23/10/2024
একবার, একটি টেলিফোন সাক্ষাৎকারে এক রেডিও হোস্ট রতন টাটাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, "আপনার জীবনের সবচেয়ে সুখের মুহূর্তটি কী ছিল?" তিনি জবাব দিয়েছিলেন:
"আমি জীবনে চারটি ভিন্ন ধাপের মাধ্যমে গিয়েছি, এবং শেষে আমি বুঝতে পেরেছি প্রকৃত সুখ কী।
প্রথম ধাপটি ছিল- যখন আমি প্রচুর টাকা এবং সম্পদ অর্জন করি। কিন্তু তাতে আমি যে সুখটি চেয়েছিলাম, সেই সুখ খুঁজে পাইনি। এরপর দ্বিতীয় ধাপটি আসে। তখন আমি মূল্যবান জিনিস সংগ্রহ করতে শুরু করি। খুব শীঘ্রই বুঝতে পারি যে- এই সুখও অস্থায়ী। এরপর আমি তৃতীয় ধাপে প্রবেশ করি। এখানে আমি অনেক নতুন প্রকল্প শুরু করি। অল্প সময়ের মধ্যেই আমি ভারতে এবং আফ্রিকায় ৯৫% তেল বিতরণের দায়িত্বে ছিলাম এবং ভারতে ও এশিয়ার সবচেয়ে বড় স্টিল কারখানার মালিক হয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু তারপরও আমি সেই কাঙ্খিত সুখ পাইনি।
অবশেষে, চতুর্থ ধাপটি আসে। একদিন, আমার এক বন্ধু আমাকে বলেছিল যে- আমাদের ২০০ জন প্রতিবন্ধী শিশুর জন্য হুইল চেয়ার কিনে দান করা উচিত। আমি তা সঙ্গে সঙ্গে করলাম। তারপর সে জোর দিয়েছিল যে- আমি নিজে উপস্থিত থেকে হুইল চেয়ারগুলো বিতরণ করি। আমি রাজি হয়ে গেলাম। আমি নিজ হাতে ২০০ শিশুকে হুইল চেয়ার দিলাম। যখন তারা সেগুলো গ্রহণ করল, তখন তাদের মুখে আনন্দের এক অদ্ভুত আলো দেখতে পেলাম। যেন তারা সবাই একটি সুন্দর পিকনিক স্পটে পৌঁছেছে। সেই দিন, আমি বুঝতে পারলাম- প্রকৃত সুখ কী।
যখন আমি বিদায় নিতে যাচ্ছিলাম, তখন একটি শিশু আমার পায়ে শক্ত করে ধরে ছিল। যতই চেষ্টা করি না কেন, আমি নড়তে পারছিলাম না। অবশেষে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, 'তুমি কি আর কিছু চাও?' আমার মুখের দিকে সরাসরি তাকিয়ে সে বলল, 'আমি তোমার মুখটি ভালোভাবে মনে রাখতে চাই, যাতে কাল যখন স্বর্গে আমাদের দেখা হবে, তখন তোমাকে আবার ধন্যবাদ জানাতে পারি।'
তাহলে, প্রিয় বন্ধুরা, আমাদের বুঝতে হবে যে প্রকৃত সুখ টাকা, ক্ষমতা বা খ্যাতিতে নয়। এটি অন্যদের আলিঙ্গন করার এবং আমাদের জীবনের অংশ করে নেওয়ার মধ্যে রয়েছে।"
শ্রদ্ধাঞ্জলি — রতন নাভাল টাটা