11/07/2025
চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। আমরা ডেঙ্গু নির্ণয়ে সাধারণত NS1 টেস্টের উপর নির্ভর করি, কিন্তু NS1 টেস্ট নেগেটিভ হলেও ডেঙ্গু হতে পারে। এর পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে:
১. পরীক্ষার সময়কাল: NS1 অ্যান্টিজেন ডেঙ্গু সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে, অর্থাৎ উপসর্গ শুরু হওয়ার ১-৫ দিনের মধ্যে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্যভাবে শনাক্ত করা যায়। ৫ দিনের পর পরীক্ষা করলে ফলাফল নেগেটিভ আসতে পারে।
২. দ্বিতীয়বার ডেঙ্গু সংক্রমণ: যদি কেউ আগে কখনো ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তবে তার শরীরে থাকা অ্যান্টিবডি নতুন NS1 অ্যান্টিজেনের সাথে মিলিত হয়ে ইমিউন কমপ্লেক্স তৈরি করতে পারে, ফলে NS1 টেস্টে অ্যান্টিজেন শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়।
৩. ডেঙ্গু ভাইরাসের ধরন: ডেঙ্গু ভাইরাসের বিভিন্ন ধরন (DENV-1, DENV-2, DENV-3, DENV-4) অনুযায়ী NS1 পরীক্ষার সংবেদনশীলতা ভিন্ন হতে পারে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে DENV-2 এবং DENV-4 ধরনে NS1 টেস্টের সংবেদনশীলতা কম হতে পারে।
৪. ভাইরাসের পরিমাণ (Viral Load): যদি শরীরে ভাইরাসের পরিমাণ কম থাকে, তবে NS1 অ্যান্টিজেনের ঘনত্ব পরীক্ষার সনাক্তক্ষমতার নিচে থাকতে পারে, ফলে ফলাফল নেগেটিভ আসে।
৫. NS1 পরীক্ষার ধরন: বিভিন্ন কোম্পানির NS1 টেস্ট কিট ও পদ্ধতির সংবেদনশীলতা ও নির্ভুলতা ভিন্ন হয় (যেমন: র্যাপিড টেস্ট বনাম ELISA)। সাধারণত ELISA টেস্ট র্যাপিড টেস্টের তুলনায় বেশি নির্ভরযোগ্য।
৬. ব্যক্তির রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা: ব্যক্তিভেদে রোগপ্রতিরোধ প্রতিক্রিয়ার ভিন্নতার কারণে NS1 অ্যান্টিজেনের উৎপাদন ও বিলোপে তারতম্য হতে পারে, ফলে ফলাফল প্রভাবিত হয়।
৭. নমুনা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ: যদি রক্তের নমুনা যথাযথভাবে সংগ্রহ, পরিবহন বা সংরক্ষণ না করা হয়, তবে NS1 অ্যান্টিজেনের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যেতে পারে, যার ফলে ভুল ফলাফল আসতে পারে।
এই কারণে NS1 টেস্ট নেগেটিভ এলেও ডেঙ্গুর অন্যান্য ক্লিনিকাল উপসর্গ ও পরীক্ষা বিবেচনা করে চিকিৎসা শুরু করা জরুরি।