22/03/2024
ব্রেস্ট ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রে প্রথমে সার্জারি নাকি প্রথমে কেমোথেরাপি এটা নিয়ে অনেক কনফিউশন। ডাক্তারদের মধ্যেও অনেক সময় লেটেস্ট গাইডলাইন ফলো করার ব্যাপারে অনাগ্রহ লক্ষ্য করা যায়, রোগীদের মধ্যেও অনেক কনফিউশন ডেভেলপ করে। এই ব্যাপারটা নিয়ে আজকে একটু পরিষ্কার করে কিছু কথা বলতে চাই। আমি যেই কথাগুলো বলছি সেগুলো একেবারে লেটেস্ট অর্থাৎ ২০২৪ এ আপডেটেড হওয়া গাইডলাইনগুলোতেও রয়েছে।
আমরা জানি ব্রেস্ট ক্যান্সারে তিন ধরনের রিসেপ্টর স্ট্যাটাস চিকিৎসার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। এগুলো হলো ER, PR, HER2। ER অথবা PR পজেটিভ কিন্তু HER2 নেগেটিভ এরকম রোগীদের ক্ষেত্রে গাইডলাইন টা একটু জটিল তাই আজকে আলোচনা করছি না।
কিন্তু যাদের ER, PR, HER2 তিনটাই নেগেটিভ যেটাকে আমরা বলি ট্রিপল নেগেটিভ অথবা যাদের HER2 পজিটিভ (সাথে ER, PR নেগেটিভও হতে পারে পজিটিভও হতে পারে) তাদের ক্ষেত্রে রিকমেন্ডশন যথেষ্ট সরল। তাই আমি এই দুইটা গ্রুপ নিয়ে কথা বলব।
তাহলে আজকের বিষয়বস্তু ব্রেস্ট ক্যান্সার রোগীদের নিয়ে যাদের
১. ER, PR, HER2 তিনটাই নেগেটিভ অর্থাৎ Triple Negative, অথবা
২. HER2 পজেটিভ
ট্রিপল নেগেটিভ ও হার টু পজিটিভ রোগীদের ক্ষেত্রে টিউমারটি যদি মাত্র দুই সেন্টিমিটার এর উপরে থাকে তাহলেই প্রথমে কেমোথেরাপি দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। সাইজ কিভাবে বোঝা যাবে? মেমোগ্রাম অথবা ব্রেস্ট আল্ট্রাসনোগ্ৰামে টিউমারের সাইজ উল্লেখ করা থাকে। অনেক সময় স্টেজিং এর জন্য পেট সিটি স্ক্যান করা হলে সেখানেও উল্লেখ থাকতে পারে। ধরেন টিউমারটির সাইজ উল্লেখ করা আছে ২.৬x১.৭x১ সেন্টিমিটার। তাহলে সর্বোচ্চ যে ডায়ামিটার সেটি হলো ২.৬। কাজেই এই রোগীর কেমোথেরাপি দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। বগলের লিম্ফ নোড যদি পজিটিভ থাকে, অর্থাৎ বগলের লিম্ফ নোড যদি ফোলা পাওয়া যায়, এবং এফএনএসসিতে যদি ম্যালিগন্যান্ট সেল পজিটিভ আসে (অথবা কোন ইমেজিং যেমন পেট সিটি স্ক্যান কনফার্ম করে যে বগলের নোডগুলো ম্যালিগন্যান্ট) তাহলেও অবশ্যই কেমোথেরাপি আগে দিতে হবে।
তার মানে মাত্র দুই সেন্টিমিটারের উপরে টিউমার হলেই অথবা বগলের লিম্ফ নোড পজিটিভ হলেই কেমোথেরাপি প্রথমে দিতে হবে। এবং যতগুলো কেমোই প্ল্যান করা হোক সবগুলো কেমোই সার্জারির আগে দিতে হবে। ( ট্রিপল নেগেটিভ এর ক্ষেত্রে যদি রেসিডুয়াল ডিজিজ থাকে তাহলে অবশ্য পরবর্তীতেও মুখে খাবার কেমো লাগে এবং হার টু পজিটিভ এর ক্ষেত্রে সার্জারির পরেও দীর্ঘদিন এন্টি হার্ট টু থেরাপি কন্টিনিউ করতে হয়)।
তার মানে বোঝা যাচ্ছে যে, অধিকাংশ ট্রিপল নেগেটিভ এবং হার্ট টু পজিটিভ ব্রেস্ট ক্যান্সারের রোগীর প্রথমে কেমোথেরাপি দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। অথচ আমাদের দেশে অধিকাংশ রোগী প্রথমে সার্জারি করে তারপর অনকোলজিস্ট এর কাছে আসে। তাই আমার অনুরোধ আপনারা দয়া করে ক্যান্সার হলে একজন অনকোলজিস্টকে দেখানোর পরে চিকিৎসা শুরু করবেন।
বি:দ্র: কারো যদি স্টেজ ফোর ব্রেস্ট ক্যান্সার হয় তাহলে চিকিৎসা পদ্ধতি ভিন্ন।