
26/02/2025
প্রাকৃতিক উপায়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা: কেন ভেষজ চিকিৎসাকে উপেক্ষা করব?
বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি আমাদের নির্ভরতা বেড়েছে অত্যন্ত। সামান্য অসুস্থতাতেই আমরা ছুটে যাই ডাক্তারের কাছে, ভরে নিই ব্যথানাশক ওষুধের পর্চা। কয়েকদিন সুস্থ থাকার পর আবারও নতুন সমস্যা, আবারও নতুন চিকিৎসা। চিকিৎসকদের পরামর্শও একই রকম—"এই ওষুধে কাজ না হলে পরের সপ্তাহে অন্য অপশন দেখব।"
এত ওষুধ সেবন করে কি শরীর টিকে থাকে? কখনো ভেবে দেখেছেন, শৈশব থেকে এ পর্যন্ত যত গুলি বড়ি খেয়েছি, সেগুলো জমা করলে হয়তো একটি ফার্মেসি খোলা যেত! কিন্তু অসুখে পড়লে ওষুধ তো খেতেই হয়—এটাই নিয়ম।
কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছি, এই রাসায়নিক দ্রব্যগুলো আসলে কী? কিংবা কোন উপাদান কীভাবে রোগ সারায়? কারোই সম্ভবত এত ভাবার সময় নেই। সবাই ব্যস্ত। ওষুধ খেয়ে সুস্থ হচ্ছি, তাহলে আর ভাবনা কিসের?
এসব আলোচনা বাদ দিলেও, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নামক শব্দটি কি আমাদের আতঙ্কিত করে না? প্রতিবার ওষুধ খাওয়ার আগেই আমরা গুগলে সার্চ করি—"এটার সাইড ইফেক্ট কী?" কিন্তু কেনই বা তৈরি হয় এই ঝুঁকি? প্রকৃতিতে এমন কোন ভেষজ কি নেই যার কোন ক্ষতিকর প্রভাব নেই?
অনেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে হোমিওপ্যাথির শরণাপন্ন হন। কখনো কখনো ভাল ফলও মেলে। কিন্তু যদি উভয় পদ্ধতিই ব্যর্থ হয়, তখন কী করবেন?
চলুন ইতিহাসের পাতায় ফিরে যাই। প্রাচীনকালে মানুষ প্রকৃতির সান্নিধ্যেই রোগমুক্ত হতো। উদাহরণ হিসেবে বলি: শৈশবে গ্রামের পথে হাঁটতে গিয়ে এক বিষাক্ত লতার সংস্পর্শে এসে হাত ফুলে গিয়েছিল। এক বৃদ্ধা তখন সেই লতার রসই ব্যবহার করে জ্বালা কমিয়েছিলেন। এটি ছিল প্রকৃতিরই অলৌকিক চিকিৎসা!
বিজ্ঞানের যুগে এসে আমরা গাছের রাসায়নিক উপাদান বিশ্লেষণ করি। ধরুন, জ্বর কমানোর জন্য ব্যবহৃত একটি গাছের পাতায় ১০০টি উপাদান পাওয়া গেল। গবেষণায় দেখা গেল মাত্র ৫টি উপাদান জ্বর কমায়। বাকিগুলো? সেগুলো মূল উপাদানগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করে! কিন্তু ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো শুধু কার্যকরী উপাদান আলাদা করে বড়ি বানায়। ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনিবার্য হয়ে ওঠে।
একই ওষুধ দীর্ঘদিন সেবনে নতুন রোগের সৃষ্টি হয়। যেমন—মাথাব্যথার ওষুধে সর্দি, তারপর সর্দির ওষুধে বুকে জ্বালা। এভাবেই চক্র চলতে থাকে। সমাধান? প্রকৃতির পথে ফেরা।
কিন্তু সমস্যা কোথায়? অসাধু বিক্রেতারা মেডিসিনের নামে নিম্নমানের পণ্য বিক্রি করে জনবিশ্বাস নষ্ট করেছে। অথচ আদা-মধুর মতো সাধারণ উপাদানই অ্যাসিডিটি কমাতে পারে ওষুধের চেয়ে ভালোভাবে!
পরিশেষে বলব—জরুরি অবস্থায় আধুনিক চিকিৎসা নিন, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যসমস্যায় প্রকৃতির শরণাপন্ন হোন। আপনার অবহেলিত গাছগাছড়াই হয়তো ফিরিয়ে দিতে পারে সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি।