01/07/2024
শিশুর ইতিবাচক আচরণ :
শিশুর ইতিবাচক আচরণ প্রতিটি বাবা মার কাম্য। আর এই ইতিবাচক আচরনের শিক্ষা পায় শিশু তার পরিবার থেকে। শিশুর আচরণে গঠনমূলক পরিবর্তন সাধন করে তাকে সামাজিক ভাবে গ্রহনযোগ্য রুপে গড়ে তোলা সকল পিতা-মাতারই একটি অন্যতম দ্বায়িত্ব। এটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয়। কারণ আপনার সন্তানের ভবিষ্যত সাফল্য অনেকাংশেই তার উত্তম ব্যবহারের উপর নির্ভরশীল।
আপনার সন্তানের ভাল আচরণকে কীভাবে উৎসাহিত করবেন :
▪️ আপনি নিজেকে আপনার সন্তানের জায়গায় চিন্তা করুন।তার সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করুন।আপনি যদি আপনার সন্তানের ঘনিষ্ঠ হতে পারেন তবে আপনি যা বুঝিয়ে বলেন না কেন, সে আপনার কথার প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দিবে। আপনার কথাগুলো মেনে চলতে চেষ্টা করবে।
▪️ আপনি যদি চান যে আপনার সন্তান চিৎকার না করুক বা শান্ত ভাবে কথা বলুক তাহলে আপনার নিজের কণ্ঠ স্বরকে নিচু করুন এবং শান্তভাবে কথা বলুন।মনে রাখবেন আপনার আচরণই শিশু অনুকরণ করবে।
▪️ আপনার শিশু যখন আপনার পছন্দ মাফিক ভাল আচরণ করবে, তখন তার প্রসংশা করুন, কিছু ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া করার মাধ্যমে উৎসাহিত করুন। যেমন -‘বাহ, তুমি এত সুন্দর করে খেলছো। তাকে বলুন " এলো মেলো খেলার চেয়ে গুছিয়ে খেললে বেশি সুন্দর দেখায় "।
▪️ আপনার শিশু ছোট হলেও তার ভিতরে কিন্তু বোধ শক্তি রয়েছে। তার কাছে করা সকল প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার চেষ্টা করুন। আপনি যখন আপনার প্রতিশ্রুতিগুলি পুরণ করবেন, তখন আপনার শিশু আপনাকে বিশ্বাস করবে এবং সম্মান করতে শিখবে। সে বুঝতে পারবে যে, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা একটা ইতিবাচক মনোভাব।
▪️ কোন ব্যাপারে আপনার শিশুকে “ না ”বলার আগে নিজেকে শান্ত করুন। তার সাথে বিরুপ ব্যবহার করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। ঠান্ডা মাথায় তাকে বুঝিয়ে বলুন, তার বায়না কেন পূরণ যোগ্য নয়।
▪️ শিশুর সকল জেদ পূরণ করা উচিৎ নয়। এতে সে আরো বেশি জেদি হয়ে উঠবে। এজন্য যখন আপনার শিশু কোনও কিছুর জন্য জেদ করতে থাকে, আর আপনি যদি না বলে থাকেন, তবে আপনার সিদ্ধান্তে অটল থাকুন।
▪️ শিশুর বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে তাকে কিছু দায়িত্ব দিন। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে দ্বায়িত্বটি যেন বয়স মাফিক হয়। দ্বায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে তার পরিণতি অনুভব করার সুযোগও তাকে দিন। উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনার শিশু স্কুল এ যাচ্ছে এবং স্কুল ব্যাগ গুছানোর দায়িত্ব তার নিজের। অসতর্কতার কারনে যদি সে কোন বই নিতে ভুলে যায়, তবে তাকে বই ছাড়া স্কুলে গেলে কি হয় সেটা উপলব্ধি করতে দিন। এতে আপনার শিশু দ্বায়িত্ব পালনে আরও বেশি যত্নশীল হবে।
▪️ আপনার শিশু পরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এই ধারণা দৃঢ় ভাবে প্রতিষ্ঠিত করুন। তার মতামতকে গুরুত্ব দিন।
▪️ শিশুর দেখাশুনা করার সময় বিভিন্ন প্রকার চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। আপনি যদি এইসব চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিগুলি সম্পর্কে আগে থেকে চিন্তা করেন তবে আপনি আপনার সন্তানের প্রয়োজনগুলি সম্পর্কে পূর্ব থেকেই পরিকল্পনা গ্রহন করতে পারবেন।
একটি ইতিবাচক এবং গঠনমূলক পদ্ধতি হতে পারে আপনার সন্তানের আচরণের দিকনির্দেশনা প্রদানের সেরা উপায়। এর অর্থ হল যখন আপনার শিশু কোন অপছন্দনীয় আচরণ করবে তখন তাকে শাস্তি দিয়ে নয় বরং আপনার সন্তান ভাল আচরণ করলে তাকে প্রশংসা ও পুরস্কৃত করার মাধ্যমে উৎসাহিত করা।
শিশুর ইতিবাচক আচরন শিক্ষা তাকে সুনাগরিক হতে সাহায্য করবে। আজকের শিশুরাই আগামীদিনের ভবিষ্যৎ।
মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সকল সহযোগিতামূলক পরামর্শ পেতে চোখ রাখুন আমাদের পেইজে।