18/03/2023
সারা দিন কম্পিউটার বা মোবাইলে?
আজকাল বেশিরভাগ কাজই হয় কম্পিউটারে। দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সামনে বসে থাকলে সরাসরি প্রভাব পড়ে চোখে। বর্তমানে ৮ ঘণ্টার কাজের সময় কখন যে ১০ ঘণ্টায় পৌঁছায় তার হিসেব থাকে না। আবার মোবাইলের প্রতি নেশা তো আছেই। আর ইলেকট্রনিক্স স্ক্রিন টাইম সোজাসুজি প্রভাব পড়ে চোখে। পাওয়ার বেড়ে যাওয়া, চোখে ব্যথা করা, চোখ থেকে জল পড়া সহ একগুচ্ছ সমস্যা দেখা দেয়। অনেকে আবার চোখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া (Dry Eye)-র সমস্যাতেও ভোগেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক কীভাবে যত্ন করবেন চোখের -
১. একটানা কাজ করবেন না। প্রতি ২-৩ ঘণ্টা অন্তর একটা ছোট্ট করে বিরতি নিন। তবে, সেই সময়টা আবার মোবাইলে তাকাবেন না যেন! জানলা দিয়ে বাইরের দিকে তাকাতে পারেন, চোখ বুজে একটু শুয়ে থাকতে পারেন, ছাদ বা ব্যালকনি থেকে ঘুরেও আসতে পারেন। মিনিট ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিয়ে ফের কাজে বসুন। এতে যেমন স্ক্রিনের ব্লু লাইট থেকে চোখ বিশ্রাম পাবে, তেমনই পিছ, কোমর, ঘাড়ে ব্য়থার মতো সমস্যাও হবে না।
২. একটানা কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকলে অনেকেরই চোখ লাল হয়ে যায়, চোখ ব্যথা করে। এক্ষেত্রে বারবার চোখে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিন। সারা দিনে ১০ থেকে ১৫ বার চোখে পানির ঝাপটা দিন। তাতে চোখ ঠাণ্ডা থাকে। চোখ আর্দ্র হয় ও রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। তবে একদম ঠাণ্ডা বা মাত্রাতিরিক্ত গরম পানি দেবেন না চোখে।
৩. কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখের ব্যায়াম করুন। চোখের মণি ওপর, নীচ, ডান, বাম দিকে ঘোরান। এরকম ভাবে ১০ বার করুন। এতেও চোখ ও মাথাব্যথার সমস্যা অনেকটাই কমবে।
৪. অন্ধকারে ইলেকট্রনিক্স আইটেমের নীল আলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। তাই ঘর অন্ধকার করে ল্যাপটম, মোবাইল বা টিভি দেখবেন না। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত ১ ঘণ্টা আগে থেকে এগুলো ব্যবহার করা বন্ধ করে দিন। এতে দেখবেন, কত জলদি ঘুমিয়ে পড়ছেন।
৫. কম্পিউটারে কাজের সময় খেয়াল রাখুন চারদিক থেকে অতিরিক্ত আলো যেন আপনার কম্পিউটারে এসে না পড়ে। প্রয়োজনে কম্পিটারের ব্রাইটনেস সমন্বয় করে নিন।
৬. ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলুন। সাধারণত প্রতি তিন থেকে চার সেকেন্ড পরপর চোখের পাতা ফেলা চোখের ছোটখাটো সমস্যার সমাধান করে, একটানা কাজ থেকে চোখকে বিশ্রামও দিন। এতে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে। যারা কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন বেশি ব্যবহার করেন, তাঁদের চোখের রেটিনা শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাঁদের ক্ষেত্রে এই ‘আই ব্লিংকিং’ ব্যায়াম খুবই উপযোগী। এতে চোখ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা কমে এবং চোখের রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধি পায়।
৭. কাজের ফাঁকে চোখকে বিশ্রাম দিন, অন্তত ৩০ মিনিট অন্তর কাজ বন্ধ রাখুন দুই থেকে তিন মিনিটের জন্য। চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারেন বা এদিক-ওদিক হেঁটে আসুন। দিনে বেশ কয়েকবার এভাবে করুন। এতে চোখের রক্ত সরবরাহ বাড়বে এবং চোখের পেশি সক্রিয় থাকবে।
৮. চোখ ভালো রাখতে গাজরের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি, বাদাম, কমলালেবু খান। টাটকা শাকসবজিতে থাকে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি। এগুলো চোখের কর্নিয়া ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৯. পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। সারা দিনের কাজের পর অন্তত আট ঘণ্টা ঘুম জরুরি। রাতে ঘুমের আধঘণ্টা আগে ফোন বা ল্যাপটপ বন্ধ করে দিন। ওদিকে আর দেখবেন না।