19/01/2024
❤️❤️❤️
Self-love বা নিজেকে ভালোবাসা মানে স্বেচ্ছাচারিতা নয়। আমি নিজেকে ভালোবাসি, তাই নিজের খুশির জন্য যা ইচ্ছা সেটাই করব এটা নিজের প্রতি ভালোবাসা হতে পারে না। বরঞ্চ নিয়মানুবর্তিতা ও সুশৃংখলা অনুশীলনের মাধ্যমে নিজের জীবনকে সঠিকভাবে পরিচালনার নামই হচ্ছে Self-love বা নিজেকে ভালোবাসা।
এই ভালোবাসার মূল লক্ষ্য হলো নিজের কোন ক্ষতি না করে নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ সবল করে গড়ে তোলা। আপাতদৃষ্টিতে নিজেকে ভালোবাসার সাথে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার সম্পর্ক বোঝা না গেলেও গভীরভাবে চিন্তা করলে বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে ওঠে। আমরা সাধারণত নিজেকে ভালোবাসার নামে সাময়িক আনন্দ ফুর্তিতে মেতে থাকি। হয়তো কোন খাবার বা কোন কাজ বা কোন ঘটনা আমাদেরকে সাময়িক মজা দিলেও এটা যে আমাদের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি করছে আমরা তা চিন্তা করি না। আমি যদি আপনাদের প্রশ্ন করি, আপনারা আপনাদের জীবনে যাদেরকে সত্যিকার অর্থে ভালবাসেন তাদের কি কখনো ক্ষতি করতে পারবেন? যেমন ধরুন, আপনার বাবা-মা বা সন্তান-সন্ততি অথবা স্বামী-স্ত্রী এদের ক্ষতি হোক এমন কোন কাজ নিশ্চয়ই করবেন না। ঠিক তেমনি আপনি যদি আপনার নিজেকে সত্যিকার অর্থে ভালবাসেন তাহলে নিজের কি কোন ক্ষতি করতে পারবেন? কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে আমরা জেনে-না জেনে, বুঝে-না বুঝে প্রতিনিয়ত আমাদের ক্ষতি করে যাচ্ছি। উদাহরণ দিলে আরো ভালোভাবে বোঝা যাবে। একজন মানুষ যিনি ধূমপান করে থাকেন, তিনি ধূমপান করে সাময়িক একটা তৃপ্তি পাচ্ছেন অথচ এই ধূমপান তার এতটাই ক্ষতি করছে যে এটা তাকে ভীষণ শারীরিক কষ্ট দিতে পারে। একইভাবে আমরা প্রতিদিন যেসব অসাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছি এগুলো আমাদের শরীরকে ক্ষতিগ্রস্ত ও মস্তিষ্ককে বিকৃত করে দিচ্ছে। আধুনিক জীবনযাত্রায় আমরা যেসব কাজ করি তার বেশিরভাগই আমাদের জন্য কল্যাণকর নয়। যেমন রাতে অনেক দেরি করে ঘুমানো, ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইল দেখে সময় নষ্ট করা, প্রতিনিয়ত রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করা ইত্যাদি। সঠিক জ্ঞানের অভাবে আমরা মানসিকভাবেও নিজেদের অনেক ক্ষতি করে থাকি। অনেকে নিজেকে ভালো রাখার জন্য অন্যদের ক্ষতি করে থাকেন যা পরবর্তীতে তার নিজেরই মানসিক যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এভাবে আলাদা আলাদা করে প্রত্যেকটা বিষয় খেয়াল করলে দেখবেন যে, আমরা নিজেরাই সারাক্ষণ নিজেদের ক্ষতি করছি। আপনার ক্ষতি করার জন্য সমাজের অন্য কোন মানুষের প্রয়োজন নেই, আপনি একাই আপনার ক্ষতি করার জন্য যথেষ্ট। আপনি যদি প্রতিনিয়ত আপনার শরীর ও মনকে কষ্ট দিতে থাকেন তাহলে একসময় আপনার শরীর ও মন আপনাকেও ভীষণভাবে কষ্ট দিবে। পক্ষান্তরে আপনি যদি শৃঙ্খলাবোধ ও নিয়মানুবর্তিতা চর্চা করে আত্মনিয়ন্ত্রণ বাড়াতে পারেন তাহলে আপনি সাময়িক লিপ্সা বা অভিপ্রায় গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে আপনার ভবিষ্যৎকে সুন্দর করতে পারবেন। এজন্য আমাদের নিজেকে ভালোবাসার সঠিক অর্থ বুঝতে হবে এবং নিজের প্রতি নিজের ভালোবাসা অনেক বাড়িয়ে তুলতে হবে। আর এইভাবেই আপনার ভালোবাসাময় জীবন দিয়ে পুরো পৃথিবীকে ভালোবাসাময় করে তুলতে পারবেন।