10/07/2025
#সন্তান_খারাপ_রেজাল্ট_করলে_কেমন_আচরররন_করবেন?
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) প্রকাশ করা হয়েছে। এবারে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ—৫ দুটি কমেছে। এবার পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ এবং জিপিএ—৫ পেয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩২। ফেল করেছেন ৩১দশমিক.৫৫%। এমনকি অনেক পরীক্ষার্থীই প্রত্যাশিত রেজাল্ট করতে পারেন নি। পরীক্ষায় প্রত্যাশিত রেজাল্ট না করতে পারলে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায় বাবা মায়েরা । তারা শিক্ষার্থীদের পিছনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। কোন কারনে প্রত্যাশিত রেজাল্ট না হলে মেনে নেয়াটা তাই তাদের জন্য কষ্টকর।
এই সময়ে কিছু বাবা—মা বাচ্চার সাথে দেখা হলেই চট করে রেগে তার গালে দুইটা চড় বসিয়ে দিয়ে জিঙ্গেস করেন, রেজাল্ট কেন খারাপ হল?
কেউ কেউ আবার চিল্লায় বলেন, তোমাকে দিয়ে কিছু হবে না, তুমি কিছু করতে পারবে না। এমন নেতিবাচক কথা শুনার পর পরীক্ষার্থীর কষ্টটা আরোও বেড়ে যায়। সন্তান পরীক্ষায় খারাপ করা খুবই স্বাভাবিক। তবে সন্তানের খারাপ ফলাফলের প্রতিক্রিয়া যদি গঠনমূলক না হয় তাহলে সন্তানের উপর বিরুপ প্রভাব পড়ে। সন্তানের আত্মধারনা নিচু হয় এবং ভবিষ্যতে ভালো করার সম্ভবনা অনেক কমে যায়। তাছাড়া পরীক্ষার ভালো রেজাল্টই সব কিছু না।
এই সময়ে অভিভাবকেরা যা যা করতে পারেন—
--প্রথমত নিজের যত্ন নিন। নিজের মন খারাপ বা হতাশা স্বীকার করুন। খাতায় লিখে মন খারাপের বিষয়গুলো প্রকাশ করতে পারেন। পযাপ্ত ঘুমান, নিয়মিত খাবার গ্রহন করুন, ব্যয়াম ও মাইন্ডফুলনেসে মনোযোগ দিতে পারেন, যাতে আপনার কষ্টটা কমে যায়।
—খারাপ ফলাফলের কারন বোঝার চেষ্টা করুন।
—তাকে কারও সাথে তুলনা করবেন না। তুলনা করলে তার মানসিক স্বাস্থ্য আরোও খারাপ হবে।
—কোনভাবেই সন্তানের উপর চাপ বাড়াবেন না। চাপ বাড়ালে কিংবা ভালো ফলাফলের জন্য চাপ দিলে তার আগ্রহ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
—খারাপ ফলাফল হলে খারাপ ফলাফল নিয়ে কটুক্তি করবেন না।
—খারাপ ফলাফলের কথা বার বার উচ্চারণ করে তাকে ব্যঙ্ঘ করবেন না।
—খেলা ও বিনোদন থেকে জোর করে বিরত রাখবেন না ।
—শারীরিক কোর ধরনের আঘাত করবেন না।
—ঘরে জোর করে আটকে রাখবেন না।
—শিক্ষককে নিয়ে খারাপ কথা বা কটুক্তি করলে আপনার সন্তান বেশী কষ্ট পেতে পারে। তাই তার সামনে শিক্ষককে নিয়ে কোন কটুক্তি করবেন না।
—ফলাফল যাই হোক না কেন তাকে উৎসাহ দিন। আপনি তার সাথেই আছেন এ বিষয়টি বুঝিয়ে বলুন। রেজাল্টে তার কোন হাত নেই এটা মেনে নিতে সহায়তা করুন।
-তাকে নিয়ে একসাথে নামাজ বা প্রাথনা, ব্যয়াম, মেডিটেশন করতে পারেন।
-এই সময়ে আপনার সন্তানের এংজাইটি, বিষন্নতা, ঘুমের সমস্যা, তিব্র মনখারাপ, অস্থিরতা, কাজ কমে অনাগ্রহ এমনকি আত্মহত্যার চিন্তা আসতে পারে। সবাই মিলে সন্তানকে এই মানসিক বিষয়গুলোর সাথে মোকাবেলা করতে সহায়তা করুন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ মনোবিজ্ঞানী বা মনোচিকিৎসকের সহায়তা নিতে পারেন।
জিয়ানুর কবির ।
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিষ্ট।