12/09/2024
কী পরিমাণ নৈরাজ্য নিয়ে যে এই দেশ চলছিল তার ছোট্ট একটা উদাহরণ হল আমাদের এই হেলথ সেক্টর।
এই নৈরাজ্যের সেক্টরে এখন বড় ধরণের পাঁচটি আন্দোলন চলছে। এত দিন মানুষ কথা বলতে পারেনি, আমরা সামান্য একটা প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় দাঁড়ালেই ভেবে নিত সরকার পতনের আন্দোলন। ফলে কোনো নৈরাজ্যেরই সমাধান সম্ভব হয়নি।
উদাহরণ দি।
এক। এই মুহূর্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চরম অচলাবস্থা চলছে, স্বৈরাচার সরকারের সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তা কর্মচারী। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে না।
দুই। ওইদিকে বিএমডিসি রিফর্ম করা জরুরি, ডিএমএফ বা চিকিৎসা সহকারীদের নামের আগে ডাক্তার লেখা নিয়ে সমস্যার সমাধান এক যুগেও সম্ভব হয় নি।
তিন। নার্সরা আন্দোলন করছে হাসপাতাল ক্লিনিকে ওয়ার্ড বয় আয়া বুয়া দিয়ে নার্সদের কাজ চালানো হয়- এ নিয়ে। এইটা খুবই ইম্পর্ট্যান্ট একটা দাবি। এই অরাজকতা চলতে পারে না।
গত এক যুগে অনুমতিবিহীন ভুয়া ক্লিনিকের সংখ্যা কমানো যায় নি, কিন্তু ডিজি হেলথের কর্মকর্তাদের কারো কারো ফ্লাট গাড়ি বাড়ি জমি হয়ে গিয়েছে। কারা, কিভাবে এত আঙুল ফুলে কলাগাছ হলো, আমরা জানি।
চার। এর মধ্যে ইচ্ছেকৃত ভাবে ক্যাডার নন ক্যাডার বৈষম্য জিইয়ে রাখা হয়েছে। নো বিসিএস নো ক্যাডার এমনটাই হবার কথা ছিল।
পাঁচ। আর সবচেয়ে বড় সমস্যা, স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তার অভাব।
গত ১৫ বছরে প্রতি বছর স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হামলা হয়েছে, রোগী অনাকাঙ্খিত ভাবে মারা গেলে হাতকড়া পরে চিকিৎসককে জেলে যেতে দেখেছি, ডাক্তারকে মেরে পিটিয়ে কিন্তু একটিও হামলার রায় হতে দেখিনি।
আর তা হলে আজকে স্বাস্থ্যকর্মীদের রাস্তায় নামতে হত না।
চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমএকে কে বাংলাদেশ মানববন্ধন এসোসিয়েশনে পরিণত করা হলো। আজকে আওয়ামী লীগ পলায়নের সাথে সাথে এই বিএমএও পলায়ন করল। সারা দেশে কোথাও বিএমএ বলে আর কিছু ফাংশনিং নাই। অবশ্য মানববন্ধন এসোসিয়েশনের থাকা না থাকা দুইই সমান, তাই আমরা কেউই আজ বিএমএকে খুঁজছি না।
অথচ শক্তিশালী বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন থাকলে সত্যি বলতে রোগীরাই উপকৃত হতো।
অবস্থা এমন যে, আমরা আন্দোলন না করলে রোগী গ্রেফতার হয় না। আমরা চাপ না দিলে পুলিশ গ্রেফতার করে না। আইন তার নিজের গতিতে চলতে গেলে বিএমএ এসে বাধা দিত। হাত পা ধরে মাফ চাওয়ানো হত। এইটা কোনো সভ্য দেশের সংস্কৃতি হতে পারে না।
গত কয়েক যুগ ধরে ডাক্তারদের ইচ্ছেমতো পিটিয়ে পার পাওয়া গিয়েছে এই ধারণা মানুষদের মনে গেঁথে গিয়েছে, এরা এখন ডাক্তারকে পিটালে মজা করে ভিডিও করে, কেউ এগিয়ে আসেও না।
অবস্থার পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত, হাসপাতালে নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনীর ক্যাম্প ও টহল ছাড়া আর উপায় নাই। এর মধ্যে কিছু দৃষ্টান্তমূলক বিচার হলে একটা মেসেজ যাবে, যে অন্যায় করলে রক্ষা নাই।
Collected