05/08/2025
ইমার্জেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ পিল:
আজ একটা পোস্ট দেখলাম। এক অল্প বয়স্ক আপু তিন বছর যাবৎ মাসে দুই বার করে ইমারজেন্সী পিল খাচ্ছেন। এটাই তার কাছে রেগুলার কন্ট্রাসেপটিভ মেথড হয়ে গেছে। এরপর একবার এবরশন ও করেছেন। কারণ সে ও স্বামী দুইজনই অল্প বয়স্ক, ছাত্র।
তাকে অনেক কিছু লিখতে ইচ্ছা করছিল মেইনলী বকা ঝকাই করতে ইচ্ছা করছিল। পরে ভাবলাম ব্যাপারগুলো সবারই জানা দরকার।
সবচেয়ে প্রথম কথা ইমার্জেন্সী পিল, MR, abortion এগুলো কিন্তু জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি না। এগুলো ইমার্জেন্সী কন্ডিশনের জন্য। ইমার্জেন্সী জীবণে রোজ হয় না। দুই একবার হয়। তাই এসবের ব্যবহার জীবণে দুই একবারেই সীমাবদ্ধ রাখা দরকার।
এখন আসি ইমারজেন্সী পিল কিভাবে কাজ করে সে বিষয়ে। ফেলপিয়ন টিউবের ভিতরে এক রকম কোষ আছে যারা ঝাড়ু দেয়ার মত নড়তে থাকে এদের বলে সিলিয়া। এরা এভাবে ঝাড়ু দিয়ে ডিম্বাণু বা জাইগোটকে জরায়ুর দিকে পাঠায় যেন সেখানে সে শুক্রাণুকর সাথে মিলিত হয়ে বাচ্চা তৈরী করতে পারে। এক সাথে করে। ইমার্জেন্সী পিল ঠিক এই ঝাড়ু দেয়াটা বন্ধ করে দেয়। ফলে ডিম্বাণু যেখানে ছিল সেখানেই থেকে যায়।
কিন্তু শুক্রানু তো নিজেই নিজের লেজ দিয়ে পুরো ফিমেল জেনিটাল ট্রাকট ঘুরে বেড়ায়। এখন যদি ডিম্বাণু ফেলপিয়ান টিউবে থাকা অবস্থায় ইমার্জেন্সী পিল ঝাড়ু দেয়া বন্ধ করে দেয় আর শুক্রাণু তার লেজ নেড়ে ফেলপিয়্ন টিউবে এসে মিলিত হয় তাহলে কী ঘটবে? তাহলেও প্রেগন্যান্সি হবে। কিন্তু ইউটেরাসের মত বড় জায়গায় না হয়ে হবে একটা চিকন স্ট্রর মত নালীতে। এর ফলে কী হবে? যখন ভ্রুণ ঐ ছোট্ট নালীতে বড় হতে চাইবে আপনার ফেলপিয়ান নালী ফেটে যাবে। একবার যখন এমন হবে তখন আপনি চিরকালের জন্য আপনার এক সাইডের ওভারীর ভূমিকা থেকে বঞ্চিত হবেন। মানে আপনার সেই সাইডের ওভারী থেকে ডিম আর কখনও ইউটেরাসে আসবে না। সেই সাথে আপনাকে মেজর একটা সার্জারী করতে হবে। আপনার প্রজনন ক্ষমতা চিরদিনের মত অর্ধেক হয়ে যাবে।
এখন আসি MR বা এবরশনের কথায়। এবরশন কোন ছোটখাট ব্যাপার না। পৃথিবীতে চলে আসা একটা আত্মাকে পৃথিবী থেকে সৃষ্টিকর্তার অনিচ্ছায় ফেরৎ পাঠানো এত সহজ না। প্রায়ই দেখা যায় ভ্রূণের কিছু অংশ বা প্লাসেন্টার কিছু অংশ ঔষধ খাওয়ার পরও জরায়ুতে থেকে যায়। তখন আবার অপারেশন করে সেটা বের করতে হয়। এরপর থেকে শুরু হয় রেগুলার ইনফেকশন। আপনার প্রজনন ক্ষমতা কমতে থাকবে।
একটা সময় বাচ্চা না চাইলেও এক সময় কিন্তু মানুষ চায় তার সন্তান হবে। সাধারণত খুব বেপরোয়া যৌণ জীবণে অভ্যস্থ নারীরাও পয়ত্রিশ থেকে চল্লিশে, পুরুষেরা চল্লিশ থেকে পঞ্চাশে এমন একটা আর্জ ফীল করেন। ততদিনে কিন্তু নারীরা প্রায় মেনপজে পৌছে যান। অর্থাৎ প্রজনন ক্ষমতার শেষের দিকে। সেই সাথে অতীত এবরশনজনিত অক্ষমতা থাকতেই পারে।
এখন পুরুষটি কিন্তু চাইলেই বাবা হতে পারবেন আরেকজন কম বয়সী নারীর মাধ্যমে। কিন্তু নারীটি কিন্তু আর মা হতে পারবেন না।
✅ সচেতন হোন! সঠিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বেছে নিন:
🔹 রেগুলার পিল
🔹 কনডম
🔹 কপার টি / IUD
🔹 দীর্ঘমেয়াদি বা স্থায়ী পদ্ধতি
জীবনটা আপনার — পছন্দটাও হোক সচেতনভাবে।
Emergency পিল কখনোই নিয়মিত পদ্ধতি না।
#জন্মনিয়ন্ত্রণ #নারীস্বাস্থ্য #সচেতনতা #জীবনেরজন্য_ভালোবাসা