
01/03/2025
#রোজা_রেখে_রক্তদান_করা_যায়_কি?
অনেকেই মনে করে রোজা রেখে রক্তদান করা যায়না বা দান করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটা ভুল ধারণা। রক্তের সাথে অযুর সম্পর্ক রোজার নয়।
রক্ত দিলে যে রোজা ভাঙ্গে না
এ প্রসঙ্গে তিনটি হাদীস উদ্ধৃত করা যায়:
~ হযরত আকরামা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘নবী করিম (স.) হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধা অবস্থায় শরীর থেকে শিংগার* মাধ্যমে রক্ত বের করেছেন এবং রোজা অবস্থায়ও শরীর থেকে শিংগার মাধ্যমে রক্ত বের করেছেন।
হযরত সাবিত আল বানানী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘হযরত আনাস বিন মালেক (রা.) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে যে রোজাদারের জন্য শরীর থেকে শিংগা লাগিয়ে রক্ত বের করাকে আপনি কি অপছন্দ করেন? জবাবে তিনি বলেন, না আমি অপছন্দ করি না। তবে দুর্বল হয়ে পড়ার ভয় থাকলে ভিন্ন কথা। [সহীহ আল বোখারী ১:২৬০]
~ একইভাবে শিংগা লাগানোও অপছন্দ নয়। অর্থাৎ দুর্বল হয়ে পড়ার ভয় না থাকলে রোজা অবস্থায়ও শিংগা লাগিয়ে রক্ত বের করা যায়। [শামী কিতাব ২:৩৯৯]
~ রোজা অবস্থায় তেল ও সুগন্ধী ব্যবহার করলে রোজা ভাঙে না। একইভাবে শিংগা লাগালেও রোজার ক্ষতি হয় না। [হেদায়া কিতাব ১:২১৭]
*শিংগা হলো গরু বা মহিষের শিং দিয়ে তৈরি বিশেষ এক রকম নল যা দিয়ে মানবদেহের দুষিত রক্ত, পুঁজ বের করা হতো।
তবে প্রকৃত সত্য এই যে রোজা রেখে রক্তদান অবশ্যই কষ্টের তাই পবিত্র রমজান মাসে ভলন্টিয়ারদের আরও বেশি সচেতন হওয়া উচিত আবেগী না হয়ে। না হয় রক্তদাতা কষ্ট পাবে এবং রোগীরা টেনশনে ভোগ করবে।
তাই আমরা প্রথমে চেষ্টা করব পবিত্র রমজান মাসে ভিন্ন ধর্মের ভাই বোনদের কে রক্ত দেওয়াতে, তা না হলে চেষ্টা করব ইফতারের পর দেওয়াতে অথবা চেষ্টা করব সবল কাউকে দেওয়াতে যাতে সে রক্ত দেওয়ার পর দূর্বল না হয়।
স্বেচ্ছাসেবক ভাই ও বোনেরা রিকোয়েস্টগুলো ভাল করে চেক করবেন। চেষ্টা করবেন ডোনার কে ইফতারের পর ইউজ করতে অথবা পরের দিনের ব্লাড আগের দিন ইফতার পর নিয়ে রাখতে। একেবারে অপরাগ ও রোগীর কন্ডিশন যদি খারাপ হয় তখন ভিন্ন কথা।
আশরাফুল মাখলুকাত মানুষকে রক্ত দিয়ে বাঁচাতে সাহায্য করা ইসলামের দৃষ্টিতে কত বড় একটি মহৎ কাজ তা আর বিশ্লেষণ করে বলার অবকাশ নেই।
আর মানুষের উপকার প্রসঙ্গে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন,
‘তোমাদের কেউ তার অপর ভাইয়ের উপকার করতে সক্ষম হলে সে যেন তা করে।’(মুসলিম শরিফ)
রক্তদান একটি মানবিক দায়বদ্ধতা ও সামাজিক অঙ্গীকার।
পবিত্র কোরআনে কারিমের সূরা হুজরাতের ১০নং আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন……. মুমিনগণ পরস্পর ভাই ভাই।’
“পবিত্র কোরআন শরিফে বলা হয়েছে ‘যে ব্যাক্তি একজন মানুষের জীবন রক্ষা করল, সে যেন সমগ্র মানব জাতির জীবন রক্ষা করল।” (সূরা মায়েদাঃ ৩২), তাহলে এই আয়াত থেকে প্রতিয়মান হয় যে মানুষের জীবন রক্ষায় সহায়তা করল, তাহলে সেই যেন পুরো মানব সমাজকে রক্ষা করল।
সবাইকে জানাই রমাদান মোবারক 🌙❤️