কান্না ঘর - Crying Room

কান্না ঘর - Crying Room কান্না আত্মা-পরিষ্কারের ওষুধ । কষ্ট, আনন্দ এবং ভয়ের বহিঃপ্রকাশই হল কান্না।

মানুষ কেন কান্না করে?
অনেক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে মানুষ কান্না করে। এ কান্নাকে বিশ্লেষণ করলে পুরো সাংস্কৃতিক পরিচয় থেকে শুরু করে সামাজিক অবস্থান—সবকিছুই বোঝা সম্ভব। এটির অধ্যয়ন নিজেদের ভালোভাবে বুঝতে সহায়তা করে। আচরণ হিসেবে কান্নাকে অনেকেই ঠাট্টা-উপহাস করেন। তারা বলেন, অশ্রু হলো মেয়েলি, প্রশ্রয়পূর্ণ ও অতিনাটকীয় বিষয়। এটা অনুমান করা কঠিন নয় যে এ ধারণা পুরুষতান্ত্রিক আচরণের বহিঃপ্রকাশ।

শিক্ষকরা সর্বদা শিক্ষার্থীদের কাঁদতে নিষেধ করেন এবং তারা এটাকে সস্তা হিসেবে উল্লেখ করেন। অন্যদিকে মনোবিদরা ‘ভালো কান্নাকাটি’র প্রয়োজনীয়তা আছে বলে উল্লেখ করেন। তারা অশ্রুকে একটি পরিচয় ও মানসিক তৃপ্তি হিসেবে দেখেন, যার শারীরিক প্রভাব আছে। অনেকে কান্নাকে আত্মা-পরিষ্কারের ওষুধ হিসেবে উল্লেখ করে নিজেদের ঘোষণা দেন যে ‘আমি একজন ক্রাইয়ার’।

তবে সব কান্নাও এক রকম নয়। মানব শরীর তিন ধরনের কান্না উৎপাদন করে। একটা হলো মৌলিক, যা শুষ্কতা থেকে রক্ষার জন্য চোখের বলের উপরে তৈলাক্ত স্তর তৈরি করে। আরেকটি হলো প্রতিবিম্ব, যা চোখে ধূলিকণা বা কিছু পড়লে সেটা থেকে চোখকে রক্ষার জন্য হাজির হয়। পেঁয়াজ কাটার সময় বা তীব্র আলোর মুখোমুখি হলেও এটা হয়ে থাকে। অর্থাৎ চোখ কোনোভাবে বিরক্ত হলে প্রতিবিম্বের মাধ্যমে চোখ দিয়ে পানি বের হয়। তৃতীয়টা হলো আবেগীয়, যা সংবেদনশীল কোনো কারণে ঘটে থাকে। আবেগীয় বা সংবেদনশীল অশ্রুতে মৌলিক ও প্রতিবিম্বের চেয়ে প্রোটিনের মাত্রা বেশি থাকে। প্রোটিনের কারণে অশ্রু অনেক ঘন হওয়ায় ধীরে ধীরে সেগুলো চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ে।
এ অশ্রুগুলো যত বেশি গড়িয়ে পড়বে, অন্যদের জন্য তার বার্তাগুলো তত বেশি উপলব্ধি করার সুযোগ তৈরি হবে। সংবেদনশীল অশ্রু একটি সামাজিক ও জৈবিক সংকেত। এটা যোগাযোগেরও একটা মাধ্যম। কিন্তু অনেক সময় মানুষ একা একাই কান্না করে থাকে, যেখানে কান্নার প্রেরক থাকলেও প্রাপক থাকে না। এ বার্তা সামাজিকভাবে নিজের দিকে পরিচালিত হতে পারে অর্থাৎ বার্তাগুলো সে নিজেই নেয় এবং আত্মতৃপ্তি পায়। এ মুহূর্তে কেউ হয়তো কবি অর্থার রিমবৌদের কথা ভাবতে পারেন—‘আমি অন্য একজন’। কখনো কখনো একক কোনো ব্যক্তি কান্নার প্রেরক ও প্রাপক হতে পারে। কান্নার সামাজিক যে সংকেত রয়েছে, তা সংস্কৃতিভেদে পরিবর্তিত হয়। এটা ক্রন্দনকারী ও সাক্ষীদের ব্যক্তিগত পরিচয়, ক্ষমতা ও বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের সুনির্দিষ্ট ফ্রেম রয়েছে, যার মাধ্যমে মানুষের অশ্রুকে ব্যাখ্যা করা যায়। এজন্য তারা অশ্রুর উৎপাদন পরিমাপের জন্য রোগীর চোখ থেকে অশ্রু সংগ্রহ করেন। আবার যখন কোনো মনোবিদ হতাশার রোগীর চিকিৎসা করেন, তখন রোগীর কান্নার বর্ণনা শুনে থাকেন। কান্নার বিভিন্ন ধরনের ওপর অনেক সম্ভাবনা নির্ভর করে। এদের মধ্যেও নানা পার্থক্য দেখা যায়। এমন রোগীরা বলেন, ‘আমি আগের মতো আর কান্না করি না’, ‘শরীর ও চোখ শুকিয়ে অসাড় হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমি প্রতিটি ছোট ছোট বিষয়ের জন্য কেঁদেছি’, ‘আমি কান্নার মতো অনুভব করি কিন্তু কাঁদতে পারি না’। কান্না মানুষের মধ্যে গভীর বন্ধন সৃষ্টি করতে পারে। আবার বিতর্কিত পৃথককরণও সৃষ্টি করতে পারে। এটা নির্ভর করে মূলত তারা কারা এবং তারা কীভাবে পৃথিবীতে বসবাস করবে, এটা পরস্পর শেয়ার করার মাধ্যমে।

পদ্ধতিগত নিদর্শনগুলো ও প্রত্যাশিত বিষয়গুলো পরিবর্তন হলে অশ্রু চলে আসে। এজন্য কোনো শিশু কিছু খেতে চাইলে তাকে সেটা না দিলে সে কাঁদে। সম্ভবত আপনি লক্ষ করেছেন, একই সঙ্গে কান্না করা এবং গান গাওয়া প্রায় অসম্ভব। গলার পেশি একসঙ্গে কান্না ও গানের সংকোচন-প্রসারণ করতে পারে না। এজন্য দ্য ক্রাইং বুক-এর লেখক ও গবেষক হিদার ক্রিস্টল বলেছেন, কান্নার বিপরীত শব্দ হাসি নয় বরং গান। কান্নার সময় গলা ধরে আসে, কোনো কথা পর্যন্ত বলা যায় না।

মানুষ যখন বলতে পারা এবং নিজেকে পরিচালনার শেষ সীমায় পৌঁছে যায়, তখনই মানুষ কান্না করে। এর অর্থ এই নয় যে শেষ সীমায় পৌঁছার আগ পর্যন্ত তার কথাগুলো ভালো, সত্য বা বিশ্বাসযোগ্য হওয়া উচিত। বরং এটা বোঝায় যে এটা মানুষের ব্রেকিং পয়েন্ট। এরপর সে আর কিছু বলতে পারে না বা নিজেকে পরিচালনা করতে আর সক্ষম হয় না। এটাই তার স্বাভাবিকের সর্বোচ্চ সীমা। এর মানে হলো, যে কারণে অশ্রুগুলো ঝরে পড়ছে, সে বিষয়গুলোর দিয়ে মনোযোগ দেয়ার সময় এসেছে।

গবেষক হিদার ক্রিস্টল বলেন, আমার গবেষণার বহু বছর পর এখন পর্যন্ত আমি নিজেকে শারীরিক ও রূপক রূপে কান্নাকে বোঝার বিস্ময়কর উপায়গুলো শিখছি। এটা দেখা যাচ্ছে যে অশ্রু যখন আসন্ন, তখন আপনার গলা ধরে আসছে বা শ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এমন সময় আপনি শ্বাস নেয়া বা কিছু গিলে ফেলার চেষ্টা করলে পেশিগুলো তা প্রতিরোধ করে এবং বাধা দেয়ার সংবেদন তৈরি করে। তবে গবেষণায় দেখেছি এ ধরনের পরিস্থিতি পরিবর্তন করা সম্ভব। থামার জায়গা বা সর্বোচ্চ সীমা হিসেবে নয় বরং উত্তরণের পথ হিসেবে যদি কান্নার দিকে আপনি নজর দিতে পারেন, তবেই সে অশ্রু আপনি বুঝতে পারবেন। আনন্দ, নিপীড়ন, শোক, সৌন্দর্য ও হিংস্রতা বোঝার জন্য কান্না একটা অনেক বড় অবলম্বন।



সূত্র: গার্ডিয়ান

কান্না: কারা বেশি কাঁদে, কান্নার কারণ কী, কীভাবে চোখে কান্না তৈরি হয়? | BBC
31/12/2021

কান্না: কারা বেশি কাঁদে, কান্নার কারণ কী, কীভাবে চোখে কান্না তৈরি হয়? | BBC

ি কি কখনো ভেবে দেখেছেন যে মানুষ আসলে কাঁদে কেন? কাঁদলে চোখে পানি আসে কেন? কান্নার কি কোন উপকারিতা আছে? নাকি শ.....

ভালবাসা, আনন্দ, শান্তির ও উল্লাসের সাথে আগত বছরকে স্বাগতম জানাই। সকলকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।
31/12/2021

ভালবাসা, আনন্দ, শান্তির ও উল্লাসের সাথে আগত বছরকে স্বাগতম জানাই। সকলকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

কান্নার পেছনের বৈজ্ঞানিক রহস্যহয়তো ভাবছেন কান্নাকাটি তো আবেগধর্মী ব্যাপার,  এর মধ্যে বিজ্ঞান আসে কিভাবে? কিন্তু বিজ্ঞান ...
30/12/2021

কান্নার পেছনের বৈজ্ঞানিক রহস্য

হয়তো ভাবছেন কান্নাকাটি তো আবেগধর্মী ব্যাপার, এর মধ্যে বিজ্ঞান আসে কিভাবে? কিন্তু বিজ্ঞান মানেই অজানাকে জানা, রহস্যের সমাধান করা। আর কাঁদার পেছনেও রয়েছে বিজ্ঞান। কাঁদলে কেন চোখ দিয়ে পানি পড়ে? কান্না কি কেবল দুঃখ-কষ্ট বা আবেগেরই বহিঃপ্রকাশ? পশুপাখির চোখ দিয়ে পানি পড়লেও মানুষই এক মাত্র প্রাণী যে খুশিতে বা কষ্টে কাঁদে। কিন্তু কেন? এসব আগে না ভেবে থাকলে নতুন করে ভাবা যাক এবার।

কান্নাকাটি আপনার ভালো লাগুক বা না লাগুক, এটি আপনার জীবনেরই অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ। কেবলমাত্র বুক ভাঙা কষ্ট পেলে বা বাঁধভাঙা আনন্দেই যে আপনার নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই চোখে পানি চলে আসে তা কিন্তু না। বিজ্ঞানের কাছেও ক্রন্দন আজও এক রহস্য। আপনি সারাদিন নিজের অজান্তেই কেঁদে চলেছেন। কিভাবে? আসছি সে কথায়। কিন্তু কাঠখোট্টা বিজ্ঞানের কেতাবি ব্যাপার জানার আগে কিছু নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার দেখে নেয়া যাক।
আপনি আয়নার সামনে গিয়ে নিজের চেহারা দেখার সময় কখনও হয়তো হঠাৎ লক্ষ্য করেছেন আপনার চোখ সারাক্ষণই ভেজা ভেজা থাকে। কিংবা পেঁয়াজ কাটতে শুরু করলে হঠাৎই বলা নেই কওয়া নেই চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু বন্যা বইতে শুরু করে, সাথে বিরক্তিকর চোখ জ্বালা । কখনোবা টেলিভিশনের চলচ্চিত্রে বা বইয়ের পাতার কোনো আবেগঘন ঘটনায় আপনার বুক হু হু করে উঠল, নিজেকে সামলাতে না পারায় চোখ দিয়ে আবারো আপনার অশ্রু বন্যা বয়ে গেল।

আর এসব সাধারণ ঘটনার সাথে জড়িয়ে আছে তিন ধরনের চোখের পানি। যাদের প্রত্যেকের কাজ, গঠন আলাদা আর সেসব কিন্তু আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারীও। কীভাবে? সেসব উত্তর জানানোর জন্যই আজকের এই লেখা।

অশ্রুজলের উৎপত্তিস্থল
নিউ ইয়র্ক টাইমসের দেয়া তথ্যানুসারে, চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) মানুষের আবেগী কান্নাকে নিষ্প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু তার ১৫০ বছর পরও আজ মানুষের কাছে তা ধাঁধাঁই থেকে গেছে। চোখের পানি আসে কোথা থেকে আর মানুষের চোখ দিয়ে পানিই বা পড়ে কেন তার উত্তর জানার চেষ্টা শুরু করে মানুষ আনুমানিকভাবে ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে। প্রায় ১০০ বছর ধরে মানুষ বিশ্বাস করে এসেছে যে, চোখে পানি একধরনের উপজাত দ্রব্য যেটি তৈরী হয় হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন উপাদান দুর্বল হয়ে পড়লে এবং তা চোখ দিয়ে পড়ে।

আপনি বিশ্বাস করুন বা নাই করুন, এখন তত্ত্বটি বেশ হাস্যকর শোনালেও সেই সময়ে মানুষ এটিই বিশ্বাস করেছিল। হিপোক্রেটিসের সময় মনে করা হতো, চোখের পানি তৈরী হয় মন থেকে। ষোড়শ শতকের দিকে একটি তত্ত্ব বেশ সাড়া ফেলে মানুষের মনে- আবেগ, বিশেষ করে ভালোবাসা মানুষের হৃদযন্ত্রকে বেশ গরম করে দেয় আর সেটি ঠান্ডা হবার জন্য পানিকে বাষ্প রূপে বের করে দেয়, যা চোখ দিয়ে গাল গড়িয়ে পড়ে। কিন্তু শেষপর্যন্ত বিজ্ঞানের আশীর্বাদে ১৬৬২ সালে ড্যানিশ বিজ্ঞানী নীলস স্টেনসেন আবিষ্কার করেন, চোখের অক্ষিগোলকের বাইরের ল্যাক্রিমাল গ্ল্যান্ড বা অশ্রুগ্রন্থি থেকে চোখের পানি নিঃসৃত হয়। আর এর মাধ্যমেই কান্নার পেছনের বিজ্ঞান আশার আলো দেখতে শুরু করে। মানুষের মনে আসতে থাকে বিভিন্ন প্রশ্ন আর শুরু হয় সেসবের উত্তর অনুসন্ধান। মানুষের চোখের পানির উৎপাদন কিন্তু কেবল আবেগের সাথেই জড়িয়ে নেই।
স্বাভাবিকভাবে দেখতে এক মনে হলেও চোখের পানি আলাদা আলাদা হয়। চোখের পানির বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত তিন ধরনের চোখের পানি আবিষ্কার করেছেন। কিন্তু তারা এখনও পর্যাপ্ত পরিমাণে আশ্বস্ত নন যে, কেন মানুষ আবেগে কাঁদে। তবে তারা এখন পর্যন্ত যে সকল ব্যাখ্যা দিয়েছেন আমরা সেগুলোই আজ জানবো।

বেসাল টিয়ার্স
সব অশ্রু নিঃসরণের শুরু হয় ল্যাক্রিমাল গ্ল্যান্ড বা অশ্রুগ্রন্থি দিয়ে। ল্যাক্রিমাল গ্ল্যান্ড অক্ষিগোলকের ঠিক ওপরে খানিকটা বাম দিকে থাকে। উভয় চোখেই একটা করে ল্যাক্রিমাল গ্ল্যান্ড আছে। এই গ্রন্থি থেকে যে অশ্রু তৈরী হয় সেটাই বেসাল টিয়ার্স, যার বাংলা করলে দাঁড়ায় মৌলিক অশ্রু। এই গ্রন্থি প্রতিনিয়ত উৎপন্ন করে চলেছে নতুন অশ্রু। কতটুকু? প্রায় ১০ আউন্স বা ২৮৪.৪ গ্রাম পর্যন্ত একদিনে আর বছরে সেটা প্রায় ৩০ গ্যালন বা ১৩২ কেজির কাছাকাছি। মানে আপনি ডুবে যেতে পারবেন আপনার অশ্রু সাগরে। আর এই নতুন তৈরী অশ্রু অপসারণের জন্য আছে ল্যাক্রিমাল পাংক্টা, যেটা চোখের নিচের কোনার ডান দিকে থাকে। ল্যাক্রিমাল গ্ল্যান্ড থেকে অশ্রু উৎপন্ন হয়ে সেটা ল্যাক্রিমাল পাংক্টা দিয়ে অপসারিত হয় নাসারন্ধ্র দিয়ে।
এই প্রক্রিয়া অনবরত চলতে থাকে আর এজন্যই চোখ কখনও শুকিয়ে যায় না। বেসাল টিয়ার্স আপনার চোখের পাতা ওঠা-নামা করতে সাহায্য সাহায্য করে। কারণ এর মাধ্যমে চোখ পিচ্ছিল থাকে। এটি তিনটি লেয়ার দ্বারা গঠিত যার একেবারে ভেতরেরটি হল মিউকাস লেয়ার, মাঝেরটি অ্যাকুয়াস লেয়ার আর উপরেরটি তৈলাক্ত লিপিড লেয়ার। এই লেয়ারগুলো চোখে ভিটামিন আর পুষ্টি সরবরাহ করে আর চোখকে আর্দ্র রাখে, বাইরের ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। বেসাল টিয়ার্স সারাদিন নিজ কাজ করে চললেও আপনি তা টের পান না।
রিফ্লেক্স টিয়ার্স
পেঁয়াজ কাটলেন আর চোখ দিয়ে পানি পড়লো না এমনটা সাধারণত হয় না। পেঁয়াজ কাটার ফলে এর মধ্যে থাকা সালফার একটি চেইন রিয়েকশন করে প্রথমে সালফোক্সাইড, এরপর সালফেমিক এসিড এবং পরবর্তীতে সিন-প্রপেন্থিয়াল-এস-অক্সাইড উৎপন্ন করে, যা বাতাসের মাধ্যমে চোখে পৌঁছে চোখ জ্বালা শুরু করে এবং ল্যাক্রিমাল গ্ল্যান্ডকে উদ্দীপ্ত করে। আর তখনই রিফ্লেক্স টিয়ার্স নিঃসরণ শুরু হয় অত্যাধিক পরিমাণে।
চোখে কোনো প্রকার আঘাত লাগলে বা ক্ষতিকর, বিরক্তিকর কোনো গ্যাস বা বস্তুর সংস্পর্শে আসলে এ ধরনের পানি নিঃসরিত হয়। বেসেল টিয়ার্সের মতো এই রিফ্লেক্স টিয়ার্স বা প্রতিরোধী অশ্রুও তিন লেয়ার বিশিষ্ট, কিন্তু এদের মধ্যে বেশ পার্থক্য আছে। এই অশ্রুতে বেশি পরিমাণে এন্টিবডি থাকে, যাতে কোনো জীবাণু চোখের ক্ষতি করতে না পারে। আর চোখের সংস্পর্শে আসা সেসব বস্তুকে সরিয়ে দিতে এতে পানির পরিমাণ বেশি থাকে, প্রায় ৯৮%।
ইমোশনাল টিয়ারস
আবেগের অশ্রু; এই অশ্রু আমরা সকলেই চিনি এবং এর সাথে অনেকেই বেশ গভীরভাবে পরিচিতও। আর বিজ্ঞানীদের জন্য এক রহস্যও বটে এই আবেগী অশ্রু। এর আরেক নাম সাইকিক টিয়ারস, যা চাইলেই ইচ্ছাকৃতভাবে বের করা যায় না, কারণ এর সাথে আবেগ জড়িয়ে থাকে।

অতিরিক্ত আনন্দ বা কষ্ট কোনোটাই চেপে রাখা আপনার জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না। তাই কান্নার মাধ্যমে সেই সুখের বা দুঃখের আবেগকে প্রশমিত করাই হলো ইমোশনাল টিয়ার্সের কাজ। আবেগের সাথে সম্পর্কিত মানব মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল হাইপোথ্যালামাস এবং বেসাল গ্যাংলিয়া। এগুলো ল্যাক্রিমাল গ্ল্যান্ডের সাথে যুক্ত থাকায় আবেগ প্রশমিত করার জন্য মস্তিষ্ক থেকে সংকেত পাঠায়। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নন কেন এমনটা ঘটে।
রিফ্লেক্স টিয়ার্স আর ইমোশনাল টিয়ার্সের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে দেখা গেছে, এ অশ্রুতে অনেক বেশি মাত্রার স্ট্রেস হরমোন থাকে। ACTH (Adrenocorticotropic hormones) এমন একটি হরমোন। এছাড়াও লিউসিন, এনকেফালিনের মতো রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা ব্যথানাশকের কাজে দেয়। তাই হয়তো একটু কান্নার পর আপনি বেশ স্বস্তি অনুভব করেন আর কাজের জন্য উদ্যম ফিরে পান। কিন্তু সকল বিজ্ঞানী এখনও এ ব্যাপারে সহমত প্রকাশ করেন নি। কারণ এজন্য আরো গবেষণার প্রয়োজন।
মানুষ কেন কাঁদে
এত কিছুর পরও একটি প্রশ্ন থেকেই যায়। আর তা হলো- মানুষ কেন কাঁদে? আগেই বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীরা এখনও এর কারণ নিয়ে নিশ্চিত নন, তবে বিভিন্ন গবেষণা থেকে কিছু ব্যাপার উঠে এসেছে। যেমন শিশুরা কাঁদে বড়দের মনোযোগ পাবার জন্য, কিন্তু বড় হবার পর? একটি গবেষণায় কিছু মানুষের কান্নার ছবি তোলার পর ফটোশপের মাধ্যমে অশ্রুগুলোকে মুছে দেয়া হয়। এরপর ২টি ছবির মধ্যে তুলনা করে দেখা যায়, যে ছবিতে অশ্রু আছে সে ছবিতে কষ্টের অনুভূতি বেশ স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে, আর যে ছবি থেকে অশ্রু মুছে ফেলা হয়েছে সেগুলোতে কষ্টের ছাপ তেমন একটা বোঝা যায় নি। বরং সেগুলোতে অনেকে মিশ্র অনুভূতিও লক্ষ্য করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে মানুষ কাঁদে অন্যের সহানুভূতি পাবার আশায় ।
পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পোষ্ট ডক্টরেট লরেন বিলস্মা কয়েকজনকে নিয়ে একটি গবেষণা করেন, যাতে দেখা যায় অংশগ্রহণকারী কাঁদলে এবং তাকে অন্য কেউ কাঁদতে দেখলে সেটি কেমন প্রভাব ফেলে। যদি সেই অন্য মানুষটি কাছের কেউ হয়, তাহলে কাঁদতে ভালো লাগে। কিন্তু সেটি যদি অপরিচিত কেউ হয়, তাহলে কাঁদতে বেশ লজ্জা লাগে বা অস্বস্তিকর লাগে। কিন্তু তারপরও কাঁদলে সেটা হয় কোনো নির্মম ঘটনার জন্য। তারা সব থেকে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন একা একা কাঁদতে (Journal of Research in Personality, 2011)।

১৯৮০ সালে প্রাণ রসায়নবিদ উইলিয়াম এইচ ফ্রেই এক গবেষণায় দেখেন, মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় একটু বেশিই কাঁদে। প্রতি মাসে গড়ে একজন নারী যেখানে কাঁদেন ৫.৩ বার, সেখানে একজন পুরুষ কাঁদে মাত্র ১.৩ বার। লরেন বিলস্মাও একই ফলাফল পান তার গবেষণায়। এজন্য দায়ী করা যেতে পারে ছেলেদের টেস্টোস্টেরোন হরমোনকে যা কাঁদতে বাঁধা দেয়, আর মেয়েদের প্রোল্যাক্টিন হরমোনকে যা কান্না বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এটি পুরোটাই প্রাকৃতিক ব্যাপার না।

কাঁদলে মন হালকা হয়। কাজে উদ্যম ফিরে আসে। তাছাড়া ইমোশনাল টিয়ার্স আপনার শরীরের স্ট্রেস কমিয়ে দেয়। তাই কান্নার কিন্তু বেশ কিছু উপকারিতাও আছে। যদিও খুব বেশি কাঁদলে ডিহাইড্রেটেড হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। খুশির কান্না অনেক সময় সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করার জন্য হয়ে থাকে। আরেকটি মজার তথ্য হলো ছোট বাচ্চাদের কান্নারও ধরন আছে। সেটি তিন রকমের- মৌলিক কান্না, রাগের কান্না এবং ব্যথার কান্না।

শেষ করবো কুমিরের কান্না দিয়ে। অনেক প্রচলিত একটি প্রবাদ হলো কুমিরের কান্না, যা আমরা মায়া কান্না বা নকল কান্না বুঝাতে ব্যবহার করি। এই প্রবাদটি এসেছে কুমিরের একটি আচরণ থেকে। কুমির শিকার করার সময় চোখ দিয়ে অশ্রু নিঃসরণ করে এবং অবশ্যই সেটি আবেগের অশ্রু না। কুমিরের ল্যাক্রিমাল গ্ল্যান্ড থাকলেও আবেগের জন্য কুমির কখনও কাঁদে না। আর সেজন্যই কেউ কোনো উদ্দেশ্যে নকল কান্না কাঁদলে তাকে কুমিরের কান্না বলে। তার মানে কান্না একটি অস্ত্রও বটে!

মানুষ কেন কাঁদে?আমরা ভাবি, মানুষ কেবল দুঃখ পেলেই কাঁদে।না, তা নয়। কান্নার রয়েছে নানা কারণ। বিশ্বাস হচ্ছে না! তাহলে চলো জ...
30/12/2021

মানুষ কেন কাঁদে?

আমরা ভাবি, মানুষ কেবল দুঃখ পেলেই কাঁদে।

না, তা নয়। কান্নার রয়েছে নানা কারণ। বিশ্বাস হচ্ছে না! তাহলে চলো জানি সেগুলো কী ও কেমন!

তিন ধরণের কান্না বা চোখের পানি রয়েছে।

১. বেসাল কান্না

২. রিফ্লেক্স কান্না ও

৩. আবেগের কান্না

বেসাল কান্না

এ ধরণের কান্না কাঁদতে হয় না, সব সময় আমাদের চোখের ভেতরেই থাকে। এটা এমন এক ধরণের পিচ্ছিল তরল যা আমাদের চোখকে সব সময় ভেজা রাখে। এর কারণেই আমাদের চোখ কখনো একেবারে শুকিয়ে যায় না।

এক গবেষণায় জানা যায়, আমাদের চোখ প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ আউন্স বেসাল কান্না তৈরি করে।

রিফ্লেক্স কান্না

কখনো তোমার মা’কে পেঁয়াজ কাটতে দেখেছো কিংবা নিজে কখনও পেঁয়াজ কেটেছো? চোখ দিয়ে কেমন গরগর করে পানি চলে আসে, তাই না!

রিফ্লেক্স কান্না হলো এমন। এর কাজ হলো আকস্মিক কোন আঘাত, চুলকানি, যন্ত্রণা বা সংবেদনশীল কোন বস্তু থেকে চোখকে রক্ষা করা। এ কান্না কাঁদতে হয় না, প্রয়োজনের সময় নিজ থেকেই টপটপ করে পড়তে শুরু করে।

ধুলো, প্রচণ্ড বাতাস বা ধোঁয়ার কারণে রিফ্লেক্স কান্না আসে। কর্নিয়ার সংবেদী স্নায়ুর মাধ্যমে এ কাজটি চোখ নিজে থেকেই সেরে নিতে পারে।

বিপদ বা আঘাতের সময় এ সংবেদী স্নায়ু সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং মস্তিষ্কে সংবাদ পাঠায়। মস্তিষ্ক সংবাদ পেয়ে চোখের পাতায় দ্রুত বিশেষ হরমোন পাঠায়। আর তাতেই রিফ্লেক্স কান্না তৈরি হয়।

আবেগের কান্না

এ কান্না শুরু হয় সেরেব্রাম থেকে। সেরেব্রাম হলো মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় অংশ, এজন্য সেরেব্রামকে বলা হয় ‘গুরুমস্তিষ্ক’। সেরেব্রামেই থাকে আমাদের সব ধারণা, কল্পনা, চিন্তা-ভাবনা, মূল্যায়ন ও সিদ্ধান্ত।

অন্তঃক্ষরা তন্ত্র আমাদের চোখে হরমোন পাঠায়। এটিই জল হয়ে চোখের ভেতরে থাকে। যখনই আমরা কান্না, বেদনা, আঘাত বা শোকে থাকি তখন এ জল কান্না হয়ে চোখ দিয়ে পড়তে শুরু করে।

কান্না নিয়ে চারটি মজার তথ্য

১. এক গবেষণায় দেখা গেছে একজন নারী প্রতিমাসে ৫.৩ বার কাঁদে, একজন পুরুষ কাঁদে ১.৪ বার।

২. আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে একটা শিশু প্রতিদিন ১ থেকে ৪ ঘণ্টা কাঁদে।

৩. যদি কান্নার প্রতিমাণ বেড়ে যায় তাহলে নাক দিয়েও কান্না বের হয়ে আসতে পারে। এতে করে সাময়িকভাবে নাক বন্ধ হয়ে যায়।

৪. পেঁয়াজ কাটলে আমরা কাঁদি কেনো! কারণ, পেঁয়াজ কাটলে এর ভেতর থেকে প্রোপেন ইথিয়ল সালফার অক্সাইড গ্যাস বের হয়ে আসে। এটি বাতাসে ভেসে আমাদের চোখের সংস্পর্শে চলে আসে, ফলে আমাদের চোখ থেকে জল পড়ে।

30/12/2021
30/12/2021
মানুষ কেন কান্না করে?অনেক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে মানুষ কান্না করে। এ কান্নাকে বিশ্লেষণ করলে পুরো সাংস্কৃতিক পরিচয় থেকে ...
14/10/2020

মানুষ কেন কান্না করে?

অনেক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে মানুষ কান্না করে। এ কান্নাকে বিশ্লেষণ করলে পুরো সাংস্কৃতিক পরিচয় থেকে শুরু করে সামাজিক অবস্থান—সবকিছুই বোঝা সম্ভব। এটির অধ্যয়ন নিজেদের ভালোভাবে বুঝতে সহায়তা করে। আচরণ হিসেবে কান্নাকে অনেকেই ঠাট্টা-উপহাস করেন। তারা বলেন, অশ্রু হলো মেয়েলি, প্রশ্রয়পূর্ণ ও অতিনাটকীয় বিষয়। এটা অনুমান করা কঠিন নয় যে এ ধারণা পুরুষতান্ত্রিক আচরণের বহিঃপ্রকাশ।

শিক্ষকরা সর্বদা শিক্ষার্থীদের কাঁদতে নিষেধ করেন এবং তারা এটাকে সস্তা হিসেবে উল্লেখ করেন। অন্যদিকে মনোবিদরা ‘ভালো কান্নাকাটি’র প্রয়োজনীয়তা আছে বলে উল্লেখ করেন। তারা অশ্রুকে একটি পরিচয় ও মানসিক তৃপ্তি হিসেবে দেখেন, যার শারীরিক প্রভাব আছে। অনেকে কান্নাকে আত্মা-পরিষ্কারের ওষুধ হিসেবে উল্লেখ করে নিজেদের ঘোষণা দেন যে ‘আমি একজন ক্রাইয়ার’।

তবে সব কান্নাও এক রকম নয়। মানব শরীর তিন ধরনের কান্না উৎপাদন করে। একটা হলো মৌলিক, যা শুষ্কতা থেকে রক্ষার জন্য চোখের বলের উপরে তৈলাক্ত স্তর তৈরি করে। আরেকটি হলো প্রতিবিম্ব, যা চোখে ধূলিকণা বা কিছু পড়লে সেটা থেকে চোখকে রক্ষার জন্য হাজির হয়। পেঁয়াজ কাটার সময় বা তীব্র আলোর মুখোমুখি হলেও এটা হয়ে থাকে। অর্থাৎ চোখ কোনোভাবে বিরক্ত হলে প্রতিবিম্বের মাধ্যমে চোখ দিয়ে পানি বের হয়। তৃতীয়টা হলো আবেগীয়, যা সংবেদনশীল কোনো কারণে ঘটে থাকে। আবেগীয় বা সংবেদনশীল অশ্রুতে মৌলিক ও প্রতিবিম্বের চেয়ে প্রোটিনের মাত্রা বেশি থাকে। প্রোটিনের কারণে অশ্রু অনেক ঘন হওয়ায় ধীরে ধীরে সেগুলো চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ে।
এ অশ্রুগুলো যত বেশি গড়িয়ে পড়বে, অন্যদের জন্য তার বার্তাগুলো তত বেশি উপলব্ধি করার সুযোগ তৈরি হবে। সংবেদনশীল অশ্রু একটি সামাজিক ও জৈবিক সংকেত। এটা যোগাযোগেরও একটা মাধ্যম। কিন্তু অনেক সময় মানুষ একা একাই কান্না করে থাকে, যেখানে কান্নার প্রেরক থাকলেও প্রাপক থাকে না। এ বার্তা সামাজিকভাবে নিজের দিকে পরিচালিত হতে পারে অর্থাৎ বার্তাগুলো সে নিজেই নেয় এবং আত্মতৃপ্তি পায়। এ মুহূর্তে কেউ হয়তো কবি অর্থার রিমবৌদের কথা ভাবতে পারেন—‘আমি অন্য একজন’। কখনো কখনো একক কোনো ব্যক্তি কান্নার প্রেরক ও প্রাপক হতে পারে। কান্নার সামাজিক যে সংকেত রয়েছে, তা সংস্কৃতিভেদে পরিবর্তিত হয়। এটা ক্রন্দনকারী ও সাক্ষীদের ব্যক্তিগত পরিচয়, ক্ষমতা ও বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের সুনির্দিষ্ট ফ্রেম রয়েছে, যার মাধ্যমে মানুষের অশ্রুকে ব্যাখ্যা করা যায়। এজন্য তারা অশ্রুর উৎপাদন পরিমাপের জন্য রোগীর চোখ থেকে অশ্রু সংগ্রহ করেন। আবার যখন কোনো মনোবিদ হতাশার রোগীর চিকিৎসা করেন, তখন রোগীর কান্নার বর্ণনা শুনে থাকেন। কান্নার বিভিন্ন ধরনের ওপর অনেক সম্ভাবনা নির্ভর করে। এদের মধ্যেও নানা পার্থক্য দেখা যায়। এমন রোগীরা বলেন, ‘আমি আগের মতো আর কান্না করি না’, ‘শরীর ও চোখ শুকিয়ে অসাড় হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমি প্রতিটি ছোট ছোট বিষয়ের জন্য কেঁদেছি’, ‘আমি কান্নার মতো অনুভব করি কিন্তু কাঁদতে পারি না’। কান্না মানুষের মধ্যে গভীর বন্ধন সৃষ্টি করতে পারে। আবার বিতর্কিত পৃথককরণও সৃষ্টি করতে পারে। এটা নির্ভর করে মূলত তারা কারা এবং তারা কীভাবে পৃথিবীতে বসবাস করবে, এটা পরস্পর শেয়ার করার মাধ্যমে।

পদ্ধতিগত নিদর্শনগুলো ও প্রত্যাশিত বিষয়গুলো পরিবর্তন হলে অশ্রু চলে আসে। এজন্য কোনো শিশু কিছু খেতে চাইলে তাকে সেটা না দিলে সে কাঁদে। সম্ভবত আপনি লক্ষ করেছেন, একই সঙ্গে কান্না করা এবং গান গাওয়া প্রায় অসম্ভব। গলার পেশি একসঙ্গে কান্না ও গানের সংকোচন-প্রসারণ করতে পারে না। এজন্য দ্য ক্রাইং বুক-এর লেখক ও গবেষক হিদার ক্রিস্টল বলেছেন, কান্নার বিপরীত শব্দ হাসি নয় বরং গান। কান্নার সময় গলা ধরে আসে, কোনো কথা পর্যন্ত বলা যায় না।

মানুষ যখন বলতে পারা এবং নিজেকে পরিচালনার শেষ সীমায় পৌঁছে যায়, তখনই মানুষ কান্না করে। এর অর্থ এই নয় যে শেষ সীমায় পৌঁছার আগ পর্যন্ত তার কথাগুলো ভালো, সত্য বা বিশ্বাসযোগ্য হওয়া উচিত। বরং এটা বোঝায় যে এটা মানুষের ব্রেকিং পয়েন্ট। এরপর সে আর কিছু বলতে পারে না বা নিজেকে পরিচালনা করতে আর সক্ষম হয় না। এটাই তার স্বাভাবিকের সর্বোচ্চ সীমা। এর মানে হলো, যে কারণে অশ্রুগুলো ঝরে পড়ছে, সে বিষয়গুলোর দিয়ে মনোযোগ দেয়ার সময় এসেছে।

গবেষক হিদার ক্রিস্টল বলেন, আমার গবেষণার বহু বছর পর এখন পর্যন্ত আমি নিজেকে শারীরিক ও রূপক রূপে কান্নাকে বোঝার বিস্ময়কর উপায়গুলো শিখছি। এটা দেখা যাচ্ছে যে অশ্রু যখন আসন্ন, তখন আপনার গলা ধরে আসছে বা শ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এমন সময় আপনি শ্বাস নেয়া বা কিছু গিলে ফেলার চেষ্টা করলে পেশিগুলো তা প্রতিরোধ করে এবং বাধা দেয়ার সংবেদন তৈরি করে। তবে গবেষণায় দেখেছি এ ধরনের পরিস্থিতি পরিবর্তন করা সম্ভব। থামার জায়গা বা সর্বোচ্চ সীমা হিসেবে নয় বরং উত্তরণের পথ হিসেবে যদি কান্নার দিকে আপনি নজর দিতে পারেন, তবেই সে অশ্রু আপনি বুঝতে পারবেন। আনন্দ, নিপীড়ন, শোক, সৌন্দর্য ও হিংস্রতা বোঝার জন্য কান্না একটা অনেক বড় অবলম্বন।



সূত্র: গার্ডিয়ান

Address

Mirpur
Dhaka
1216

Telephone

+8801707001971

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when কান্না ঘর - Crying Room posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram