26/11/2025
🔴IBS (irritable bowel syndrome)
চেম্বারে আমরা প্রতিনিয়ত IBS (irritable bowel syndrome) এর পেশেন্ট পাই। এবং এটা Young বয়সেই বেশি হয়। এই রোগের একটা অন্যতম চিকিৎসা খাবার নিয়ন্ত্রণ করা। নাহলে আপনাকে আমরা যতই মেডিসিন দেই না কেন, আপনি পুরোপুরি সুস্থ হবেন না।
প্রায়ই আপনারা আমাকে জিজ্ঞেস করেন যে, কি কি খাবার পরিহার করা উচিত। নিচে বিস্তারিত লিখলাম আলহামদুলিল্লাহ।
এগুলো মেনে চলুন, পাশাপাশি আপনার নিকটস্থ MBBS registered doctor এর পরামর্শ অনুযায়ী মেডিসিন গ্রহণ করুন, ইনশা আল্লাহ আপনি সুস্থ থাকবেন।
🔴 এটা নিয়ে অহেতুক প্যানিকড হবেন না, আর অযথা টেস্টের পর টেস্ট করবেন না।
🔴 এখানে মূলত পেশেন্টের নিম্নোক্ত উপসর্গগুলো দেখা যায়:
১) পেটে ব্যথা
পেটে মোচড় ধরা ব্যথা
ব্যথা কখনো বাম পাশে, কখনো পুরো পেটে
সাধারণত মলত্যাগ করলে ব্যথা কমে
২) পেট ফাঁপা / bloating
পেট ফুলে থাকা
সামান্য কিছু খেলেই “পেট ভরা ভরা” অনুভূতি
গ্যাস আটকে থাকা
৩) মলত্যাগের অভ্যাস অস্বাভাবিক হওয়া
IBS-এর type অনুযায়ী:
বারবার পাতলা পায়খানা (IBS-D)
খুব শক্ত, কষ্ট করে পায়খানা হওয়া (IBS-C)
কখনো পাতলা, কখনো শক্ত (Mixed type)
৪) অসম্পূর্ণ মলত্যাগের অনুভূতি
মনে হয় পুরোটা বের হয়নি
আবার বাথরুমে যেতে ইচ্ছে করে
৫) অতিরিক্ত গ্যাস
অতিরিক্ত গ্যাসযুক্ত ঢেকুর উঠা
বেশি বায়ু বের হওউয়া
গ্যাস না বের হলে পেটে চাপ ধরা
৬) খাবার খেলেই অস্বস্তি
কিছু খাবার খেলেই ব্যথা, পেট মোচড় দিয়ে ওয়াশরুমের বেগ হওয়া, পেটে অতিরিক্ত গ্যাস হওয়া
বিশেষ করে দুধ, পেঁয়াজ, রসুন, ডাল, ভাজাপোড়া, চা-কফি ইত্যাদির পর উপসর্গ বাড়ে
৭) মানসিক চাপ বাড়লে উপসর্গ বাড়া
স্ট্রেস, দুশ্চিন্তা বা tension → ব্যথা, গ্যাস, loose motion বেড়ে যায়। Exam/work pressure থাকলে এই উপসর্গগুলো বেশি দেখা দেয়
৮) ওজন সাধারণত কমে না
🔴 কিন্তু ওজন কমে গেলে অন্য রোগ exclude করা জরুরি
IBS-এর বড় সমস্যা হলো, এটা কোন জটিল রোগ না হলেও এখানে স্বাভাবিক জীবনযাপন বাধাগ্রস্থ হয়। সবসময় একটা অস্বস্তিতে ভুগতে হয়। বিশেষ করে ট্রাভেলিং এর সময়।
🔴 IBS-এ যেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত
১) উচ্চ FODMAP ফল
আপেল
নাসপাতি / পেয়ারাপ্রজাতি (Pear)
আম
তরমুজ
আঙুর (বেশি খেলে সমস্যা)
শুকনো ফল (কিশমিশ, এপ্রিকট)
২) উচ্চ FODMAP সবজি
পেঁয়াজ
রসুন
ফুলকপি
ব্রোকলি (বেশি খেলে)
মাশরুম
৩) ডাল ও বীজ জাতীয় খাবার
মসুর ডাল
ছোলা
সয়াবিন
মটর/মটরশুঁটি
৪) ল্যাকটোজ-সমৃদ্ধ দুগ্ধজাত খাবার
গরুর দুধ
আইসক্রিম
নরম পনির (soft cheese)
৫) অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত খাবার
ভাজাপোড়া
সিঙ্গারা, সমুচা, তেলেভাজা খাবার
ফাস্টফুড (বার্গার, পিজা, ফ্রাইড চিকেন)
চর্বিযুক্ত গরু/খাসির মাংস
৬) গ্যাস-বর্ধক পানীয়
সফট ড্রিংক
এনার্জি ড্রিংক
কৃত্রিম মিষ্টি (সর্বিটল, ম্যানিটল, জাইলিটল থাকা চুইংগাম/ডায়েট ফুড)
৭) গ্লুটেন-সমৃদ্ধ খাবার
বি:দ্র: সব IBS রোগীর সমস্যা হয় না, তবে IBS-D রোগীদের মাঝে বেশি দেখা যায়।
পাউরুটি
রুটি / নান
পাস্তা
কেক-পেস্ট্রি
৮) ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল
অতিরিক্ত চিনিযুক্ত চা
কফি
ব্ল্যাক টি
অ্যালকোহল জাতীয় পানীয়
৯) অতিরিক্ত ঝাল-মসলা
কাঁচা মরিচ / গুঁড়া মরিচ বেশি থাকা খাবার
আচার
অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার
Reference:
Americal college of Gastroenterology
British Society of Gastroenterology
ডা. মুহাম্মাদ মোসলেহ উদ্দিন
এফসিপিএস (কার্ডিওলোজি) [শেষ পর্ব]
এমবিবিএস (চমেক), পিজিটি (মেডিসিন)
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল