07/08/2025
#৪৭৭০
ট্রাম্প এই মেয়াদে মোদীর সাথে অত পিরিত দেখাবে না বা চাইলেও পিরিত ধইরা রাখতে পারবে না।
আপনারা জিওপলিটিক্স বোঝেন পত্রিকা পইড়া, থিওরেটিক্যাল স্টাডির বাইরে। জিওপলিটিক্স থিওরি আর রিয়েলপলিটিকের মিশেলে চলে।
ট্রাম্প-মোদী দুনিয়াতে যে এক্সিসের লোক, সেই এক্সিসটা এন্টাই নোমিনালিজম। চায়নাও এন্টাই নোমিনালিজমের পক্ষের, রাশাও।
ঘাপলাটা হইতেসে, ট্রাম্প এবং মোদীর স্বার্থের ভিন্নতায়।
মোদী তার বর্তমান মেয়াদে চীনের সাথে ক্যাচাল কমায়ে নিয়ে আসছিল। এই ব্যাপারে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও সেভেন সিস্টার্স ছিল তাদের ফোকাল পয়েন্ট। এমনকি আফগানিস্তানেও চায়না-ইন্ডিয়া কোল্যাব দেখা গেসে। রাশার সাথে ইন্ডিয়ার সম্পর্ক পোস্ট কোল্ড ওয়ার যেকোন সময়ের চেয়ে বাইডেনের টার্মে ভাল হইসে।
এগুলা মোদীকে করতে হইসে মূলত ওয়েস্টার্ন কন্ট্রোলের এগেইন্সটে নিজের অটোনমি বজায় রাখতে। মোদী চায় না মেরিকান ইন্দো প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির বলি হোক তার দেশ, তার ঘাড়ে বন্দুক রাইখা মেরিকা চায়নাকে ঘাটাবে আর তার রাষ্ট্র পাঞ্চিং ব্যাগ হবে, এইটা লস লস গেইম। আবার একইভাবে, চায়না চায় তার শক্তি সাউথ চায়না সীতে কন্সেন্ট্রেটেড হোক, ইন্ডিয়া, মিয়ানমার বা সেভেন সিস্টার্স থেকে কোন ডিজরাপশন হোক চায়না তার বিরোধী।
ফলে, এই অঞ্চলে মোদী আর জিনপিং যা খায়, ভাগেজোগে খায়।
এই যে পশ্চিমা এত এত কোম্প্যানিতে এত এত ইন্ডিয়ান ফায়ার হইসে গত ২ বছরে, সব দেখবেন পোস্ট ইউক্রেন ওয়ার। এগুলা সব ব্রিক্সকে থ্রেট মনে করার ফল। ইউক্রেন ওয়ারে ইন্ডিয়া মেরিকানদের কথা না শোনার ফল।
ট্রাম্প আসা মাত্রই চায়নাকে চাপে ফেলতে সে ইন্ডিয়াকে কঠিন সব প্রলোভন দেবে। ফরেন ইনভেস্টমেন্ট, স্ট্র্যাটেজিক ফায়ারিং, লবিং, সব করবে। কিছুতেই কাজ না হইলে মিজোরাম, মনিপুরে ক্যাচাল বাড়বে। ট্রাম্প চায়নার ওপর আরো চড়াও হইতে ইন্ডিয়াকে অনেক কিছুই দিতে চাবে।
কিন্তু এই টোপ মোদী পুরাপুরি গেলার জায়গায় নাই। ইন্ডিয়া এইটা বদলাইতে পারবে না যে সে একটা শত্রু পরিবেষ্টিত রাষ্ট্র এবং মেরিকার হয়ে চায়নার সাথে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ করলে সবার আগে সে ধ্বংস হবে। ফলে ফিন্যান্সিয়াল কো অপারেশনে ইন্ডিয়া মেরিকার কথা শুনলেও মিলিটারি পয়েন্ট অফ ভিউতে সে চায়নার সাথে লিয়াইজ করবে।
এইটার ফলে ট্রাম্প আরো বিরক্ত হবে এবং তার পক্ষে মোদীর সাথে আগের ফাংশনাল ফ্রেন্ডশিপ টিকায় রাখাটা দুষ্কর হবে যদি সে মেরিকান ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট কম্প্রোমাইজ না করে।
২০২২ থেকে আমি বলতেসি, ইন্ডিয়া ভেঙ্গে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হইসে। আন্তর্জাতিক রাজনীতির গতি প্রকৃতি যেদিকে যাইতেসে, ইন্ডিয়া তার শতবার্ষিকী দেখতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে।
ইন্ডিয়াকে সাব কন্টিনেন্টের এনালিস্টরা একটা জাইগ্যান্টিক সামথিং মনে করে। কথাটা মিথ্যা না। কিন্তু জায়ান্টেরও মৃত্যু আছে।
২১শে নভেম্বর, ২০২৪
উল্লেখ্য, ইন্দো-পাকিস্তান যুদ্ধের পর আমি বলসিলাম, নতুন সিকিউরিটি এক্সিস এশিয়াতে জন্ম নিতেসে। রাশা-ইন্ডিয়া-ইজরায়েল বনাম চায়না-তুর্কীয়্যে-পাকিস্তান, সম্ভবত ইরান এতে যোগ দিলেও দিতে পারে। ভেরি রিসেন্টলি জানলাম জেনারেল আসিম মুনির আবার ইউএস আর্মির দাওয়াতে মেরিকা ভিজিটে যাইতেসেন।
ইন্ডিয়ার ওপর ট্রাম্পের এই বিপুল চাপ সৃষ্টির কারন মূলত ৩টা।
১)ইন্দো প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দক্ষিন এশিয়ায় পাওয়ার ইকুইলিব্রিয়াম তৈরি করা-বাংলাদেশ-পাকিস্তান বনাম ইন্ডিয়া। সাউথ মেরিকাতেও একই কাজ করসে ইউএস, আর্জেন্টিনায় একদম পাচাটা *ত্ততা একটারে প্রেসিডেন্ট বানাইসে, ব্রাজিলকে হিউজ ট্যারিফ মারসে।
২)ব্রিক্সকে একটা জোট হিসেবে দাড়াইতে না দিয়ে ডলার হেজিমনি রক্ষা করা, দেখবেন ব্রাজিলের উপরেও খড়গ নাইমা আসছে।
৩)ইন্ডিয়াতে রেজাইম চেঞ্জের যে কাজ বাইডেন এডমিন শুরু করসিলো, সেইটাকে আগায় নিয়ে যাওয়া। একই অপারেশন এখন ব্রাজিলেও এক্টিভ।
বাংলাদেশে যারা ভারতপন্থী আছেন এখনো, সামনে আপনাদের কপালে দুঃখ আছে।
ইউএসএ ভারতকে ভাঙ্গবে কিনা, সেইটা অনেক ইফস এন্ড বাটসের ওপর ডিপেন্ড করবে। কিন্তু ভারত আপনাকে ২০১০ সালের সেই প্রটেকশন আর দিতে পারবে না। ধীরে ধীরে আপনারা পশ্চিমেও ইরেলেভেন্ট হইতে থাকবেন। ইউএস-চায়না উভয়েই ক্রমশ আগ্রাসী হইতে থাকবে, কারন বাংলাদেশ-সেভেন সিস্টার্স আর মিয়ানমার হইতেসে সম্ভাব্য নেক্সট প্রক্সি ব্যাটল জোন। এই আন্তর্জাতিক খেলার মাঝখানে পইড়া ভারতপন্থীরা হারায়ে যাবে।
দিল্লি না পিন্ডি এইটা আজকের দুনিয়ায় আর কোন লেজিট কোশ্চেন আকারে হাজির হওয়া সম্ভব না। এই দুনিয়া বেইজিং আর ওয়াশিংটনের, কিছুটা মস্কো, লন্ডন, বার্লিন আর আঙ্কারারও।
কিন্তু জিওপলিটিক্যাল স্কুলিং থেকে বঞ্চিত কিছু মানুষের চেচামেচি দেখলে আপনার মনে হবে, বাংলাদেশে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ চলতেসে। আসলে, এরা আপনাকে রিয়েলিটি থেকে বেখবর রাখতে চায়।
জাতীয় রাজনীতি বুঝতে হবে আন্তর্জাতিক রাজনীতির কনটেক্সটে। সিরাজউদ্দৌলা কেন ক্লাইভের কাছে হারসিলো তার গ্লোবাল কনটেক্সট আছে, সিপাহী বিদ্রোহ কেন সফল হয় নাই বা একাত্তরে কেন বাংলাদেশ জিতসে, এর গ্লোবাল কনটেক্সট আছে। গ্লোবাল কনটেক্সটের বাইরে কিছু ঘটা বিরল ঘটনা, একশো বছরে ৩-৪টা ঘটে।
বাংলাদেশে তারেক রহমানকে ক্ষমতায় আসার পর মেরিকান এজেন্ডা নিয়েই কাজ করতে হবে, যা ইউনুস করতেসেন। কারন আমাদের স্ট্র্যাটেজিক ডাইভার্সিটি অফ একশন নাই। এবং সেটাকে কাউন্টার করতে চায়না ইসলামপন্থীদের ওপর ইনভেস্টমেন্ট বাড়াবে। এর ফলশ্রুতিতে নেক্সট ১০ বছরের মধ্যে জামাতের সরকারে আসার সম্ভাবনা তৈরি হইতে পারে, যেটা আবার ইউএসএ আইদার পকেটে নিতে চেষ্টা করবে অথবা ঠ্যাকায়ে দেবে।
এইখানে ইন্ডিয়ার স্টেক আস্তে আস্তে কমবে, কারন আগামী ১৫ বছর ইন্ডিয়া নিজেকে বাচাইতে বেশিরভাগ এনার্জি খরচ করবে। পাকিস্তান ফ্রন্টে তার ম্যাক্সিমাম এনার্জি খরচ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।