19/02/2025
এ দেশের মানুষের সবচেয়ে খারাপ দোষগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে বেশিরভাগের প্রাইভেসি সম্পর্কে সামান্যতম কমন সেন্স নেই। এটি প্রতিনিয়ত ফেইস করি একজন রোগীকে যখন দেখি, আশেপাশে যারা আছে চুপি দিয়ে দেখবে। মানা করলেও আসবে দেখবে দেখবে। দেখতেই হবে। সে পুরুষ হোক কি নারী। কম বয়সী হোক কি বেশি বয়সী। এটা তো তবু তাদের জন্য অনেক ভদ্রোচিত। এক রোগীকে দেখার সময় একজন তার কাঁধের ওপর দাঁড়িয়ে থাকবে, একজন পাশের চেয়ারে বসে পড়বে, একজন বামদিকে এসে দাঁড়াবে। সবাই শুনবে ঐ রোগী কী বলে, ডাক্তার তাকে কী বলে। সবচেয়ে অবাক লাগে যাকে দেখছি তার মধ্যেও কোনো বিব্রতবোধ নেই যে তার রোগের বিবরণ অন্যরা শুনছে। অথচ রোগবালাইয়ের বিষয় অত্যন্ত ব্যক্তিগত একটা বিষয় ও যথেষ্ট গোপনীয় একটা বিষয় হবার কথা। মানুষকে ধমকেও চুপি দিয়ে থাকা থেকে বিরত রাখা যায় না।
হাসপাতালে তো আরো খারাপ অবস্থা ওয়ার্ডে রোগীর অবস্থা যখন সঙ্কটাপন্ন সে সময় ঐ ওয়ার্ডের রোগীদের স্বজন তো বটেই পাশের ওয়ার্ড থেকেও বিভিন্ন মানুষ চলে এসে গোল হয়ে রোগীর পাশে দাঁড়িয়ে যায়। প্রতিবার রোগীর কাছে যেতে শাউট করে বেডের পাশ থেকে তাদের সরাতে হয়। এতো সহজেই সরে? সরে তো আমাকে জায়গা দিলো কিন্তু আবার এসে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকবে। ভাবটা এমন যেন সার্কাস দেখতে এসেছে। আপনি চিন্তা করুন সেখানে আপনি কাজ করছেন, আপনার সাথে হয়তো কোনো নারী ইন্টার্ন আছেন, কোনো নার্স আছেন যারা হাঁটু ভাঁজ করে ফ্লোরে রোগীর ব্লাড প্রেশার দেখছেন, পালস দেখছেন আর অন্তত ৫০ জন লোক ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে, এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। বিষয়টা যথেষ্ট অস্বস্তিকর না? এভাবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করা যায়? রোগীর বুক চেপে শেষ চেষ্টা করা হচ্ছে সবাই এই মারাত্মক সেন্সিটিভ মুহূর্তটুকু বিশেষ কৌতুহলে উপভোগ করছে, পাশেরজনের সঙ্গে নানা মন্তব্য করছে বিষয়টা কেমন?
বাঙালিকে সবার আগে দেওয়া উচিত প্রাইভেসি-জ্ঞান। প্রাইভেসি পাওয়া একজন মানুষের গুরুত্বপূর্ণ অধিকার। এরা যেমন অন্যকে প্রাইভেসি দিতে চায় না, তেমনি নিজের প্রাইভেসির ব্যাপারেও এদের তেমন কোনো আগ্রহ নেই। কেমন মিসকিন অনুভূতিসম্পন্ন এক জাতি।