
16/08/2025
আজকে ব্রাহ্মণপাড়ার সনামধন্য ও অত্যন্ত সুপরিচিত হাসপাতাল মধুমতি হসপিটাল প্রাঃ লিঃ এ একটি নরমাল ডেলিভারি সম্পন্ন হয়।
বাড়িতে লম্বা সময় ডেলিভারির চেষ্টা করে খুব বাজে অবস্থায় নিয়ে আসা হয়।
আজ আমরা জানবো নবজাতকের মাথা ফুলে যায় কেনো ও বাসায় ডেলিভারির ঝুকি কেন? এ ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়াতে নিম্নের আর্টিকেল গুলা পড়তে অনুরোধ জানাচ্ছি।
নবজাতকের মাথায় ক্যাপুট — কেন হয়, ঝুঁকি কী?
অনেক সময় ডেলিভারির পর বাচ্চার মাথায় নরম ফোলা দেখা যায়। এটাকে বলে ক্যাপুট সাকসেডেনিয়াম (Caput Succedaneum)।
⸻
কেন হয়?
• প্রসবের সময় বাচ্চার মাথা দীর্ঘসময় ধরে জন্মনালীর সংকীর্ণ পথে চাপে থাকে।
• মায়ের জরায়ুর চাপ + জন্মনালীর দেয়ালের চাপের কারণে মাথার উপরিভাগে রক্ত চলাচল ও লসিকা প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়।
• এর ফলে মাথার ত্বকের নিচে পানি জমে ফোলা (edema) তৈরি হয়।
সহজ ভাষায়: ডেলিভারির সময় বাচ্চার মাথায় অতিরিক্ত চাপ পড়ায় এই ফোলাটা হয়।
⸻
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
• জন্মের সময় থেকেই মাথায় থাকে।
• নরম ও ফুলে থাকে, হাত দিয়ে চাপ দিলে ঢুকে যায়।
• মাথার মাঝ বরাবর (midline) অতিক্রম করতে পারে।
• সাধারণত ২–৩ দিনের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়।
⸻
ঝুঁকি কী?
সাধারণ ক্যাপুট খুব গুরুতর নয়। তবে বাড়িতে দীর্ঘসময় ডেলিভারি আটকে থাকলে বা শিশুর মাথায় অতিরিক্ত চাপ পড়লে বড় ক্যাপুট তৈরি হয়, তখন ঝুঁকি হতে পারে—
• শিশুর মাথায় অতিরিক্ত চাপ → মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি
• জন্মের পরপর শিশুর শ্বাস না নেওয়া বা কান্না না করা
• খিঁচুনি হতে পারে
• দীর্ঘমেয়াদে স্নায়বিক ক্ষতি (brain injury) পর্যন্ত হতে পারে
• প্রসবকালীন জটিলতার অন্য ঝুঁকি: মা’য়ের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, সংক্রমণ ইত্যাদি
প্রসব একটি গুরুতর ব্যাপার — কখনোই বাড়িতে চেষ্টা করবেন না
সম্প্রতি এক মা বাড়িতে ডেলিভারির চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু প্রসব এগোয়নি। পরে হাসপাতালে আনা হয়। নরমাল ডেলিভারি হলেও বাচ্চার মাথায় বিশাল ক্যাপুট (ফোলা) হয়েছিল, জন্মের পর বাচ্চা কান্না করেনি ও খিচুনি হয়েছিল।
সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না পেলে এই ধরনের জটিলতা বাচ্চার স্থায়ী মস্তিষ্কের ক্ষতি বা মৃত্যুর কারণ হতে পারত।
⸻
বাড়িতে ডেলিভারির ঝুঁকি
• অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ (Postpartum hemorrhage) → মায়ের মৃত্যু হতে পারে
• বাচ্চার মাথায় চাপ, অক্সিজেন কম পাওয়া → মস্তিষ্ক ক্ষতি, খিঁচুনি, মৃত্যু
• প্রসব আটকে গেলে (obstructed labour) → মা ও শিশু দুজনের জীবন ঝুঁকিতে
• ইনফেকশন (মা ও নবজাতক উভয়ের মধ্যে)
⸻
নিরাপদ প্রসবের করণীয়
✔️ গর্ভাবস্থায় অন্তত ৪ বার চেকআপ
✔️ প্রসবের সময় হাসপাতালে যাওয়া
✔️ প্রশিক্ষিত ডাক্তার/নার্সের তত্ত্বাবধানে ডেলিভারি
✔️ প্রয়োজনে দ্রুত অপারেশন (C-section) করার সুবিধা থাকা
✔️ জরুরি অবস্থা সামলানোর সব ব্যবস্থা কেবল হাসপাতালে থাকে
⸻
মনে রাখবেন
"প্রসব ঘরে নয়, নিরাপদ হাসপাতালে হোক।”
মা ও শিশুর জীবনের জন্য এটি সবচেয়ে জরুরি সিদ্ধান্ত।