24/09/2023
শিশুর অন্ধত্ব
ডাঃ এ এম শাহজাহান
"শিশুর অন্ধত্ব কনটেন্টটিতে শিশু অন্ধত্বের কারণ, প্রতিরোধের উপায়, বিনামূল্যে ভিটামিন ‘এ’ক্যাপসূল খাওয়ানোর জন্য যোগাযোগ এসব সন্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।
শিশু অন্ধত্ব বাংলাদেশে শিশু স্বাস্থ্যের জন্য একটি মারাত্মক সমস্যা। অন্ধত্বের দিক থেকে ছানির পরেই শিশু অন্ধত্বের অবস্থান।
শিশু অন্ধত্বের কারণ
- ছানি
- ভিটামিন এ’র অভাবে কর্ণিয়া নষ্ট
- হাম ও মারাত্মক ডায়রিয়া
- এফাকিয়া/এমরাইওপিয়া
- অন্যান্য ( অফথালমিয়া নিওনেটারাম, গাছ গাছড়া ব্যবহার, চোখের আঘাত ইত্যাদি)
প্রতিরোধের উপায়
সঠিক সময়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করলে শিশু অন্ধত্বের হার অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব, আর এ জন্য প্রয়োজন সর্বস্তরের সচেতনতা।
শিশু অন্ধত্ব প্রতিরোধের উপায় গুলো হলো
ক) শিশু জন্মের পর পরই শিশুর চোখ পরিষ্কার করতে হবে এবং শিশুর চোখে কোন ময়লা বা পুঁজ দেখা মাত্র চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
খ) প্রসবের পর মাকে ভিটামিন এ খাওয়াতে হবে।
গ) জন্মের পর পরই শিশুকে শাল দুধ খাওয়াতে হবে এবং ৬ মাস পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
ঘ) জন্মের এক বছরের মধ্যে হামের টিকা সহ সব কয়টি টিকা দিতে হবে।
ঙ) ৫ (পাঁচ) বছরের নিচের শিশুদের হাম, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া এবং অপুষ্টিজনিত অবস্থায় ভিটামিন এ খাওয়াতে হবে। ছয়মাস বয়স থেকে ছয় মাস অন্তর অন্তর ১টা করে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসূল খাওয়াতে হবে।
চ) শিশু ঠিক মত দেখতে না পেলে চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ছ) শিশুর চোখের মনি সাদা হলে চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
জ) চোখ ট্যারা হলে চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ঝ) চোখে কখনই গাছ-গাছালি বা কবিরাজী ঔষধ দেওয়া যাবে না।
ঞ) শিশুকে স্কুলে ভর্তির পূর্বে চোখ পরীক্ষা করতে হবে।
ট) শিশুর চোখে আঘাত লাগলে সংগে সংগে চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বিনামূল্যে ভিটামিন ‘এ’ক্যাপসূল খাওয়ানোর জন্য যোগাযোগ
শিশু (৯-৫৯ মাস) ও প্রসূতি মায়েদের বিনামূল্যে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসূল খাওয়ানোর জন্য যোগোযোগ করুন:
নিকটস্থ টিকাদান কেন্দ্র
স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উপজেলা ও জেলা হাসপাতাল
মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান, মহাখালী,ঢাকা
সম্প্রসারিত টিকাদান কেন্দ্র, মহাখালী,ঢাকা
সচরাচর জিজ্ঞাসা
প্রশ্ন.১.শিশু অন্ধত্বের কারণ গুলো কি কি?
উত্তর.
- ছানি
- ভিটামিন এ অভাবে কর্ণিয়া নষ্ট
- হাম ও মারাত্মক ডায়রিয়া
- এফাকিয়া/এমরাইওপিয়া
- অন্যান্য ( অফথালমিয়া নিওনেটারাম, গাছ গাছড়া ব্যবহার, চোখের আঘাত ইত্যাদি)
প্রশ্ন.২.শিশুর চোখে কোন ময়লা বা পুঁজ দেখা দিলে কি করতে হবে?
উত্তর. চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রশ্ন.৩.শিশু অন্ধত্ব প্রতিরোধের জন্য শিশুকে কি ধরনের খাবার খাওয়াতে হবে?
উত্তর. শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার যেমন: হলুদ ফলমূল, সবুজ শাকসব্জী, ডিমের কুসুম, ছোটমাছ-মলা, ঢেলা এবং নিয়মিত ভিটামিন ‘এ’ খাওয়াতে হবে।
প্রশ্ন.৪.শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ কখন খাওয়ানো শুরু করতে হবে?
উত্তর.ছয়মাস বয়স থেকে ছয় মাস অন্তর অন্তর ১টা করে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। ডায়রিয়া ও হামে আক্রান্ত শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ খাওয়াতে হবে।
প্রশ্ন.৫.শিশুদের চোখ ভাল রাখতে হলে কি করতে হবে?
উত্তর.শিশুদের চোখ ভাল রাখতে হলে জন্মের পরপরই শাল দুধ এবং ছয় মাস শুধু মায়ের দুধ এবং মাকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল দিতে হবে।
প্রশ্ন.৬.চোখের সমস্যা দেখা দিলে কবিরাজী ঔষধ দেয়া যাবে কি?
উত্তর. চোখে কখনোই গাছ-গাছালী বা কবিরাজী ঔষধ দেয়া যাবে না। শিশুকে চক্ষু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা ও পরামর্শ নিতে হবে।