24/08/2024
এক ভদ্র মহিলা পাসপোের্ট অফিসে এসেছেন পাসপোর্ট করাতে। অফিসার জানতে চাইলেন
"আপনার পেশা কি?" মহিলা বললেন, "আমি একজন মা।”
আসলে শুধু মা তো কোনো পেশা হতে পারেনা, তাহলে আমি লিখে *দিচ্ছি আপনি একজন গৃহিনী।”
মহিলা খুব খুশী হলেন পাসপোর্টের কাজ কোনো ঝামেলা ছাড়াই শেষ হলো।
অনেকদিন পর, এবারে পাসপোর্টটা renew করা দরকার, যেকোনো সময় কাজেলাগতে পারে। আবার পাসপোর্ট অফিসে আসলেন। দেখলেন আগের সেই অফিসার নেই। খুব, রুক্ষ মেজাজের এক লোক বসে আছেন।যথারীতি ফর্ম পূরণ করতে গিয়ে অফিসার জানতে চাইলেন, "আপনার পেশা কি?"
মহিলা চট করে কিছু - একটা বলতে গিয়েও থেমে গেলেন।
কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন আমি একজন গবেষক। নানারকম চ্যালেঞ্জিং প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করি। আমরা প্রতিটি শিশুর মানসিক এবং শারীরিক বিকাশ সাধন করি, শিশুকে পর্যবেক্ষণ করি। বয়স্কদের নিবিড় পরিচর্যা করি ও খেয়াল রাখি। সুস্থ পরিবার ও সমাজ বিনির্মাণে নিরলস শ্রম দিয়ে রাষ্ট্রের কাঠামোগত ভিত মজবুত করি।মহিলা বলে যাচ্ছেন, "প্রতিটি মূহুর্তেই আমাকে নানারকমের চ্যালেঞ্জের ভিতর দিয়ে যেতে হয়। এবং অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তা মোকাবিলা করতে হয়।মহিলার কথা শুনে অফিসার একটু নড়ে চড়ে বসলেন।
মহিলার দিকে এবার যেন একটু শ্রদ্ধা আর বিশেষ নজরে তাকালেন।
অনেক কৌতুহল নিয়ে অফিসারটি জিজ্ঞেস করলেন,
"ম্যাডাম, আসলে আপনার মূল
পেশাটি যদি আরেকটু • বিশদভাবে বলতেন?”
"আমাদের রিসার্চ প্রজেক্ট তো আসলে সারাজীবনধরেই চলে।
সর্বক্ষণ আমাকে ল্যাবরেটরি এবং ল্যাবরেটরীর বাইরেও কাজ করতে হয়।
এই কাজের চাপে আমার নাওয়া খাওয়ায় ঘুমের সময়ের ঠিক থাকে না। সব সময় আমাকে কাজের প্রতি সজাগ থাকতে হয়। এই তো আজকাল আমি সমাজবিজ্ঞান, পারিবারিক স্বাস্থ্য আর • নৈতিকতা বিকাশ এই তিনটি ক্ষেত্রেই একসাথে কাজ করছি,যা পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল প্রকল্পগুলোর অন্যতম্।"
অফিসার মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে মহিলার কথা শুনছেন। এমন গুণী, বিস্ময়কর মহিলা।
প্রথমে কিন্তু মনে হয়েছিল খুবই সাধারণ।
"প্রতিদিন আমাকে ১৪ থেকে ১৬ ঘন্টা আবার কোনো কোনো দিন আমাকে ২৪ ঘন্টাই ল্যাবে কাজ করতে হয়।
পৃথিবীর সব পেশাতেই কাজের পর ছুটি বলে যে কথাটি আছে আমার পেশাতে সেটা একেবারেই নেই। ২৪ ঘন্টাই আমার অন কল ডিউটি।
এও কিভাবে সম্ভব, -অফিসারটি ভাবতেই পারছেন না!
"আপনার হয়তো বা জানতে ইচ্ছে করছে, বিনিময়ে কি পাই? এ চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প পরিচালনায়?
আমার সেই অর্থে কোনো পারিশ্রমিক নেই। পরিবারের সবার মুখে হাসি আর পারিবারিক প্রশান্তিই আমারপারিশ্রমিক।
আর আমার কাজের পরষ্কার হিসেবে সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ থেকে পেয়েছি তিনটা স্বর্ণপদক!”
অফিসার হতভম্ব, এ কেমন নি:স্বার্থ কাজ!!!
"এবার আমি বলি আমার পেশা কি?"
অফিসার এতক্ষণ যেন এই উত্তরের অপেক্ষায় ছিলেন!
"আমি একজন মা।
এই পৃথিবীর অতিসাধারণ এক মা।”
মহিলার কথা শুনে গম্ভীর অফিসারটি এবারে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন, চেষ্টা করেও আর নিজের চোখেজল আটকাতে পারছেন না।
* তাঁর নিজের মায়ের মুখ চোখের সামনে ভেসে ওঠে।
**তিনি খুব সুন্দর করে ফর্মের সব কাজ' শেষ করে, মহিলাকে একদম সিঁড়ির দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন।
তারপর নিজের অফিস রুমে এসে - বসলেন,
ড্রয়ার হাতড়ে একটি ধূসর হয়ে যাওয়া ছবি বের করলেন।
ক্ষনিকের নীরবতা, অপলক নয়নে ছবির দিকে তাকিয়ে
বলতে লাগলেন,,,,,,, মা ওগো মা।