09/05/2025
স্ক্যাবিস (Scabies) একটি ছোঁয়াচে চর্মরোগ, যা Sarcoptes scabiei নামক একটি ক্ষুদ্রাকৃতি পরজীবী (mites) এর কারণে হয়ে থাকে। এটি ত্বকের নিচে গর্ত করে ডিম পাড়ে, ফলে তীব্র চুলকানি (বিশেষ করে রাতের বেলায়)এবং ফুসকুড়ির সৃষ্টি হয়।
✅ স্ক্যাবিস কীভাবে ছড়ায়?
সরাসরি ত্বক-ত্বক সংস্পর্শে: দীর্ঘসময় ধরে আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ শারীরিক সংস্পর্শে (যেমন একসাথে ঘুমানো বা আলিঙ্গন করা) স্ক্যাবিস সহজেই ছড়াতে পারে।
পোশাক, বিছানাপত্র বা তোয়ালে শেয়ার করলে: আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সামগ্রী থেকে পরজীবী অন্য ব্যক্তির শরীরে চলে যেতে পারে।
সংক্রমিত পরিবেশে বসবাস: পরিবারের একাধিক সদস্য বা হোস্টেলে, জেলে, নার্সিং হোমে ও মাদ্রাসায় দ্রুত ছড়ায়।
✅ স্ক্যাবিসের উপসর্গ:
স্ক্যাবিসের উপসর্গগুলো সাধারণত সংক্রমণের ২ থেকে ৬ সপ্তাহ পর শুরু হয় (প্রথমবার আক্রান্ত হলে)। তবে যদি আগে কখনো স্ক্যাবিস হয়ে থাকে, তাহলে উপসর্গ ১–৪ দিনের মধ্যেই দেখা দিতে পারে।
✅ স্ক্যাবিসের প্রধান উপসর্গগুলো:
তীব্র চুলকানি (প্রধান উপসর্গ):
বিশেষ করে রাতে বেশি হয়।
শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
ত্বকে ফুসকুড়ি বা গুটি (Papules, Vesicles):
ছোট ছোট গুটি বা ফোঁড়ার মতো দেখা যায়।
ঘষাঘষির কারণে র্যাশ আরও খারাপ হতে পারে।
ত্বকে সরু সরু সুড়ঙ্গ বা গর্তের মতো দাগ (Burrows):
মাইটস গর্ত করে এগুলো তৈরি করে।
সাধারণত আঙুলের ফাঁকে, কব্জি, কনুই, স্তনের নিচে, নাভি, পেট, কোমর, পাছা, পুরুষদের যৌনাঙ্গ, মহিলাদের স্তনের চারপাশে দেখা যায়।
ঘা বা ইনফেকশন:
অতিরিক্ত চুলকানোর কারণে ত্বকে ক্ষত তৈরি হয়ে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হতে পারে (যেমন ইম্পেটিগো)।
ঘুমের ব্যাঘাত :
চুলকানির কারণে ঘুমানো কষ্টকর হয়ে পড়ে।
✅ শিশুদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত লক্ষণ:
তালু, পা, মুখমণ্ডলে স্ক্যাবিস হতে পারে (প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় ব্যতিক্রম)।
অতিরিক্ত কাঁন্না , খিটখিটে স্বভাব, খাওয়ায় অনীহা দেখা দিতে পারে।
✅ স্ক্যাবিস কীভাবে ছড়ায়?
সরাসরি ত্বক-ত্বক সংস্পর্শে: দীর্ঘসময় ধরে আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ শারীরিক সংস্পর্শে (যেমন একসাথে ঘুমানো বা আলিঙ্গন করা) স্ক্যাবিস সহজেই ছড়াতে পারে।
পোশাক, বিছানাপত্র বা তোয়ালে শেয়ার করলে: আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সামগ্রী থেকে পরজীবী অন্য ব্যক্তির শরীরে চলে যেতে পারে।
সংক্রমিত পরিবেশে বসবাস: পরিবারের একাধিক সদস্য বা হোস্টেলে, জেলে, নার্সিং হোমে দ্রুত ছড়ায়।
✅ স্ক্যাবিস আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা কী?
পুরো শরীরে (গলায় ও মুখ বাদে) স্ক্যাবিসের ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।
সাধারণত রাতে মাখানো হয় এবং ৮–১৪ ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলা হয়।
একই পরিবারের সকল সদস্যকে একসাথে চিকিৎসা দিতে হয়—even যদি উপসর্গ না-ও থাকে।
চুলকানি ও চর্মর্যাশ কমাতে অ্যান্টিহিস্টামিন বা চুলকানিনাশক লোশন ব্যবহার করা হয়।
✅ কী কী ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে?
পারমেথ্রিন (Permethrin) 5% ক্রিম – সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ও কার্যকর। এটি রাতে মেখে সকালে ধুয়ে ফেলতে হয়।
বেঞ্জাইল বেনজোয়েট (Benzyl Benzoate) 25% – প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ব্যবহৃত, তবে চামড়ায় জ্বালা করতে পারে।
আইভারমেকটিন (Ivermectin) – মুখে খাওয়ার ওষুধ, যারা ক্রিম সহ্য করতে পারে না বা গুরুতর স্ক্যাবিসে আক্রান্ত তাদের জন্য কার্যকর।
সালফার ওষুধ (Sulfur ointment) – শিশু ও গর্ভবতীদের জন্য নিরাপদ, তবে গন্ধ ও ময়লা হতে পারে।
✅ স্ক্যাবিস প্রতিরোধে করণীয়:
আক্রান্ত ব্যক্তির পোশাক, বিছানার চাদর, তোয়ালে গরম পানিতে ধুয়ে ও শুকিয়ে নিন।
পরিবারের সব সদস্যকে একসাথে চিকিৎসা দিন।
সংক্রমিত অবস্থায় শারীরিক সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
ঘন ঘন হাত ধোয়া ও ব্যক্তিগত পরিছন্নতা বজায় রাখা।
✅ কখন ডাক্তার দেখানো বাধ্যতামূলক?
২-৩ সপ্তাহ চিকিৎসা নেওয়ার পরও চুলকানি ও ফুসকুড়ি না কমলে।
যদি গর্ভবতী নারী, শিশু বা অসুস্থ বয়স্ক ব্যক্তি আক্রান্ত হন।
যদি ত্বকে ময়লা জমে, ইনফেকশন বা ঘা হয়ে যায়।
যদি কোনো ব্যক্তি ঘনঘন স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হন।
এটা বর্তমানে এক রকমের মহামারি আকার ধারণ করতেছে , তাই জনস্বার্থে শেয়ার করে আপনার প্রিয়জনকে সতর্ক করুন।
#চর্মরোগ #স্বাস্থ্যসচেতনতা, #স্ক্যাবিসচিকিৎসা #রোগপ্রতিরোধ, #ত্বকের_সুরক্ষা
© Dr Miskat Aziz