26/02/2025
ডায়াবেটিক রোগীদের রোজা রাখা নিয়ে যে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা:
রক্তে চিনির মাত্রা খুব কমে গেলে অনেক সময় মানুষ অচেতন বা অজ্ঞান হয়ে পড়তে পারেন, যাকে বলা হয় হাইপো বা হাইপোগ্লাইসিমিয়া। আবার রক্তে চিনির মাত্রা খুব বেশি হয়ে গেলে হাইপারগ্লাইসিমিয়া হতে পারে। তখন অবসান, মাথাঘোরা, মাথাব্যথা, ঝাপসা দৃষ্টি ইত্যাদি সমস্যার তৈরি হতে পারে।
এ কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে চিনির মাত্রা সবসময় নিয়ন্ত্রিত রাখতে হবে।
এক ব্যাক্তির ডায়াবেটিস শনাক্ত হয়েছে প্রায় আট বছর আগে। দুপুরে ডায়াবেটিসের ওষুধ খেতে হতো বলে প্রথম দিকে তিনি রোজা রাখতে পারতেন না। তবে গত দুই বছর ধরে চিকিৎসকের পরামর্শে আবার রোজা রাখতে শুরু করেছেন।
''ডাক্তার আমার ওষুধে কিছু পরিবর্তন করে দিয়েছে। যেটা রাতে খাবার ছিল, সেটা সেহরিতে খাই, আর ভোরেরটা খাই ইফতারির সময়। এভাবে এখন রোজা রাখছি, '' তিনি বলছেন।
রোজাদারদের জন্য যেসব পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা
ডায়াবেটিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহজাদা সেলিম বলছেন, ডায়াবেটিক রোগীদের চিকিৎসায় আমরা একটি কমপ্লিট গাইডলাইন দিয়েছি। এ থেকে ডায়াবেটিক রোগীরা যেমন নিজের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সতর্ক হতে পারবেন, তেমনি বাংলাদেশের চিকিৎসকরাও একটা নির্দেশনা পাবেন।
ওষুধ ও খাদ্যের সমন্বয়
ডায়াবেটিস রোগীদের বিকাল বেলায় রক্তের গ্লুকোজ কমে যাওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকে। আবার অনেকে হাইপো হতে পারে, এমন আশঙ্কায় ওষুধ না খেলে বা কম খেলেও সমস্যার তৈরি করতে পারে। ফলে তাদের ওষুধের সমন্বয় ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে।
পাঁচ বেলা চিনির মাত্রা পরীক্ষা
রোজা শুরুর অন্তত প্রথম তিনদিন পাঁচ বেলা রক্তে চিনির মাত্রা নিয়মিতভাবে মাপতে হবে। এটা হলো সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর, আবার সকাল ১১টায়, বিকাল ৪টায়, ইফতারের ঠিক আগে এবং ইফতারের দুই ঘণ্টা পরে। এসব পরীক্ষার ফলাফল দেখে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ ও খাদ্যের সমন্বয় করে নিতে হবে।
ডা. শাহজাদা সেলিম বলছেন, ''ইসলামী বিশেষজ্ঞ এবং ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞরা মিলে একত্রে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, রোজার সময় রক্ত পরীক্ষা এবং দিনের বেলায় ইনসুলিন নিলেও রোজা ভঙ্গ হবে না।''
খাবারের সময় পরিবর্তন
যাদের সকালে নাস্তার আগে বা পরে ডায়াবেটিসের ওষুধ খেতে হয়, সেটি তারা ইফতারের সময় খাবেন। আর রাতের ওষুধ খাবেন সকালে সেহরির সময়। দুপুরের ওষুধ চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে সমন্বয় করে নিতে হবে।
ডায়াবেটিস রোগীদের কিছুক্ষণ পরপর অল্প খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু রোজার সময় তাদের প্রায় ১৪/১৫ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হয়। ফলে ভোরে ওষুধের মাত্রা একই রকম থাকলে বিকালের দিকে রক্তে চিনির মাত্রা অনেক কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, বিশেষ করে যারা ইনসুলিন গ্রহণ করেন, তাদের জন্য। এ জন্য ভোরে ইনসুলিন গ্রহণের পরিমাণ অর্ধেকের কাছাকাছি গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
ছবির ক্যাপশান,রোজার মধ্যে শারীরিক পরিশ্রম করার নিয়মে পরিবর্তন আনার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা
সুত্রঃ https://www.bbc.com/bengali/news-60925610