30/04/2024
শুনতে খারাপ লাগলেও এই এক কোটি নারীদের বিয়ের জন্য বাস্তবমুখী সমাধান কিন্তু সেটাই যেটা মুফতি তারিক মাসউদ সাহেব উনার বয়ানে বারবার বলেন–সমাজের সামর্থ্যবান যোগ্য পুরুষদের একাধিক বিয়ে করা। সমাজের সামর্থ্যবান পুরুষরা যখন একাধিক বিয়ে করতে চাইবে (অবশ্যই স্ত্রীদের মাঝে আদল-ইনসাফের শর্তে), তখন নারীদের জন্য নিজের মনমতো স্বামী বাছাই করা সহজ হবে।
এমন না যে সমাজে নারীদের পছন্দের হাইট তুলনামূলক বেশি, খুব স্মার্ট, উচ্চ সামাজিক স্ট্যাটাসবিশিষ্ট এমন সামর্থ্যবান পুরুষ একদম নেই। সমস্যা হলো, তারা সবাই এক বউ নিয়েই সন্তুষ্ট কিংবা দীর্ঘদিন যাবৎ সমাজ কর্তৃক তাদের ওপর সৃষ্ট মনস্তাত্ত্বিক চাপে তারা এক স্ত্রী নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে বাধ্য হয়েছে। এতে করে অন্য নারীদের জন্য বিশেষ করে যাদের বয়স বেশি, হাইট তুলনামূলক কম, তেমন সুশ্রী নন, কুমারী নন (তালাকপ্রাপ্তা/বিধবা) কিংবা বন্ধ্যা–তাদের বিয়ে অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
ছেলেরা দেখছে যে জীবনে বিয়ে যখন করতে হবে শুধু একজনকেই, তখন খুব স্বাভাবিক যে সে সর্বগুণ সম্পন্ন পারফেক্ট মেয়েকেই বিয়ে করতে চাইবে–যে নারীর বয়স অল্প, যে নারী কুমারী, যে নারীর হাইট তুলনামূলক মানানসই, যে নারী সুশ্রী, যে নারী বন্ধ্যা নয় ইত্যাদি। তখন এগুলোর মাঝে কোনো একটি ক্রাইটেরিয়া পূরণ করতে না পারলে বিয়ের বাজারে সেই নারী হয়ে পড়বে অপাঙক্তেয়।
ফেইসবুকে একটা স্ক্রিনশট দেখলাম যেখানে ইউটিউবের এক নাটকের মূল থিম দেখানো হয়েছে, 'স্ত্রীর সন্তান হয় না' তাই স্ত্রীকে তালাক দিয়ে স্বামী আরেকটি বিয়ে করেছে। প্রশ্ন হলো, ঐ নারীকে তালাক কেন দিতে হয়েছে ? কী অপরাধ ছিল তার ? বন্ধ্যা হওয়া তো কোনো নারীর অপরাধ নয়। আল্লাহ তাআলা কাউকে সন্তান দেন, কাউকে দেন না !
কিন্তু আপনাকে বাস্তবতা বুঝতে হবে, বিয়ের পর সন্তান লাভের আকাঙ্ক্ষা প্রত্যেকেরই থাকে। বরং এভাবেও বলা যায়, 'সন্তান প্রাপ্তি' কোনো বিয়ের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে একটি। ওটা যখন বন্ধ্যা স্ত্রীর মাধ্যমে পূরণ হয়না, আবার সন্তান লাভের জন্য একাধিক বিয়েও করা সম্ভব নয়, তখন বাধ্য হয়ে পুরুষকে তালাকের পথেই হাটতে হচ্ছে। এটি সমাজের খুব রূঢ় বাস্তবতা !
আমার দাদার প্রথম স্ত্রীর অনেক বছর যাবৎ সন্তান হয়নি (প্রায় ১০ বছর)। দাদার স্ত্রী (আমাদের 'বড় দাদী') সন্তান ধারণে উনার অক্ষমতার বিষয়টি বুঝতে পেরে দাদাকে বললেন দ্বিতীয় বিয়ে করতে। দাদা তখন পূর্বে সন্তান প্রসব করেছেন এমন একজন বিধবা নারীকে বিয়ে করেন এবং আলহামদুলিল্লাহ আমার বাবা-চাচা ও ফুফুরা (একজন ব্যতীত) সবাই সেই ঘরের সন্তান।
আমার দাদা যদি ছোট দাদীকে (আমার আপন দাদীকে আমরা 'ছোট দাদী' বলি) দ্বিতীয় বিয়ে করে ঘরে না আনতেন, তাহলে হয়ত আমার বাবার জন্মই হতো না ; বলাই বাহুল্য, আমার জন্ম হতো না ! যা আমার জন্মের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কারণ, তার পক্ষে আমি এডভোকেসি করব, লেখালেখি করব–এটি খুবই স্বাভাবিক।
যদি সমাজে পুরুষের একাধিক বিয়ের রেওয়াজ থাকত তাহলে সবধরণের নারীদের জন্য একাধিক বিয়ে প্রস্তাব আসত এবং কোন পুরুষকে বিয়ে করবে সেই সিলেকশন করাটা তাদের জন্য অনেক সহজ হতো। তখন নারীরা পুরুষদের মাঝে হাইট বেশি নাকি কম, সামর্থ্যবান কি না (শারীরিকভাবে, আর্থিকভাবে), সামাজিক স্ট্যাটাস কেমন ইত্যাদি এটা ওটা দেখা বাছাই করতে পারত।
নারীদের মনে রাখা উচিত, যার সাপ্লাই বেশি অথচ ডিমান্ড কম, তার মূল্য অটোমেটিক কমতে বাধ্য–এটি অর্থনীতির অন্যতম মূলনীতি। এখন বয়সের কারণে হোক, সন্তান ধারণে অক্ষমতার কারণে হোক বা যে কোনো কারণে হোক, সমাজে অবিবাহিত আইবুড়ো নারীর সংখ্যা অনেক বেশি। একে তো সমাজে ট্যাবুর কারণে সামর্থ্যবান যোগ্য পুরুষরা একাধিক বিয়ে করতে পারছে না, উপরন্তু নারীদের অতিরিক্ত চাহিদার কারণে বিয়ে আরও অসম্ভব একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই বিয়ে করতে চাইলে নারীদের জন্য কম্প্রোমাইজই একমাত্র রাস্তা। আল্লাহর কসম করে বলছি, এখানে নারীদের ছোট করে দেখানো আমার উদ্দেশ্য নয়। নারীদের বাস্তবতা বোঝানোর চেষ্টা করছি। আমার কথার সাথে একমত না হলেও কোনো সমস্যা নেই। আমার কথা কোনো ওয়াহি নয়। আমি নিজের কোনো ধারণা বা তত্ত্ব এখানে পেশ করছি না বরং যে সমস্যার সমাধান ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে, তা-ই বলছি শুধু।
সাইন্সের একজন ছাত্র হিসেবে মুফতি তারিক মাসউদ সাহেবের কথাগুলো বুঝতে আমার একটুও কষ্ট হয়নি, এজন্য না যে আমি পুরুষ আর আমার মধ্যে একাধিক নারীসঙ্গ লাভের আকাঙ্ক্ষা সত্তাগতভাবে প্রবিষ্ট আছে বরং এজন্য যে এগুলো দুয়ে দুয়ে চারের মতো ফ্যাক্ট ; আপনি অস্বীকার করতে পারেন বটে, তবে এতে বাস্তবতা পাল্টাবে না।
আল্লাহু আ'লাম।
দিলশাদ মাহমুদ মাহদী