আপনার ত্বকে কোন অসুবিধা লক্ষ্য করে থাকেন, তবে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। যেকোনো চর্মরোগকে যথাযথভাবে শনাক্ত করা উচিত, কারণ এই রোগের চিকিৎসায় তখনই সাফল্য পাওয়া যায়, যদি এটিকে সঠিকভাবে শনাক্ত করা যায় এবং এর চিকিৎসা করা যায়।