
22/06/2024
ছয় মাসের পোয়াতি অনু। রাজের সাথে বিয়ে হয়েছে নয় নয় করে প্রায় সাড়ে তিন বছর। ছয় মাসের ভরা পেট। নড়াচড়া করতেও বেশ অসুবিধে হয়। কষ্ট হয় খুব। কিন্তু যখন ভাবে আর তো মাত্র কয়েকটা মাস। তারপর ওর কোলে একটা ছোট্ট পরী কিংবা একটা ছোট্ট রাজ আসবে। আদো আদো গলায় মা, বাবা বলে ডাকবে! এইসব ভাবলেই ওর মন ভালো হয়ে যায়। রাজ ওর অনেক খেয়াল রাখে। ওকে খাইয়ে দিয়ে ওষুধ খাইয়ে বাসন ধুয়ে তারপর ঘরে আসে। এসে দেখে অনু হেলান দিয়ে বসে আছে।
- কি গো শোবে না?
- হ্যাঁ শোবো।
রাজ ওকে ধরে সাবধানে শুইয়ে দেয়।
বেশ কিছুক্ষণ পর,
রাজ খেয়াল করে , অনু ঘুমায়নি। সমানে এপাশ ওপাশ করে যাচ্ছে।
- কি হয়েছে তোমার? কষ্ট হচ্ছে?
- নাহ, কিন্তু ঘুম আসছে না। অস্বস্তি বোধ হচ্ছে।
- আচ্ছা বুঝলাম, তা কি করলে ম্যাডামের ভালো লাগবে শুনি?
- উম, গল্প শুনতে ইচ্ছে করছে।
- গল্প? এখন?
- হ্যাঁ শোনাও না।
- এখন গল্প শুনলে ঘুমাবেন কখন ম্যাডাম?
- তুমি শোনাও না! শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যাবো।
অনুর এমন বাচ্চামো কথা শুনে হেসে দিলো রাজ।
- আচ্ছা বেশ। কি গল্প শুনবে শুনি।
- গোয়েন্দা গল্প! ওই ষষ্টিপদ চট্টোপাধ্যায়ের লেখা পাণ্ডব গোয়েন্দা আছে না! ওটা!
- আচ্ছা বেশ।
তারপর রাজ ওকে গল্প পড়ে শোনাতে লাগলো।
বেশ কিছুক্ষণ পর, রাজ খেয়াল করে অনু ঘুমিয়ে গেছে। ওর গায়ে চাদর টেনে দেয় আর সাথে ওর মাথায় হাত ও বুলিয়ে দেয়। পুরোটা সময় একবার ও রাজ ওর পাশ থেকে সরেনি। ওর কাছেই ছিলো। অনু একটু নড়েচড়ে উঠলেই ও সজাগ হয়ে যাচ্ছে।
এভাবেই ভালোবাসা আর আগলে রাখার মাধ্যমে কেটে যায় বাকি মাস গুলো। অবশেষে অপেক্ষার অবসান। রাজ আর অনুর কোলে এলো একটা মিষ্টি পরী। ওদের ভালোবাসার চিহ্ন। যাকে ওরা নিজের মনের মতো করে মানুষ করবে।
ভালো থাকুক পৃথিবীর সব ভালোবাসা।
Credit-