02/10/2025
সবসময় শুধু সফলতা আর সুখের গল্প বলি। আজ বলবো
দু: খের গল্প।
এই দম্পতির সাথে আমার দেখা হয় করোনার শেষের দিকে।হাসবেন্ড ইতালি থাকেন।করোনার মধ্যে এসে আটকে গেছেন।ট্রাই করছেন, কিন্তু বাচ্চা হয়নি। অনেক বছর বিয়ে হয়েছে, বিদেশ থেকে দেশ, অনেক চেষ্টা করছেন, কিন্তু সন্তানের মুখ দেখতে পারেন নি।
যাহোক ১ ম বার ১-২ মাসের চেষ্টা করে হলো না। ভদ্রলোক আবার ইতালি চলে গেলেন।
২ বছর পর আবার আসলেন ২/৩ মাস সময় নিয়ে। এবার আমি আই ইউ আই করতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম সারভাইকেল স্টেনোসিস( জরায়ু মুখ ন্যারো) আর খুবই শর্ট সারভিক্স ( সিস করা ছিলো ও টিউব পেটেন্ট ছিলো)। এর মধ্যে রোগীর হাসব্যান্ড আবার চলে গেলেন।।
পরবর্তীতে রোগীর হাসব্যান্ড আসার একমাস আগে আমি ল্যাপ হিস্টারোস্কপি করলাম। এবং হাসব্যান্ড আসার পর আই ইউ আই। দেখা গেল পজিটিভ আলহামদুলিল্লাহ।
এরপর সরাসরি দেখা অনলাইন কনসাল্টেশন, লোকাল কনসাল্টেশন চলছিল।জরায়ু মুখ সেলাই করলাম। নানান সাপোর্ট দিলাম। রোগীর ডায়বেটিস এর জন্য ইনসুলিন চলছিলো। প্রেগ্ন্যাসির মধ্যে এই ব্লিডিং, এই ডায়রিয়া, এই জ্বর চলছিলই। অবশেষে ৩৩+ সপ্তাহে পানি ভেংগে গেলো। নিয়ে আসতে বললাম। নোয়াখালী থেকে আসতে আসতে রাত। চাচ্ছিলাম কনজার্ভেটিভ দিয়ে আরও কিছুদিন কন্টিনিউ করতে। তা আর হলো না।পরদিনই ফিটাল ডিসট্রেস শুরু হলো।নিউন্যাটোলজিস্ট সামনে রেখে সিজার করলাম।
বাচ্চাটা শ্বাস নেয়া কান্নাকাটি সবই করলো। ৫ দিন এন আওসিউতে। শিশু ডাক্তার বললো বাচ্চা ভালো আছে, আগামীকাল মায়ের কাছে দিয়ে দিবো।
পরদিন বাচ্চাটা হঠাৎ খারাপ হয়ে গেল এবং শেষ পর্যন্ত মারা গেল। এই দু:খী মা টাকে বলার জন্য আমার কাছে কোনো ভাষা নেই। শুধু দোয়া করেছি, আল্লাহ যেন এই শোক সইবার শক্তি তাকে দেন।
আল্লাহ রিজিকের মালিক, আপনি যাকে ইচ্ছা সন্তান দেন, যাকে ইচ্ছা দেন না। আবার যাকে ইচ্ছা দিয়েও নিয়ে যান। সব কিছুই আপনার পরিকল্পনা।