05/08/2025
আমি এখন আপনাদেরকে শেখাবো ৭ মাস থেকে শুরু করে ১২ বছর বয়স পর্যন্ত বাচ্চাদের কিভাবে প্রতিদিন খাবার দিতে হবে এবং কি খাবার দিতে হবে এবং কখন দিতে হবে।
আমি যেভাবে আমার পেশেন্টকে সাজেস্ট করি সেটাই লিখছি।
এই পোস্টটা সবাই শেয়ার করে নিজের টাইমলাইনে রেখে দিতে পারেন।
---
✅ ৭ মাস বয়স
খাবারের ধরন: মসৃণ, আধা তরল ও সহজে হজম হয় এমন খাবার
ভোজনের সংখ্যা: দিনে ২-৩ বার বুকের দুধের পাশাপাশি, ছোট পরিমাণ খাবার
প্রস্তাবিত তালিকা:
সকালে: মাশ করা কলা/কুমড়ো/পেঁপে
দুপুরে: মসৃণ ডাল ভাত (পাতলা করে), কিছু সবজি (সেদ্ধ ও মাখানো)
বিকেলে: দুধ (বুকের দুধ/ফর্মুলা)
রাতে: পাতলা ভাতের পানি বা সবজি স্যুপ
---
✅ ৮ মাস বয়স
খাবারের ধরন: ঘন তরল, নরম মাখানো খাবার
ভোজনের সংখ্যা: দিনে ৩ বেলা খাবার + ১-২ বার নাস্তা + বুকের দুধ
প্রস্তাবিত তালিকা:
সকালে: সিদ্ধ ডিমের কুসুম (১/২ অংশ), মাশ করা আলু
দুপুরে: ডাল-ভাত-মাখানো সবজি (সেদ্ধ গাজর/লাউ)
বিকেলে: দুধ/পানি
রাতে: ভাত বা চালে রাঁধা খিচুড়ি (তেল ছাড়া)
---
✅ ৯ মাস বয়স
খাবারের ধরন: কিছুটা দানাদার, নরম চিবানো যায় এমন
ভোজনের সংখ্যা: দিনে ৩ বেলা খাবার + ১-২ বার নাস্তা + বুকের দুধ
প্রস্তাবিত তালিকা:
সকালে: হালকা ভেজানো রুটি ভেঙে দুধে
দুপুরে: খিচুড়ি + সেদ্ধ সবজি + মাছের মাখা (কাঁটা ছাড়ানো)
বিকেলে: দই + কলা
রাতে: ভাত + ডাল + কুমড়ো/পালং সেদ্ধ
---
✅ ১০ মাস বয়স
খাবারের ধরন: পরিবারে যা খায় তার হালকা সংস্করণ
ভোজনের সংখ্যা: ৩ বেলা খাবার + ২ বেলা নাস্তা + বুকের দুধ
প্রস্তাবিত তালিকা:
সকালে: রুটির গুঁড়া + কলা + দুধ
দুপুরে: খিচুড়ি বা ভাত + মুরগি বা মাছ (কাঁটা ছাড়া)
বিকেলে: ডিম সিদ্ধ (১টা), আলু সিদ্ধ
রাতে: ভাত + সবজি + ডাল
---
✅ ১১ মাস বয়স
খাবারের ধরন: চিবানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে
ভোজনের সংখ্যা: ৩ বেলা খাবার + ২ বেলা নাস্তা + বুকের দুধ
প্রস্তাবিত তালিকা:
সকালে: রুটি + কলা/পেঁপে
দুপুরে: ভাত + মাছ/ডিম/মুরগি + সবজি
বিকেলে: চিড়া ভেজানো + দুধ
রাতে: খিচুড়ি বা নরম ভাত + ডাল
---
✅ ১২ মাস বয়স (১ বছর)
বিশেষ টিপস: এখন থেকে পরিবারের খাবারের সঙ্গে অভ্যস্ত করা শুরু করা যায়।
ভোজনের সংখ্যা: দিনে ৫-৬ বার (৩ মূল খাবার + ২-৩ নাস্তা)
প্রস্তাবিত তালিকা:
সকালের নাস্তা: রুটি + ডিম/সবজি
দুপুর: ভাত + মাছ/ডিম + সবজি
বিকাল: দই + ফল (পাকা আম/পেঁপে/কলা)
রাতের খাবার: খিচুড়ি + মুরগি/মাছ + সবজি
ঘুমানোর আগে: দুধ
---
✅ ১৩ মাস থেকে ২৪ মাস (১ বছর ১ মাস থেকে ২ বছর)
খাবারের ধরন: পরিবারে খাওয়া খাবারই ধীরে ধীরে দেওয়া যাবে
প্রতি দিন:
৩ বেলা মূল খাবার
২-৩ বেলা হালকা নাস্তা
দিনে অন্তত ৪০০-৫০০ মি.লি. দুধ
নির্দেশনা অনুযায়ী তালিকা:
সকালে: রুটি + ডিম ভাজি / দুধ
সকালের নাস্তা: পাকা কলা/আপেল কুচি/পেয়ারা
দুপুরে: ভাত + মুরগি/ডিম/মাছ + সবজি
বিকালে: দই + চিড়া/মুড়ি + পাকা ফল
রাতে: ভাত বা খিচুড়ি + ডাল + সবজি
ঘুমের আগে: দুধ
---
✅ ২ বছর থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত
পুষ্টির গুরুত্ব: শরীর ও মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন জরুরি
প্রতিদিনের খাবার রুটিন:
সকালে: রুটি/চাল রুটি + ডিম + দুধ
নাস্তা: ফল (আপেল/কলা/কমলা) বা চিড়া/দই
দুপুরে: ভাত + মাছ/মুরগি/ডিম + ডাল + সবজি
বিকেলে: দুধ/দই + মুড়ি/পাউরুটি
রাতে: খিচুড়ি/ভাত + সবজি + প্রোটিন
ঘুমানোর আগে: এক গ্লাস দুধ (প্রয়োজনে)
নিষেধ: ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত মিষ্টি বা চকলেট, ঠান্ডা পানীয়, প্যাকেটজাত খাবার
✅ ৬ বছর থেকে ১২ বছর বয়সের শিশুরা দ্রুত বাড়ে, স্কুলে যায়, শারীরিক ও মানসিকভাবে ব্যস্ত থাকে। তাই তাদের পর্যাপ্ত শক্তি, প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য ভিটামিন খাওয়ার মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হয়।
🕒 প্রতিদিনের খাবারের ধরন ও সংখ্যা:
৩ বেলা প্রধান খাবার (সকাল, দুপুর, রাত)
২–৩ বার নাস্তা (সকাল, বিকাল, রাতের আগে)
১–২ গ্লাস দুধ (দিনে)
পর্যাপ্ত পানি (৬–৮ গ্লাস)
নিয়মিত ফল ও সবজি
---
✅ ৬ বছর বয়স
মোট ৫–৬ বার খাওয়ার ব্যবস্থা
সকালের নাস্তা:
রুটি + ডিম ভাজি বা ওমলেট
বা চালের রুটি + সবজি
১ গ্লাস দুধ
দুপুরের খাবার:
ভাত + মুরগি/ডিম/মাছ
সবজি (পালং/লাউ/গাজর)
ডাল
টক দই
বিকেলের নাস্তা:
ফল (আপেল/পেঁপে/কলা)
মুড়ি + দুধ/দই
বা হালকা পাউরুটি/চাপাটি
রাতের খাবার:
খিচুড়ি বা ভাত
সবজি + মাছ/ডিম
এক গ্লাস পানি বা দুধ
---
✅ ৭–৮ বছর বয়স
সকালে:
পরোটা/রুটি + ডিম/মুরগির ভুনা
দুধ বা ঘরে বানানো পায়েস/সেমাই (সুজি নয়)
স্কুলে যাবার আগে বা টিফিন:
কলা/আপেল
ডিম স্যান্ডউইচ
চিড়া-দই/রুটি-সবজি রোল
দুপুরে:
ভাত + মুরগি বা ডিম + ডাল + সবজি
সালাদ
পানি
বিকালে:
দুধ/চা + মুড়ি/পাউরুটি
পাকা ফল (কমলা/পেয়ারা)
রাতে:
নরম ভাত বা খিচুড়ি
মাছ/ডিম
সবজি
এক গ্লাস দুধ (ঘুমের আগে)
---
✅ ৯–১০ বছর বয়স
সকালের নাস্তা:
ডিম পরোটা/সবজি পরোটা
কলা/আঙ্গুর
এক গ্লাস দুধ
দুপুরে:
ভাত + মাছ/মুরগি + ডাল + সবজি
১ টুকরো লেবু বা সালাদ
দই বা টক দই
টিফিন/বিকালের নাস্তা:
ফল (পেঁপে/আপেল/কাঁঠাল)
পাউরুটি + ডিম
বা চিড়া + দই
রাতে:
রুটি/ভাত + ডাল + সবজি + ডিম বা মাছ
পানি
ঘুমানোর আগে দুধ
---
✅ ১১–১২ বছর বয়স (প্রাক-কিশোর অবস্থা)
> হরমোনের পরিবর্তন শুরু হয়, মানসিক ও শারীরিক বিকাশ খুব দ্রুত হয়—তাই প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম বেশি প্রয়োজন।
সকালে:
পরোটা/রুটি + ডিম/মুরগি
ফল (আপেল/কলা)
দুধ (গরম)
স্কুল টিফিন/ব্রাঞ্চ:
স্যান্ডউইচ (ডিম/সবজি)
ঘরে বানানো রুটি রোল
ফল বা দই
দুপুরে:
ভাত/চাল রুটি
প্রোটিন: মাছ/ডিম/মাংস
সবজি (পালং, ঢেঁড়স, করলা, গাজর)
ডাল
সালাদ
পানি
বিকেলে:
পাকা ফল
মুড়ি/চিড়া + দুধ/দই
হালকা রুটি পাউরুটি/সবজি পাকোড়া
রাতে:
ভাত বা খিচুড়ি
মাছ/ডিম/মাংস
সবজি
ঘুমের আগে দুধ
✅ অতিরিক্ত পরামর্শ (৬–১২ বছর):
অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড, চিপস, সফট ড্রিংক এড়িয়ে চলা উচিত
প্রতিদিন অন্তত ১টি ফল, ১ কাপ দুধ, সবজি এবং প্রোটিন নিশ্চিত করা
শরীরচর্চা বা খেলার মাধ্যমে পরিপাক ভালো রাখুন
পর্যাপ্ত ঘুম (৯–১১ ঘণ্টা) শিশুর জন্য জরুরি।
Orpi Medical Hall অর্পি মেডিক্যাল হল Child CARE