06/09/2025
#পস্রাবের রাস্তায় যত সমস্যা।
আমাদের মাঝে অনেকেরই প্রস্রাবজনিত নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে। প্রস্রাবের সমস্যাগুলো হচ্ছে; যেমন প্রস্রাবে কষ্ট, জ্বালাপোড়া, ঘন ঘন প্রস্রাব, প্রস্রাব ধারণে অক্ষমতা, প্রস্রাবকালীন ঝরা, বিছানায় প্রস্রাব ইত্যাদি। প্রত্যেক ধরনের সমস্যার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। আর চিকিৎসার পূর্বে অবশ্যই কারণ জানা দরকার, তা না হলে সঠিকভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করা হবে না।
মূত্রথলির সম্প্রসারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ার পেছনের কারণ হচ্ছে, মূত্রথলির প্রদাহ; যা কিনা ইনফেকশন, রেডিয়েশন, কেমিক্যাল প্রয়োগ, ক্যাথেটার প্রয়োগ করানো, পাথর জমা ইত্যাদির কারণে হয়ে থাকে। যদি মূত্রনালির মাংসগাত্রে টিউমার বিস্তার লাভ করে কিংবা সংলগ্ন অঙ্গ যেমন প্রস্টেটগ্রন্থি, মলনালি, জরায়ু ইত্যাদির টিউমারের বিস্তারের কারণে প্রস্রাবকালীন কষ্ট বেশি করে দেখা দিতে পারে। কারো হয়তো বার্ধক্যজনিত কারণে হচ্ছে, করো ক্ষেত্রে বিভিন্ন রোগব্যাধির কারণে রয়েছে আবার কারো হয়তো মানসিক সমস্যার কারণে অসুবিধা দেখা দিয়েছে।
* যখন ব্যাকটেরিয়া দ্বারা মূত্রথলিতে ইনফেকশন সৃষ্টি হয়; বিশেষ করে মেয়েদের সৃষ্টি হয়। তখন মেয়েদের ক্ষেত্রে ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। দেখা যাবে দিন ও রাতে সবসময়ই ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। দেখা যাবে দিন ও রাতে সমসময়ই ঘন ঘন প্রস্রাব হচ্ছে। সেই সাথে প্রস্রাব করাকালীন জ্বালাপোড়ার জন্য কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে প্রস্রাবের সাথে রক্তও আসতে পারে। অন্যদিকে পুরুষদের বেলায় তাদের প্রস্টেটগ্রন্থির প্রদাহ হলে অথবা মূত্রথলি প্রস্টেটগ্রন্থির প্রদাহ থাকে, তাহলে তলপেটে, কুঁচকিতে, মলদ্বারের আশপাশে, মলদ্বারে অ-কোষ ও পুরুষাঙ্গে হালকা মাত্রার ব্যথা আরো ব্যথার ন্যয় অনুভূতি দেখা দিতে পারে। এ সমস্যা প্রস্রাব করাকালীন অথবা বীর্যস্খলনের সময় ছাড়া অন্য সময়েও দেখা দিতে পারে।
* মানসিক সমস্যার কারণে মূত্রথলির প্রদাহ মধ্যবয়স্ক ও বার্ধক্যে দেখা যায়। অনেক মহিলাই অভিযোগ করে থাকেন যে, তার তলপেটে অথবা যৌনাঙ্গে হালকা ব্যথা হচ্ছে, দিনের বেলায় ঘন ঘন প্রস্রাব হলেও রাত্রে প্রস্রাব আবার ঘন ঘন হচ্ছে না। প্রস্রাব পরীক্ষায় কোনো ইনফেকশন পাওয়া যাবে না। অনেক ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো দীর্ঘদিন যাবত থেকে থাকতে পারে; কিন্তু কোনো কারণ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। এ সমস্যাগুলোকে তাই মানসিক কারণ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
* যাদের প্রস্রাবকালীন জ্বালাপোড়া বা কষ্ট থাকে, তাদের চিকিৎসার পূর্বে ভালো করে পরীক্ষা করা উচিত; বিশেষ করে বর্তমান ছাড়াও পূর্বে কোনো প্রস্রাবের অসুবিধা ছিল কিনা মহিলাদের পেলভিক ফ্লোর এর পরীক্ষা এবং পুরুষদের বেলা প্রস্টেট পরীক্ষা অতীব জরুরি, তাছাড়া শারীরিক পরীক্ষা তো অবশ্যই করতে হবে। প্রস্রাব পরীক্ষা, প্রস্টেটগ্রন্থির নিঃসরণ পরীক্ষা এ ধরনের রোগীদের অবশ্যই করা উচিত। আরো কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে, সেটা নির্ভর করবে রোগীর আনুষঙ্গিক উপসর্গের ওপর; যেমন রোগীর এ সমস্যা বারে বারে হয় কিনা, সাথে জ্বর থাকে কিনা ইত্যাদি। এগুলো প্রস্টেটগ্রন্থির তাৎক্ষণিক প্রদাহ হলে বেশি দেখা দেবে প্রস্রাবে ইনফেকশনের তুলনায় বার্ধক্য বয়সে রক্তে সিরাম এসিড ফসফেটেজ বেড়ে গেলে প্রস্টেটগ্রন্থির ক্যান্সার বেড়ে যেতে পারে। শারীরিক পরীক্ষার সময় বস্তি দেশে কিংবা মলদ্বারের টিউমার আছে কিনা বা ব্যথা, প্রস্রাবের সাথে রক্ত যায় কিনা ইত্যাদিও দেখা দরকার। যদি শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ শনাক্ত ও কারণ নির্ণয় কিংবা রোগ শনাক্ত করা না যায়, তাহলে প্রস্রাব ও প্রস্টেটগ্রন্থির নিঃসরণ কালচার করে বিভিন্ন ধরনের জীবাণুর উপস্থিতি নিশ্চিত করা উচিত। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি দিয়ে মূত্রথলির, মূত্রনালির ইত্যাদির অবস্থাও স্বচক্ষে দেখে রোগের কারণ নির্ণয় করা যেতে পারে।
ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া এ সমস্যাগুলো মূত্র সংবহনতন্ত্রের যে কোনো অংশের প্রদাহ কারণেও হয়ে থাকে। যদি মারাত্মক ইনফেকশন হয়ে থাকে, তখন মূত্রথলিতে অল্প কিছু প্রস্রাব থাকলেও সবসময় প্রস্রাব করার ইচ্ছা বাড়বে। ঘন ঘন প্রস্রাব ও রাতে যদি প্রস্রাব হওয়ার কারণ হচ্ছে যথা মূত্রনালির ধারণ ক্ষমতা কমে যাবে বিভিন্ন রোগের কারণে অথবা মূত্রথলি সম্পূর্ণভাবে খালি না হয়ে থাকে ফলে মূত্রথলিতে বেশি পরিমাণ প্রস্রাব থেকে যাবে। রাত্রিকালীন প্রস্রাব হওয়ার সমস্যা হৃদরোগের কারণে কিডনির অকার্যকারিতায় ওষুধ ব্যবহারে শারীরিক হাত ও পা ইত্যাদি ফুলা কমাতে গিয়ে, রাতে বেশি করে পানি খাওয়া এলডোসটেরন নামক এক ধরনের হরমোনের রক্তে বেড়ে গেলে ইত্যাদ বহুবিদ কারণে রাত্রে প্রস্রাবের মাত্রা বেড়ে যেতে থাকে। এবার আসি ঘুমের মাঝে কেন অনেকে প্রস্রাব করে থাকে এ ব্যাপারে। আমাদের দেহের মেরুদণ্ডের কোমরের অংশের স্নায়ুতন্ত্র বাচ্চাদের প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণ করে থাকে, তাই ২ বছর পর্যন্ত বিছানায় প্রস্রাব করা একটি সাধারণ ও স্বাভাবিক ব্যাপার। যেহেতু আড়াই বছরের মধ্যেই স্নায়ুতন্ত্রে পরিপক্বতা আসে না, তাই পায়খানা ও প্রস্রাব ধারণ করার ক্ষমতা মস্তিষ্ক থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।
স্বাভাবিক অবস্থায় এ বয়সের পরে বিছানায় প্রস্রাব করার কথা নয়। তাই ৩ বছরের পরে বিছানায় প্রস্রাব করার কথা নয়। তবে ৩ বছরের পরও শতকরা ১০ ভাগ ক্ষেত্রে এ সমস্যা থাকতে পারে, যা কিনা বংশ কারণে দেরিতে মূত্রনালির নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। যদি বেশিরভাগ বাচ্চার বয়ঃসন্ধির পূর্বেই এ সমস্যা আর থাকে না, তবে যাদের শারীরিক সমস্যা রয়েছে; যেমন মূত্র সংবহনতন্ত্রের ইনফেকশন কোথাও কোনো বাধা রয়েছে তাদের প্রস্রাব উপচেপড়া এবং ঝরার সমস্যা থাকতে পারে। মূত্রথলির স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যার কারণে প্রস্রাব বেশি হতে পারে; যার ফলে মূত্রথলির ওভারলোডেও হতে পারে।
উপরোক্ত কারণগুলো যদি ৩ বছরের বেশি বাচ্চারা বিছানায় প্রস্রাব করে থাকে, তাহলে আবার বিবেচনায় আনতে হবে। তবে যাদের শারীরিক রোগ রয়েছে, তাদের শুধু রাত্রীকালীনই প্রস্রাবের সমস্যা থাকে না; দিবা ভাগে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যাদের কোনো কারণ নেই, প্রস্রাবে রক্ত দেখা দিলে সেটি মারাত্মক হিসেবে চিন্তা করতে হবে। বিভিন্ন কারণের মধ্যে প্রস্রাবে রক্ত দেখা দিতে পারে। কোনো মারাত্মক ইনফেকশন, টিউমার, পাথর স্ট্রোক, রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া সমস্যা, মূত্রনালিতে আঘাত পাওয়া ইত্যাদি। যদি প্রস্রাবের প্রথম দিকে রক্ত আসে, তাহলে বুঝতে হবে মূত্রনালির সম্মুখের অংশে সমস্যা রয়েছে অথবা প্রস্টেটগ্রন্থির সমস্যা রয়েছে। অন্যদিকে রক্ত যদি প্রস্রাবের শেষ ভাগে দেখা দেয়, তাহলে মূত্রনালির পশ্চাৎ ভাগে সমস্যা রয়েছে বুঝতে হবে অথবা মূত্রথলির কোনায় রয়েছে। রক্ত যদি সমস্ত প্রস্রাবের মাঝে মিশে আসা শুরু করে তবে কিডনি মূত্রথলি অথবা কিডনিনালিতেও এরকম সমস্যা হতে পারে। পরিশেষে প্রস্রাবের যে কোনো সমস্যার জন্য দীর্ঘদিন রোগে না ভুগে বিশেষ তত্ত্বাবধানে সঠিক চিকিৎসা নেয়া বাঞ্ছনীয়।
নিম্নে উল্লেখিত সার্জারি বা চিকিৎসার জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুনঃ
১) #পস্রাবের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা, #জ্বালা পোড়া, #রক্ত যাওয়া #মূত্রাশয় সংক্রমণে বা #পস্রাব লিকেজ সংক্রান্ত চিকিৎসা করা হয়।
২) যন্ত্রের সাহায্যে(PCNL, ESWL and icpl methods ) #মুত্রাশয়, #কিডনী, ও #পিত্ত থলিতে পাথর অপসারণ।
৩ #)মলদ্বারের স্থানচ্যুতি, #মলদ্বার স্পিঙ্কটার(sphincter) আঘাত অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে সার্জারি করা হয়।
৪) #প্রসব জনিত ফিস্টুলা প্রতিস্থাপনের সার্জারি।
ডাঃ তাজকেরা সুলতানা চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক, শহীদ সহরওয়ার্দ্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
চেম্বারঃ ইস্টার্ন দোলন, ১৫২/২ - এইচ (৬ষ্ঠ তলা), বীর উত্তম কাজী নুরুজ্জামান স্মরনী, পশ্চিম পান্থপথ, ঢাকা -১২০৫। এপয়নটমেনট নিতে ফোন করুন 01921503847 ও 01989997180 এই নম্বরে দুপুর দুইটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত। চেম্বার লোকেশনঃ https://goo.gl/maps/HP1zctovRkmT3XPc9
Medical Center