17/05/2025
কোকোমেলন কিংবা এরকম ওভার স্টিমুলেটিং শো/কার্টুন কেন বাচ্চাকে দিবেন না
কখনো কোনো বাচ্চার সামনে কোকোমেলন ছেড়ে দেখেছেন? দেখবেন ওরা হাঁ করে আছে, পাশে আসল ঘোড়া দাঁড়িয়ে থাকলেও কোকোমেলন থেকে ওরা চোখ সরাতে পারছে না।
এই যে চোখ সরাতে পারে না, বুঁদ হয়ে যায় নেশাগ্রস্তের মত, এটা কিন্তু ওদের দো-ষ না!
এই ধরনের কনটেন্টগুলি বানানোই হয় এমনেভাবে, এমন মিউজিক ব্যবহার করা হয় যেন এটা “অ্যাডিকশন” এর মত কাজ করে।
শুধু কোকোমেলন না, যে কোনো ওভারস্টিমুলেটিং শো বাচ্চার ব্রেইনের জন্য বড় ধরনের -ক্ষ-তি-র কারণ।
কিভাবে ও কেন, সেটাই এখানে আলোচনা করবো।
📌হাইপারএকটিভিটি ও মনোযোগের ঘাটতি
ঘন ঘন দৃশ্য পরিবর্তন (৩ সেকেন্ডে ১ বার), টানা হিপনোটিক মিউজিক, উজ্জ্বল রঙের সমাহার— এই তিন মিলে বাচ্চাকে অস্থির করে তোলে। অ্যাটেনশন স্প্যান কমায়। এ কার্টুনের দুনিয়া যতটা ইন্টারেস্টিং, বাস্তব দুনিয়া তার তুলনায় পানসে লাগে। বই পড়া, রং করা, গুণতে শেখা কিংবা বাবা মায়ের সাথে খেলে সময় কাটানো খুব বোরিং মনে হয়।
📌স্পিচ ডিলে বা কথা বলার দক্ষতা এবং সামাজিক দক্ষতায় পিছিয়ে পড়ে
যে কোনো স্ক্রিনটাইম (মিস রাচেলও) বাচ্চার স্পিচ ডেভেলেপমেন্টের জন্য ভালো না। যদি সেটা হয় ভাষা ডেভেলপ হওয়ার আগে (১৮ মাসেরও আগে) এবং অতিরিক্ত।
স্ক্রিনটাইম হলো প্যাসিভ ইন্টারেকশন। এখানে এক পক্ষ বলে যায়, আরেক পক্ষ শুনে যায়।
ওভারস্টিমুলেটিং শো যেহেতু বাচ্চারা কম সময় দেখতে পারে না বা অ্যাডিক্টেড হয়ে বেশি সময় ব্যয় করে, এগুলো তাদের সামাজিক দক্ষতা এবং স্পিচ ডিলের নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।
📌ডোপামিন আসক্তি ও স্ক্রিন নির্ভরতা
এসব কনটেন্ট শিশুর মস্তিষ্কে “ডোপামিন” (সুখের অনুভূতির হরমোন) নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়, এটা তাদেরকে আরও স্ক্রিন দেখতে চাইতে উদ্বুদ্ধ করে।
স্ক্রিন বন্ধ করলে মেজাজ খারাপ হওয়া বা সহজেই বিরক্ত হওয়া, কান্নাকাটি, চিৎকার চেঁচামেচির প্রবণতা দেখা দিতে পারে।
📌অনুভূতি নিয়ন্ত্রণে সমস্যা
এসব কার্টুন শিশুকে বিরক্তি, ধৈর্য্য বা একা খেলা শেখায় না। বরং এটি তাদের মস্তিষ্ককে শেখায় যে, একটু বিরক্তি বা একাকীত্ব অনুভব করলেই স্ক্রিনের মাধ্যমে আনন্দ খুঁজতে হবে।
ফলে তারা সহজে নিজেকে শান্ত করতে বা মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না।
💡 সমাধান কী হতে পারে?
✔️ ধীরগতির, ইন্টারঅ্যাকটিভ কার্টুন বেছে নিন (Bluey বা Daniel Tiger এর মতো)
✔️ স্ক্রিন টাইমের বাইরে বাস্তবিক অভিজ্ঞতা দিন (বই পড়া, আউটডোর খেলা, হাতে-কলমে শেখার সুযোগ)
✔️ একসাথে বসে দেখুন, প্রশ্ন করুন এবং শিশুকে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করুন
✔️ “২০-২০-২০ নিয়ম” মেনে চলুন: প্রতি ২০ মিনিট স্ক্রিন দেখার পর, ২০ সেকেন্ডের বিরতি নিন এবং ২০ ফুট দূরের কিছুতে চোখ দিন
📌২ বছরের আগে বাচ্চাকে কোনো ধরনের স্ক্রিনটাইম না দিলে সবচেয়ে ভালো
📌 ২ বছরের পরে যদি দিতেই হয় সীমিত সময়, কম উত্তেজনাপূর্ণ এডুকেশনাল কনটেন্ট দেখালে উপকার পাবেন।
©