20/09/2023
আজ বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৬৬ তম বর্ষপূর্তি।
আনন্দময় এই দিনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সিএমসিয়ান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ দেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ৬ই আগষ্ট ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে তৎকালিন প্রাদেশিক সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরোওয়ার্দী এবং প্রাদেশিক মন্ত্রী হিসাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর পদধূলিতে শুভ উদ্বোধন এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের যাত্রা শুরু হয়েছিল। কিন্তু এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০ শে সেপ্টেম্বর ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে। এজন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ‘কলেজ ডে’ হিসাবে ২০ সেপ্টেম্বর নির্ধারন করা হয়েছে এবং প্রতিবছর তা পালিত হচ্ছে। এরপর দীর্ঘ পথ পেরিয়ে আজ এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সরকারি মেডিকেল কলেজ। যা এই অঞ্চলের ৫ কোটির অধিক জনগনের একমাত্র তৃতীয় মাত্রার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
নানা সংকট ও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও কলেজটি দেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসক তৈরির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জাতির দুঃসময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করা চিকিৎসকদের মধ্যে একমাত্র বীরউত্তম উপাধিতে ভূষিত ডা. শাহ আলম এ কলেজের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এমবিবিএস কোর্সে ৫০টি আসন নিয়ে ১৯৫৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানাধীন কে. বি. ফজলুল কাদের রোডে ৮০ একর জায়গা নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের যাত্রা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত এবং যুক্তরাজ্যের জেনারেল মেডিকেল কাউন্সিল স্বীকৃত এ সরকারি চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে প্রতি শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস কোর্সে দুই শতাধিক ও বিডিএস কোর্সে ৬০ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এছাড়া প্রতিবছর গড়ে ২৫ থেকে ৩০ জন বিদেশি শিক্ষার্থীও ভর্তি হয়। বর্তমানে শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থী বিভিন্ন বর্ষে অধ্যয়ন করছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ১৯৯২ সাল থেকে বিভিন্ন বিষয়ে এমফিল, ডিপ্লোমা ও ২০০২ সাল থেকে এমডি-এমএসসহ ৩৬টি স্নাতকোত্তর কোর্স চালু রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক এম এ ফয়েজ, সাবেক মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমীন, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের উপদেষ্টা ডা. সামন্ত লাল সেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খানসহ অনেক গুণীজন এ মেডিকেল কলেজেরই শিক্ষার্থী। এদের মতোই দেশের জন্য মানসম্মত চিকিৎসক তৈরির আলোকিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ।
দেশের পাশাপাশি বিদেশেও সুনামের সঙ্গে এ কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা পেশাদারিত্ব দেখিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে ফ্লোরিডায় ডা. বিএম আতিকুর জামান, সুইডেনের উপসালা ইউনিভার্সিটিতে ডা. শহিদুল ইসলাম, আমেরিকায় প্রফেসর ডা. ইউনুছ, লন্ডনে ডা. এম এ মবিনসহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অনেক সাবেক শিক্ষার্থী সুনামের সাথে দেশ-বিদেশের নামিদামি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন|
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৬৬তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পৃথিবীর যে প্রান্তে যে সিএমসিয়ান আছেন সবার জন্য রইল উষ্ণ শুভেচ্ছা।